শনিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৪

Maodudi oparation:-2

মওদুদী কে :-২ , শিয়া আকিদার প্রতি বিশ্বাস ও অগাধ আস্থার দরুন মাওলানা মওদুদীর চোখে হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ এর দোষ গুলো তিনি সুনিপুন ভাবে বর্ণনা করে গেছেন মূল কিতাবের আগা -মাথা কাট ছাট করে আর জুড়িয়ে দিয়েছেন নিজের মনমত কথা।   এমনি একটা উক্খাপন করেছেন তিনি যে ;- হজরত মুয়াবিয়া দিয়্তের অর্থ আত্তসাথ করেছেন।   
মাওলানা মওদুদী লিখেছেন যে হাফেজ ইবনে কাসীর বলেন যে দিয়্তের ক্ষেত্রে হজরত মুয়াবিয়া সুন্নাতে হস্তক্ষেপ করেন।  সুন্নাত মোতাবেক চুক্তিবদ্ধ অমুসলিমদের (জিম্মির) দিয়্ত বা রক্তপণ মুসলিম -অমুসলিম দের বরাবর হুয়ার কথা।  কিন্তু হজরত মুয়াবিয়া তা অর্ধেক নামিয়ে এনে বাকি অর্ধেক নিজেই নেয়া সুরু করলেন।  পৃষ্টা ১৭৩-১৭৪ 
 
 আসুন একবার দেখি যে কিতাব এর উদৃতি দিয়ে মাওলানা মরদুদ এই সঙ্গিন অভিযোগ লাগিয়েছেন হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ এর সান ও মানে সেই কিতাবে এই কথাটা কিভাবে উল্লেখ করেছেন।  

ইমাম যুহুরির বলেন যে সুন্নাত এই যে - দিয়ত (রক্তপণ) এর ক্ষেত্রে মুসলিম ও অমুসলিম বরাবর হুয়ার কথা।  কিন্তু হজরত মুয়াবিয়া প্রথম বেক্তি যে তা অর্ধেকে হ্রাস করে বাকি অর্ধেক নিজের জন্য নেয়া সুরু করলেন (আল -বিদা ওয়ান নিহায়া ৮খ পৃষ্টা ১৩৯) 
ভালো করে লক্ষ্য করুন মওদুদীর দেয়া উদৃতি ও হাফেজ ইবনে কাসীর (রহ) এর উক্তি।  
প্রথমত দিয়্তের  (রক্তপণ) এর ক্ষেত্রে হজরত মুয়াবিয়া সুন্নাত এ হস্তক্ষেপ করেন এই কথাটা মওদুদীর নিজস্য সংযোজন।   এমাম যুহুরি বা হাফেজ ইবনে কাসীর কেউ এই কথা বলেন নাই।  
আর দিতীয়ত এই বক্তব্য হাফেজ ইবনে কাসির এর নয় , তিনি ইমাম যুহুরির বরাত দিয়ে বর্ণনা করেছেন মাত্র।  অথচ মওদুদী ওরফে মরদুদ এই কথাকে হাফেজ ইবনে কাসীর এর কথা বলে চালিয়ে দিয়েছেন বরং এটাও হাফেজ ইবনে কাসীরের ওপর মিথ্যা আরোপ করেছেন।  


যাই হোক , মওদুদী মিয়া আরোপ করেছেন দিয়্ত(মুক্তিপণ ) এর অর্থ অর্ধেক নিজেই নেয়া সুরু করলেন।    অথচ যদি আর কয়েকটা কিতাব খুলে দেখার কষ্ট করতেন তা হলে এই অপবাদ দেয়ার সুযোগ পেতেন না মওদুদী।  কিন্তু তিনি তা না করেই অর্থ অত্তসাথের অভিযোগ তুলেছেন হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ এর নামে।  অথচ দেখুন বায়হাকী সরিফে এসেছে ইমাম যুহুরির বর্ণনা এসেছে এইভাবে যে ;- বাকি অর্ধেক তিনি বায়তুল মালে জমা করলেন(  খ ৮ পৃষ্টা ১০২ ) 

সুতরাং ইটা বোঝা গেল যে তিনি তার দায়িত্বে অর্পিত বায়তুল মালের জন্য নেয়া সুরু করলেন , ওনার নিজের বেক্তিগত খরচ এর জন্য নয়।  
আর দিয়্ত এর ক্ষেত্রে সাহাবাদের মধ্যে ও মতবিরোধ ছিল , যেমন এক হাদিসে এসেছে কাফেরের দিয়্ত(রক্তপণ) হবে মুসলিমদের অর্ধেক(  মুসনাদ এ আহমাদ , নাসাই সরিফ, তিরমিজি) 
এই হাদিসের আলোকে হজরত ওমর বিন আব্দুল আজিজ ও ইমাম মালিক রহ অমুসলিম দের দিয়্ত মুসলিমদের দিয়ত এর অর্ধেক বলে মত দিয়েছেন ( নায়্লুল আওতার খ ১ প্রস্ত ৭৯৫ ও বিদ্রাতুল মুজতাহিদ খ ২ পৃষ্টা ৪১৪ ) 

পক্ষান্তরে আব্দুল্লাহ বিন  ওমর বর্ণনা করেছেন যে নবী পাক এরশাদ করেন জিম্মির দিয়্ত মুসলিমদের দিয়্ত এর অনুরূপ ( বায়হাকী খ ৮ পৃষ্টা ১০২) 


আর এই হাদিসের ওপর ভরসা করেই ইমাম আবু হানিফা  ও ইমাম সূফিয়ান সাওরী ( রহ) দিয়্ত মুসলিম ও  অমুসলিম দের ক্ষেত্রে এক ও অভিন্ন বলে মত দিয়েছেন। 
কিন্তু হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ  উভয় হাদিসের প্রতি সামঞ্জস্য রেখে নিজস্স্য ইজতেহাদ প্রয়োগ করেন।  তিনি এ বিষয় বেক্ষা দিতে  গিয়ে বলেন যে কোনো  বেক্তির মিত্তুতে  যেমন তার নিকটাত্তিয় গন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঠিক তেমন জিজিয়া কর থেকে বায়তুল মাল ও বঞ্চিত হয়েছে / তাই দিয়ত (রক্তপণ ) এর অর্ধেক তার আত্তীয় দের কে ও বাকি অর্ধেক বায়তুল মালে জমা কর (বায়হাকী ৮ খ ১০২ ) 

প্রকাশ থাকে যে একজন এর ইজতেহাদ কে আর একজন মুজতাহিদ নাও গ্রহণ করতে পারেন /   ইটা এতক্ষণ থেকে বোঝা গেল  যে একটা ইজতেহাদের মাসালা মাত্র  / কিন্তু  অব্চচের বিষয় যে একজন সাহাবীকে এই ভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এ অভিযুক্ত করা হয়েছে / আরো জেনে আশ্চর্য হবেন 

যে হজরত ওমর ও অসমান রাযিয়াল্লাহ এর ও এই বিষয় মতভেদ ছিল / ওনাদের আমলে একজন জিম্মির দিয়্ত (রক্তপণ) ছিল মুসলিম দিয়তের এক তৃতীয়াংশ / আর ইমাম শাফি (রহ) এই মত গ্রহণ করেছেন (বিদাতুল মুজতাহিদ খ২ পৃষ্টা ৪১৪) 

এই খানে আরো একটা বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ইমাম যুহুরি দিয়্ত এর পরিবর্তন কারী বলেছেন হজরত মুয়াবিয়া কে কিন্তু দিমত প্রকাশ  করেন নাই।  কারণ এই মাত্র ২ দুই জন খোলাফায়ে রাশেদিনের থেকে হাদিস ও দেখলেন আপনি।  এনাদের সময় দিয়ত ছিল ৩ এর ১ অংশ মাত্র।  

আজ অত্যান্ত অব্চচের সাথে বলতে হচ্ছে যে যে সাহাবীর বিষয় নবী পাকের ভবিষ্যত বাণী ছিল যে ;- তিনি সপ্নে দেখে উম্মে হারাম (রা) কে বলেন যে আমার একদল উম্মত কে আমার সামনে পেশ করা হয়েছে যারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধরত রত জাহাজের মধ্যে আরোহন করে , বাদশাহর মত বা সিংহাসনে তারা উপবিষ্ট(বুখারী শরিফ , ৬৫৩০ নং হাদিস) 

ইসলামের ইতিহাসে প্রথম নৌবহর নির্মাতা ও সমুদ্র পথে জিহাদ্কারী এই সাহাবী , নবী পাক বলেগেছেন যে সেই প্রথম সমুদ্র পথে জিহাদ কারিগন বাদশাহর মত সিংহাসনে উপবিষ্ট, এই সেই সাক্স হজরত মুয়াবিয়া রাজিয়াল্লাহ্কে আজ ১৪০০ বছর পর দিয়তের  অর্থ আত্মসাতের মরা মানুষের আত্তীয় দের হক খাওয়ার মত অপবাদ একজন জ্ঞান পাপী আলেমের কাছ থেকে কলম এর খোচায় খোচায়  !!!!! 
মাওলানা মউদুদী , আমি সোহেল রানা বলতে চাই ,আপনি বেনজির (সব সময় দেখা যায় না ) লেখক হতে পারেন।  কিন্তু আপনার কিতাব চোখ বন্ধ করে পরার বা মেনে নেয়ার মত না।  
আর মওদুদীর উম্মত গণ , তোমাদের মাঝে কি কোনো হ্যায়া সরম আছে  ? মাওলনা মওদুদী তোমাদের তো মডেল , এই তোমাদের মডেল দেখ কত বড় গুস্তাক এ সাহাবা।  যারা আমার নবীর প্রানপ্রিয় সাহাবাদের শানে এই রকম অপবাদ লাগায় তার প্রতি কি আমার নবী রাজি খুসি থাকতে পারে ? জবাব দিবেন 

সোহেল রানা 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন