শনিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৪

Maodudi oparation :- 1

মাওলানা মওদুদী এর কিতাব (খেলাফত ওয়া মুল্কিয়াত) এ অনেক আপত্তি জনক কথা উল্লেখ করেছেন।   বর্তমান কিছু শিবির কর্মী ও জামাতের ভাইয়েরা মাওলানা মওদুদী এর কিতাব গুলোকে নিজের আদর্শে পরিনত করেছেন।   যা অনেক অসঙ্গতি পূর্ণ।   আমি চেষ্টা করব আমার কাছে যা কিতাব আছে তার আলোকে (খেলাফত ওয়া মুল্কিয়াত) এর কিছু আপত্তি আপনাদের সামনে তুলে ধরার।   আশা করব সকলে বিবেক দিয়ে বোঝার চেষ্টা করবেন।   
আসলে মাওলানা মওদুদী এর কিতাব কে হাজ্জাজি তলোয়ার বলা যায়।   হাজ্জাজ বিন ইউসুফ নামের একজন লোক ছিল যে তার তলোয়ার যেমন ইসলাম এর উপকার করেছে ঠিক ক্ষতি ও করেছে।  ঠিক তখন থেকেই হাজ্জাজি তলোয়ার মশহুর হয়ে যায়।   আর  কেউ যদি সামান্য গুস্তাকি বে আদবী বা বেপরোয়া হয়ে কথা বলে ঠিক তার আমলের কোনো স্থান রাসুলে পাকের বর্গায় নাই।    আমাদের কোনো ভাবেই উচিত না কোনো সাহাবা কেরামদের নামে মিথ্যা অপবাদ বা দোষারোপ বা তাদের দোষ ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা। করা  কারণ ইটা কখনই সমীচীন না যে কোনো সাহাবী আজ ১৪০০ বছর পর কোনো মামুলি জ্ঞান পাপী আলেমের কলম এর খোচায় রক্তাক্ত হওয়া।  
আমরা সকলে জানি যে রাফ্জি বা শিয়া গণ গুস্তাক এ সাহাবা।   তারা হজরত আবু বাক্কার হজরত ওমর  মা আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহ আনহা কে নিয়ে ও আরো কিছু বাজে আকিদার কারণে সকল মাস্লক থেকে কাফের হিসেবে গণ্য হয়।    কারন শিয়া গণ গুস্তাক এ সাহাবা।    গুস্তাক এ সাহাবা হুয়ার কারণে শিয়া গণ যদি কাফের হয় তা হলে রহুল কুদ্দুস হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ আনহু এর নামের সাথে মিথ্যা অপবাদ দোষারোপ করার কারণে মাওলানা মওদুদী কেন গুস্তাক এ সাহাবা দের কাতারে গণ্য হবে না ? কেন কাফের হিসেবে গণ্য হবে না ? আমাকে জবাব দিবেন।    আমি চেষ্টা করব কিছু আপত্তি জনক কথা হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ এর বিষয় যা বলেছেন মাওলানা মওদুদী তার জবাব দেয়ার।   
১,,,) আইনের শাসন ও বিলোপ শিরোনামে লিখেছেন যে - হজরত মুয়াবিয়া বেদাত জারি করেছেন !!!!!!! 

তিনি লিখেছেন যে  ইমাম যুহুরি বর্ণনা করেন ;-  এই বাদশা (মুয়াবিয়া ) এর আমলে দ্বীনের অনুগত ছিল না ও হারাম ও হালালের কোনো তমিজ ( আদব) ছিল না।  
তিনি তার দাবির সপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন যে ;- রাসুল পাকের সময় কাফের ও মুসলিম একে অপরের উত্তরাধিকারী হতে পারত না   কিন্তু মুয়াবিয়া  রাযিয়াল্লাহ কাফের দের কে মুসলমানদের উত্তরাধিকারী না করলে ও মুসলমানদের কে কাফেরের উত্তরাধিকারী করেন।  হজরত অমর বিন আজিজ খলিফা হয়ে এই বেদাত বিলুপ্ত করেন।   কিন্তু হিসাম বিন আব্দুল মালিক খলিফা হয়ে নিজেদের খানদানি (হজরত মুয়াবিয়ার)  প্রথা চালু করলেন।  


এখন মূল কিতাব যা অনুসরণ করে মাওলানা মওদুদী লিখেছেন তা দেখুন 

এমাম যুহুরি বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ এর সময় কাফের ও মুসলিম গণ একে অপরের উত্তরাধিকারী হত না।  কিন্তু হজরত মুয়াবিয়া  কাফেরদের কে মুসলমানদের উত্তরাধিকারী না করলেও মুসলমানদের কে কাফেরের উত্তরাধিকারী ঘোসনা করেন।  পরবর্তী খলিফাগণ ও পরবর্তী খলিফাগণ ও সেই ধারা আব্বাহত রাখলেন।  কিন্তু ওমর বিন আব্দুল আজিজ  পুর্ববর্তি  সুন্নতটি পুনর্বহাল করেন।  পরবর্তী খলিফা ইয়াজিদ বিন আব্দুল মালিক ও তার অনুসরণ করেন।  কিন্তু হিসাম বিন আব্দুল মালিক আবার ও হজরত মুয়াবিয়া এর সুন্নাত জারি করেন অর্থাত মুসলমানদের কে কাফেরের উত্তরাধিকারী ঘোসনা করলেন।   আল বিদা ওয়ান নিহায়া খ ৯  পৃষ্টা ২৩২ ) 

মাওলানা মওদুদীর বর্ণনা ও মূল কিতাবের বর্ণনা একতু মিলে দেখুন কত পার্থক্য।   আরো একটা বর্ণনা দেখুন 
শাফেয়ী মাজহাবের হাফেজ ইবনে হাজার (রহ) লিখেছেন যে :- ইবনে শায়বা  হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাকিল এর উদৃতি থেকে বলেছেন যে আর কোনো ফয়সালা আমার হজরত মুয়াবিয়ার থেকে উত্তম মনে হয়নি।  আমরা আহলে কিতাবীদের উত্তরাধিকারী হতে পারব কিন্তু তারা আমাদের উত্তরাধিকারী হোতে পারবে না যেমন আমরা তাদের মহিলাদের কে বিয়ে করতে পারব কিন্তু তারা আমাদের মহিলাদের কে বিয়ে করতে পারবে না।  
হজরত মুয়াজ বিন জাবাল রাজিয়াল্লাহ বলেন এই হাদিসটি হজরত মুয়াবিয়ার সপক্ষে মজবুত দলিল -: ইসলাম বৃদ্ধি করে , হ্রাস করে না ( ইসলামের কারণে কেউ মেরাচ থেকে বঞ্চিত হতে পারে না ) এমাম আবু দাউদ এই হাদিস বর্ণনা করেছেন ও এমাম হাকিম তা সহিহ বলে রায় দিয়েছেন।  (ফাতহুল বাড়ি অধ্যায় মুসলিম কাফেরের উত্তরাধিকার ) 

এখন এটাই প্রমাণিত হলো যে মাওলানা মওদুদী হজরত মুয়াবিয়া  এর ওপর মিথ্যা অপবাদ ও বেদাত এর ফতোয়া মেরেছেন।  
আর হালাল হারাম এর বিষয় নবী পাক বলেছেন যে ;- হালাল হারাম এর বিষয় হজরত মুয়াজ বিন জাবাল বেশি জানে সাহাবা দের মধ্যে ,( মিশকাত - বাবুল মান্কির , তিরমিজি -বাবুল মান্কির ) 

সেই মুয়াজ বিন জাবাল হজরত মুয়াবিয়ার মত কে প্রাদান্ন দিয়েন সে হাদিস আমি উপরে বর্ণনা করেছি।     আজ ১৪০০ বছর পর মাওলানা মৌদুদী কি ইজতেহাদ এর ক্ষমতা কেড়ে নিতে চান  হজরত মুয়াবিয়ার কাছ থেকে ? অথচ হজরত মাওলা আলী কারামুল্লাহ এর সাথে দুশমনি কে লক্ষ্য করে যে বীজ বুনেছেন তার বিষয় হজরত ইবনে আব্বাছ রাযিয়াল্লাহ কে জিগ্গেস করা হল  হজরত মুয়াবিয়া ১ রাকাত বিতর পরেন  আপনি কি বলেন এই বিষয় ? ইবনে আব্বাছ রাজিয়াল্লাহ বলেন তিনি তো একজন ফকিহ।  ( বুখারী সরিফ , হজরত মুয়াবিয়া অধ্যায় ) 
 আলী ইবনে আব্বাছ নিজেই হজরত মুয়াবিয়া কে মুজতাহিদ ও উচ্চ মানের ফকিহ মনে করেন।   আর মাওলানা মরদুদ আপনি কোন বলে মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ কে বেদাতি বলার হিম্মত করলেন ? আমার মত উম্মী ( মুর্খ) লোকের তো বুঝে আসে না। 
আরো মজার বিষয় হচ্ছে যে ইমামে যুহুরি (রহ) এর কথা কে তীর বানিয়ে চুরেছেন আপনি তিনি কিন্তু মুসলমানদের কে কাফের এর উত্তরাধিকারী করা কে সুন্নাত বলেছেন , বেদাত বলেন নাই।   আপনার কথা থেকে আসলো এত বড় হিম্মত রুহুল কুদ্দুস হজরত মুয়াবিয়া রাজিআল্লাহ কে বেদাতি বলার ? 
আপনারা জেনে হতবাক হবেন যে হজরত মুয়াবিয়ার কাজ ছিল রাসুলে পাকের বর্গায় ওহী লেখা যা নবী পাকের ওপর প্রত্যাদেশ হত।    এখন বলেন মাওলানা মৌদুদী ওরফে মরদুদ সয়তান কোথায় পেলেন এত বড় হিম্মত আপনি ? 
একজন সাহাবী যিনি যৌবন এর সোনালী দিন গুলো কেটে দিয়েছেন যুদ্ধের ময়দানে আজ ১৪০০ বছর পর এই অনার প্রাপ্প ছিল ? 
হে মুসলিম সমাজ জবাব দাও আমার 

সোহেল রানা 

Maodudi oparation:-2

মওদুদী কে :-২ , শিয়া আকিদার প্রতি বিশ্বাস ও অগাধ আস্থার দরুন মাওলানা মওদুদীর চোখে হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ এর দোষ গুলো তিনি সুনিপুন ভাবে বর্ণনা করে গেছেন মূল কিতাবের আগা -মাথা কাট ছাট করে আর জুড়িয়ে দিয়েছেন নিজের মনমত কথা।   এমনি একটা উক্খাপন করেছেন তিনি যে ;- হজরত মুয়াবিয়া দিয়্তের অর্থ আত্তসাথ করেছেন।   
মাওলানা মওদুদী লিখেছেন যে হাফেজ ইবনে কাসীর বলেন যে দিয়্তের ক্ষেত্রে হজরত মুয়াবিয়া সুন্নাতে হস্তক্ষেপ করেন।  সুন্নাত মোতাবেক চুক্তিবদ্ধ অমুসলিমদের (জিম্মির) দিয়্ত বা রক্তপণ মুসলিম -অমুসলিম দের বরাবর হুয়ার কথা।  কিন্তু হজরত মুয়াবিয়া তা অর্ধেক নামিয়ে এনে বাকি অর্ধেক নিজেই নেয়া সুরু করলেন।  পৃষ্টা ১৭৩-১৭৪ 
 
 আসুন একবার দেখি যে কিতাব এর উদৃতি দিয়ে মাওলানা মরদুদ এই সঙ্গিন অভিযোগ লাগিয়েছেন হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ এর সান ও মানে সেই কিতাবে এই কথাটা কিভাবে উল্লেখ করেছেন।  

ইমাম যুহুরির বলেন যে সুন্নাত এই যে - দিয়ত (রক্তপণ) এর ক্ষেত্রে মুসলিম ও অমুসলিম বরাবর হুয়ার কথা।  কিন্তু হজরত মুয়াবিয়া প্রথম বেক্তি যে তা অর্ধেকে হ্রাস করে বাকি অর্ধেক নিজের জন্য নেয়া সুরু করলেন (আল -বিদা ওয়ান নিহায়া ৮খ পৃষ্টা ১৩৯) 
ভালো করে লক্ষ্য করুন মওদুদীর দেয়া উদৃতি ও হাফেজ ইবনে কাসীর (রহ) এর উক্তি।  
প্রথমত দিয়্তের  (রক্তপণ) এর ক্ষেত্রে হজরত মুয়াবিয়া সুন্নাত এ হস্তক্ষেপ করেন এই কথাটা মওদুদীর নিজস্য সংযোজন।   এমাম যুহুরি বা হাফেজ ইবনে কাসীর কেউ এই কথা বলেন নাই।  
আর দিতীয়ত এই বক্তব্য হাফেজ ইবনে কাসির এর নয় , তিনি ইমাম যুহুরির বরাত দিয়ে বর্ণনা করেছেন মাত্র।  অথচ মওদুদী ওরফে মরদুদ এই কথাকে হাফেজ ইবনে কাসীর এর কথা বলে চালিয়ে দিয়েছেন বরং এটাও হাফেজ ইবনে কাসীরের ওপর মিথ্যা আরোপ করেছেন।  


যাই হোক , মওদুদী মিয়া আরোপ করেছেন দিয়্ত(মুক্তিপণ ) এর অর্থ অর্ধেক নিজেই নেয়া সুরু করলেন।    অথচ যদি আর কয়েকটা কিতাব খুলে দেখার কষ্ট করতেন তা হলে এই অপবাদ দেয়ার সুযোগ পেতেন না মওদুদী।  কিন্তু তিনি তা না করেই অর্থ অত্তসাথের অভিযোগ তুলেছেন হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ এর নামে।  অথচ দেখুন বায়হাকী সরিফে এসেছে ইমাম যুহুরির বর্ণনা এসেছে এইভাবে যে ;- বাকি অর্ধেক তিনি বায়তুল মালে জমা করলেন(  খ ৮ পৃষ্টা ১০২ ) 

সুতরাং ইটা বোঝা গেল যে তিনি তার দায়িত্বে অর্পিত বায়তুল মালের জন্য নেয়া সুরু করলেন , ওনার নিজের বেক্তিগত খরচ এর জন্য নয়।  
আর দিয়্ত এর ক্ষেত্রে সাহাবাদের মধ্যে ও মতবিরোধ ছিল , যেমন এক হাদিসে এসেছে কাফেরের দিয়্ত(রক্তপণ) হবে মুসলিমদের অর্ধেক(  মুসনাদ এ আহমাদ , নাসাই সরিফ, তিরমিজি) 
এই হাদিসের আলোকে হজরত ওমর বিন আব্দুল আজিজ ও ইমাম মালিক রহ অমুসলিম দের দিয়্ত মুসলিমদের দিয়ত এর অর্ধেক বলে মত দিয়েছেন ( নায়্লুল আওতার খ ১ প্রস্ত ৭৯৫ ও বিদ্রাতুল মুজতাহিদ খ ২ পৃষ্টা ৪১৪ ) 

পক্ষান্তরে আব্দুল্লাহ বিন  ওমর বর্ণনা করেছেন যে নবী পাক এরশাদ করেন জিম্মির দিয়্ত মুসলিমদের দিয়্ত এর অনুরূপ ( বায়হাকী খ ৮ পৃষ্টা ১০২) 


আর এই হাদিসের ওপর ভরসা করেই ইমাম আবু হানিফা  ও ইমাম সূফিয়ান সাওরী ( রহ) দিয়্ত মুসলিম ও  অমুসলিম দের ক্ষেত্রে এক ও অভিন্ন বলে মত দিয়েছেন। 
কিন্তু হজরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহ  উভয় হাদিসের প্রতি সামঞ্জস্য রেখে নিজস্স্য ইজতেহাদ প্রয়োগ করেন।  তিনি এ বিষয় বেক্ষা দিতে  গিয়ে বলেন যে কোনো  বেক্তির মিত্তুতে  যেমন তার নিকটাত্তিয় গন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঠিক তেমন জিজিয়া কর থেকে বায়তুল মাল ও বঞ্চিত হয়েছে / তাই দিয়ত (রক্তপণ ) এর অর্ধেক তার আত্তীয় দের কে ও বাকি অর্ধেক বায়তুল মালে জমা কর (বায়হাকী ৮ খ ১০২ ) 

প্রকাশ থাকে যে একজন এর ইজতেহাদ কে আর একজন মুজতাহিদ নাও গ্রহণ করতে পারেন /   ইটা এতক্ষণ থেকে বোঝা গেল  যে একটা ইজতেহাদের মাসালা মাত্র  / কিন্তু  অব্চচের বিষয় যে একজন সাহাবীকে এই ভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এ অভিযুক্ত করা হয়েছে / আরো জেনে আশ্চর্য হবেন 

যে হজরত ওমর ও অসমান রাযিয়াল্লাহ এর ও এই বিষয় মতভেদ ছিল / ওনাদের আমলে একজন জিম্মির দিয়্ত (রক্তপণ) ছিল মুসলিম দিয়তের এক তৃতীয়াংশ / আর ইমাম শাফি (রহ) এই মত গ্রহণ করেছেন (বিদাতুল মুজতাহিদ খ২ পৃষ্টা ৪১৪) 

এই খানে আরো একটা বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ইমাম যুহুরি দিয়্ত এর পরিবর্তন কারী বলেছেন হজরত মুয়াবিয়া কে কিন্তু দিমত প্রকাশ  করেন নাই।  কারণ এই মাত্র ২ দুই জন খোলাফায়ে রাশেদিনের থেকে হাদিস ও দেখলেন আপনি।  এনাদের সময় দিয়ত ছিল ৩ এর ১ অংশ মাত্র।  

আজ অত্যান্ত অব্চচের সাথে বলতে হচ্ছে যে যে সাহাবীর বিষয় নবী পাকের ভবিষ্যত বাণী ছিল যে ;- তিনি সপ্নে দেখে উম্মে হারাম (রা) কে বলেন যে আমার একদল উম্মত কে আমার সামনে পেশ করা হয়েছে যারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধরত রত জাহাজের মধ্যে আরোহন করে , বাদশাহর মত বা সিংহাসনে তারা উপবিষ্ট(বুখারী শরিফ , ৬৫৩০ নং হাদিস) 

ইসলামের ইতিহাসে প্রথম নৌবহর নির্মাতা ও সমুদ্র পথে জিহাদ্কারী এই সাহাবী , নবী পাক বলেগেছেন যে সেই প্রথম সমুদ্র পথে জিহাদ কারিগন বাদশাহর মত সিংহাসনে উপবিষ্ট, এই সেই সাক্স হজরত মুয়াবিয়া রাজিয়াল্লাহ্কে আজ ১৪০০ বছর পর দিয়তের  অর্থ আত্মসাতের মরা মানুষের আত্তীয় দের হক খাওয়ার মত অপবাদ একজন জ্ঞান পাপী আলেমের কাছ থেকে কলম এর খোচায় খোচায়  !!!!! 
মাওলানা মউদুদী , আমি সোহেল রানা বলতে চাই ,আপনি বেনজির (সব সময় দেখা যায় না ) লেখক হতে পারেন।  কিন্তু আপনার কিতাব চোখ বন্ধ করে পরার বা মেনে নেয়ার মত না।  
আর মওদুদীর উম্মত গণ , তোমাদের মাঝে কি কোনো হ্যায়া সরম আছে  ? মাওলনা মওদুদী তোমাদের তো মডেল , এই তোমাদের মডেল দেখ কত বড় গুস্তাক এ সাহাবা।  যারা আমার নবীর প্রানপ্রিয় সাহাবাদের শানে এই রকম অপবাদ লাগায় তার প্রতি কি আমার নবী রাজি খুসি থাকতে পারে ? জবাব দিবেন 

সোহেল রানা 


রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৪

ইলিয়াছ মেওয়াতি কে সাহাবা দের সাথে তুলনা :-

ইলিয়াছ মেওয়াতি  কে সাহাবা দের সাথে তুলনা :- 

তাবলিগ সমাচার :-৩
 
মাওলানা ইলিয়াছ মেও-য়াতি  কে সাহাবীদের সাথে তুলনা।  

সাইয়েদ আবুল হাসান নদভী এর লেখা (মাওলানা ইলিয়াচ ও তার দ্বীনি দাওয়াত)  এ লিখেছেন যে উম্মী বিবি (মাওলানা ইলিয়াছ এর মা)  মাওলানা ইলিয়াছ কে অত্যান্ত স্নেহ করতেন।  আর প্রায় বলতেন আখতার( ইলিয়াচ এর ডাক নাম) আমি তোমার মাঝে সাহাবীদের সুঘ্রান পাই।  কখনো পিঠের উপর হাত রেখে বলতেন আমি জানি না কি রহস্য।  সাহাবা কেরামদের মত কিছু আকৃতি আমি তোমার সাথে চলা ফেরা করতে দেখি।  (মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত পৃষ্টা ৪৯) 

এর পর লিখেছেন যে সুরু থেকেই মাওলানা ইলিয়াছ এর মাজে সাহাবা সুলভ বৈশিষ্ট ও জজবা বিদ্দিমান ছিল যা দেখে শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান বলতেন ইলিয়াছ কে দেখলে আমার সাহাবাদের কথা  মনে পরে যায়।   পৃষ্টা ৪৯  একই কিতাব।  

এবার লক্ষ্য করুন।   উক্ত কিতাবে ৪৯ নং পৃষ্টায় একবার বলা হয়েছে যে সাহাবাদের সুঘ্রান পায় তার মা তার সরির থেকে।   এই কিতাবের সুরু তে পৃষ্টায় তার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবুল হাসান তিনি সব সময় অত্যান্ত রোগা ছিলেন এমন কি জীবনের শেষ নিশ্বাস ও অত্যান্ত রোগাক্রান্ত হয়েই তিনি দুনিয়া ছেড়ে চলে যান।  

আর এনার মাঝে তার মা সাহাবাদের সুগ্রান পেত। 
 এর পরই বলেছে যে আমি জানি না কি রহস্য তোমার সাথে আমি সাহাবাদের কিছু আকৃতি চলা ফেরা করতে দেখি।   
আবার দেখুন সাহাবাদের  আকৃতি চলা ফেরা করতে দেখতে পেত মাওলানা ইলিয়াছ এর সাথে। তার মানে কিছু সাহাবী তার সাথে চলা ফেরা করত।   
 অব্চচ।   
আচ্ছা সাহাবা গণ কার সাথে চলা ফেরা করত ? আমার নবী হজরত মুহাম্মদ  সল্লেল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লাম এর সাথে।   কিন্তু তার মা দেখত সাহাবা দের কিছু আকৃতি মাওলানা ইলিয়াছ এর সাথে ঘুরা ফেরা করত।  আর এই কথা দেওবন্দী গণ তাদের কিতাবে ফলাউ করে প্রচার করে আর একটা বার চিন্তা ও করে না আমরা কি বলতে যাচ্ছি। এটা কি মাওলানা ইলিয়াছ এর জন্য নবীর দরজা খোলা হলনা ! জবাব দিবেন আপনারা।  
 
এর পর দেওবন্দিদের আর এক মহান আলেম শায়েখ উল হিন্দ , যার অর্থ গোটা হিন্দুস্থান এর শায়েখ  তার উপর আর কেউ নাই।  সে কি বলে ইলিয়াছ কে দেখলে আমার সাহাবাদের কথা মনে পরে।  তার মানে হচ্ছে যে তিনি অনার মাঝে সাহাবাদের কে দেখতে পাতেন।   পিছের কথা ও বলে রাখি যে এই ইলিয়াছ সাহেব যখন ছোট ছিলেন তখন রশিদ আহমাদ  গান্গুহীর কাছে যখন পরতেন এই কিতাবের ৫১ নং পৃষ্টায় বলা হয়েছে যে রশিদ আহমাদ গান্গুহিকে না দেখলে তার মনে শান্তি আস্ত না।   মাঝে মাঝে গভীর রাতে ও  রসদ  আহমাদ এর কামরায় যেতেন ও তার চেহরা দেখে মন কে তৃপ্ত করতেন।  আর তখন তার বয়স ছিল ১৯ বছর 

এই সেই রশিদ আহমাদ গান্গুহী যিনি সকলের সামনে কাসেম নানুতাভির সাথে সমকামিতার আচরণ করেছেন। আর কাসেম নান্য্তাভি বলত জনাব এ কি করছেন সবার সামনে।  একা একা হলে অন্য কথা। গোপনে গোপনে যে কত করেছে তা আল্লাহ জানে ( আরওয়া -এ- ছালাছা ) পৃষ্টা ২৮৯। 

রাতের অন্ধকারে কি দেখে মন তৃপ্ত করত এখন যা পারেন আপনারা বোঝেন। 


যার নামে লোকজন  সমকামিতার উভিযোগ ও উক্খাপন করে সেই ইলিয়াছ মেওয়াতি কে দেখলে নাকি মাহমুদুল হাসান এর সাহাবাদের কথা মনে পরত।   সাহাবীরা কি এমন হয় ? 

নিজেদের আলেমদের ইজ্জাত বাড়ানোর জন্য আর কত মিথাচার করবেন ? নবী ,রাসুল, উম্মুল মোমেনিন , মা ফাতেমাতুজ জোহরা সবার প্রতি  আপনারা নিজেদের ইজ্জাত বাড়ানোর জন্য মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন।  এখন আপনাদের আলেম কে সাহাবা এর সাথে তুলনা করছেন।   সাহাবা গণ এদের মাওলানা ইলিয়াছ এর সাথে ঘোরে বা সাহাবাদের কথা মনে পরে তাকে দেখলে !!!! কি এসব ? 
সাহাবা গণ এর ইজ্জাত এত  কম !!!! আপনাদের কাছে ? 

জবাব দিন দেও-ভুত গণ 

সোহেল রানা 

শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৪

Iliyach er family detail

তব-লিগ সমাচার :-২
:- গত কাল সময় সল্পতার কারণে পোস্ট করতে পারি নাই।  যাই হোক  করছি আর এমন হবে না।  তব-লিগ সমাচার এর গত পর্বে মেওয়াত জনগোষ্টির ধর্মিও অবস্থা ও পরিবেশ তুলে ধরেছিলাম যে কেমন পরিবেশ থেকে এই বেদাতি তাবলিগ নামের তব-লিগ এর সুরু হয়েছিল আশা করছি অনেকে দেখেছেন।  মাওলানা ইলিয়াছ সাহেবের ও কিছু ছোট বেলার কথা আপনাদের জানা প্রজন। 
 
  দেওবন্দী দের কিতাব গুলো যদি কেউ একটু সুন্দর করে নিরীক্ষণ করেন তা হলেই তারা নিজেদের কোথায় নিজেরাই জুতার মালা গলায় পরে।  আপনাদের কে  আর কষ্ট করার প্রয়োজন নাই।  

এমনি একটি কথা হচ্ছে যে ;- ছোট বেলাতেই পরিবারের নিয়ম অনুযায়ী মাওলানা ইলিয়াছ সাহেব কোরান এর হেফজ সম্পুর্ন করেন।  তাদের পরিবারে হেফজুল কোরান এতই বেশি ছিল যে মসজিদের দের কাতারের মধ্যে মুয়াজ্জিন ছাড়া কোনো গায়ের এ হেফজুল কোরান ছিল না।  ( সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী এর লেখা কিতাব , মাওলানা ইলিয়াছ ও তার দ্বীনি দাওয়াত পৃষ্টা ৪৯) 

এবার লক্ষ্য করুন  ওনাদের পরিবারের মধ্যে এত পরিমান হাফেজ ছিল বলা হয়েছে যে মসজিদের দের কাতারের মধ্যে মুয়াজ্জিন ছাড়া সব কোরান এর হাফেজ খাড়া হত।  আচ্ছা ভাই মসজিদের লাইন এ কতজন লোক এক সাথে খাড়া হতে পারত  ? মিনিমাম ২০ জন এক কাতারে , তা হলে দের কাতারে ৩০ জন হাফেজে কোরান ছিল।  ইটা কি কোনো সাধারণ মানুষের বংশ ছিল ? নাকি রাবন এর বংশ ছিল  ? হিন্দু দের ধর্মে সবচে যে বড় বংশের নাম এসেছে তা রাবণ এর বংশ।  তবে সেখানে ও এত পরিমান পুরুস এর সংখা উল্লেখ আছে বলে আমার মনে হয়না।  মেওয়াত এ হয়ত আর এক বড় রাবন থাকত ইলিয়াছ সাহেবের এর বংশের মধ্যে।  তাই এমন হতে ও পারে।  তাই না কি রে দেওবিন্দী গণ ? 

আসলে এমন কিছুই না।  এরা নিজেদের আলেমের বংশের ইজ্জাত লোকদের কে বোঝানোর জন্য এমন কথা বলেছেন।  আর যদি মেওয়াত এ ৩০ জন কোরান এ হাফেজ থাকত তা হলে এই কিতাবের ৭৩-৭৪ এ আধা হিন্দু বলে কেন লিখলেন সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী ? জবাব দেন 

আচ্ছা এদের বংশ যদি দেখা যায় উক্ত কিতাবে যা বর্ণনা করেছেন সে মতে পুরুস এর সংখা  মাত্র ৪ জন এর অধিক না।  অথচ কিভাবে কিতাবে মিথ্যাচার করেছে !!! 

Hajir najir bye kazi bhai 6

ইবনে কাইয়েম আল-জওযিয়া নিজ ‘কিতাবুর্ রূহ’ বইয়ে লিখে:

”প্রকৃতপক্ষে, জীবিত ও মৃতদের রূহ একত্রিত হওয়ার বিষয়টিও সত্য-স্বপ্নেরই রকম-বিশেষ, যেটা মানুষের কাছে অনুভূত বিষয়সমূহের সমশ্রেণীর। তবে এ বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।

”কারো কারো মতে রূহের মধ্যে সর্বপ্রকার এলম্ (জ্ঞান) বিদ্যমান। কিন্তু জ্ঞানী ব্যক্তিদের পার্থিব কর্মচাঞ্চল্য ও ব্যস্ততা ওই জ্ঞান অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তবে নিদ্রাবস্থায় যখন কোনো রূহ সাময়িকভাবে দেহ থেকে বের হয়ে যায়, তখন তা আপন যোগ্যতা ও মর্যাদা অনুযায়ী অনেক বিষয় অবলোকন করে থাকে। আর যেহেতু মৃত্যুজনিত কারণে দেহ থেকে রূহ পুরোপুরি মুক্তি লাভ করে, সেহেতু রূহ জ্ঞান ও চরম উৎকর্ষ লাভ করে। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু সত্য ও কিছু ভ্রান্তির অবকাশ রয়েছে। কেননা, মুক্তিপ্রাপ্ত রূহ ছাড়া ওই সব জ্ঞান লাভ করা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।

”কোনো রূহ পুরোপুরি মুক্তি লাভ করা সত্ত্বেও আল্লাহর ওই সব জ্ঞান সম্পর্কে অবহিত হতে পারে না, যেগুলো তিনি তাঁর রাসূল (আ:)-বৃন্দকে প্রদান করে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। আর রূহ পূর্ববর্তী নবী (আ:) ও তাঁদের কওমের বিস্তারিত কোনো তথ্য, যেমন - পরকাল, কিয়ামতের আলামত, কোনো কাজের ভাল-মন্দ ফলাফল, আল্লাহর আদেশ-নিষেধের বিবরণ, আল্লাহ পাকের আসমাউল হুসনা (সুন্দর নামসমূহ), আল্লাহর গুণাবলী, কার্যাবলী ও শরীয়াতের বিস্তারিত বিষয়াদিও জানতে পারে না। কেননা, এ সমস্ত বিষয় শুধু ওহী বা ঐশী প্রত্যাদেশের মাধ্যমে জানা যায়। মুক্তিপ্রাপ্ত রূহের পক্ষে এসব বিষয় জানা সহজ হয়ে ওঠে। তবে ওহীর মাধ্যমে যে জ্ঞান লাভ করা যায়, সেটাই শ্রেষ্ঠ ও সঠিক।” [ইবনে কাইয়েম আল-জওযিয়া কৃত ‘কিতাবুর রূহ’ (১৯৭৫ সংস্করণের ৩০ পৃষ্ঠা; মওলানা লোকমান আহমদ আমীমীর অনূদিত বাংলা সংস্করণের ৪৯ পৃষ্ঠা, ১৯৯৮)।]

’মীলাদ মাহফিলে মহানবী (দ:) আসেন মর্মে বিশ্বাস’ (The Belief that the Prophet Comes to the Milad Meeting) শীর্ষক একটি ওয়েবসাইটে আরেকটি আপত্তি উত্থাপন ও প্রচার করা হয়েছিল, যা নিম্নরূপ:

”কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন যে রাসূলুল্লাহ (দ:) মীলাদের মাহফিলে আসেন, আর এই বিশ্বাসের কারণে তাঁরা সম্মানার্থে উঠে দাঁড়ান। এটা একেবারেই মিথ্যা। রাসূলুল্লাহ (দ:) কোনো ঈদে মীলাদ আন্ নবী (দ:) মাহফিলেই আগমন করেন না। তিনি মদীনা মুনাওয়ারায় তাঁর রওযা মোবারকে অবস্থান করছেন এবং ’এয়াওমুল কেয়ামাহ’ তথা কেয়ামত দিবসে (শেষ বিচার দিনে) সেখান থেকে উঠবেন.......নিচের আয়াত ও হাদীস এর সাক্ষ্য বহন করে: রাসূলুল্লাহ (দ:)-কে সম্বোধন করে আল-কুরআনে সুস্পষ্ট এরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আপনাকেও বেসালপ্রাপ্ত (পরলোকে আল্লাহর কাছে গমন) হতে হবে এবং তাদেরকেও মরতে হবে। অতঃপর তোমরা কেয়ামত দিবসে আপন প্রতিপালকের সামনে ঝগড়া করবে’ (সূরা যুমার, ৩০-৩১ আয়াত)। অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (দ:)-কে সমগ্র মানব জাতির সাথে একযোগে সম্বোধন করা হয়েছে এভাবে - ‘অতঃপর তোমরা এরপরে অবশ্যই মরণশীল। অতঃপর তোমাদের সবাইকে কেয়ামতের দিন পুনরুত্থিত করা হবে’ (সূরা মু’মিনূন, ১৫-১৬ আয়াত)। মহানবী (দ:) স্বয়ং একটি হাদীসে বলেন, ‘কেয়ামত দিবসে আমার রওযা-ই সর্বপ্রথম খোলা হবে এবং আমি-ই সর্বপ্রথম শাফায়াত করবো, আর আমার সুপারিশও সর্বপ্রথম গৃহীত হবে।’ এ সকল আয়াত ও হাদীস (অনুরূপ অন্যান্য দলিলসহ) প্রমাণ করে যে কেয়ামত দিবসে গোটা মানব জাতিকে কবর থেকে পুনরুত্থিত করা হবে, আর রাসূলুল্লাহ (দ:)-ও এর ব্যতিক্রম নন। এ বিষয়ে পুরো উম্মতের এজমা তথা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” [নোট-২১: মুফতী এবরাহীম দেসাঈ, ফতোওয়া বিভাগ, জামিয়াতে উলেমায়ে ইসলাম, দক্ষিণ আফ্রিকা।]

Hajir najir bye kazi bhai 5

অপর দিকে, ‘আল-হাযির’ শব্দটি নিরুদ্ধ, কেননা আরবী ভাষায় এটি কোনো স্থানে শারীরিকভাবে উপস্থিত হওয়াকে বোঝায়। অর্থাৎ, এটি সৃষ্টিকুলের এমন এক বৈশিষ্ট্য যা স্রষ্টা হতে নিরুদ্ধ। সুতরাং ‘হাযের’ শব্দটি ’সর্বত্র উপস্থিত’ শব্দটির মতোই আল্লাহর ক্ষেত্রে কেবল আলঙ্কারিকভাবে ব্যবহার করা যায়, যাতে বোঝানো যায় যে তিনি সর্বজ্ঞানী; কিন্তু আল-কুরআন, সুন্নাহ কিংবা প্রাথমিক জমানার ইমামবৃন্দের লেখনীর কোথাও ‘সর্বত্র উপস্থিত’ বা ‘হাযের’ হওয়াকে খোদায়ী গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত বলে উল্লেখ বা বর্ণনা করা হয় নি। আল্লাহ-ই সবচেয়ে ভাল জানেন।

ওপরে উক্ত আপত্তি উত্থাপনকারীর কাছে যখন এ খণ্ডনমূলক বক্তব্যের কিছু কিছু পেশ করা হয়, তখন সে বলে: “হাযের ও নাযের বলতে আমরা বোঝাই আল্লাহর জ্ঞান সম্পূর্ণ ও সামগ্রিক। তাঁর সম্পূর্ণ জ্ঞান হতে কোনো কিছু আড়ালে নয়। আরেক কথায়, তিনি হলেন ‘আলীম’ এবং তাঁর এই সিফাত আল-কুরআনে বার বার উল্লেখিত হয়েছে।” ওই আপত্তি উত্থাপনকারী এ জবাব দিয়ে স্বীকার করে নিয়েছে:

. সে ‘আলীম’ বোঝাতে ‘হাযের’ ও ‘নাযের’ শব্দ দুটোকে আলঙ্কারিকভাবে ব্যবহার করেছে;
. নিজের কৃত ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রথমোক্ত শব্দটি দ্বারা শেষোক্ত দুটো শব্দ বোঝাতে গিয়ে সে যেমন (ক) ভাষাতত্ত্ব/বিদ্যার ওপর নির্ভর করে নি, তেমনি (খ) ’নস-এ-শরঈ’ তথা শরীয়তের দলিলের ওপর নির্ভরও করে নি।

আমরা শায়খ আহমদ ফারুকী সেরহিন্দী (রহ:)-এর “আল্লাহ হাযের ও নাযের” মর্মে বক্তব্যের প্রসঙ্গে আবার ফিরে যাচ্ছি; তাতে কিছু শর্তও প্রযোজ্য:


/ -- খোদায়ী নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে আহলে সুন্নাতের মৌলিক নিয়ম-কানুন, যা ’আল-আসমা’ ওয়াস্ সিফাত’-বিষয়ক সালাফ-এ-সালেহীন (প্রাথমিক যমানার বুযূর্গ উলামা) ও খালাফ-এ-সোয়াদেকীন (পরবর্তী যুগের বুযূর্গ উলামা)-বৃন্দের ওপরে বর্ণিত নীতিমালার আলোকে প্রণীত, তা নাকচ করতে কোনো বিচ্ছিন্ন মন্তব্যকে ব্যবহার করা যাবে না।

/ -- বাস্তবতার আলোকে, শায়খ আহমদ ফারুকী সেরহিন্দী (রহ:) তাঁর বক্তব্যকে যত্নসহ এমনভাবে সাজিয়েছেন যা নকশবন্দিয়া তরীকার আধ্যাত্মিক প্রক্রিয়ার আওতাধীন কোনো খালেস (একনিষ্ঠ) মুরীদের খোদায়ী জ্ঞানের সর্বব্যাপী প্রকৃতি-বিষয়ক সচেতনতাকে দৃঢ়তার সাথে ব্যক্ত করে; ঠিক যেমনি শাযিলী তরীকার পীরেরা তাঁদের মুরীদানকে বলতে শেখান “আল্লাহু হাযিরি”, ”আল্লাহু নাযিরি”, ”আল্লাহু মাঈ”। এই সকল অভিব্যক্তি বা প্রকাশভঙ্গি খোদাতা’লা সম্পর্কে গভীর সচেতনতাকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যেই; আর প্রকৃতপক্ষে এগুলোর সবই ঐশী জ্ঞানের এমন বৈশিষ্ট্যসমূহের প্রতি দিকনির্দেশ করে যা সৃষ্টিকুলের ‘হুযুর’ বা ’নযর’-এর সাথে কোনো রকম সাদৃশ্য রাখে না, কেবল নামের সাযুজ্য ছাড়া।

/ -- তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ্ থেকে, আরবী ভাষায় এবং মহানবী (দ:)-এর সম্পর্কে যাঁরা ‘হাযের’ শব্দটি ব্যবহার করেন, তাঁদের থেকে আলাদা কোনো কিছুকে বুঝিয়েছেন শায়খ আহমদ ফারুকী সেরহিন্দী (রহ:)। উদাহরণস্বরূপ, তিনি ‘হাযের’ বলতে স্বাভাবিক সৃষ্টিজাত ‘উপস্থিতির’ অর্থে বোঝান নি, বরং তিনি একে ‘আল-এলম আল-হুযূরি’ তথা ঐশী জ্ঞানের অ-সৃষ্টিজাত অর্থে বুঝিয়েছেন। এটা তিনি ‘মকতুবাত শরীফ’ গ্রন্থের ৩য় খণ্ডে শাহজাদা খাজা মোহাম্মদ সাঈদকে লেখা ৪৮নং চিঠি, যার শিরোনাম ’খোদার নৈকট্যের রহস্য ও তাঁর যাত মোবারক সম্পর্কে আত্মপ্রকাশ’, তাতে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন। এটা একটা অতি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও বিশেষায়িত অর্থ যাকে এই দৃষ্টিকোণ্ থেকেই দেখতে হবে, যদি না কেউ শায়খ সেরহিন্দী যে অর্থে বুঝিয়েছেন তার পরিপন্থী কোনো মানে বের করতে আগ্রহী হয়।

/ -- ’মুফতী’ খেতাবে পরিচিত আমাদের সমসাময়িক কতিপয় ব্যক্তি আকিদাগত কোনো বিষয়ে শর্তারোপের সময় নতুনত্বের সাথে এই একই বাক্য ব্যবহার করে থাকেন, যার ফলে তাদের দ্বারা ওই বাক্যের ব্যবহারের মানে কী তা নিয়ে যৌক্তিক সংশয় দেখা দেয়; এই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয় যখন তারা এর সাথে যোগ করেন (নিজেদের) বানানো শর্ত, যথা - “আল্লাহর ছাড়া আর কারো প্রতি ‘হাযের’ ও ’নাযের’ শব্দগুলো প্রয়োগ করা যাবে না।” এ কথা বলে তারা বিচারকের জন্যে অতি প্রয়োজনীয় পূর্বশর্তটি বাতিল করে দিয়েছেন যা দ্বারা তিনি যে কোনো এবং যে সকল মামলায় সাক্ষী গ্রহণের দরকার সেগুলোতে সাক্ষী নিতে না পারেন। বরঞ্চ তারা (হয়তো) বোঝাতে চান, “আল্লাহ ছাড়া আর কারো প্রতি সেই অর্থে এটি আরোপ করা যাবে যে অর্থে আল্লাহর প্রতি আরোপ করা হয়েছে”, যখন (আদতে) তা আল্লাহ ছাড়া অন্যান্যদের প্রতিও আরোপ করা যায় মাখলুক তথা সৃষ্টির প্রতি আরোপযোগ্য অর্থে।


/ -- সৃষ্টিকুল-শ্রেষ্ঠ মহানবী (দ:)-এর প্রতি যাঁরা ‘হাযের’ ও ’নাযের’ শব্দগুলো ব্যবহার করেন, তাঁরা তাঁর সৃষ্টিজাত মহান রূহ বা সত্তাকে আল্লাহ যেখানে চান সেখানে শারীরিক ও আত্মিকভাবে উপস্থিত হওয়ার অর্থে গ্রহণ করেন। আর যারা মহানবী (দ:) এই অর্থে উপস্থিত হতে পারেন মর্মে বিষয়টিকে অস্বীকার করে, তারা ইসলাম ধর্মত্যাগ করেছে।

/ -- মহানবী (দ:)-এর ‘হাযের’ ও ’নাযের’ লকবগুলোর ব্যবহার বাতিলের পক্ষে দলিল হিসেবে বিরোধিতাকারীরা যা পেশ করে থাকে, তার কোনোটাই একে নাকচ করে না। এ লকবগুলো আল্লাহর সাথে তাঁর ভাগাভাগি করা অন্যান্য লকবের মতোই যা আমরা (ইতিপূর্বে) পেশ করেছি; যেমন - আল্লাহ হলেন ‘রউফ’ ও ’রাহীম’, এবং তিনি ‘নূর’ ও ‘শাহীদ’ (সাক্ষী) এবং ‘আল-শাহিদ’ (সাক্ষ্যদাতা)-ও। আর তিনি তাঁরই প্রাক্ অনন্তকালের বাণী আল-কুরআনে এই লকবগুলো রাসূলুল্লাহ (দ:)-কে দান করেছেন।

/ -- ইসলামী বিদ্বান ব্যক্তিদের উদ্ধৃতির প্রশ্ন উঠলে বিরোধিতাকারীদের উচিত এ কথা স্বীকার করে নেয়া যে ’হাযের’ ও ‘নাযের’ গুণ/বৈশিষ্ট্যগুলো আহলে সুন্নাতের ওপরে উদ্ধৃত মোল্লা আলী কারীর মতো উলামাবৃন্দ আরোপ করেছেন এবং আরও আরোপ করেছেন সে সকল অগণিত আউলিয়া-বুযূর্গ যাঁরা দিন-রাত হুযূর পাক (দ:)-এর (রূহানী) সান্নিধ্যে ছিলেন বলে সর্বজনজ্ঞাত; এঁদের মধ্যে রয়েছেন - শায়খ আবুল আব্বাস আল-মুরসী (রহ:), শায়খ আবুল হাসান শাযিলী (রহ:), শায়খ আব্দুল আযীয দাব্বাগ (রহ:), এবং সম্ভবত শায়খ আহমদ ফারুকী সেরহিন্দী (রহ:) নিজেও (আল্লাহ তাঁদের ভেদের রহস্যকে পবিত্রতা দিন)।

Hajir najir bye kazi bhai

মোল্লা আলী কারীর বক্তব্য সম্পর্কে এক দেওবন্দীর মিথ্যা দাবি

সম্প্রতি জনৈক দেওবন্দী লেখক এক আজব দাবি উত্থাপন করেছে যে মোল্লা আলী কারী তাঁর ‘শরহে শেফা’ গ্রন্থে নাকি আসলে বলেছিলেন, “মহানবী (দ:)-এর রুহ (মোবারক) মুসলমানদের ঘরে উপস্থিত নন ” (লা আন্না রুহাহু হাযিরাতুন ফী বুইউতিল্ মুসলিমীন), যা মোল্লা কারীর বক্তব্যের ঠিক উল্টো! ওই দেওবন্দী বলে:

”তিনি (মোল্লা আলী কারী) এই বিষয়ে তাঁর ‘শরহে শেফা’ গ্রন্থে আলোচনা করেছেন যে লা আন্না রুহাহু হাযিরাতুন ফী বুইউতিল মুসলিমীন - অর্থাৎ, মহানবী (দ:)-এর রূহ (মোবারক) মুসলমানদের ঘরে উপস্থিত মর্মে ধারণাটি ভুল। কিছু কিছু সংস্করণে (আরবী) 'লা' শব্দটি বাদ পড়ায় কোনো কারণ ছাড়াই কতিপয় ব্যক্তির মাঝে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে; এঁদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছেন মুফতী আহমদ এয়ার খান সাহেব (’জাআল হক্ক’ ১৪২ পৃষ্ঠা দেখুন)।.....মোল্লা আলী কারী স্বয়ং তাঁর সকল সুস্পষ্ট উদ্ধৃতিতে হাযের ও নাযেরের ধারণাকে নাকচ করে দিয়েছেন। যারা তাঁর সংক্ষিপ্ত ও অস্পষ্ট (অপ্রাসঙ্গিক) উদ্ধৃতিগুলোর ওপর নির্ভর করেন, তাঁরা সম্পূর্ণ ও নিশ্চিতভাবে ভ্রান্ত।” [নোট-১৫: সারফরাজ সাফদার কৃত ‘আঁখো কি দানদাক’ (পৃষ্ঠা ১৬৭-১৬৮)।]

ওপরের এই ধৃষ্টতাপূর্ণ দাবি কেউ তখনি উত্থাপন করতে পারে, যখন আরবী ভাষাগত জ্ঞানে সে মূর্খ হয়। কেননা, মোল্লা আলী কারী তাঁর বক্তব্য আরম্ভ করেন আরবী শব্দ ‘আয়’ (অর্থাৎ/মানে) দ্বারা, যার সাথে না-বাচক (নফি-সূচক) বাক্য জুড়ে দেয়া আরবী ব্যাকরণগত ভুল হবে; যেমন - ‘মহানবী (দ:)-এর রূহ মোবারক মুসলমানদের ঘরে উপস্থিত নন।’ সত্য হলো, আরবী ‘লা’শব্দটি বাদ পড়ে নি, কারণ তা প্রথমাবস্থায় সেখানে ছিলই না; আর তা ওখানে ছিল মর্মে দাবি করাটা তাহরিফ তথা দলিল রদ-বদলের অপচেষ্টার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। অধিকন্তু, মোল্লা আলী কারী ’উপস্থিত’ বোঝাতে যে (আরবী) শব্দ ‘হাযির’ ব্যবহার করেছেন, তা পুং-লিঙ্গে (মোযাক্কের); ‘হাযিরাতুন’ তথা স্ত্রী-লিঙ্গে (মোয়ান্নেস) নয়। কেননা, রুহের ক্ষেত্রে উভয় লিঙ্গ ব্যবহৃত হলেও মহানবী (দ:)-কে উদ্দেশ্য করার সময় মোযাক্কের ব্যবহার করা অধিক যথাযথ।

এক দেওবন্দী কর্তৃক নবুয়্যতের গুণাবলী অস্বীকার

দেওবন্দীদের অপর এক ব্যক্তি যাকে কেউ কেউ ’আলেম’ মনে করেন, সে হুযূর পাক (দ:)-এর প্রতি হাযের ও নাযের হওয়ার বৈশিষ্ট্য আরোপ করার বেলায় আপত্তি উত্থাপন করেছিল; কেননা তার দাবি অনুযায়ী এই বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলী একমাত্র আল্লাহতা’লারই অধিকারে। তর্কের ভিত্তি হিসেবে যদি এই কথাকে সত্য হিসেবে ধরেও নেয়া হয়, তথাপি যুক্তি ভুল। কেননা, এ কথা এই রকম শোনায় যে ‘আর্ রউফ’ ও ‘আর-রাহীম’ খোদায়ী গুণাবলী হবার কারণে সেগুলো নবুয়্যতের গুণাবলী হতে পারে না। ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) তাঁর ‘শেফা শরীফ’ গ্রন্থে এই কূটতর্ককে খণ্ডন করেছেন এ কথা বলে:

”জেনে রেখো, আল্লাহ তাঁর আম্বিয়া (আ:)-দের অনেকের প্রতি সম্মানের নিদর্শনস্বরূপ তাঁর নিজের কিছু নাম মোবারক তাঁদেরকে দান করেছেন; উদাহরণস্বরূপ, তিনি হযরত এসহাক (আ:) ও হযরত ইসমাইল (আ:)-কে ‘আলিম’ (জ্ঞানী) ও ‘হালিম’(ধৈর্যশীল) নামে ডেকেছেন। ঠিক তেমনি হযরত ইবরাহীম (আ:)-কে ‘হালিম’, হযরত নূহ (আ:)-কে ‘শাকুর’ (কৃতজ্ঞ), হযরত মূসা (আ:)-কে ’কারীম’ (মহৎ) ও ‘ক্কাওয়ী’ (শক্তিশালী), হযরত ইউসুফ (আ:)-কে ‘হাফেয,’ ‘আলেম’ (জ্ঞানী অভিভাবক/রক্ষক), হযরত আইয়ুব (আ:)-কে ‘সাবুর’(ধৈর্যবান), হযরত ঈসা (আ:) ও হযরত এয়াহইয়া (আ:)-কে ’বারর’ (আত্মোৎসর্গিত), এবং হযরত ইসমাইল (আ:)-কে ‘সাদিক আল-ওয়াদ’আ’ (প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী) নামে ডেকেছেন.....তথাপি তিনি আমাদের মহানবী (দ:)-কে বেছে নিয়েছেন (এঁদের মধ্যে) এই কারণে যে, তাঁরই মহাগ্রন্থে (আল-কুরআনে) এবং আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের পবিত্র জবানে বিবৃত তাঁর (বহু) নাম মোবারকের অঢেল সম্পদ তিনি মহানবী (দ:)-কে মন্ঞ্জুর করেছেন।” [নোট-১৬: ইমাম কাজী আয়ায প্রণীত ‘শেফা শরীফ’; ইংরেজি অনুবাদ - আয়েশা আবদ আর-রাহমান বিউলী (গ্রানাডা, মদীনা প্রেস, ১৯৯২), পৃষ্ঠা ১২৬।]

ওপরে উদ্ধৃত প্রমাণাদি সন্দেহাতীতভাবে পরিস্ফুট করে যে ’হাযের’ ও ’নাযের’ নাম দুটো আল্লাহর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত যদি হয়ও, তথাপি তাঁর নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের মধ্যে ওই বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলী সন্নিবেশিত থাকার সম্ভাবনায় কোনো রকম বাধা নেই। বস্তুতঃ এই বিষয়টি সর্বজন-জ্ঞাত যে কেরামন কাতেবীন তথা কাঁধের দুই ফেরেশতা, ‘কারিন’, যমদূত আযরাঈল ফেরেশতা এবং শয়তানও উপস্থিত; এরা সবাই দেখছে, শুনছে, আর সুনির্দিষ্ট যে কোনো সময়ে সংঘটিত মানুষের সকল কর্মের সাক্ষ্য বহন করছে।

উপরন্তু, ‘হাযের’ ও ’নাযের’ কি খোদায়ী (ঐশী) নাম ও গুণাবলীর অন্তর্ভুক্ত? ইমাম আহমদ ফারুকী সেরহিন্দী (মোজাদ্দেদে আলফে সানী)-কে এ মর্মে উদ্ধৃত করা হয় যে তিনি বলেছিলেন: “আল্লাহতা’লা প্রতিটি ও সকল ছোট ও বড় ঘটনা/পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকেফহাল এবং তিনি ’হাযের’ ও ’নাযের’। তাঁর সামনে প্রত্যেকের শরমিন্দা হওয়া উচিত।” [নোট-১৭: ‘মকতুবাত-এ-ইমাম-এ-রব্বানী, ১ম খন্ড, জব্বারী খানকে লেখা ৭৮ নং চিঠি।]

তবে খোদায়ী বৈশিষ্ট্য/গুণাবলী আজ্ঞাস্বরূপ এবং অনুমানেরও অতীত। যুক্তি-তর্ক, সাদৃশ্যপূর্ণ কোনো কিছুর সাথে তুলনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, কিংবা অন্য কোনো রকম ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ঐশী বৈশিষ্ট্য/গুণাবলী উপলব্ধির কাজে ব্যবহার করা হয় না, বরং শরীয়তের মৌলিক দুটো উৎস কুরআন ও হাদীসের মাধ্যমে প্রকাশিত ঐশী প্রত্যাদেশই শুধু এ কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সমস্ত না হলেও বেশির ভাগ আকিদার কেতাবে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আল-মাতুরিদীর আকায়েদ, তাতে এই মৌলিক বিশ্বাসটি উপস্থিত রয়েছে। অতএব, আমরা ‘আল-হাযের’ সম্পর্কে কথা বলতে পারবো না, যখন ‘আল-নাযের’ ‘আশ্ শাহীদের’-ই অনুরূপ, যা’তে ঐশী দৃষ্টিক্ষমতার মানে হলো খোদাতা’লার জ্ঞান। ইমাম বায়হাকী বলেন:

”আশ-শাহীদ তথা সাক্ষীর অর্থ সেই মহান সত্তা (খোদা) যিনি ভালভাবে জ্ঞাত যে সকল সৃষ্টি উপস্থিত থাকা অবস্থায় সাক্ষ্যের মাধ্যমে জানতে সক্ষম.......কেননা, দূরে অবস্থানকারী কোনো মানুষ তার ইন্দ্রিয়গুলোর সীমাবদ্ধতায় ভোগে; পক্ষান্তরে, আল্লাহতা’লা ইন্দ্রিয়ের মুখাপেক্ষী নন এবং তিনি এর অধিকারী মানুষের মতো সীমাবদ্ধও নন।” [নোট-১৯: আল-বায়হাকী কৃত ‘আল-আসমা’ ওয়াস্ সিফাত’ (কাওসারী সংস্করণের ৪৬-৪৭ পৃষ্ঠা; হাশিদী সংস্করণের ১:১২৬-১২৭)।] {‘শাহীদ’ আল-কুরআনে বর্ণিত নবুয়্যতের একটি বৈশিষ্ট্যও}

Hajir najir bye kazi bhai 3?

/ -- মহানবী (দ:) যখন মে’রাজ (ঊর্ধ্বগমনের) রজনীতে সিদরাত আল-মুনতাহা (আসমানী গাছ) পার হয়ে যান এবং তাকদীর লেখায় ব্যস্ত কলমের আওয়াজ শোনেন, তখন জিবরাইল আমীন ফেরেশতা তাঁর সাথে আর ওপরে যেতে পারেন নি [নোট-৮: ইবনে আবি হাতিম ও ইবনে কাসীরের তাফসীর দুটোতে উদ্ধৃত হয়েছে, ‘ফারাফাদানী জিবরীল’; অপর দিকে আল-সালেহীর ‘সুবূল আল-হুদা’ গ্রন্থে (৩:১২৯) বলা হয়েছে,‘ফাতা’আখখারা জিবরীল’ - দুটোরই মানে হলো ‘তিনি (জিবরীল) আমাকে ছেড়ে পেছনে থেকে যান’; দেখুন - আল-মালেকী প্রণীত ‘ওয়া হুয়া বিল্ উফুকি আল-আ’লা’ (পৃষ্ঠা ৭৩, ২৭৯) এবং ‘আল-আনওয়ার আল-বাহিয়্যা’ (পৃষ্ঠা ৭৫-৭৭)]। অথচ সকল সৃষ্টির মাঝে হযরত জিবরাইল আমীন হলেন আল্লাহর বেশ কাছের এবং আহলে সুন্নাতের মতে ফেরেশতাকুল আল্লাহকে দেখে থাকেন। [নোট-৯: আবু আশ্ শায়খ রচিত ‘আল-আ’যামা’ ও ইমাম আস্ সৈয়ুতী লিখিত ’আল-হাবা’ইক’ গ্রন্থগুলো দেখুন। এতে সকল সৃষ্টির ওপর মহানবী (দ:)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও পছন্দনীয় হবার বিষয়টি এবং তাঁর লকব (খেতাব) ‘আফযালুল্ খালক্ক’ সাবেত হয় যা অন্যত্র লিপিবদ্ধ আছে।]

ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) তাঁর ‘শেফা শরীফ’ গ্রন্থের ‘মহানবী (দ:)-এর প্রতি যে সব স্থানে সালাত-সালাম পাঠ করা কাম্য’ শীর্ষক অধ্যায়ে আল-কুরআনে বর্ণিত “অতঃপর যখন কোনো ঘরে প্রবেশ করো তখন তোমাদের আপনজনের প্রতি সালাম করো” (২৪:৬১) - আয়াতটি সম্পর্কে আমর ইবনে দিনার আল-আসরাম (বেসাল ১২৬ হিজরী)-এর ব্যাখ্যা উদ্ধৃত করেন; তিনি বলেন: “যদি ঘরে কেউ না থাকে, তাহলে বলো - ‘আস্ সালামু আলান্ নবীয়্যি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’।” [নোট-১০: ইমাম কাযী আয়ায কৃত ‘শেফা’ (পৃষ্ঠা ৫৫৫-৫৫৬=এসাফ আহল আল-ওয়াফা পৃষ্ঠা ৩৬৯)।] {অনুবাদকের নোট: ইমাম আহমদ রেযা খানের ‘তাফসীরে কানযুল ঈমান’ গ্রন্থে উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায়ও ইমাম কাযী আয়াযের উদ্ধৃতির বিস্তারিত বিবরণ দেয়া আছে।}

মোল্লা আলী কারী উপরোক্ত ‘শেফা শরীফ’ বইটির ব্যাখ্যায় বলেন, “অর্থাৎ, তাঁর (মহানবীর) রুহ মোবারক (পবিত্র আত্মা) সকল মুসলমানের ঘরে উপস্থিত থাকার কারণে (সালাম দেয়া জরুরি)” {আয় লিয়ান্না রুহাহু আলাইহিস্ সালামু হাযিরুন্ ফী বুইউতিল্ মুসলিমীন}। [নোট-১১: মোল্লা আলী কারী প্রণীত ‘শরহে শেফা’ (২:১১৭)।]

ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) আল-আসরাম থেকে যা উদ্ধৃত করেছেন তা ইবনে জারির তাবারী নিজ তাফসীর গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন ইবনে জুরাইজ হতে, তিনি আতাউল্লাহ খুরাসানী (বেসাল ১৩৫ হিজরী) হতে:

”হাজ্জাজ আমার (ইবনে জারির তাবারী) কাছে বর্ণনা করেন ইবনে জুরাইজ থেকে, তিনি বলেন: আমি আতা‘কে (এ প্রসঙ্গে) প্রশ্ন করি, কেউ যদি ঘরে/বাড়িতে না থাকেন, তাহলে কী হবে? তিনি জবাব দেন, ‘সালাম দেবে এ বলে, আস্ সালামু আলান্ নাবীয়্যি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, আস্ সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্ সোয়ালিহীন, আস্ সালামু আলা আহলিল্ বায়তি ওয়া রাহমাতুল্লাহ।’ আমি আবার প্রশ্ন করলাম, কোনো জন-মানবহীন ঘরে প্রবেশের সময় আপনি যা পড়ার জন্যে বল্লেন, তা কোত্থেকে গ্রহণ করেছেন? তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি শুনেছি বিশেষ কারো থেকে গ্রহণ না করেই’।” [নোট-১২: আত্ তাবারী কৃত ‘তাফসীর’(১৮:১৭৩ #১৯৮৯৪)।]

আতাউল্লাহ খুরাসানী একজন পুণ্যবান মুহাদ্দীস (হাদীসবেত্তা), মুফতী (ফতোয়াবিদ) ও ওয়ায়েয (ওয়াযকারী) ছিলেন যাঁর কাছ থেকে এয়াযিদ ইবনে সামুরা শুনেছিলেন নিম্নের বাক্যটি: “যিকরের সমাবেশগুলো হলো হালাল ও হারাম শেখার বিদ্যাপীঠ।” [নোট-১৩: আয্ যাহাবী কর্তৃক তাঁর ’সিয়্যার’ গ্রন্থে বর্ণিত (৬:৩৬০)।] তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে আল-বুখারী, আবু যুরা’, ইবনে হিব্বান, শু’বা, আল-বায়হাকী, আল-উকায়লী ও ইবনে হাজর প্রশ্ন তুল্লেও তাঁকে ’সিকা’ ঘোষণা করেন ইবনে মাঈন, আবু হাতিম, আদ্ দারু কুতনী, আস্ সাওরী, ইমাম মালেক, আল-আওযাঈ, ইমাম আহমদ, ইবনে আল-মাদিনী, এয়াকুব ইবনে শায়বা, ইবনে সাআদ, আল-এজলী, আত্ তাবারানী ও আত্ তিরমিযী; অপর দিকে ইবনে রাজাব সিদ্ধান্ত নেন তিনি “সিকা সিকা”। [নোট-১৪: ইবনে রাজাব রচিত ‘শরহে এলাল আল-তিরমিযী’ (২:৭৮০-৭৮১)। দেখুন আয্ যাহাবীর ‘মিযান’ (৩:৭৩) ও ‘আল-মুগনী’ (১:৬১৪-৬১৫ #৪১২২) যা’তে ড: নূরুদ্দীন এ’তরের নোট সংযুক্ত; এছাড়াও দেখুন আল-আরনাওত ও মা’রুফের ‘তাহরির তাকরিব আল-তাহযিব’ (৩:১৬-১৭ #৪৬০০), যদিও শেষোক্তরা ‘তাওসিক’-কে ইমাম বুখারীর প্রতি ভুলক্রমে আরোপ করেন, আর আল-এ’তর ‘তাদ’ইফ’-কে ভুলক্রমে আরোপ করেন ইমাম আহমদের প্রতি!]

Hajir najir bye kazi bhai 2

উপরোক্ত ভাষ্য নিম্নের প্রামাণিক দলিল দ্বারা সুন্নাহ হিসেবে আরও পাকাপোক্ত হয়:

/ -- হুযূর পাক (দ:) তাঁর বরযখ থেকে উম্মতের সকল কাজ-কর্ম প্রত্যক্ষ করার ব্যাপারে হযরত ইবনে মাসউদ (রা:)-এর নির্ভরযোগ্য বর্ণনা:

রাসূলুল্লাহ (দ:) এরশাদ ফরমান, “আমার হায়াতে জিন্দেগী তোমাদের জন্যে উপকারী, তোমরা তা বলবে এবং তোমাদেরকেও তা বলা হবে। আমার বেসাল শরীফও তদনুরূপ। তোমাদের আমল (কর্ম) আমাকে দেখানো হবে; তাতে ভাল দেখলে আমি আল্লাহর প্রশংসা করবো। আর যদি বদ আমল দেখি তাহলে আল্লাহর দরবারে তোমাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবো।” (হায়াতী খায়রুল্লাকুম তুহাদ্দিসুনা ওয়া ইউহাদ্দাসু লাকুম ওয়া ওয়াফাতী খায়রুল্লাকুম তু’রাদু আ’মালুকুম ’আলাইয়া ফামা রায়াইতু মিন খায়রিন হামিদতু আল্লাহা ওয়া মা রায়াইতু মিন শাররিন এসতেগফারতু আল্লাহা লাকুম) [নোট-৫: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) থেকে আল-বাযযার নিজ ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে (১:৩৯৭) এটা বর্ণনা করেন নির্ভরযোগ্য সনদে, যার সমর্থন রয়েছে ইমাম সৈয়ুতীর ‘মানাহিল আল-সাফা’ (পৃষ্ঠা ৩১ #৮) এবং ‘আল-খাসাইস আল-কুবরা’ (২:২৮১) কেতাবগুলোতে, আল-হায়তামী (৯:২৪ #৯১), এবং আল-ইরাকীর শেষ বই ‘তারহ আল-তাসরিব’ (৩:২৯৭)-এ, যা আল-বাযযারের এসনাদে জনৈক বর্ণনাকারীর নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে তাঁরই উত্থাপিত আপত্তিসম্বলিত ‘আল-মুগনিয়ান হামল আল-আসফার’ গ্রন্থের (৪:১৪৮) খেলাফ। শায়খ আবদুল্লাহ আল-তালিদী তাঁর ‘তাহযিব আল-খাসাইস আল-কুবরা’ পুস্তকে (পৃষ্ঠা ৪৫৮-৪৫৯ #৬৯৪) বলেন যে এর সনদ ইমাম মুসলিমের মানদণ্ড অনুযায়ী নির্ভরযোগ্য; আর শায়খ মাহমূদ মামদুহ স্বরচিত ’রাফ’ আল-মিনারা’ কেতাবে (পৃষ্ঠা ১৫৬-১৬৯) এ সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করে একে সহীহ সাব্যস্ত করেন। তাঁদের দু’জনের শায়খ (পীর) আল-সাইয়্যেদ আবদুল্লাহ ইবনে আস্ সিদ্দিক আল-গোমারী (বেসাল-১৪১৩ হিজরী/১৯৯৩) তাঁর একক বিষয়ভিত্তিক ‘নেহায়া আল-আমল ফী শরহে ওয়া তাসহিহ হাদীস ‘আরদ আল-আমল’ গ্রন্থে এই বর্ণনাকে বিশুদ্ধ বলেছেন। এই ছয় বা তারও বেশি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আল-আলবানী ইমাম কাজী ইসমাইলের রচিত ‘ফযল আল-সালাত’ বইটির ওপর লিখিত হাশিয়া বা নোটে (পৃষ্ঠা ৩৭, নোট-১) এই রওয়ায়াতকে দুর্বল বলেছে। দুর্বল সনদসমূহে হযরত আনাস (রা:) হতে এবং উত্তরাধিকারী বকর ইবনে আব্দিল্লাহ আল-মুযানী হতে সাহাবীর সনদবিহীন দুটো বিশুদ্ধ মুরসাল বর্ণনায় ইসমাইল আল-কাজী (বেসাল-২৮২ হিজরী) এটা উদ্ধৃত করেন নিজ ’ফযল আস-সালাত আলান-নবী’ পুস্তকে (পৃষ্ঠা ৩৬-৩৯ #২৫-২৬)। শেষোক্ত সনদটিকে বিশুদ্ধ বলেছেন মোল্লা আলী কারী তাঁর ‘শরহে শেফা’ কেতাবে (১:১০২); শায়খুল ইসলাম ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী স্বরচিত ‘শেফাউস্ সেকাম’ পুস্তকে এবং তাঁর সমালোচক ইবনে আবদ আল-হাদীর কৃত ‘আল-সারিম আল-মুনকি’ বইয়ে (পৃষ্ঠা ২১৭); এবং আল-আলবানী নিজ ‘সিলসিলা দায়িফা’ গ্রন্থে (২:৪০৫)। তৃতীয় আরেকটি দুর্বল সনদে বকর আল-মুযানী থেকে এটা বর্ণনা করেন আল-হারিস ইবনে আবি উসামা (বেসাল-২৮২ হিজরী) তাঁর ’মুসনাদ’ কেতাবে (২:৮৮৪) যা উদ্ধৃত হয়েছে ইবনে হাজরের ‘আল-মাতালিব আল-আলিয়্যা’ পুস্তকে (৪:২৩); আল-মানাবীর রচিত ‘ফায়য আল-কাদির’ (৩:৪০১ #৩৭৭১) কেতাবেও উদ্ধৃত হয়েছে যে ইবনে সা’আদ এটা তাঁর ‘তাবাকাত’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। ইমাম কাজী আয়ায নিজ ‘শেফা’ পুস্তকে (পৃষ্ঠা ৫৮ #৬) এবং আস্ সাখাভী তাঁর ‘আল-কওল আল-বদী’ বইয়ে এটা উদ্ধৃত করেন। আল-আলবানী একে দুর্বল বলার কারণ হিসেবে দেখায় যে কতিপয় হাদীসের বিশারদ মুরজি’ হাদীসবেত্তা আবদুল মজীদ ইবনে আবদিল আযীয ইবনে আবি রাওওয়াদের স্মৃতিশক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তবে ইমাম মুসলিম নিজ সহীহ গ্রন্থে তাঁর সনদ বহাল রাখেন; আর এয়াহইয়া ইবনে মা’ঈন, ইমাম আহমদ, আবু দাউদ, আন্ নাসাঈ, ইবনে শাহীন, আল-খলিলী ও আদ্ দারু কুতনী তাঁকে ‘সিকা’ হিসেবে ঘোষণা দেন; অপর দিকে শায়খ মামদুহ প্রণীত ‘রাফ’ আল-মিনারা’ (পৃষ্ঠা ১৬৩, ১৬৭) কেতাবে বিবৃত হয়েছে যে আয্ যাহাবী তাঁকে নিজ ‘মান তুকুল্লিমা ফীহি ওয়া হুয়া মুওয়াসসাক’ (পৃষ্ঠা ১২৪) পুস্তকে তালিকাবদ্ধ করেন। আল-আরনাওত এবং মা’রুফ তাঁর ‘তাহরির আল-তাকরিব’ গ্রন্থে (২:৩৭৯ #৪১৬০) তাঁকে ‘সিকা’ হিসেবে ঘোষণা করেন; এর পাশাপাশি একই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন ড: নূরুদ্দীন ‘এতর যা উদ্ধৃত হয়েছে তাঁর কৃত আয্ যাহাবীর ‘মুগনী’ সংস্করণে (১:৫৭১ #৩৭৯৩) এবং ড: খালদুন আল-আহদাব নিজ ‘যাওয়াইদ তারিখ বাগদাদ’ পুস্তকে (১০:৪৬৪)। যদি আল-আলবানী কর্তৃক রওয়ায়াতটির এই নিম্ন পর্যায়ভুক্তিকে তর্কের খাতিরে মেনেও নেয়া হয়, তথাপিও দুর্বল মুসনাদ বর্ণনাটির সাথে নির্ভরযোগ্য অপর মুরসাল বর্ণনা যাকে সহীহ বলেছে আলবানী স্বয়ং, তার সমন্বয় সাধন করলে ’হাসান’ বা ’সহীহ’ হিসেবে এটা চূড়ান্ত মান অর্জন করে, এবং মোটেও ‘যয়িফ’ সাব্যস্ত হয় না। উপরন্তু,  শায়খ ইসমাইল আল-আনসারীকে খণ্ডন করার চেষ্টায় আলবানী যে ’কিতাব আল-শায়বানী’ শীর্ষক বই (১:১৩৪-১৩৫) লিখে, তা থেকে শায়খ মামদুহ আলবানীর নিজের কথাই উদ্ধৃত করেন: “নির্ভরযোগ্য মুরসাল হাদীস চার মযহাবে প্রামাণ্য দলিল হিসেবে গৃহীত এবং এ ছাড়াও উসূলে হাদীস ও উসূলে ফেকাহর ইমামদের কাছে গ্রহণযোগ্য। অতএব, এটা প্রত্যেক যুক্তিসঙ্গত চিন্তাধারার মানুষের কাছে সুস্পষ্ট যে কেবল মুরসাল হওয়ার কারণে এ ধরনের হাদীস দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয় বলাটা-ই সমর্থনযোগ্য নয়।” আলবানীর স্ববিরোধিতাই শুধু নয়, তার নিজেকে নিজে পূর্ণ খণ্ডনের বহু উদাহরণেরও একটি এটি।



শায়খ হাসানাইন মোহাম্মদ মাখলুফ তাঁর প্রণীত ‘ফাতাওয়া শরীয়্যা’ (১:৯১-৯২) গ্রন্থে লিখেন: “এই হাদীস বোঝায় যে মহানবী (দ:) তাঁর হায়াতে জিন্দেগীতে তাঁরই উম্মতের জন্যে এক বৃহৎ কল্যাণ, কেননা মহানবী (দ:)-এর উপস্থিতির গোপন রহস্য দ্বারা আল্লাহতা’লা এই উম্মতকে পথভ্রষ্টতা, বিভ্রান্তি ও মতানৈক্য হতে রক্ষা করেছেন এবং তাঁরই মাধ্যমে সুস্পষ্ট সত্যের দিকে মানুষকে পরিচালিত করেছেন; আর মহানবী (দ:)-কে নিজের কাছে ফিরিয়ে নেয়ার পরও তাঁর সদগুণ ও কল্যাণময়তার সাথে আমাদের সম্পৃক্ততা অবিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং তাঁর এই উপকারিতা সম্প্রসারিত আকারে আমাদেরকে ছেয়ে আছে। তাঁর উম্মতের কর্ম (আমল) তাঁকে প্রতিদিন দেখানো হয়, আর ভাল দেখলে তিনি আল্লাহর প্রশংসা করেন; ছোট পাপগুলোর জন্যে তিনি আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনার পাশাপাশি বড় পাপগুলো যাতে না হয় তার জন্যেও দোয়া করেন; এটা আমাদের জন্যে পরম ভালাই। অতএব, ‘তাঁর প্রকাশ্য জিন্দেগীতে যেমন উম্মতের জন্যে মঙ্গল বিদ্যমান, তেমনি তাঁর বেসালের পরও তা জারি আছে।’ অধিকন্তু, হাদীসের দ্বারা সাবেত (প্রমাণিত) যে তিনি তাঁর মোবারক রওযায় এক বিশেষ ’অন্তর্বর্তীকালীন’ জীবনে জীবিত যা আল-কুরআনের একাধিক আয়াতে বর্ণিত শহীদদের পরকালীন জীবনের চেয়েও অনেক শক্তিশালী। এই দুই ধরনের পরকালীন জীবনের প্রকৃতি এর দাতা, মহান আল্লাহতা”লা ছাড়া জানা সম্ভব নয়। আল্লাহ সব কিছুই করতে সক্ষম। মহানবী (দ:)-এর প্রতি সম্মানসূচক উপহার হিসেবে তাঁরই উম্মতের সকল আমল ও উম্মতকে তাঁর সামনে দৃশ্যমান করার ব্যাপারটি পুরোপুরিভাবে যুক্তিগ্রাহ্য এবং তা (সহীহ) রওয়ায়াতেও এসেছে। এর অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই; আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে তাঁর নূরের (জ্যোতির) দিকে হেদায়াত দেন; আর আল্লাহ-ই সবচেয়ে ভাল জানেন।”]

/ -- ’আল-মালাউল আলা’ (ঐশী সান্নিধ্য) সম্পর্কে হযরত মু’য়ায ইবনে জাবাল (রা:) ও অন্যান্যদের বর্ণিত বিশুদ্ধ হাদীস:

রাসূলুল্লাহ (দ:) এরশাদ ফরমান, ”আমার প্রভু সুন্দরতম সুরতে আমার কাছে আসেন”; বর্ণনাকারী এ পর্যায়ে বলেন, “আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেন, ‘আমার স্বপ্নে’।” অতঃপর মহানবী (দ:) আরও এরশাদ ফরমান, “আল্লাহতা’লা আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ’আল-মালাউল আলা’-এর মানে কী [নোট-৬: অর্থাৎ, ‘ফেরেশতাকুল যাঁদের ঐশী সান্নিধ্য দেয়া হয়েছে’; এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন ইবনে আল-আসির তাঁর ‘আন্ নেহায়া’ পুস্তকে, যা অন্যান্যরাও ব্যক্ত করেছেন]। আমি বল্লাম, আমি জানি না। এমতাবস্থায় তিনি আমার দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে তাঁর হাত মোবারক রাখেন, আর আমি আমার অন্তঃস্থলে এক স্নিগ্ধ পরশ অনুভব করি; অতঃপর পূর্ব থেকে পশ্চিমে অবস্থিত যাবতীয় জ্ঞান আমার অধিকারে আসে।” [নোট-৭: এই হাদীস ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেন তিনটি সনদে, যার দু’টি হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে। ইমাম তিরমিযী ওই দুটোর প্রথমটিতে বলেন, ‘আসমান ও জমিনে অবস্থিত সব কিছুর জ্ঞান’; দ্বিতীয়টিকে তিনি ‘হাসান গরিবের’ পর্যায়ভুক্ত করেন। অপর এসনাদ এসেছে হযরত মু’য়ায ইবনে জাবাল (রা:) থেকে (হাসান সহীহ হিসেবে), যা সুস্পষ্টভাবে বিবৃত করে যে এটা ঘটেছিল হুযূর পাক (দ:)-এর স্বপ্নে। আল-বুখারী পরের এসনাদকে ‘হাসান সহীহ’ হিসেবে ঘোষণা দেন, যা আত্ তিরমিযী তাঁর ’সুনান’ ও ‘এলাল’ গ্রন্থ দুটোতে বর্ণনা করেছেন; আর ইবনে হাজর কৃত ‘আল-এসাবা’ গ্রন্থে (২:৩৯৭) ব্যক্ত মতানুযায়ী এটা অন্যান্য সব সনদ থেকে শ্রেয় এই কারণে যে এর সম্পর্কে মুহাদ্দীসবৃন্দের মধ্যে কোনো মতানৈক্য নেই (দেখুন - ‘আসমা’ হাশেদী সংস্করণ ২:৭৮)। শাকির ও আল-যাইনের বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত শিথিল মানদণ্ড অনুযায়ী ইমাম আহমদও চারটি নির্ভরযোগ্য সনদে এটা বর্ণনা করেছেন: ওগুলোর একটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে যার মধ্যে যুক্ত ছিল এই কথা - “আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেন, ‘আমার স্বপ্নে’” (শাকির সংস্করণ ৩:৪৫৮ #৩৪৮৪=আল-আরনাওত সংস্করণ ৫:৪৩৭-৪৪২ #৩৪৮৩ এসনাদুহু যাইফ); হযরত মু’য়ায (রা:) থেকে অপর এক রওয়ায়াত যা ইবনে ‘আদীর ’আল-কামিল’ (৬:২২৪৪) গ্রন্থের ভাষ্যানুযায়ী ইমাম আহমদ সুস্পষ্টভাবে সহীহ ঘোষণা করেছেন এবং তাতে এই বক্তব্যও যুক্ত ছিল, “ঘুম থেকে জেগে দেখি আমি আমার প্রভুর সান্নিধ্যে” (আল-যাইন সংস্করণ ১৬:২০০ #২২০০৮); আর অবশিষ্ট দুটো নামহীন সাহাবীদের বরাতে বর্ণিত যার মধ্যে মহানবী (দ:)-এর ঘুমে না জাগ্রতাবস্থায় তা উল্লেখিত হয় নি (আল-যাইন সংস্করণ ১৩:৯৩-৯৪ #১৬৫৭৪=আল-আরনাওত সংস্করণ ২৭:১৭১-১৭৪ #১৬৬২১ ইসনাদুহু যাইফ মুদতারিব; আল-যাইন সংস্করণ ১৬:৫৫৬ #২৩১০৩)। শেষোক্ত এসনাদকে আল-হায়তামী নির্ভরযোগ্য বলেছেন এবং এর পাশাপাশি আত্ তাবারানী কর্তৃক ‘আল-কবীর’ গ্রন্থে (২০:১০৯ #২১৬, ২০:১৪১ #২৯০) উদ্ধৃত ও আল-বাযযার প্রণীত ‘মুসনাদ’ কেতাবে বর্ণিত অন্যান্য রওয়ায়াতকেও তিনি তা-ই বলেছেন; আর তিনি আত্ তাবারানীর ‘আল-কবীর’ (৮:২৯০ #৮১১৭) গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আবু উমামা (রা:)-এর এসনাদকেও ‘হাসান’ বলেছেন। এর জন্যে দেখুন ‘মজমাউল যাওয়াইদ’ (৭:১৭৬-১৭৯)। আত্ তিরমিযী ও ইমাম আহমদের সাতটি রওয়ায়াতকে শায়খ আবদুল কাদের ও শায়খ শু’য়াইব আল-আরনাওত সহীহ বলেছেন ইবনে আল-কাইয়েমের ‘যাদ আল-মা’আদ’ (৩:৩৩-৩৪, নোট-৪) গ্রন্থের ওপর কৃত তাঁদের সংস্করণে। হযরত জাবের ইবনে সামুরা (রা:) থেকে ইবনে আবি ‘আসিমও নিজ ‘আস্ সুন্নাহ’ (পৃষ্ঠা ২০৩ #৪৬৫) পুস্তকে এই হাদীস বর্ণনা করেন যার সনদ আলবানীর মতে ’হাসান’। হযরত আবদুর রহমান ইবনে ‘আইশ (রা:) থেকে এটা আরও বর্ণনা করেছেন আদ্ দারিমী নিজ ‘মুসনাদ’ (২:১৭০ #২১৪৯) কেতাবে এবং দুটো এসনাদে আত্ তাবারানী স্বরচিত ‘আল-আহাদ ওয়াল মাসানী’ (৫:৪৮-৫০ #২৫৮৫-২৫৮৬) বইয়ে; এ ছাড়াও অপর এক সনদে তাঁর ‘মুসনাদ আল-শামিয়ীন’ পুস্তকে (১:৩৩৯ #৫৯৭)। হযরত উম্মে আত্ তোফায়েল (রা:) থেকেও আত্ তাবারানী নিজ ‘আল-আহাদ’ (৬:১৫৮ #৩৩৮৫) গ্রন্থে আরেকটি বর্ণনা এনেছেন যা ঘোষণা করে, “আমি আমার প্রভুকে দাড়িবিহীন যুবকের সুন্দরতম সুরতে দেখেছি”। তবে এই বর্ণনা আয্ যাহাবী তাঁর কৃত ‘তাহযিব আল-মওদু’আত’ (পৃষ্ঠা ২২ #২২) বইয়ে প্রত্যাখ্যান করেন। এটা সাহাবী হযরত আবু রাফি’ (রা:) থেকে (আল-এসাবা ৭:১৩৪ #৯৮৭৫) আত্ তাবারানী উদ্ধৃত করেন স্বরচিত ‘আল-কবীর’ গ্রন্থে  (১:৩১৭ #৯৩৮)। আবু এয়ালা-ও তাঁর ‘মুসনাদ’ (৪:৪৭৫ #২৬০৮) কেতাবে এই বর্ণনা উদ্ধৃত করেন হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে। এই হাদীসের কিছু ’হাসান’ পর্যায়ের বর্ণনায়, উদাহরণস্বরূপ হযরত আবদুর রহমান ইবনে আইয়্যাশ (রা:) হতে আত্ তাবারানী এবং হযরত আবু উবায়দা ইবনে আল-জাররাহ (রা:) হতে আল-খতীব নিজ ‘তারিখে বাগদাদ’ (৮:১৫১), ’আমার প্রভু আমার কাছে আসেন’ এই কথাটির পরিবর্তে ‘আমি আমার প্রভুকে দেখি’ বাক্যটি যুক্ত আছে; এরই ভিত্তিতে ইবনে কাসীরের সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠিত, যা ইতিপূর্বে উদ্ধৃত হয়েছে। আল-আহদাব নিজ ‘যাওয়াইদ তারিখ বাগদাদ’ (৬:২৫১-২৫৩) গ্রন্থে এবং আল-হায়তামীও সর্ব-হযরত আবু উবায়দা ইবনে আল-জাররাহ (রা:), ইবনে উমর (রা:), আবু হুরায়রা (রা:), আনাস (রা:), সওবান (রা:) ও আবু উমামা (রা:)-এর বরাতে এই হাদীস বর্ণনা করেন, যার ফলে অন্ততঃ এগারোজন সাহাবীর (উম্মে আত্ তোফায়েল বাদে) সূত্র এতে রয়েছে। এই হাদীসের বিভিন্ন সনদ ও বর্ণনার তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণ এবং এর ওপর আলোচনা করেছেন ইবনে রাজাব তাঁর একক বিষয়ভিত্তিক ’এখতেয়ার আল-আওলা ফী শরহে হাদীস এখতেসাম আল-মালা’ আল-’আলা’ গ্রন্থে (জাসিম আল-দাওসারী সংস্করণ, কুয়েত, দারুল্ আকসা, ১৪০৬)। আরও দেখুন ‘ইবনে আসির কৃত ‘জামে’ আল-উসূল’ (৯:৫৪৮-৫৫০)। এই হাদীসকে সহীহ-মানের চেয়ে নিম্ন পর্যায়ের যাঁরা বিবেচনা করেছেন তাঁরা হলেন আল-বায়হাকী নিজ ‘আল-আসমা’ ওয়া আল-সিফাত’ (কাওসারী সংস্করণ পৃষ্ঠা ৩০০, হাশিদী সংস্করণ ২:৭২-৭৯) কেতাবে, ইবনে আল-জাওযী স্বরচিত ‘আল-এলাল আল-মুতানাহিয়া’ (১:৩৪) পুস্তকে, ইবনে খুযাইমা তাঁর আত্ তাওহীদ (পৃষ্ঠা ২১৪-২২১) বইয়ে এবং আদ্ দারু কুতনী নিজ ‘এলাল’ (৬:৫৬) গ্রন্থে। আস্ সাককাফ এতো দূর গিয়েছিলেন যে তিনি ইবনে আল-জাওযীর ‘দাফ’ শুবাহ আত্ তাশবিহ’ পুস্তকের ওপর নিজস্ব সংস্করণে এই হাদীসকে বানোয়াট বলেছেন - ‘আকওয়াল আল-হুফফায আল-মানসুরা লি বয়ান ওয়াদ’ হাদীস রায়াইতু রাব্বী ফী আহসানি সুরা’।]

Hajir najir bye kazi bhai

অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

[আমার পীর ও মুরশীদ চট্টগ্রাম আহলা দরবার শরীফের সৈয়দ মওলানা এ, জেড, এম, সেহাবউদ্দীন খালেদ সাহেব কেবলা (রহ:)-এর পুণ্য স্মৃতিতে উৎসর্গিত]

এবং জেনে রেখো, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল রয়েছেন” (সূরা হুজুরাত, ০৭)। [নোট-১: হাজের-নাজের-বিষয়ক এই সংযোজনী শায়খ হিশাম কাব্বানী কৃত Encyclopedia of Islamic Doctrine-এর ৩য় খণ্ডের ”মহানবী (দ:)-এর অদৃশ্য জ্ঞান” শীর্ষক অনুচ্ছেদে উপস্থাপিত বক্তব্যের সম্পূরণ।]
  
”আর তারা পায় না তাঁর (ঐশী) জ্ঞান থেকে, কিন্তু যতোটুকু তিনি ইচ্ছা বা মর্জি করেন” (সূরা বাকারা, ২৫৫)।

”অদৃশ্যের জ্ঞাতা (আল্লাহ), সুতরাং আপন অদৃশ্যের ওপর কাউকে ক্ষমতাবান করেন না (কেবল) আপন মনোনীত রাসূলবৃন্দ (আ:) ব্যতিরেকে” (সূরা জ্বিন, ২৬-৭)।

”এবং মহানবী (দ:) অদৃশ্য বিষয় বর্ণনা করার ব্যাপারে কৃপণ নন” (সূরা তাকভীর, ২৪)। [ইমাম আহমদ রেযা খানের প্রণীত ‘তাফসীরে কানযুল ঈমান’ হতে গৃহীত অনুবাদ]

ইবনে খাফিফ আশ-শিরাযী তাঁর ‘আল-আকিদা আস্ সহিহা’ (৪৮ পৃ:) গ্রন্থে বলেন:

”রাসূলুল্লাহ (দ:) যা (এ যাবত) ঘটেছে এবং যা ঘটবে সে সম্পর্কে জ্ঞানী, আর তিনি গায়বের তথা অদৃশ্যের খবর দিয়েছেন” (ওয়া [ইয়া’তাকিদু] আন্নাহুল-আ’লিমু বি-মা কানা ওয়া মা ইয়াকুনু ওয়া আখবারা ’আন্ ইলমিল গায়ব)

মানে হলো, আল্লাহ তাঁকে যা কিছু জানিয়েছেন তা জানার অর্থে। আমাদের শিক্ষক মহান ফকীহ শায়খ আদিব কাল্লাস বলেন: “লক্ষ্য করুন, ইবনে খাফিফ এ কথা বলেন নি ’তিনি (এ যাবত) যা ঘটেছে এবং যা ঘটবে সবই জানেন।”

শায়খ আবদুল হাদী খারসা আমাদের জানান:

রাসূলে পাক (দ:) সকল বিষয়ের জ্ঞান রাখেন এবং সৃষ্টিজগতকে সেভাবে জানেন যেমনভাবে কোনো কক্ষে উপবেশনকারী ব্যক্তি ওই কক্ষ সম্পর্কে জানেন। কোনো কিছুই তাঁর থেকে গোপন নয়। কুরআন মজীদের দুটো আয়াত একে সমর্থন দেয়; ১মটি এরশাদ ফরমায় - “তবে কেমন হবে যখন আমি (আল্লাহ) প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করবো, এবং হে মাহবুব, আপনাকে তাদের সবার ব্যাপারে সাক্ষী ও পর্যবেক্ষণকারীস্বরূপ উপস্থিত করবো?” [সূরা নিসা, ৪১]; আর ২য়টি এরশাদ করে - “এবং কথা হলো এ রকম যে আমি (আল্লাহ) তোমাদেরকে (মুসলমানদেরকে) সব (নবীগণের) উম্মতের মাঝে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি যাতে তোমরা মানব জাতির ব্যাপারে সাক্ষী হও। আর রাসূলে খোদা (দ:) হন তোমাদের ব্যাপারে সাক্ষী”[সূরা বাকারা, ১৪৩]। মহানবী (দ:) যা জানেন না বা দেখেন নি সে সম্পর্কে তো তাঁকে সাক্ষ্য দেয়ার জন্যে বলা হবে না।

ওপরের এই প্রমাণ মহানবী (দ:)-এর বিশুদ্ধ হাদীস বা বাণী দ্বারা সমর্থিত যা বর্ণনা করেছেন হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) সহীহ, সুনান ও মাসানিদ গ্রন্থগুলোতে:

হুযূর পূর নূর (দ:) এরশাদ ফরমান, “নূহ (আ:) ও তাঁর কওম (জাতি) আসবেন (বর্ণনান্তরে তাদেরকে ‘আনা হবে’) এবং আল্লাহতা’লা তাঁকে জিজ্ঞেস করবেন, ‘তুমি কি আমার ঐশী বাণী (ওদেরকে) পৌঁছে দিয়েছিলে?’ তিনি উত্তর দেবেন, ‘জ্বি, পৌঁছে দিয়েছিলাম, হে মহান প্রতিপালক।’ অতঃপর তিনি ওই উম্মতকে জিজ্ঞেস করবেন, ‘(আমার বাণী) কি তিনি তোমাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন?’ আর তারা বলবে, ‘না, কোনো নবী আমাদের কাছে আসেন নি।’ এমতাবস্থায় আল্লাহ পাক হযরত নূহ (আ:)-কে বলবেন, ‘তোমার সাক্ষী কে?’ অতঃপর তিনি উত্তর দেবেন, ‘হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ও তাঁর উম্মত।’ এরই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সাক্ষ্য দেবো যে নূহ (আ:) ঐশী বাণী পৌঁছে দিয়েছিলেন, আর এ-ই হলো খোদার বাণীর অর্থ - ‘এবং কথা এই যে আমি তোমাদেরকে সব উম্মতের মাঝে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি ( উম্মাতান ওয়াসাতান বা মর্যাদাবান জাতি হিসেবে) যাতে তোমরা মানব জাতির ব্যাপারে সাক্ষী হও’(২:১৪৩)। আল-ওয়াসাত-এর মানে আল-’আদল তথা ন্যায়বান।” [নোট-২: আল-বুখারী এ হাদীস তিনটি সনদে বর্ণনা করেছেন; এ ছাড়াও তিরমিযী (হাসান সহীহ), এবং ইমাম আহমদ।]


ওপরের বর্ণনার ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে হাজর (রহ:) তাঁর ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে বলেন যে ইমাম আহমদ ও ইবনে মাজাহ বর্ণিত একই এসনাদের অনুরূপ আরেকটি রওয়ায়াতে পরিস্ফুট হয় যে (মহানবীর) ওই ধরনের সাক্ষ্য সকল (নবীর) উম্মতের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, শুধু নূহ (আ:)-এর জাতির ক্ষেত্রে নয়:

রাসূলে খোদা (দ:) এরশাদ ফরমান, “পুনরুত্থান দিবসে কোনো নবী (আ:) (তাঁর উম্মত হিসেবে) একজনকে সাথে নিয়ে আসবেন; আরেকজন দুইজন (উম্মত) নিয়ে আসবেন; অন্যান্য নবী (আ:) আরও বেশি উম্মত আনবেন। তখন প্রত্যেক নবী (আ:)-এর উম্মতদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করা হবে, ‘এই নবী (আ:) কি তোমাদের কাছে ঐশী বাণী পৌঁছে দিয়েছেন?’ তারা উত্তর দেবে, ‘না।’ অতঃপর ওই নবী (আ:)-কে জিজ্ঞেস করা হবে, ‘আপনি কি আপনার উম্মতের কাছে ঐশী বাণী পৌঁছে দিয়েছেন?’ তিনি বলবেন, ‘হ্যাঁ।’ এরপর তাঁকে জিজ্ঞেস করা হবে, ‘আপনার সাক্ষী কে?’ তিনি উত্তর দেবেন, ‘মহানবী (দ:) ও তাঁর উম্মত।’ এমতাবস্থায় মহানবী (দ:) ও তাঁর উম্মতকে ডেকে জিজ্ঞেস করা হবে, ‘এই নবী (আ:) কি তাঁর উম্মতের কাছে ঐশী বাণী পৌঁছে দিয়েছিলেন?’ উম্মতে মোহাম্মদী উত্তর দেবেন, ‘হ্যাঁ।’ তাঁদেরকে প্রশ্ন করা হবে, ‘তোমরা কীভাবে জানো?’ তাঁরা বলবেন, ‘আমাদের মহানবী (আ:) এসে আমাদেরকে জানিয়েছেন যে আম্বিয়া (আ:) তাঁদের উম্মতদের কাছে ঐশী বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।’ আর এটাই হলো ওই খোদায়ী কালামের অর্থ যা’তে ঘোষিত হয়েছে, ‘আমি (আল্লাহ) তোমাদের ( মুসলমানদের)-কে সকল উম্মতের মাঝে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি যাতে তোমরা সমগ্র মানবজাতির ব্যাপারে সাক্ষী হতে পারো এবং মহানবী (দ:)-ও তোমাদের পক্ষে সাক্ষী থাকেন’ (আল-কুরআন, ২:১৪৩)। এই শ্রেষ্ঠত্ব বলতে আল্লাহ বুঝিয়েছেন ন্যায়পরায়ণতাকে (ইয়াকুলু আদলান্)।”

মোল্লা আলী কারী ‘মেশকাতুল মাসাবিহ’ গ্রন্থে হযরত নূহ (আ:)-এর উল্লেখিত ওই বর্ণনার ব্যাখ্যায় বলেন:

”আর তিনি (নূহ আলাইহিস সালাম) জবাব দেবেন, ‘মহানবী (দ:) ও তাঁর উম্মত’; অর্থাৎ, উম্মতে মোহাম্মদী হবেন সাক্ষী এবং রাসূলুল্লাহ (দ:) তাঁদের (সত্যবাদিতার) পক্ষে সাক্ষ্য দেবেন। তবে তাঁর নাম মোবারক প্রথমে উচ্চারিত হওয়াটা সম্মানার্থে (লিত্ তা’যিম)। এটা সম্ভব যে তিনি নিজেও হযরত নূহ (আ:)-এর পক্ষে সাক্ষ্য দেবেন, কেননা এর প্রেক্ষিত হচ্ছে সাহায্য করার; আর আল্লাহতা’লা এরশাদ ফরমান, ‘যখন আল্লাহ তাঁর আম্বিয়া (অ:)-দের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন’, এবং [মহানবী (দ:) সম্পর্কে] তিনি আয়াতের শেষে বলেন, ‘তোমরা (আম্বিয়াবৃন্দ) তাঁর প্রতি ঈমান আনবে ও তাঁকে সাহায্য করবে’ (আল-কুরআন, ৩:৮১)। এই বিষয়ে লক্ষ্য করার মতো হঁশিয়ারি আছে এই মর্মে যে, যখন আম্বিয়া (আ:)-দেরকে ও তাঁদের মধ্যে সর্বপ্রথমে হযরত নূহ (আ:)-কে ডাকা হবে এবং তাঁদের পক্ষে সাক্ষী হিসেবে এই উম্মত (-এ-মোহাম্মদীয়া)-কে পেশ করা হবে, তখন রাসূলে পাক (দ:) ওই চূড়ান্ত বিচারালয়ে উপস্থিত থাকবেন ও সাক্ষ্য দেবেন (ওয়া ফীহি তাম্বিহুন নাবিহুন আন্নাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামা হাযিরুন নাযিরুন ফী যালিকাল আরদিল আকবর )।” [নোট-৩: মোল্লা কারী কৃত ‘মিরকাত শরহে মিশকাত’, দারুল ফিকর ১৯৯৪ সংস্করণ ৯:৪৯৩=এমদাদিয়া মুলতান (পাকিস্তান) সংস্করণ ১০:২৬৩-২৬৪=কায়রো ১৮৯২ সংস্করণ ৫:২৪৫]

কুরআন মজীদে অন্যান্য আয়াত আছে যা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করে যে হুযূর পূর নূর (দ:) মানুষের আমল (কর্ম) দেখেন এবং শোনেন। আল্লাহ এরশাদ ফরমান: “এবং জেনে রেখো, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর রাসূল (দ:) রয়েছেন” (আল-কুরআন ৪৯:৭)। “অতঃপর তোমাদের কার্যকলাপ প্রত্যক্ষ করবেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (দ:)” [ওয়া সাএয়ারাল্লাহু আমালাকুম ওয়া রাসূলুহু - আল্ কুরআন ৯:৯৪]  এবং “আপনি বলুন: কাজ করো; অতঃপর তোমাদের কাজ প্রত্যক্ষ করবেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (দ:) এবং মো’মেন মুসলমানবৃন্দ” (আল-কুরআন ৯:১০৫) -- ওপরের এই আয়াতগুলোতে রাসূলে পাক (দ:)-এর দর্শনক্ষমতাকে একদিকে মহান রাব্বুল আলামীনের দর্শনক্ষমতার সাথেই বর্ণনা করা হয়েছে, যে মহান স্রষ্টার দর্শনক্ষমতা সব কিছুকেই বেষ্টন করে রেখেছে, আর অপর দিকে, সকল জীবিত মো’মেন তথা বিশ্বাসী মুসলমানের দৃষ্টিশক্তির সাথেও বর্ণনা করা হয়েছে।

শায়খ আব্দুল্লাহ ইবনে মোহাম্মদ আল-গোমারী বলেন:

”আল্লাহতা’লা ঘোষণা করেন, ‘হে ঈমানদারবৃন্দ! আল্লাহকে ভয় করো এবং ত্যাগ করো যা অবশিষ্ট রয়েছে সুদের (প্রথার), যদি মুসলমান হও। অতঃপর যদি তোমরা এই আজ্ঞানুরূপ না করো, তবে নিশ্চিত বিশ্বাস রেখো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে (তোমাদের) যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে’(আল-কুরআন ২:২৭৮-৯)। এই আয়াতে করীমা ইঙ্গিত করে যে মহানবী (দ:) তাঁর মোবারক রওযায় জীবিত আছেন এবং তাঁর দোয়া দ্বারা সুদের কারবারিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন (অর্থাৎ, প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছেন); অথবা তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন কবর-জীবনের সাথে খাপ খায় এমন যে কোনো ব্যবস্থা (অর্থাৎ, আধ্যাত্মিক ক্ষমতা) দ্বারা ওই পাপীদের শাস্তি দিচ্ছেন। এই আয়াত হতে আমি যে সিদ্ধান্ত টানলাম, আমার আগে এই রকম সিদ্ধান্ত কেউ টেনেছেন বলে আমার জানা নেই।” [নোট-৪: আল-গোমারী কৃত ‘খাওয়াতিরে দিনিইয়্যা (১:১৯)।]

Hajir najir 4

দিকেই তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে হুযুর আলাইহিস সালাম না কোন ইতিহাসবেত্তার সান্নিধ্যে ছিলেন না শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নত কোন গোত্রের মধ্যে লালিত-পালিত হয়েছেন। এমতাবস্থায় তাঁর পক্ষে একমাত্র নূরে নবুওয়াতের মাধ্যম ছাড়া অন্য কোন ভাবে জ্ঞানার্জনের কোন উপায় ছিল কি?
(১২) اَلنَّبِىُّ اَوْلَى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْ فُسِهِمْ
[নবী মুসলমানদের কাছে তাদের প্রাণের চেয়েও নিকটতর।] দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মওলবী কাসেম সাহেব তার রচিত তাহযীরুন নাস গ্রন্থের ১০ পৃষ্ঠায় লিখেছেনঃ এ আয়াতের اَوْلى  শব্দের অর্থ হচ্ছে নিকটতর। তাহলে এ আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় নবী মুসলমানদের কাছে তাঁদের প্রাণের চেয়েও নিকটতর। আমাদের নিকটতম হচ্ছে আমাদের প্রাণ; এ প্রাণ থেকেও নিকটতর হচ্ছেন নবী আলাইহিস সালাম। বলা বাহুল্য যে, অতি নিকটে অবস্থিত বস্তু দৃষ্টিগোচর হয় না।
অত্যধিক নৈকট্যের কারনে আমরা তাকে (প্রয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চোখে দেখতেপাই না।
বিঃদ্রঃ এখানে কিছু সংখ্যক লোক আপত্তি উত্থাপন করে থাকেন যে আপনারা যেহেতু মু্ক্কাল্লিদ আপনারদের জন্য কুরআনের আয়াত ও হাদিছ সমূহ থেকে দলীল প্রমাণ উপস্থাপন করাতো জায়েয নয়।
একজন মুকাল্লিদের উচিত তার বক্তব্যের সমর্থনে (মুজাহিদ ইমাম) এর উক্তি পেশ করা। সুতরাং আপনার কেবল আবু হানিফা (রহঃ) এর উক্তিই পেশ করতে পারেন। এর উত্তর কয়েকভাবে দেয়া যায়। (ক)আপনারা নিজেরাই যেহেতু হাযির ও নাজির না হওয়ার আকীদা পোষন করেন,সেহেতু আপনাদের উচিত ছিল আপন আকীদা এর সমর্থনে ইমাম সাহেব (রহঃ) এর উক্তি উপস্থাপন করা।
(খ) আমি তকলীদের আলোচনায় পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে আকীদা সম্পর্কিত কোন মাসআলায় তাকলিদ হয় না কেবলমাএ ফকীহগণের গবেষণালব্ধ মাসায়েলের ক্ষেত্রে তকলীদ প্রযোজ্য হয়। আলোচ্য বিষয়টি হচ্ছে আকীদা এর একটি মাসআলা।
(গ) মুকাল্লিদ সুস্পষ্ট আয়াত ও হাদিছ সমূহ থেকে দলিল প্রমান উস্থাপন করতে পারে। তবে হ্যা এসব দলীলের ভিত্তিতে নিজে মাসায়েল বরং করতে পারে না। এ প্রসঙ্গে তহাবী শরীফে উল্লেখিত আছেঃ
وَمَا وُهِمَ الْاَحْكَامُ مِنْ تَّحْوِ الظَّاهِرِ وَالنَّصِّ وَالْمُفَسَّرِ فَلَيْسَ مُخْتَصًّا بِه ( اَىْ بِالْمُجْتَهِدِ) بَلْ يَقْدِرُ عَلَيْهِ الْعُلَمَاءُ الْاَعَمُّ
যে সমস্ত আহকাম বা শরীয়ত বিধি কুরআনের যাহির নাস ওমুফাসসার ইত্যাদি প্রকৃতির আয়াত থেকে সরাসরি সুস্পষ্টভাবে বোধগম্য হয় না। এমন কথা বলা যায় না। এসব মাসায়েল বরং সাধারণ আলিমগণও বের করার সামর্থ রাখেন সুবিখ্যাত মুসাল্লামুছ ছবুত নামক উসুলে ফিকহ এর গ্রন্থে উল্লেখিত আছে-
وَاَيْضًا شَاعَوَذَاعَ اِحْتِجَاجُهُمْ سَلْفًا وَخَلْفًا بِالْعُمُوْ مَاتِ مِنْ غَيْرٍ نكير
অথাৎ অধিকন্তু ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত আয়াত থেকে দলীল গ্রহন করার রীতি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ধর্মীয় মনীষীদের মধ্যে কোনরূপ ওজর আপত্তি ছাড়াই প্রচলিত হয়ে আসছে।
কুরআনে করীমেও ইরশাদ
فَاسْئَلُوْا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَاتَعْلَمُوْن
অর্থাৎ যদি তোমরা না জান তবে জ্ঞানীদের নিকট থেকে জিজ্ঞাসা করো। ইজতিহাদী মাসায়েল যেহেতু আমরা জানি না সেজন্য ইমামদের অনুসরণ করি। আর সুস্পষ্ট অর্থবোধক আয়াতসূমহের অর্থ আমরা বুঝি সেজন্য এসব ব্যপারে তকলীদ নিষ্প্রয়োজন।
(ঘ) হাযির-নাযির এর মাসআলা সম্পর্কে সুবিখ্যাত ফকীহ মুহাদ্দিস ও তাফসীরকারকদের উক্তি সমূহের বিশাদ বর্ণনা পরবর্তী পরিচ্ছেদ সমূহেও করা হবে। গভীর ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে দেখবেন যে হাজির-নাজির এর এ আকিদা সমস্ত মুসলমানই পোষণ করে। -সুত্রঃ জাআল হক ১ম খন্ড-

Hajir najir 3

হাযির-নাযির বিষয়ক হাদীছ সমূহের বর্ণনা
 
 
এখানে সে সমস্ত হাদীছের উল্লেখ করা হবে যেগুলি ইলমে-গায়েব এর মাসআলায় পূর্বেই আলোচিত হয়েছে। সে সব হাদীছের মধ্যে হাদীছ নং ৬, ৭, ৮, ও ৯ বিশেষ উল্লেখযোগ্য। সেগুলোর মূল কথা হল সমস্ত জগতকে আমি হাতের তালুর মত স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। আমার উম্মতকে তাদের নিজ নিজ আকৃতিতে আমার নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল, আমি তাদের নাম, তাদের বাপ-দাদাদের নাম, এমন কি তাদের ঘোড়াসমূহের বর্ণ সম্পর্কেও জ্ঞাত ইত্যাদি। এভাবে ওসব হাদীছের ব্যাখ্যায় হদীছবেত্তাগণের যে সব উক্তি পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে, সেগুলো বিশেষ করে মিরকাত যুরকানী ইত্যাদি গ্রন্থের ইবারতসমূহও এখানে বর্ণিত হবে। এ ছাড়া নিম্নে বর্ণিত হাদীছ সমূহও এখানে উপস্থাপন করা হচ্ছে। 
সুবিখ্যাত হদিছ গ্রন্থ মিশকাত শরীফের ইছবাতু আযাবিল কবর শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে
(১) فَيَقُوْ لَانِ مَاكُنْتَ تَقَوْلُ فِىْ هذَا الرَّجُلِ  لِمُحَمَّدٍ
মুনকার নকীর ফিরিশতাদ্বয় কবরে শাযিত  মৃত ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করবেন ওনার (মুহা্ম্মদ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্পর্কে তুমি কি ধারনা পোষন করতে?
হাদিছের সুবিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ আশআতুল  লমআত-এ উক্ত হাদীছ
ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- هذَا الرَّجُلِ দ্বারা হুযুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিএ গুণাবলী সও্বার প্রতীই নিদের্শ হয়ে থাকে ।
উক্ত ব্যাখ্যায় গ্রন্থে এ হদীছের ব্যাখ্যায় আরো বলা হয়েছেঃ কিংবা কবরের মধ্যে হুযুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র সত্ত্বাকে দৃশ্যতঃ উদ্ভাসিত করা হয়। এটা এভাবেই হয় যে কবরে তার জিসমে মিছালীকে  উপস্থাপন করা হয়। এখানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লাম এর দিদারে প্রত্যাশী চিন্তীত ব্যাক্তিবর্গের জন্য এটাই শুভ সংবাদ যে তারা যদি এ প্রত্যাশিত সাক্ষাতের আশায় প্রাণ বির্সজন দিয়ে কবরে চলে যান তাহলে তাদেরও এ সুযোগ রয়েছে ।
মিশকাত শরীফের হাশিয়ায় সে একই হাদিছের ব্যাখ্যায় উল্লেখিত আছে-
قِيْلَ يُكْشَفُ لِلْمَيِّتِ حَتَّى يَرَى النَّبِىَّ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَهِىَ بُشْرَى عَظِيْمَةٌ
বলা হয়েছে মৃত ব্যাক্তির দৃষ্টি থেকে আবরণ উঠিয়ে নেয়া হয়, যার ফলে সে নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে দেখতে পায়। এটা তার জন্য বড়ই শুভ সংবাদ ।
সুপ্রসিদ্ধ বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় গ্রন্থ কুসতলানীর ৩য় খন্ডে ৩৯০ পৃষ্টায় কিতাবুল জানায়েযে বর্নিত আছেঃ
فَقِيْلَ يُكْشَفُ لِلْمَيِّتِ حَتَّى يَرىَ النَّبِىَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ وَهِىَ بَشْرَى عَظِيْمَةٌ لِلْمُؤْمِنِ اِنْ صَحَّ
অর্থাৎ এও বলা হয়েছে যে মৃত ব্যক্তির দৃষ্টির আবরণ অপসারণ করা হয় যার দরুণ সে নবী আলাইহিস সালামকে দেখতে পায়। এটি মুসলমানদের জন্য বড় সুখের বিষয় যদি সে সঠিক পথে থাকে।
কেউ কেউ উক্ত হাদীছে উল্লেখিত هذَا الرَّجُلِ (এ ব্যক্তি) বলে হৃদয় ফলকে অংকিত হুযুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানসিক প্রতিচ্ছবির প্রতি ইঙ্গিত করা হয় বলে মত পোষন করেন। অথাৎ মৃত ব্যাক্তিকে ফিরিশতাগন জিজ্ঞাসা করেনঃ তোমরা অন্তরে যে মহান সও্বার প্রতিচ্ছবির বিদ্যমান রয়েছে, তার সর্ম্পকে তুমি কি ধারনা পোষন করতে? কিন্তু এ ধারণা ঠিক নয়। কেননা সেক্ষেত্রে মৃত কাফীর ব্যাক্তিকে এ প্রশ্ন করান যৌক্তিকতা কোনরূপ থাকেনা। কারণ, কাফিরের অন্তরে হুযুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে কোনরূপ ধারনা থাকার কথা নয়। অধিকন্তু, তা যদি হত মৃত কাফিরের সে  প্রশ্নরে উত্তরে বলত না আমি জানি না বরং বলত আপনারা কার কথা  জিজ্ঞাসা করছেন? উওরে তার لَااَدْرِىْ আমি জনি না (বলার ব্যাপারে)  থেকে জানা যায় যে সেও হুজুর আলাইহিস সালাম  স্বচক্ষে দেখে তবে চিনতে বা পরিচয় করতে পারে না। সুতরাং উক্ত প্রশ্নে মানসিক কোন প্রতিচ্ছবির কথা   জিজ্ঞাসা করা হয় না বরং প্রকাশ্যে বিরাজমান সেই মহান সও্বার প্রতি ইঙ্গিত করেই প্রশ্ন করা হয়।
এ হাদিছও সংশ্লিষ্ট উদ্বৃতিসমূহ থেকে জানা যায় যে কবরের মধ্যে হুযুর আলাইহিস সালামের দিদার লাভের সু-বন্দোবস্ত করেই আলোচ্য প্রশ্নের অবতারনা করা হয়। এ শামসুদ্দোহা বদরুদ্দুজা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিনি তোমার সামনেই দৃশ্যমান আছেন তার সম্পর্কে তোমার কি মত? هذَا (এই) সর্বনাম দ্বারা নিকটবর্তী ব্যাক্তি বা বস্তুর প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়ে থাকে । এতে বোঝা যায় হুজুর আলাইহিস সালামকে দেখিয়ে ও নিকটে উপস্থাপন করেই উক্ত প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়। এজন্য  সুফিয়ানে কিরামও আশেকানগন মৃত্যুর প্রত্যাশা করে থাকেন ও কবরের প্রথম রজনীকে বরের সঙ্গে প্রত্যাশিত সাক্ষাতের রাত রূপে গণ্য করেন। যেমন   আলা হযরত (রহঃ) বলেন- প্রানতো চলে যাবেই। এ প্রান  যাবার ব্যাপারটি হচ্ছে কিয়ামত। তবুও সুখের বিষয় যে এরপর প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাক্ষাত লাভের অপূর্ব দৃশ্য উপভোগ করার সুবন্দোস্ত  রয়েছে । মৌলানা আসী  বলেন- কবরে গমনের প্রথম রাতে কাফন পরিহিত অবস্থায় এজন্য গর্ববোধ করব যে, যে ফুলের (প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সন্নিধ্য লাভের সারাজীবন প্রত্যাশী হয়ে আসছি আজ রাতই হচ্ছে সে মহান সে ফুলের সংস্পর্শ আমার প্রকৃষ্ট সময়।
আমি আমার রচিত দিওয়ানে সালেক  কাব্য গ্রন্থে লিখেছি-
কবরে প্রথম রাত হচ্ছে মহান রবের (প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দর্শন লাভের সৌভাগ্য রজনী। একজন আশেক এর জন্য ঈদের আনন্দও এ রাত্রির অপুর্র আনন্দের কাছে মূল্যহীন। এ রাতেই প্রিয়জনের সান্নিধ্য লাভের অনাস্বাদিত  সুখানুভূতি ভাষায় ব্যক্ত করা যায় না।
এজন্যই বুযুর্গানে দ্বীনের পরলোক গমনের দিনকে বলা হয় উরসের দিন। উরস শব্দের অর্থ শাদী বা আনন্দ। ঐ দিনই হচ্ছে দু’জাহানের দুলহা উরস হুযুর আলাইহিস সালামের দর্শন লাভের দিন।
লক্ষ্যণীয় যে  একই সময় হাজার  হাজার মৃত ব্যাক্তির লাশ দফন করা হয়ে থাকে । হুজুর আলাইহিস সালাম যদি হাযির-নাযির না হন তাহলে, তিনি প্রতিটি কবরে উপস্থীত থাকেন কি রূপে? অতএব প্রমানিত হল যে, আমাদের দৃষ্টির উপরই আবরন বা পর্দা রয়েছে ফিরিশতাগন এ পর্দা অপসারন করে দেন। যেমন কেউ দিনে তাবুর মধ্যে অবস্থান  করেছে বিধায় সূর্য তার দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না, এমন সময়  কেউ এসে উপর থেকে তাবু হটিয়ে তাকে সূর্য দেখিয়ে দিল।

Hajir najir 2

(৭) مَاكَانَ اللهُ لِيُعَذِّ بَهُمْ وَاَنْتَ فِيْهِمْ
[হে মাহবুব! এটা   আল্লাহর অভিপ্রেত নয়  যে আপনি তাদের মধ্যে থাকাকালে  আল্লাহ তাদের কে শাস্তি প্রদান করবেন।]
অথাৎ খোদার মর্মন্তুদ  শাস্তি তারা পাচ্ছে না- এজন্য যে আপনি তাদের  মধ্যে রয়েছেন আর সাধারন ও সর্বব্যাপী আযাব তো কিয়ামত র্পযন্ত কোন জায়গায় হবে না। এ থেকে জানা যায় যে হুযুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম  কিয়ামত পর্যন্ত প্রত্যেক জায়গায় বিদ্যমান থাকবেন। এ সম্পর্কে সুপ্রসিদ্ধ ‘তাফসীরে রূহুল বয়ানে বলা হয়েছে, হুযুর আলাইহিস সালাম প্রত্যেক পুণ্যত্মা ও প্রত্যেক পাপীর সাথে বিদ্যামান আছেন। এর বিশদ বিবরণ এ অধ্যায়ের তৃতীয় পরিচ্ছেদে দেয়া হবে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন-
وَاعْلَمُوْا اَنَّ فِيْكُمْ رَسُوْلُ اللهِ
[তোমরা জেনে রেখ, তোমাদের মধ্যে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিরাজমান)। এখানে সমস্ত সাহাবায়ে কিরামকে সম্বোধন করা হয়েছে অথচ তারা বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বসবাস করতেন সুতরাং স্পষ্টই বোঝা যায় যে হুজুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সব জায়গায় ও তাদের কাছে আছেন।
(৮) وَكَذَا لِكَ نُرِىَ اِبْرَ اهِيْمَ مَلَكُوْتَ السَّموَاتِ وَالْاَرْضِ
এবং এভাবেই হযরত ইব্রাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সমস্ত আসমান ওযমীনে পরিব্যাপ্ত আমার বাদশাহি অবলোকন করাই ।
এ থেকে জানা যায় যে, আল্লাহ তাআলা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালামাকে তার চর্মরোগ সমগ্র জগত দেখার বন্দোবস্ত করেছিলেন। হুজুর আলাইহিস সালামের মরতবা হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস সালাম হতে  উর্দ্ধে। অতএব একথা স্বীকার করতেই হবে যে তিনি  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও  সমগ্র জগত অবলোকন করেছেন । এ আয়াত এর তাৎপর্য ‘ইলমে গায়েব শীর্ষক আলোচনা পুর্ণ বিশ্লেষন করা হয়েছে।
৯) اَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِاَصْحَابِ الْفِيْلِ
হে মাহবুব আপনি কি দেখেননি প্রভু হস্তী বাহিনীর কি অবস্থা করছেন?
১০) اَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِعَادٍ
হে মাহবুব আপনি কি দেখেননী আপনার প্রতিপালক আদ নামক জাতির  সংগে কিরূপ আচরন করেছেন ?
আদ জাতি ও হস্তীবাহিনীর ঘটনাবলী হুজুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবির্ভাবের পুর্বেই সংঘটিত হয়েছে অথচ বলা হচ্ছে اَلَمْ تَرَ (আপনি কি দেখেননি?) অর্থাৎ আপনি দেখেছেন। এতে কেউ আপত্তি উত্থাপন করে বলতে পারে য়ে, কুরআন করীমে কাফিরদের প্রসঙ্গেও তো বলা হয়েছে اَلَمْ يَرَوْ اكَمْ اَهْلَكْنَا قَبْلَهُمْ مِنْ قَرْنٍ তারা কি দেখেনি, আমি তাদের আগে কত জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছি), এখানে লক্ষ্যণীয় যে, কাফিরগণ; তাদের আগেকার কাফিরদের ধ্বংস হতে দেখেনি; তবু আয়াতে বলা হয়েছে-তারা কি দেখেনি? সুতরাং, আপনি কি দেখেননি? এ উক্তি থেকে সচক্ষে দেখার ব্যাপারটি প্রমাণিত হয় না। এর উত্তর হচ্ছে- এখানে আয়াতে আগেকার কাফিরদের ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশ, বিধ্বস্ত ঘর-বাড়ী ও ধ্বংসাবশেষ দেখার কথাই বলা হয়েছে। মক্কার কাফিরগণ যেহেতু ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ভ্রমন করার সময় সেসব স্থান সমূহের পার্শ্ব দিয়া যাতায়াত করতো, সেজন্য বলা হয়েছে এসব ধ্বংসাবশেষ দেখে কেন শিক্ষাগ্রহন করে না? হুজুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দৃশ্যতঃ না পৃথিবী পরিভ্রমন করেছেন না আদ' জাতিও অন্যান্য বিধ্বস্ত দেশ সমূহ বাহ্যিকভাবে দেখেছেন। তাই তার ক্ষেত্রে স্বীকার করতেই হবে  যে, এখানে তাঁর নূরে নবুয়াতের মাধ্যমে দেখার কথাই বলা হয়েছে ।
(১১) কুরআন শরীফের অনেক জায়গায় اِذْ  উক্ত হয়েছে, যেমন
وَاِذْقَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَئِكَةِ
(যখন আপনার প্রতিপালক ফিরিশতাদের উদ্দেশ্যে বললেন وَاِذْقَالَ مُوْسى لِقَوْمِه (যখন হযরত মুসা আলাইহিস সালাম স্বজাতির উদ্দেশ্যে বললেন ----) ইত্যাদি। তাফসীরকারকগণ এসব  জায়গায় اُذْكُرْ (ঐ ঘটনাটি স্মরণ করুন।) শব্দটি উহ্য আছে বলে মত পোষণ করেন। লক্ষণীয় যে স্মরণ করুন- একথা দ্বারা সেসব বিষয় বা ঘটনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়, যা সংঘটিত হতে দেখা গিয়েছে, কিন্তু কালক্রমে সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি নিবদ্ধ নেই । এত্থেকে প্রতীয়মান হয় যে ওই সমস্ত বিগত ঘটনাবলী  হুযুর আলাইহিস সালাম অবলোকন করেছেন। তাফসীরে রূহুল বয়ানে উল্লেখিত আছে যে হযরত আদম আলাইহিস সালামের সমস্ত ঘটনাবলী হুযুর আলাইহিস সালাম প্রত্যক্ষ করেছেন। সামনে এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে। কেউ আরও একটি আপত্তি উত্থাপন পূর্বক বলতে পারে যে কুরআন কারীমে বনী ইসরাইলকেও তো وَاِذْنَجَّيْنَا كُمْ مِنْ الِ فِرْعَوْنَ (সে সময়ের কথা স্মরণ কর যখন তোমাদেরকে ফিরাউনের বংশধরদের অত্যাচার -উৎপীড়ন থেকে রক্ষা করেছিলাম) । আয়াতের মধ্যে সম্বোধন করা হয়েছে । হুযুর আলাইহিস সালামের যুগের ইহুদীগণ কি উক্ত আয়াতে বর্ণিত ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সময় বিদ্যমান ছিল? কিন্তু তাফসীরকারকগণ এখানেও اُذْكُرْ (স্মরণ কর) শব্দ উহ্য আছে বলে স্বীকার করেন। এ উত্তর হবে যে সমস্ত বনী ইসরাইলের ঐতিহাসিক ঘটনাবলী জানা ছিল, তারা ঐতিহাসিক গ্রন্থাবলী অধ্যয়ন করেছিল। সেজন্য তাদের জানা ঘটনাবলী দিকেই তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে হুযুর আলাইহিস সালাম না কোন ইতিহাসবেত্তার সান্নিধ্যে ছিলেন না শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নত কোন গোত্রের মধ্যে লালিত-পালিত হয়েছেন। এমতাবস্থায় তাঁর পক্ষে একমাত্র নূরে নবুওয়াতের মাধ্যম ছাড়া অন্য কোন ভাবে জ্ঞানার্জনের কোন উপায় ছিল কি?
(১২) اَلنَّبِىُّ اَوْلَى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْ فُسِهِمْ
[নবী মুসলমানদের কাছে তাদের প্রাণের চেয়েও নিকটতর।] দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মওলবী কাসেম সাহেব তার রচিত তাহযীরুন নাস গ্রন্থের ১০ পৃষ্ঠায় লিখেছেনঃ এ আয়াতের اَوْلى  শব্দের অর্থ হচ্ছে নিকটতর। তাহলে এ আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় নবী মুসলমানদের কাছে তাঁদের প্রাণের চেয়েও নিকটতর। আমাদের নিকটতম হচ্ছে আমাদের প্রাণ; এ প্রাণ থেকেও নিকটতর হচ্ছেন নবী আলাইহিস সালাম। বলা বাহুল্য যে, অতি নিকটে অবস্থিত বস্তু দৃষ্টিগোচর হয় না।
অত্যধিক নৈকট্যের কারনে আমরা তাকে (প্রয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) চোখে দেখতেপাই না।
বিঃদ্রঃ এখানে কিছু সংখ্যক লোক আপত্তি উত্থাপন করে থাকেন যে আপনারা যেহেতু মু্ক্কাল্লিদ আপনারদের জন্য কুরআনের আয়াত ও হাদিছ সমূহ থেকে দলীল প্রমাণ উপস্থাপন করাতো জায়েয নয়।
একজন মুকাল্লিদের উচিত তার বক্তব্যের সমর্থনে (মুজাহিদ ইমাম) এর উক্তি পেশ করা। সুতরাং আপনার কেবল আবু হানিফা (রহঃ) এর উক্তিই পেশ করতে পারেন। এর উত্তর কয়েকভাবে দেয়া যায়। (ক)আপনারা নিজেরাই যেহেতু হাযির ও নাজির না হওয়ার আকীদা পোষন করেন,সেহেতু আপনাদের উচিত ছিল আপন আকীদা এর সমর্থনে ইমাম সাহেব (রহঃ) এর উক্তি উপস্থাপন করা।
(খ) আমি তকলীদের আলোচনায় পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে আকীদা সম্পর্কিত কোন মাসআলায় তাকলিদ হয় না কেবলমাএ ফকীহগণের গবেষণালব্ধ মাসায়েলের ক্ষেত্রে তকলীদ প্রযোজ্য হয়। আলোচ্য বিষয়টি হচ্ছে আকীদা এর একটি মাসআলা।
(গ) মুকাল্লিদ সুস্পষ্ট আয়াত ও হাদিছ সমূহ থেকে দলিল প্রমান উস্থাপন করতে পারে। তবে হ্যা এসব দলীলের ভিত্তিতে নিজে মাসায়েল বরং করতে পারে না। এ প্রসঙ্গে তহাবী শরীফে উল্লেখিত আছেঃ
وَمَا وُهِمَ الْاَحْكَامُ مِنْ تَّحْوِ الظَّاهِرِ وَالنَّصِّ وَالْمُفَسَّرِ فَلَيْسَ مُخْتَصًّا بِه ( اَىْ بِالْمُجْتَهِدِ) بَلْ يَقْدِرُ عَلَيْهِ الْعُلَمَاءُ الْاَعَمُّ
যে সমস্ত আহকাম বা শরীয়ত বিধি কুরআনের যাহির নাস ওমুফাসসার ইত্যাদি প্রকৃতির আয়াত থেকে সরাসরি সুস্পষ্টভাবে বোধগম্য হয় না। এমন কথা বলা যায় না। এসব মাসায়েল বরং সাধারণ আলিমগণও বের করার সামর্থ রাখেন সুবিখ্যাত মুসাল্লামুছ ছবুত নামক উসুলে ফিকহ এর গ্রন্থে উল্লেখিত আছে-
وَاَيْضًا شَاعَوَذَاعَ اِحْتِجَاجُهُمْ سَلْفًا وَخَلْفًا بِالْعُمُوْ مَاتِ مِنْ غَيْرٍ نكير
অথাৎ অধিকন্তু ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত আয়াত থেকে দলীল গ্রহন করার রীতি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ধর্মীয় মনীষীদের মধ্যে কোনরূপ ওজর আপত্তি ছাড়াই প্রচলিত হয়ে আসছে।
কুরআনে করীমেও ইরশাদ
فَاسْئَلُوْا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَاتَعْلَمُوْن
অর্থাৎ যদি তোমরা না জান তবে জ্ঞানীদের নিকট থেকে জিজ্ঞাসা করো। ইজতিহাদী মাসায়েল যেহেতু আমরা জানি না সেজন্য ইমামদের অনুসরণ করি। আর সুস্পষ্ট অর্থবোধক আয়াতসূমহের অর্থ আমরা বুঝি সেজন্য এসব ব্যপারে তকলীদ নিষ্প্রয়োজন।
(ঘ) হাযির-নাযির এর মাসআলা সম্পর্কে সুবিখ্যাত ফকীহ মুহাদ্দিস ও তাফসীরকারকদের উক্তি সমূহের বিশাদ বর্ণনা পরবর্তী পরিচ্ছেদ সমূহেও করা হবে। গভীর ভাবে চিন্তা-ভাবনা করে দেখবেন যে হাজির-নাজির এর এ আকিদা সমস্ত মুসলমানই পোষণ করে। -সুত্রঃ জাআল হক ১ম খন্ড-

Hajir najir

কুরআনের আয়াত সমূহ দ্বারা হাযির-নাযির এর প্রমাণ
   
Published on Sunday, 19 February 2012 16:02
Hits: 3294
0
 
0

inShare
 
১)  يَاايُّهَاا لنَّبِىُّ اِنَّا اَرْسَلْنكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا وَّدَاعِيًا اِلَى اللهِ بِاِذْنِه وَسِرَاجًا مُّنِيْرَا
 
[আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে সম্বোধন করে এরশাদ করেছেন, ওহে অদৃশ্য বিষয়াদির সংবাদদাতা! নিশ্চয় আমি আপনাকে প্রেরন করেছি, হাযির-নাযির, সুসংবাদদাতা হিসাবে এবং ভয় প্রদর্শনকারী করেছি আল্লাহর নির্দেশানুশারে তার দিকে আহবানকারী এবং উজ্জল প্রদীপ হিসেবে]
আয়াতে উল্লেখিত- شاهد (শাহীদ) শব্দের অর্থে সাক্ষীও হতে পারে এবং হাযির-নাযির ও হতে পারে। সাক্ষী অর্থে সাহিদ শব্দটি এজন্য ব্যবহৃত হয়েছে সে ঘটনা স্থলেই উপস্থিত ছিল। হুযূর আলাইহিস সালামকে শাহিদ হয়তো এ জন্যই বলা হয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহ আলাইহে ওয়াসাল্লাম )দুনিয়াতে এসে অদৃশ্য জগতের সাক্ষ্য দিচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরুপে। প্রত্যক্ষদর্শী যদি না হন, তাহলে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহ আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে শাক্ষীরুপে প্রেরণের কোন অর্থই  হয়না। কেননা সমস্ত নবীগন (আলাইহিস সালাম) তো সাক্ষী ছিলেন। অথবা তাকে এ জন্যই শাহিদ বলা হয়েছে যে, কিয়ামতের দিন তিনি (সাল্লাল্লাহ আলাইহিস সালাম) সম্তত নবীগনের অনূকুলে প্রত্যক্ষদর্শীরুপে সাক্ষ্য প্রধান করবেন। এ সক্ষ্য না দেখে প্রদান করা যায় না।
তার শুভ সংবাদদাত, ভীতি প্রদর্শনকারি ও আল্লাহর পথে আহবানকারি হওয়ার বিষয়টিও তথৈবচ। অন্যান্য নবীগনও এ সমস্ত  কাজ সম্পন্ন করেছেন, কিন্তু শুধু শুনেই; আর হুযুর আলাইহিস সালাম করেছেন স্বচক্ষে দেখেয়। এ মিরাজ একমাত্র হুযুর আল্লাইহিস সালামের হয়েছিল। উপরোক্ত আয়াতে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আল্লাহিস ওয়াসাল্লাম) কে   سِرَاجًامُّنِيْرًا
সিরাজাম মুনীরা ও বলা হয়েছে। সিরাজাম মুনিরা সূর্য্যকেই বলা হয় । সূর্য্য যেমন পৃথিবীর সর্বত্র, ঘরে ঘরে বিদ্যমান, তিনি ও (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক জায়গায় বিরাজমান। এ আয়াতের প্রতিটি শব্দ থেকে হুযুর আলাইহিস সাল্লামের হাযির-নাযির হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত।
 
(২)  وَكَذَالِكَ جَعَلْنَاكُمْاُمَّةًوَّ وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهْدْاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدًا
 
[এবং কথা হলো এই যে আমি (আল্লাহর তা’আলা) তোমাদেরকে (উম্মতে মুহাম্মাদী ) সমস্ত উম্মত গনের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দান করেছি ,যাতে তোমরা  অন্যান্য লোকদের  ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করতে পার এবং এ রসুল (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম ) তোমাদের জন্য  পর্যবেক্ষনকারী ও সাক্ষীরুপে প্রতিভাত হন ।
 
(৩) فَكَيْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ اُمَّةٍ بِشَهِيْدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هؤُلَاءِ شَهِيْدًا
 
[তখন কি অবস্তা হবে ,যখন আমি  (আল্লাহ তা’আল্লা) প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন করে সাক্ষী  উপস্থিত করব ,এবং হে মাহবুব ! আপনাকে সে সমস্ত সাক্ষীদের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরুপে আনয়ন করব।
এ আয়াতসমূহে নিম্নোক্ত ঘটনার প্রতি ইঙ্গত প্রদান করা হয়েছে। কিয়ামতের দিন অন্যান্য নবীগনের উম্মতগন আরজ করবে; আপনার নবীগন আপনার নির্ধারিত বিধি-বিধান আমাদের নিকট পৌছাননি। পক্ষান্তরে নবীগন আরজ করবেন; আমরা অনুশাসনসমূহ পৌছিয়েছি। নবীগন নিজেদের দাবীর সমর্থনে সাক্ষী হিসাবে উম্মতে মুস্তফা আলাইহিস সালামকে পেশ করবেন। উনাদের সাক্ষ্য প্রদানের ক্ষেত্রে আপত্তি উত্থাপন করে বলা হবেঃ আপনারা সে সব নবীদের যুগে ছিলেন না। আপনারা না দেখে কিভাবে সাক্ষ্য দিচ্ছেন? তাঁরা তখন বলবেন; আমাদেরকে হুযুর আল্লাইহিস সালাম এ ব্যাপারে   বলেছিলেন। তখন হুযুর আল্লাইহিস সালামের সাক্ষ্য গ্রহন করা হবে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম )  দুটো বিষয় সাক্ষ্য দিবেন। এক নবীগন (আ:) শরীয়তের বিধানাবলী প্রচার করেছেন দুই, আমার উম্মতগন সাক্ষ্য প্রদানের উপযুক্ত । সুতরাং মুকদ্দমা এখানেই  শেষ। সম্মানীত নবীগনের পক্ষে রায় দেওয়া হবে । লক্ষ্যনীয় যে, যদি হুযুর আলিইহিস সালাম পূর্ববর্তী নবীগনের তবলীগ ও স্বীয় উম্মতগনের ভবিষ্যতের অবস্তা সচক্ষে অবলোকন না করতেন, তাহলে তাঁর সাক্ষ্যের ব্যাপারে কোন আপত্তি উত্থাপিত হল না কেন? যেমনিভাবে তাঁর উম্মতের সাক্ষ্যের ব্যাপারে আপত্তি উত্থাপিত হলো,বোঝা গেল তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) সাক্ষ্য হবে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য আর আগেরটা হবে শ্রুত বিষয়ে সাক্ষ্য।এ থেকে তার হাযির -নাযির হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলো। এ আয়াতের তাৎপর্য ইতিপূর্বে  ইলমে গায়ব এর আলোচনায় ও বিশ্লেষন করেছি।




(৪)   لَقَدْجَاَءَ كُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ اَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ
[নিশ্চয় তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্য থেকে সে রসূলই এসেছেন, যাঁর কাছে তোমাদের কষ্টে নিপতিত হওয়ার ব্যাপারটি  বেদনাদায়ক ।
এ আয়াত থেকে তিন রকমে হুযর আলাইহিস সালাম এর হাযির -নাযির হওয়ার বিষয়টি প্রমানিত হয়। প্রথমত جَاءَكُمْ আয়াতাংশে কিয়ামত পর্যন্ত  সময়ের মুসলমানদেরকে সম্মোধন করা হয়েছে, তোমাদের সকলের কাছে হুযুর আলাইহিস সালাম তশরীফ এনেছেন। এতে বোঝা যায় যে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক মুসলমানদের কাছেই আছেন। মুসলমানতো পৃথিবীর সব জায়গায় আছে, তাই হুযুর আলাইহিস সালামও প্রত্যেক জায়গায় বিদ্যমান আছে। দ্বিতীয়ত: আয়াতে বলা হয়েছে- مِنْ اَنْفُسِكُمْ  (তোমাদের আত্মাসমূহের মধ্যে থেকে অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে তার (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম) আগমন যেন শরীরের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হওয়া বা শরীরের শিরা-উপশিরা, এমনকি প্রতিটি কেশাগ্রেও বিদ্যমান; যা প্রত্যেক কিছুর ব্যাপারে সজাগ ও সংবেদনশীল। তদ্রূপ হুযুর আলাইহিস সালাম প্রত্যেক মুসলমানের প্রতিটি কাজকর্ম সম্পর্কে অবগত।
চোখ সমূহের মধ্যে তিনি বিরাজমান, তবে দৃষ্ঠির মত অদৃশ্য। দিলের মধ্যে এমনভাবেই  বিদ্যমান আছেন। যেমনি ভাবে শরীরের মধ্যে প্রান বিচরন করে। তিনি অপূর্ব এক শানে বিকশিত। আমার মধ্যে রয়েছেন অথচ  আমার দৃষ্টির আড়ালে।
যদি আয়াতের অর্থ কেবল এটাই হতো-তিনি তোমাদের মধ্যেকার একজন মানুষ, তহলে مِنْكُمْ বলায় যতেষ্ট ছিল। مِنْ اَنْفُسِكُمْ কেন বলা হল?তৃতীয়তঃ আয়াতে আরও বলা হয়েছে عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ অর্থাৎ- যা তোমাদেরকে বিপন্ন করে, তা তাঁর কাছে পীড়াদায়ক। এতে বোঝা গেল  যে,আমাদের সুখ-দুঃখ সম্পকেও হুযুর পুরনুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) প্রতি নিয়ত অবগত। এজন্যই তো আমাদের দুঃখ-কষ্টের ফলশ্রূতিতে তাঁর পবিত্র হৃদয়ে কষ্ট অনুভব হয়। যদি আমাদের খবর ও না থাকে। তবে তার কষ্ট অনুভব হয় কিভাবে? শেষের এ আয়াতাংশটিও আসলে পূর্বোল্লিখিত مِنْ اَنْفُسِكُمْ এরই তাৎপর্য-বিশ্লেষন করে। শরীরে কোন  অঙ্গে ব্যথা বেদনা হলে ,তা আকা মওলা (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম )এর কাছে পিড়াদায়ক ঠেকে।
(৫)   ۳۹وَلَوْ اَنَّهُمْ اِذْظَّلَمُوْ اَنْفُسَهُمْ جَاَءُوْاكَ فَأسْتَغْفَرُوْا اللهَ وَاسْتَغْفَرَلَهُمُالرَّسُوْالُ لَوَجَدُوا اللهَ تَوَّابًا رَّحِيْمًا
[এবং যখন ওরা নিজেদের আত্মার প্রতি অবিচার করে, তখন তারা যদি আপনার সমীপে উপস্তিত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষামা প্রার্থনা করে আর আপনি ও তাদের জন্য সুপারিশ করেন, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহকে তওবা কবুলকারী, করুণাময় হিসেবে পাবে।]
এ আয়াত থেকে বোঝা গেল যে, পাপীদের মাগফিরাত বা ক্ষমাপ্রাপ্তির একমাত্র পথ হচ্ছে হুযুর আলাইহিস সালামের মহান দরবারে উপস্থিত হয়ে তাঁর শাফাআত প্রার্থনা করা এবং হুযুর মেহেরবানী করে তাদের জন্য শাফাআত করা। এর অর্থ এ নয় যে, আমাদেরকে মাগফিরাতের জন্য পবিত্র মদীনাতে উপস্থিত হতে হবে। কেননা তাহলে আমাদের মত দরিদ্র বিদেশী পাপীদের ক্ষমাপ্রাপ্তির কি উপায় হবে? ধনাঢ্য ব্যক্তিগনও তো জীবনে একবার কি দু বার সে মহান দরবারে যাবার সামর্থ রাখে। অথচ দিনরাত পাপ পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত রয়েছেন। তাই এতে মানুষের সাধ্যাতীত কষ্ঠ হবে। কাজেই আয়াতের মূল বক্তব্য হচ্ছে-তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) তোমাদের কাছেই বিদ্যমান আছেন। তোমরা বরং তার নিকট থেকে দুরে অবস্থান করছো। তোমরা হাযির হয়ে যাও, তিনি তোমাদের প্রতি সুপ্রসন্ন হবেন।
পরম বন্ধু আমার নিজের চেয়েও কাছে বিদ্যমান। এটাই বিস্ময়কর যে আমি তার নিকট থেকে দুরে রয়েছি।
এতে বোঝা যায় যে, হুযুর আলাইহিস সালাম সর্বত্র বিদ্যমান।
(৬)  وَمَا اَرْسَلْنكَ اِلَّارَ حْمَةً لِّلْعَا لَمِيْنَ
 
[আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি। অন্যত্র বলা হয়েছে-
وَرَحْمَتِىْ وَسِعَتْ كُلَّشَيْئٍ
অর্থাৎ  আমার রহমত প্রত্যেক কিছুকেই পরিবেষ্টন করে আছে। বোঝা গেল যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম) বিশ্ব চরাচরের জন্য রহমত স্বরূপ এবং রহমত সমগ্র বিশ্বকে পরিবেষ্টন করে আছে। সুতরাং সমগ্র বিশ্বকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন হুযুর আলাইহিস সালাম। স্বরন রাখা দরকার যে, মহা প্রভু আল্লাহর শান হচ্ছে তিনি’ রাব্বুল আলামিন’ (বিশ্বব্রহহ্মন্ডের প্রতিপালক) আর প্রিয় হাবীবের শান হচ্ছে তিনি’ রাহমাতুল্লিল আলামিন’ (বিশ্বব্রক্ষান্ডের প্রতি রহমত স্বরূপ)। স্পষ্টই প্রতীয়মান হল যে, আল্লাহ যার প্রতিপালক, হুযুর আলাইহিস সালাম হচ্ছেন তার প্রতি রহমত স্বরূপ।

Moududi soytan

মওদূদীর ভ্রান্ত মতবাদসমূহঃ
\/
আল্লাহ তা'য়ালা প্রসঙ্গঃ
জামায়েতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মিঃ মওদূদী বলেন,
" যেখানে নর-নারীর মেলামেশা রয়েছে অবাধে, ভার্সিটি, অফিস-আদালত, ক্লাব ও পার্কে প্রকাশ্য ও গোপনে সর্বত্র যুবক-যুবতী স্বাধীনভাবে মেলামেশা, একত্রে ওঠা-বসার অবাধ সুযোগ রয়েছে, এমন স্থানে ব্যাভিচার ও মিথ্যা অপবাদের কারণে ( আল্লাহর আদেসক্রিত) রজম শাস্তি প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে জুলুম " । (তাফহীমাত-২য় খন্ড)
\/
>> এ সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত এর বক্তব্যঃ
" আল্লাহ তা'য়ালা কোন ক্ষেত্রে জুলুমের আশংকা জনিত কোন বিধান দেননি " । (সুরা ইউনুস-৪৪) 
\\//
\/
সমস্ত মুসলমানগণ বিশ্বাস করে পবিত্র কুরআন-সুন্নাহ তথা শরীয়া আইন-কানুন কিয়ামত পর্যন্ত সকল সমাজ ও সময়ের জন্য প্রযোজ্য। অথচ মিস্টার মওদূদী সাহেব আল্লাহর বিধানকে জুলুম সাব্যস্ত করে আল্লাহকে জালিম হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন...
|
অতএব মওদূদী জামায়েত থেকে সাবধান!







জামায়াত - শিবিরের গোমর ফাঁস #
ইমাম মাহদী বুজুর্গ হবেন না ! 
হাদীস বলে , ইমাম মাহদী সুফী ধরনের লোক হবেন ।
হাদীসে আছে , ইমাম মাহদী আত্মপ্রকাশ করবে এমন ভাবে যে তার মাথায় পাগড়ী থাকবে ।

জামায়াত শিবিরের মওদূদী সাহেব বলেন -
ইমাম মাহদী পুরাতন যুগের কোন সুফীধরনের লোক হবেন না ।
দলীল - ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন - ২৩ পৃঃ , ডিসেম্বর ১৯৯৪ ইং ।



ইসলামী রীতিনীতি সম্পর্কে মওদূদির বক্তব্যঃ

“পোশাক পরিচ্ছদ, চাল-চলন, আকৃতি-প্রকৃতি চুল কার্টিং ইত্যাদির ব্যাপারে বিধর্মীদের অনুকরণ করতে কোন দোষ নেই”। (তরজুমানুল কুরআন, ছফর সংখ্যা, ১৩৬৯ হিজরী)

বিধর্মীদের অনুসরণ সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-

হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে- হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের দলভূক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (মসনদে আহমদ, সুনানে আবূ দাউদ)

Ala hazrat

আজকাল অনেকে আহমাদ রেজা খান সাহেবের নাম অনেক বকে যাছে যার কোনো ভিত্তি বা প্রমান নাই ৷ কিতাবের স্ক্রিন শুট দিয়ে তাদের কে বলব যা সত্য তা যেন পোস্ট করে  ৷

আহমাদ রেজা খান সাহেবের সময় কিছু ওলামা রা একটা বিসয় নিয়ে আহমাদ রেজা খান সাহেবের কাছে যান ৷

বিসয় টা ছিল যে নবী পাক এর কাপড়ে যে ধুলা বালি লাগে এই কথা টা কিভাবে বলব ? যদি বলি নবী পাক এর কাপড় ময়লা হয়েছে তা বেআদবি মনে হয় ৷ যদি বলি নবী পাক এর কাপড়ে ধুলা বালি লেগেছে তা ও বেআদবি মনে হয় যে যিনি নবী তার কাপড় ময়লা বা ধুলা বালি লাগা ইটা খুব খারাপ দেখায়  ৷ কিন্তু ইটা ও সত্য যে নবী পাক এর কাপড় ময়লা ও হত  ৷ কিন্তু সেই কথা আমাদের মুখে বলা কেমন জানি শোভা পায় না ৷ আমরা আপনার কাছ থেকে জানতে চাই কিভাবে এই কথা টা বলব ? 

তখন আলা হজরত আহমাদ রেজা খান বলেন যে তোমরা এমন সাধারণ একটা বিসয় নিয়ে এত চিন্তিত ? আল্লাহ তোমাদের সকল কে কবুল করবেন  ৷
এরপর তিনি বলেন যে :- আপলোগ ইচ্তারা বোলোনা দামান এ মুস্তফা(সা :) মে ধুল ওর মিট্টি ওনে পানাহ লেলিয়া  ৷
অনুবাদ ; আপনারা এমন করে বলেন না যে নবী পাক এর কাপড়ে ধুলা আর মাটি আশ্রয় নিয়ে নিয়েছে  ৷

তো দেখেন ইনি হচ্ছেন আলা হজরত  ৷ সকল সময় সকল নবী গণ এর ও বিরুধিতা করে এসেছে লোকজন তো আহমাদ রেজা খান সাহেব তো নিজেকে অনার আবেদ বা গোলাম লিখত অনার নামের সাথে  ৷ তো এনার বিসয় লেখা কোনো বড় কথা না ৷ কিন্তু অনুরোধ রইলো অনার কিতাব থেকে ওনার ভুল গুলো তুলে ধরার ৷ ফালতু কুত্তার মত ১ মাস ধরে  ভোকার চেয়ে ওনার কিতাব থেকে একদিন একটা ভুল ধরে দেখান  ৷ ওনার কিতাবের পেজ দিয়ে স্ক্রিন শুট দিয়ে পোস্ট করেন ৷ আস সালাম 

Balakoti DEOBONDI bhai bhai

যাখন আমি পাকিস্তান এ ছিলাম ডেরা গাজী খান বেলুচিস্তান প্রদেশে তখন দেখলম কিছু লোক ফার্সি ও কিছু লোক সেরেকি জবানে কথা বলে৷ তো আমি আমার দোস্তের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম মরুভূমি এলাকা ছিল সেটা ৷ একদিন আমার সেই দোস্তের সাথে একটা কথা কাটাকাটি হয়ে বললাম যে আমি এখন দেশে চলে যাব ৷ আমার নিজের ফ্যামিলি ছেড়ে তর কাছে এসেছি কি সরম পেতে  ৷ তো তার বড় ভাই সেরেকি জবানে আমাকে বলেছিল ( ভ্রা নে ছেড়া উমিদে আহাম্মক ) অর্থ হছে ভাই ভাই ঝগড়া হয় ইটা আহাম্মক রা বিশাস করে ৷ বুধিমান রা না ৷ আপনারা হচ্ছেন ভাই ভাই ৷ 
আপনাদের মাঝে মিল নাই এই কথা যে বিশাস করবে সেটা আহাম্মক এর কাজ ৷ আমার এলাকাতেই একটা কথা আছে যে ছাইয়ের কুত্তা ছাইয়ের মাঝেই ফিরে যেতে হয় ৷ যদিও ফুলতলী ওনেক দিন যাবত শাড়ি বদল করে নারী বদলানোর চেষ্টা করেই যাছিল ৷ আমরা আপনাদের এক হুয়ার সেই দিনের অপেন্হায় থাকলাম   ৷ এর পরের ধাক্ষা হবে ধুম ধারাক্কা 

Masnobi sorif

মসনবী শরীফ - (২)
মূল: মাওলানা রুমী (রহ:)
অনুবাদক: এ, বি, এম, আবদুল মান্নান
মুমতাজুল মোহদ্দেসীন, কলিকাতা আলিয়া মাদ্রাসা।

হামচু নায়ে জহরে ও তরইয়াকে কেদীদ,
হামচু নায়ে ও মছাজে ও মুশ্ তাকে কেদীদ।

অর্থ: বাঁশির সুরের ক্রিয়ার কথা যখন উপরে উল্লেখ করা হইয়াছে, তাই মাওলানা এখন বলিতেছেন, বাঁশির সুরের ন্যায় মৃত অন্তরকে জীবিত করিতে অন্য কোনো তরিয়াক বা অমোঘ ঔষধ নাই। বাঁশির সুরের ন্যায় উপযুক্ত উত্তেজনাকারী আর কিছু দেখা যায় না।

নায়ে হাদীসে রাহে পোর খুন মী কুনাদ,
কেচ্ছাহায়ে ইশকে মজনুন মী কুনাদ।

অর্থ: বাঁশির সুরে প্রেমের রাস্তা রক্তাক্ত করিয়া তুলে। সে প্রকৃত আশেকের অবস্থা বর্ণনা করিতে থাকে।

মোহররমে ইঁ হুশে জুযবে হুশে নিস্ত।
মর জবান রা মুশতারি চুঁ গোশে নিস্ত।

অর্থ: বাঁশির কেচ্ছা দ্বারা ইহা পরিষ্কার বুঝা যায় যে, প্রকৃত আশেকের নিকট মাশুক ব্যতীত অন্য কাহারও খেয়াল না থাকা-ই ইশকের সুস্থ জ্ঞানের লক্ষণ।

ভাব: প্রকৃত খোদা-প্রেমিক খোদা ব্যতীত অন্য কাহারও খেয়াল না করা-ই খাঁটি বান্দার পরিচয়।
যেমন - মুখে কথা বলিলে কর্ণেই শুনে, অন্য কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শুনার অধিকার নাই; সেইরূপ খাটি আশেকের মাশুক ব্যতীত অন্য কাহাকেও তলব করার অধিকার থাকে না।

গার না বুদে নালায়ে নায়ে রা সামার,
নায়ে জাহান রা পুর না করদে আজ শাক্কর।

অর্থ: যদি বাঁশির ক্রন্দনে কোন ফল লাভ না হইত, তবে ইহ-জগতে বাঁশির সুর মধুরতায় পূর্ণ হইত না।
ভাব: আশেকের ইশকের দরুন যাহা লাভ করা যায়, বাঁশির সুরের দরুন উহাই হাসিল করা যায়।

দরগমে মা রোজেহা বেনাহ-শোদ,
রোজেহা বা ছুজেহা হামরাহ শোদ।

অর্থ: বাঁশি বলে, আমার বন্ধুর বিরহ-যাতনার দুঃখে আমার জীবনকাল অনর্থক কাটিতেছে। জীবনকাল দুঃখময় হইয়া অতিবাহিত হইতেছে।
ভাব: প্রকৃত বন্ধু অন্বেষণকারী বন্ধুর মিলনেও শান্তি পায় না। কেননা, মিলনের অনেকগুলি স্তর আছে। ঐগুলি অতিক্রম করার জন্য সর্বদা ব্যস্ত থাকে। অতএব, প্রকৃত আশেকের জন্য কোনো অবস্থা-ই শান্তি বা তৃপ্তির নয়। সদা-সর্বদা পরিপূর্ণতা লাভের জন্য ব্যাকুল থাকে।

রোজেহা গার রফত গো রাওবাকে নিস্ত
তু বেমাঁ আযে আঁকে চুঁতু পাকে নিস্ত।

অর্থ: যদিও আমার অতীত জীবন বেহুদা কাটিয়া গিয়াছে, তথাপি আফসোসের কোনো কারণ নাই। কেননা, যাহা বেহুদা ছিল বা বিপদ-আপদ ছিল, তাহা চলিয়া গিয়াছে; এখন খাঁটি ও পবিত্র প্রেম বাকি রহিয়াছে।
ভাব: বহুদিন বিরহ, যাতনা ও বেদনার পর যদি বন্ধুর মিলন হয়, তবে পিছনের দুঃখ-কষ্টের জন্য আফসোস করিতে হয় না। কেননা, যাহা কিছু অনর্থক দুঃখকষ্ট ভোগ করার ছিল তাহা অতিক্রান্ত হইয়া গিয়াছে। এখন শুধু ভালোবাসা বা প্রেম স্থায়ী রহিয়াছে।

হরকে জুজ মাহী জে আবশ ছায়েরে শোদ,
হরকে বেরোজী ইস্ত রোজশ দের শোদ।

অর্থ: এখানে আশেকের প্রকার বর্ণনা করিতে যাইয়া মওলানা বলিতেছেন, এক প্রকার আশেক আছে, যাহারা মাশুকের কিছু প্রাপ্ত হইলেই তৃপ্তি লাভ করে। আরেক প্রকার আছে, যাহারা মাশুককে লাভ করিতে পারে নাই, তাহাদিগকে বে-রুজি বলা হইয়াছে। তাহাদের চেষ্টা বিফল হইয়াছে। তাহাদের জীবন বৃথা অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে। উদ্দেশ্য পণ্ড হইয়া গিয়াছে।
ভাব: প্রেমিকের জন্য প্রেমের পথে চলিতে কখনও থামিতে হয় না, সর্বদা চলিতে থাকিলেই উদ্দেশ্য সফল হয়। নিরাশ হবার কোনো কারণ নাই।

ওয়ার নাইয়াবদ হালে পোখতাহ হিচে খাম,
পাছ ছুখান কোতাহ বাইয়াদ ওয়াচ্ছালাম।

অর্থ: বিফল ব্যক্তি কখনও সফল ব্যক্তির অবস্থা অনুভব করিতে পারে না। কামেল ব্যক্তির অবস্থা বিনা কামেল-ব্যক্তি কখনও বুঝিতে পারে না। এই জন্য উপরোল্লিখিত পূর্ণ প্রেমের উত্তেজনার ফলাফল বর্ণনা করা এখন সংক্ষেপ করিয়া শেষ করা হইল। শেষ করা-ই উত্তম।

বন্দে বগছাল বাশ আজাদ আয়ে পেছার,
চান্দে বাঁশি বন্দে ছীমো বন্দে জর।

অর্থ: মাওলানা বলেন, ওহে যুবক! তুমি যদি খোদার প্রেমে পরিপূর্ণতা লাভ করিতে চাও, তবে তুমি দুনিয়ার ধন-দৌলত ও স্বর্ণ-রৌপ্যের মহব্বত ত্যাগ কর; তবে খোদার ভালোবাসা লাভ করিতে পারিবে। কেননা, দুনিয়ার ধন-দৌলতের মহব্বত রাখিলে আল্লাহর মহব্বত হাসিল করা যায় না। দুনিয়ার ভালোবাসা আল্লাহর মহব্বত হইতে ফিরাইয়া রাখে।পার্থিব বস্তুর মহব্বত যত কম হইবে, ততই আল্লাহর মহব্বত বেশি হইবে। আস্তে আস্তে, ক্রমান্বয়ে কামেল হইতে থাকিবে।

গার বা রিজি বহরেরা দর কুজায়ে,
চান্দে গুনজাদ কিসমতে এক রোজায়ে।

অর্থ: মাওলানা দুনিয়ার লোভীর পরিণতি সম্বন্ধে বলিতে যাইয়া বলিতেছেন যে, অধিক লালসা করায় কোনো ফলোদয় হয় না। যেমন, সমস্ত সমুদ্রের পানি যদি একটি সামান্য পেয়ালার মধ্যে ঢালা হয়, তবে উহার মধ্যে পেয়ালা আন্দাজ পানি থাকিবে, অতিরিক্ত পানি উহাতে কিছুতেই থাকিবে না; শুধু একদিনের পরিমাণ পানি থাকিতে পারে।
ভাব: এখানে পিয়ালাকে মানুষের অদৃষ্টের সাথে তুলনা করা হইয়াছে। যাহার অদৃষ্টে যে পরিমাণ নির্দিষ্ট করা আছে, উহার চাইতে কিছুতেই সে বেশি পাইবে না। অতএব, অধিক লোভ-লালসায় মত্ত হওয়া কোনো উপকারে আসে না, বরং খোদার মহব্বত হইতে বঞ্চিত হইতে হয়।

কুজায়ে চশমে হারিছান পুর না শোদ,
তা ছাদাপে কানে না শোদ পুর দুর না শোদ।

অর্থ: লোভী ব্যক্তির চক্ষু কোনো সময়েই পরিপূর্ণ হয় না। অর্থাৎ, লালসার আশা মিটে না, কখনও তৃপ্তি লাভ করিতে পারে না। যদি ইহ-জগতে যাহা পায় তাহাতে তৃপ্তি লাভ না করে, তবে ঝিনুকের ন্যায় যদি এক ফোঁটা বৃষ্টি পাইয়া তৃপ্তি লাভ করিয়া মুখ বন্ধ না করে, তাহা হইলে সে কী-রূপে পূর্ণ এক খণ্ড মূল্যবান মুক্তায় পরিণত হইতে পারিবে? অতএব, আল্লাহর তরফ হইতে বান্দার কিসমতে যাহা কিছু মাপা হয়, তাহাতেই সন্তুষ্টি লাভ করিয়া ধৈর্য্ ধারণ করিয়া থাকিলে খোদার প্রিয় বান্দা বলিয়া পরিগণিত হইতে পারে।

হরকেরা জামা জে ইশকে চাকে শোদ,
উ জে হেরচো আয়েবে কুল্লি পাকে শোদ।

অর্থ: যে ব্যক্তির জামা ইশকের কারণে ফাঁড়িয়া গিয়াছে, সে ব্যক্তির অন্তর লোভ-লালসা ও অন্যান্য কু-ধারণা হইতে পবিত্র হইয়া গিয়াছে।
ভাব: যে ব্যক্তির অন্তর খোদার মহব্বতে পরিপূর্ণ হইয়া গিয়াছে, তাহার অন্তঃকরণ হইতে পার্থিব বস্তুর ভালোবাসা দূর হইয়া গিয়াছে। তিনি প্রকৃত কামেল হইতে পারিয়াছেন।

শাদে বশ্ ইশকে খোশ্ ছুদায়ে মা
আয়ে তবিবে জুমলায়ে ইল্লাত হায়ে মা।

অর্থ: এখানে মাওলানা ইশকের প্রশংসা করিতে যাইয়া বলিতেছেন, হে ইশক! তোমাকে ধন্যবাদ দিতেছি। কারণ, তোমার অসিলায় অভ্যন্তরীণ কু-ধারণাসমূহ বিদূরিত হয়। তোমার-ই কারণে অন্তঃকরণ পবিত্র হয়। অতএব, হে চিকিৎসক! তোমাকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপণ করিতেছি।

আয়ে দাওয়ায়ে নাখুত ও নামুছে মা,
আয়ে তু আফলাতুনো জালিয়ে নুছেমা।

অর্থ: হে ইশক, তুমি আমার কু-ধারণা ও কু-প্রবৃত্তির ঔষধস্বরূপ। তুমি আমার পক্ষে জালিয়ানুসের ন্যায় একজন বিজ্ঞ ডাক্তার। অর্থাৎ, প্রকৃত প্রেমিক ব্যক্তি কোনো সময়ে অ-সুন্দর বা না-পছন্দ কাজ করিতে পারেন না। খাঁটি প্রেমের কারণে না-পছন্দ গুণসমূহ তাহার অন্তর হইতে বিদূরিত হইয়া যায়।
জেছমে খাক আজ ইশকে বর আফলাকে শোদ,
কুহে দর রকছে আমদ ও চালাক শোদ।

অর্থ: মাটির শরীর খোদার ইশকের দরুন আকাশ ভ্রমণ করিয়াছে। মুছা (আঃ)-এর ইশকের দৃষ্টিতে তূর পর্বতের প্রাণ সঞ্চার হইয়াছিল এবং ইশকের জোশে ফাটিয়া চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া গিয়াছিল ও হজরত মূছা (আ:) বে-হুশ হইয়া রহিলেন।

ইশকে জানে তুরে আমদ আশেকা,
তুরে মস্তো খাররা মুছা ছায়েকা।

অর্থ: পরবর্তী লাইন-দ্বয়ে মাওলানা পরিষ্কার করিয়া বর্ণনা করিয়া দিয়াছেন, যেমন হজরত মূসা (আ:)-এর খোদার প্রেমপূর্ণ দৃষ্টি যখন তূর পর্বতের উপর পতিত হইল, তখন-ই তূর পর্বত ইশকের ক্রিয়ায় নড়া-চড়ার শক্তি পাইল এবং নাচিতে আরম্ভ করিল। অবশেষে সে চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া পড়িল এবং মূসা (আঃ) খোদার জ্যোতির প্রভাবে বে-হুশ হইয়া রহিলেন।

বা লবে ও মছাজে খোদ গার জোফতামে,
হামচু নায়ে মান গোফতানিহা গোফতামে।

অর্থ: উপরোক্ত লাইন-দ্বয়ে মাওলানা ইশকের ফজিলত ও শওকাত বর্ণনা করিতেছিলেন এবং খুব ভালভাবে ইশকের মরতবা বর্ণনা করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু, তিনি যখন ভাবিলেন যে ইশকের রহস্য ও শওকাত বাহ্যিক ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করা সম্ভব নয়, প্রকৃত আশেক না হইলে ইশকের স্বাদ গ্রহণ করিতে পারে না; ইশকের মধ্যে এমন গুরুত্বপূণ রহস্য আছে, যাহা বয়ান করিলে কোনো কোনো লোক বেঈমান হইয়া যাইবার আশষ্কা আছে, তখন তিনি নিজের কৈফিয়ৎ হিসাবে ওজর বর্ণনা করিতেছেন যে যদি আমার সম্মুখে আমার বর্ণনা শুনার জন্য কোনো খাঁটি আশেক থাকিত, তবে আমি বাঁশির ন্যায় ইশকের কেচ্ছা বর্ণনা করিতাম।

(

Hadis about ohabi

Hadith about ohabi নবী পাক এর হাদিস যে তিনি বলেছেন  নজদ থেকে একটা সয়তান এর সিং বেরুবে জারা মুসলিম হয়ে মুসলিমদের কে হত্যা করবে আর বেধর্মীদের কে ছেড়ে দিবে তাদের মুখ দিয়ে সবসময় কোরান ঝরবে কিন্তু কোরান তাদের গলগন্ড এর নিচে যাবে না আর তাদের মধে থেকে ইলম এমন ভাবে বের হয় যাবে যেমন শিকার এর ভিতর দিয়ে তীর বের হয় যায় refarenc ;- JA AL HAQ PAGE 2-3-4

Tabligis profet is not muhammad (sa)


তাবলিগি দের বোঝানোর জননো ও সবার অবগতির জননো আমার নিজের বিবেক থেকে লিখলাম 
মনে করেন যে একজন তাবলিগ জামাত এর মৌলভি জাচছে আর একজন ঈসাই তাকে ডেকে বলে কার কালেমা পরেন 
তাবলিগি;মুহামমাদ সাললেললাহু আলাইহে ওয়া সালাম এর 
ঈসাই: তোমার নবীর চেয়ে আমাদের নবী বেশি আফজাল ৷আমাদের নবীর কালেমা পরেন ৷
তাবলিগি; কিভাবে তোমার নবী ঈসা আমাদের নবী পাক এর চেয়ে বেশি আফজাল ?
ঈসাই : তোমার নবী কি কোন কিছু বানাতে পারে ? এবং তাতে জান দিতে পারে ?
তাবলিগি; এটা তো আলাহ পাক এর কাজ ৷ এমন বিসহাস যো রাখে সে তো মুসরিক ৷
ঈসাই: তোমারদের কোরান সুরা মরিয়ম আয়াত ৪৯ আমাদের নবী ঈসা (আ;) আমি মাটি দিয়ে পাখি বানিয়ে তাতে ফু দিয়ে তাতে জান দিতে পারি ও তা উরে যায় 

ঈসাই : তোমাদের নবী গায়েব বলতে পারেন ?
তাবলিগি; আমাদের নবী কে তো দেয়ালের পিছনের খবর ও জানা নাই ৷
ঈসাই: তোমাদের কোরান সুরা মরিয়ম আয়াত ৪৯ এ বলা হয়েছে আমাদের নবী ঈসা(আ:) তোমার পেটে কি আছে ও ঘরে কোথায় কি রেখে এসেছো তাও বলে দিতে পারতেন ৷

ইসাই: তোমাদের নবী অনধো দের চোখঁ দিতে পারেন ?
তাবলিগি; আমাদের নবীর নিজের দাতঁ পড়ে গিয়েছিল ৷আর একজনের চোখ দিতে পারলে কি নিজে দাত লাগাতে পারতো না ? 
ঈসাই: তোমাদের কোরান সুরা মরিয়ম বয়াত ৪৯ আমাদের নবী কানা কে ও চোখ দিতেন ৷

ঈসাই : তোমাদের নবী অসুসথো কে সুসথো করতে পারেন ?
তাবলিগি; আমাদের নবী তো নিজে ওসুসথো hoten
ঈসাই: তোমাদের কোরান সুরা মরিয়ম আয়াত ৪৯ আমাদের নবী কঠিন রোগের রোগি কে ও সুসথো করে দিতেন 

ঈসাই: তোমাদের নবী মুরদা কে জিনদা করতে পারে ?
তাবলিগি; আমাদের নবী তো নিজেই মরে গেছেন৷
যে এই সব আকিদা রাখে সে তো সিরিক করল ৷জান দেয়া নেয়া তো আললাহের কাজ ৷
ইসাই: তোমাদের কোরান সুরা মরিয়ম আয়াত ৪৯ এ বলা আছে যে আমাদের নবী ঈসা (আ:) আললাহ যাকে মারত তিনি তাকে জিনদা করতেন ৷

তো এখন আপনারা বলেন এমন বদ
আকিদা ওয়ালাদের কার কালেমা পড়া উচিত ?
আর আমার নবী সে তো নবী দের ও নবী আর ঈসা (আ:) তিনি তো আমার নবীর উমামাত হয়ে আসবেন ৷
আমার নবীর মনের কথা ও আললাহ কবুল করতো বলা ছারাই ৷ মুখে ও আনা লাগে না ৷

আর তাবলিগ ওয়ালা সময় আছে এখন ও৷
 

Ami ekdin tabligi der sathe

On day I'm with bedati tabligi 

আমি কাজ সেষে গাড়ির জননো wai করতেছিলাম আর আর পাসের মসজিদ এ তারা ভাষন দিতেছিল ৷১টাকা খরচ করলে ৭০০০০ নেকি এটা সেটা ৷
সেষে সবাই কে বলছে যে আসেন কিছুদিন এর জননো সময় বের করেন ৷
তো আমি বললাম যাবো কিভাবে ? গেলেই তো সবার আগে সুননাত এর খেলাপ হবে ৷
কেন ? খেলাপ কেন ? সকল নবী রাসুল তাবলীগ করেছেন ৷ তো এটা খেলাপ কিভবে ?
তাদের কে বলাম এই যে গাটটি !!!!!!!! এটা তো কোন নবী রাসুল সাথে নিয়ে ঘোরে নাই ধরমের কাজ এর সময় ৷

যখণ নবী তায়েফ গেলেন ডখন কি গাটি ছিল ? বলল না ৷
যখণ মদিনা হিযরত করল তখন ছিল ? বলে না ৷
তো বললাম এখন কেন ? তখণ তো সব ছিল মুসরিক ৷তখন নবী গাস চুলা সবজি রুটি নিয়ে ঘুরল না ৷
কারন নবী জানত যে আজ যদি আমি গাটটি নিয়ে যাই তাহলে আমার উমমাত এর জননো সুননাত হয়ে যাবে তাই তিনি গাটটি নিয়ে যাননি

আর এখন সবাই মুসলিম এখন তোমাদের তাবলিগ করতে এতোকওছু লাগে?
আবার সুরু খোরা যুকতি বলে তখণ তো জুতা মোজা ছিল না আপনি কেন পরছেন ?
আমি বললাম কত দলিল লাগবে ? বলে তখণ কার যুগ এই রকম ছিল না ৷
আমি বললাম হা ৷ তবু তারা দিন এর কাজ করেছেন ৷
বলে তখন খানার ও অভাব ছিল তাই হতে পারে ৷
বললাম হা তখন খানা এতো ছিল না৷ সাহাবি রা পেটে পাথর বেধে রেখেছিল ৷ কিনতু তোমাদের মতো তারা গোসত পোলাও বিরিআনি খেয়ে তাবলিগ এর নামে পিকনিক করত না 
সেষে আমাকে বলল যে তাবলিগি রা কি আপনাকে পাথর মেরেছে যে আপনি এতো লোকের সামনে তাবলিগ এর বিরুধ বলতেছেন ?
আমি বলাম যে সুকোর আদা করেন যে পাথর মারেন নি আমাকে ৷
আমাকে বলে আপনি নিরিবিলি বসেন আমার সাথে আমি আপনাকে খুলে বোঝাব ৷
আমি বললাম যে এখন মসজিদ এর ঘরে বশেন যে আপনি হক হক তা সাবেত করেন ৷
সেষে তানা বানা সুরু করেদিল আর কথা হয়নি ৷