শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৪

Hajir najir bye kazi bhai 3?

/ -- মহানবী (দ:) যখন মে’রাজ (ঊর্ধ্বগমনের) রজনীতে সিদরাত আল-মুনতাহা (আসমানী গাছ) পার হয়ে যান এবং তাকদীর লেখায় ব্যস্ত কলমের আওয়াজ শোনেন, তখন জিবরাইল আমীন ফেরেশতা তাঁর সাথে আর ওপরে যেতে পারেন নি [নোট-৮: ইবনে আবি হাতিম ও ইবনে কাসীরের তাফসীর দুটোতে উদ্ধৃত হয়েছে, ‘ফারাফাদানী জিবরীল’; অপর দিকে আল-সালেহীর ‘সুবূল আল-হুদা’ গ্রন্থে (৩:১২৯) বলা হয়েছে,‘ফাতা’আখখারা জিবরীল’ - দুটোরই মানে হলো ‘তিনি (জিবরীল) আমাকে ছেড়ে পেছনে থেকে যান’; দেখুন - আল-মালেকী প্রণীত ‘ওয়া হুয়া বিল্ উফুকি আল-আ’লা’ (পৃষ্ঠা ৭৩, ২৭৯) এবং ‘আল-আনওয়ার আল-বাহিয়্যা’ (পৃষ্ঠা ৭৫-৭৭)]। অথচ সকল সৃষ্টির মাঝে হযরত জিবরাইল আমীন হলেন আল্লাহর বেশ কাছের এবং আহলে সুন্নাতের মতে ফেরেশতাকুল আল্লাহকে দেখে থাকেন। [নোট-৯: আবু আশ্ শায়খ রচিত ‘আল-আ’যামা’ ও ইমাম আস্ সৈয়ুতী লিখিত ’আল-হাবা’ইক’ গ্রন্থগুলো দেখুন। এতে সকল সৃষ্টির ওপর মহানবী (দ:)-এর শ্রেষ্ঠত্ব ও পছন্দনীয় হবার বিষয়টি এবং তাঁর লকব (খেতাব) ‘আফযালুল্ খালক্ক’ সাবেত হয় যা অন্যত্র লিপিবদ্ধ আছে।]

ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) তাঁর ‘শেফা শরীফ’ গ্রন্থের ‘মহানবী (দ:)-এর প্রতি যে সব স্থানে সালাত-সালাম পাঠ করা কাম্য’ শীর্ষক অধ্যায়ে আল-কুরআনে বর্ণিত “অতঃপর যখন কোনো ঘরে প্রবেশ করো তখন তোমাদের আপনজনের প্রতি সালাম করো” (২৪:৬১) - আয়াতটি সম্পর্কে আমর ইবনে দিনার আল-আসরাম (বেসাল ১২৬ হিজরী)-এর ব্যাখ্যা উদ্ধৃত করেন; তিনি বলেন: “যদি ঘরে কেউ না থাকে, তাহলে বলো - ‘আস্ সালামু আলান্ নবীয়্যি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’।” [নোট-১০: ইমাম কাযী আয়ায কৃত ‘শেফা’ (পৃষ্ঠা ৫৫৫-৫৫৬=এসাফ আহল আল-ওয়াফা পৃষ্ঠা ৩৬৯)।] {অনুবাদকের নোট: ইমাম আহমদ রেযা খানের ‘তাফসীরে কানযুল ঈমান’ গ্রন্থে উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায়ও ইমাম কাযী আয়াযের উদ্ধৃতির বিস্তারিত বিবরণ দেয়া আছে।}

মোল্লা আলী কারী উপরোক্ত ‘শেফা শরীফ’ বইটির ব্যাখ্যায় বলেন, “অর্থাৎ, তাঁর (মহানবীর) রুহ মোবারক (পবিত্র আত্মা) সকল মুসলমানের ঘরে উপস্থিত থাকার কারণে (সালাম দেয়া জরুরি)” {আয় লিয়ান্না রুহাহু আলাইহিস্ সালামু হাযিরুন্ ফী বুইউতিল্ মুসলিমীন}। [নোট-১১: মোল্লা আলী কারী প্রণীত ‘শরহে শেফা’ (২:১১৭)।]

ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) আল-আসরাম থেকে যা উদ্ধৃত করেছেন তা ইবনে জারির তাবারী নিজ তাফসীর গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন ইবনে জুরাইজ হতে, তিনি আতাউল্লাহ খুরাসানী (বেসাল ১৩৫ হিজরী) হতে:

”হাজ্জাজ আমার (ইবনে জারির তাবারী) কাছে বর্ণনা করেন ইবনে জুরাইজ থেকে, তিনি বলেন: আমি আতা‘কে (এ প্রসঙ্গে) প্রশ্ন করি, কেউ যদি ঘরে/বাড়িতে না থাকেন, তাহলে কী হবে? তিনি জবাব দেন, ‘সালাম দেবে এ বলে, আস্ সালামু আলান্ নাবীয়্যি ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, আস্ সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্ সোয়ালিহীন, আস্ সালামু আলা আহলিল্ বায়তি ওয়া রাহমাতুল্লাহ।’ আমি আবার প্রশ্ন করলাম, কোনো জন-মানবহীন ঘরে প্রবেশের সময় আপনি যা পড়ার জন্যে বল্লেন, তা কোত্থেকে গ্রহণ করেছেন? তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি শুনেছি বিশেষ কারো থেকে গ্রহণ না করেই’।” [নোট-১২: আত্ তাবারী কৃত ‘তাফসীর’(১৮:১৭৩ #১৯৮৯৪)।]

আতাউল্লাহ খুরাসানী একজন পুণ্যবান মুহাদ্দীস (হাদীসবেত্তা), মুফতী (ফতোয়াবিদ) ও ওয়ায়েয (ওয়াযকারী) ছিলেন যাঁর কাছ থেকে এয়াযিদ ইবনে সামুরা শুনেছিলেন নিম্নের বাক্যটি: “যিকরের সমাবেশগুলো হলো হালাল ও হারাম শেখার বিদ্যাপীঠ।” [নোট-১৩: আয্ যাহাবী কর্তৃক তাঁর ’সিয়্যার’ গ্রন্থে বর্ণিত (৬:৩৬০)।] তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে আল-বুখারী, আবু যুরা’, ইবনে হিব্বান, শু’বা, আল-বায়হাকী, আল-উকায়লী ও ইবনে হাজর প্রশ্ন তুল্লেও তাঁকে ’সিকা’ ঘোষণা করেন ইবনে মাঈন, আবু হাতিম, আদ্ দারু কুতনী, আস্ সাওরী, ইমাম মালেক, আল-আওযাঈ, ইমাম আহমদ, ইবনে আল-মাদিনী, এয়াকুব ইবনে শায়বা, ইবনে সাআদ, আল-এজলী, আত্ তাবারানী ও আত্ তিরমিযী; অপর দিকে ইবনে রাজাব সিদ্ধান্ত নেন তিনি “সিকা সিকা”। [নোট-১৪: ইবনে রাজাব রচিত ‘শরহে এলাল আল-তিরমিযী’ (২:৭৮০-৭৮১)। দেখুন আয্ যাহাবীর ‘মিযান’ (৩:৭৩) ও ‘আল-মুগনী’ (১:৬১৪-৬১৫ #৪১২২) যা’তে ড: নূরুদ্দীন এ’তরের নোট সংযুক্ত; এছাড়াও দেখুন আল-আরনাওত ও মা’রুফের ‘তাহরির তাকরিব আল-তাহযিব’ (৩:১৬-১৭ #৪৬০০), যদিও শেষোক্তরা ‘তাওসিক’-কে ইমাম বুখারীর প্রতি ভুলক্রমে আরোপ করেন, আর আল-এ’তর ‘তাদ’ইফ’-কে ভুলক্রমে আরোপ করেন ইমাম আহমদের প্রতি!]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন