মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই, ২০১৫

ওহাবিদের ইতিহাস ---৩

তৃতীয় পর্ব ;- আল্লামা আফন্দি (রহ) 
ওহাবি সকারের মক্কা তায়েফের উপর জুলুম ও অত্যাচারের বর্নানা করেছেন এ ভাবে যে ;- তারা একদল লোক কে কোরান শরীফ পাঠরত দেখতে পেল , তারা তাদের সকলকে হত্যা করল । এর পর তারা বাজারে হামলা করল ও তাদের কে হত্যা করল। এর পর তারা মসজীদের দিকে অগ্রসর হল  ও সেখানে ১ জন কে হত্যা করল। এর সেখানে ২২-২৩ জন লোক ছিল।  তারা একটা দুরভেদ্য দুর্ঘে আশ্রয় নিল।   তিন দিন পর ওহাবি রা তাদের কে নিরাপত্তা দিয়ে বাইরে বার করে আনে ও সকলকে হত্যা করে । তারা তাদের মহিলাদের কে বিবস্ত্র করে বরফ আচ্ছাদিত এলাকায় ছেরে দেয়। তাদের অর্থ সম্পদ সকল কিছু লুট করে নেয়।  তারা কিতাব সমুহ নালা গলি ও নালার মধ্য নিক্ষেপ করল। কিতাব গুলোর মধ্য কোরান শরিফ , বুখারী মুসলিমের মত কিতাব ও ওনেক ফেকাহ কিতাব ছিল  ও কিতাবে সংখ্যা কয়েক হাজার ছিল । তারা এরপর তাদের ঘড়বাড়ি গুলো ধংস স্তুপে পরিনত করল।  এই হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল ১২১৭ হিজরি ( আল ফাজরুস স্বাদীক) পৃ ২২

তায়েফের উপর ওহাবিরা যে পরিমান অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তা সেই সময় মক্কা থেকে তারবার্ত্রার মাধ্যমে নিখিল ভারত খেলাফত কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল এই ভাবে যে ;- ১১ সেপ্টেম্বর আজ সারা দুনিয়ার প্রায় ২০ হাজার মুসলমান মক্কা শরিফে একত্রিত হয়েছে ও তারা বিশ্ববাসীকে জানিয়েছে যে ওহাবিরা তায়েফে আক্রমণ করেছে ও সেখানে থাকা হাসেমী সৈন্যবাহীনী অত্যন্ত বীরবীক্রমে লড়ীই করেছে । 

ঘটনা ছিল ;- তারা হযরত ইবনে আব্বাস (রা) এর পবিত্র মাযার শরীফ ধংসের পর সেখানকার সকল বাসিন্দাদের নিশ্চন্হ করে দিয়েছে । তাদের মধ্য শিশু নারী  এমন কি বৃদ্ধারাও বাদ পড়েনি । মোট কথা তারা সেখানকার সকল প্রজা ও বিদেশি নাগরিকদের শেষ করে ফেলা হয়েছে । এজন্য মানবতা ও সভ্যতা ও ন্যায় পরয়নতার পতাকা বাগি জাতি সংঘের (যা প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর তৈরি করা হয়) কাছে আমরা তুলে ধরছি যাতে এই অত্যাচারীতা কে ধংস করে দেওয়া হয় ও আমাদের কে মুক্তি দেয়া হয় এদের হাত থেকে (১০ সেপ্টেম্বর ১৯২৪) 

মাসয়ালা এ হেজাজ ওয়াব্দে খেলাফত (১৯২৬ ইং পৃ ৪-৫) 

 উল্লেখিত যে এই বার্ত্রার সাথে কমছে কম ৫০ জন আলেমের সই তুলে দেওয়া আছে। যা তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করলাম না ।

মক্কা শরিফে হামলা ও দখল (- 

নওয়াব সিদ্দিক হাসান খান ভুপালভী লিখেছেন যে ;- আব্দুল আজীজ দ্বীত্য় বছর একদল সৈন্যবাহীনী তৈরি করে তায়েফে প্রেরন করল । তারা সেখানে হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর সেখানে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্টা করল । এর পর তারা সেই বছরই তারা কলনফাযাহ দখল করে নিল । ১৮০৪ সালে আব্দুল আজীজ একদল সৈন্যবাহীনী তৈরি করে নিজের সন্তান সাউদ কে দিয়ে তা মক্কা মুয়াজ্জামায় প্রেরন করল।  তারা মক্কা ধংস করতে তিন মাস মক্কাবাসীদের কে অবরুদ্ধ করে রাখলো। অবশেষে মক্কাবাসী তাদের অনুগত করতে বাধ্য হল । কেউ কেউ নিখেছেন যে সেই সময় তারা মক্কার সুধীজন ও বিশিষ্ট বেক্তি দের কে হত্যা করেছিল ও মক্কার পবিত্র কাবা ঘর কে বিবস্ত্র করে রেখেছিল ও নিজেকে ওহাবি মতবাদ গ্রহন করতে বাধ্য করেছিল । (তরজুমানে ওয়াহহাবিয়া ) ৩৪-৩৫

সরদার মোহাম্ম্দ হাসান বি এ লিখেছেন যে -ওহাবিরা এতই মুর্খ গ্রাম্য ও উগ্র আরব ছিলেন যে তারা একারনে   পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে গিয়েছিল । তারা তুর্কি মুসলমানদের প্রান সংহারকে মৌলিক পুন্য কর্ম (ওয়াজীব) ও দ্বীনের খেদমত মনে করত । সাধারন মুসলমানদের কে মুশরিক বলত ও তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ  ও আক্রমণ করাকে জেহাদ বলত (সাওয়ানিয়্যায় হায়্যাতে সুলতান ইবনে সাউদ) ৫৪ নং পৃ 


ওহাবিরা কাফেরদের কে হত্যা করেনি ;- ১৯২৬ সালের ভারতীয় কেন্দ্রীয় খেলাফত কমিটির নিকট একটা সুস্পষ্ট বিবৃতি আছে যে :- এক শতাব্দীর ও বেশি যুগ ধরে ওহাবিদের হাত কাফেরদের রক্তে রন্জিত হয়নি । যে পরিমান রক্তপাত তারা করেছে তা শুধু মুসলমানদেরই করেছে । তারা ছোট ছোট বিষয় নিয়ে হাজীদের কে মুশরিক ব্'লত। সুলতান আব্দুল আজীজের মুল শক্তি এই নজদীরাই । তাদেরকে যুদ্ধের জন্য এভাবে উদ্ভুদ্ধ তরা হতে যে দেশ দখলের লড়াইকে জেহাদ ফতোয়া দেওয়া হত ও যে দেশ দখলের জন্য যুদ্ধ করা হত সেই দেশের জনসাধারণদের মুশরিক তকমা প্রদান করা হত। আমি বার বার দেখেছি যে , যে হাজী মাকামে ইব্রাহিমের গেট বা তালা স্পর্শ করত তাদের কে বেত দ্বারা প্রবার করা হইত  এবং তাকে হলা হত (ইনতে মুশরিক) তুমি মুশরিক । আর যে হাজী গুলো জান্নাতুল মুআল্লার মাযারগুলো যিয়ারত করতে যেতেন, তাদের বেশিরভাগই মার খেয়ে আসতেন । (মাসয়ালায় হেজাজ ওয়াব্দে খেলাফত) পৃ ১০৪।


মক্কার উপর হামলা ;- সরদার মোহাম্ম্দ হাসান বি এ লিখেছেন যে ;-  সাউদেক সৈন্য বাহিনি তায়েফের উপর সরাসরি হামলা করে লজের দখলদারিত্ব প্রতিষ্টা করল  ও সেখান থেকে পার্শ্ববর্তী অন্চলে সৈন্য পাঠাতে লাগল । মক্কার শাষক শরিফের নিকট তেমন উল্লেখযোগ্য সৈন্য বাহীনি ছিল না । তিনি ওহাবিদের আক্রমণ সয্য না করতে পেরে তিনি জেদ্দায় চলে যান ।  ১৮৫৪ সালে বিনা বাধায় মক্কা দখল করে নেন । 
তাদের ওনেক দিনের ইচ্ছা ছিল যে তারা তাদের মতবাদের প্রচার মক্কা থেকেই করবে  যেখানে সামান্য তম শিরক পাবে তাদের মতে তা তারা নিশ্বেষ করে দিবে । সুতরাং তারা তখনই পবিত্র মাযার গুলো ও যিয়ারতের স্থান গুলো ধংস করে দিল । তারা কাবা ঘরের গিলাফ ছিরে ফেলল । 
তাদের আকিদা বিরুধি যা কিছুই তারা পেল তা তারা ধংস করতে মরিয়া হয়ে উঠল ও তা পুর্ন করল সেই সময় যতটা সম্ভব হয়েছিল (সাওয়ানিয়্যায় সুলতান ইবনে সাউদ) পৃ ৪৮

সরদার মোহাম্মদ হাসান বি এ  ও উপরের বর্নিত কথা গুলোই বলেছেন তবে তিনি আর একটু বেশি বর্নানা করেছেন তা হচ্চ্ যে ;- ইবনে সাউদ  বলেছিলেন সেই সময় মক্কার মুসলমানদের কে উদ্দেশ্য করে  তার সৈন্য বাহীনি কে যে (- মুশরিক বেঁচে যাবে যাক । কিন্তু কেন মাযার ও যিয়ারতের স্থান অবশিষ্ট রাখবে না । 
(সাওয়ানিহে হায়াতে সুলতান ইবনে সাঊদ ) পৃ ১৫৫


ওহাবিদের কথিক লা মাযহাবি (ক্বাযী শওকানির ছাত্র মুহাম্মদ ইবনে নাসির হাযেমী লিখেছেন যে  :- মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর ছেলে আব্দুল্লাহর ছেলের যুগে তারা ৮ মহররম ১২১৮ হিজরি শনিবার  সকালে তারা মক্কার হামলা চালিয়েছিল (ক)(সাওয়ানিয়াহে হায়্যাতে সুলতান ইবনে সাউদ) পৃ  ৪৮ 

(খ) মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব পৃ ৭৩

অথচ পবিত্র মক্কা শরিফের উপর হত্যাকাণ্ড হারাম কিয়ামত পর্যন্ত ;- 

নবী আকরাম সাল্লেল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেছেন যে ;- আমার আগে কারো উপর মক্কার হত্যাকাণ্ড বৈধ ছিল না , ও আমার জন্য ও দিনের একটা বিশেষ সময় ব্যাতীত বৈধ করা হয়নি । সুতরাং আল্লাহ তায়ালা নিজে অবৈধ ঘোষনার পরে কিয়ামত পর্যন্ত মক্কার যুদ্ধ করা হারাম ।( মিশকাত ২৩৭-২৩৮) 

যুদ্ধ করা দূরের কথা অস্ত্র উচিত্ ধরা ও হারাম :-

হযরত যাবের (রা) বর্ননা করেছেন যে ;- আমি নবী এ কারীম (সা) কে বলতে শুনেছি যে , তোমাদের মধ্য কারো জন্য মক্কা মুকার্রামায় হাতিয়া উত্তলন করা বৈধ নয় (মুসলিম , মিশকাত , বুখারী) 

তো যে দেশে বা যায়গায় অস্ত্র উত্তলন করা ও বৈধ নয় সেই দেশে হামলা করে দখল করে যারা তারা কতবড় ইমানদার ব্যাক্তি ! তা কি চিন্তা করে দেখেছেন কেউ একবার ? জবাব দিবেন ।

মদিনা মুনাওয়ারায় হামলা ;- ওহাবি নজদিদের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ মির্যা হায়্যাৎ দেহলবী লিখেছেন যে ;- ১৮০৩ সালের শেষের দিকে তারা মদিনায় দখলদারিত্ব প্রতিষ্টা করল । তারা অন্যান্য কবর ও যিয়ারতের স্থান গুলো ধংস করে নবী পাকের পবিত্র রওজায় আকদাস কে ও ছাড় দেয় নাই । রওজায় আক্কদাসের মনি মুক্তা গুলো তারা লুট করে বরবাদ করে ফেলেছে  ও নবী পাকের কবরের উপড় বিছিয়ে দেওয়া মুল্যবান চাদর মুবারক ও তারা তুলে ফেলেছে (হায়্যাতে তাইয়েবাহ ) ৩৮৫ 

পবিত্র রওজা পাকের গম্বুজে গোলা বর্ষন ;- ইতিহাস বেত্তা সরদার মুহাম্মদ হাসান বি , এ লিখেছেন যে ১৮০৩ সালে আগষ্ট মাসে নজদীরা মদিনা আক্রমণ করে ২৫ তারিখ । সেই সময় আমীর আলীর শাষকগন প্রচার করে যে নজদীরা  পবিত্র গম্বুজের উপর গোলা বর্ষন করেছে । এই খবর প্রচারিত হয়ে গেলে সারা মুসলিম জাহান থেকে ক্ষোভ প্রকাশ হতে থাকে যদিও নজদীরা তা অস্বীকার করেছিল । সারা মুসলিম জাহান আলাদা আলাদা ভাবে চেষ্টা করতে থাকে রওজা পাক হেফাজত করার। এ  দিকে ইরান একটা প্রতিনিধি দল প্রেরন করে  ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য । ১৮০২৫ সালের শেষের দিকে উক্ত প্রতিনিধি দল তাদের রিপোর্ট হস্তান্তর করে , ও তাতে যাচাই করে দেখা যায় যে রওজা পাকের উপরের সবুজ গম্বুজে ৫ টা গুলি লেগেছিল ((সাওয়ানিয়াহে হায়্যাতে সুলতান ইবনে সাউদ) পৃ ১৫৭



সোনা দানা লুট (- 
আহলে হাদীসের মুজতাহিদ ও কট্টোর ওহাবি নওয়াব সিদ্দিক হাসান খান ভুপালভী লিখেছেন যে ;- সা,ঊদ নবী কারীম (সা) এর রওজা মুবারক কে গিলাফ শুন্য করেছিল ও সেখানকার মুল্যবান সামগ্রী ও প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ধন ভান্ডার গুলো লুঠ করে তারা দর'ইয়াহ (নজদ) এ নিয়ে গিয়েছিল । কেউ কেউ বলেছেন যে ৬০ টি উটে ভর্তি ধন সম্পদ তারা নিয়ে যায় ।অনুরুপ তারা হযরত ওমর ও আবু বক্কর সিদ্দিক (রা) এর কবরের সাথে করল । আর সাউদ নিজের মন মত নাসির উদ্দিন আল হারব কে গভর্নর নিয়েগ করল ওহাবি মতবাদের প্রচার করার জন্য ও সাধারন কে বাধ্য করল তাদের ওহাবিবাদ গ্রহন করার জন্য। 

সা,ঊদ রাসুলুল্লাহ (সা) এর কবরের উপরের সবুজ গম্বুজ ভেংগে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল, কিন্ত তা সম্ভব হয়নি ।এবং ঘোষনা করলে যে বাইতুল্লাহ  শরিফের হজ্জ ওহাবিরা ছারা আর কেউ করতে পারবে না (তরজমানুল ওয়াহহাবিয়া ) পৃ ৩৬ ।


আজ এটুকুই।  পরে আবার পোষ্ট করা হবে । 

সোহেল রানা 

ওহাবিদের ইতিহাস-২

প্রথম দিনের পর ;- বিষয় ওহাবি ও মতামত :-

আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ;- আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে'র বিজ্ঞ আলেমদের মধ্য ইবনুল হাজ মোহাম্ম্দ আব্দুর রেহমান শাফেঈ (রহ)  মোহাম্ম্দ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদি ও তার অনুসারীদেরকে আপাদ মস্তক ভ্রন্তি বলে আখ্যা দিয়েছেন।  তিনি বলেন ;- আমাদের যুগে ওহাবি নজদি ও তার মুর্খ অনুসারীরা অবশ্যই ফেতনা সৃষ্টির জন্য বের হয়েছে । তাছারা মর্যাদাশালী যেসব আলেমদের মাসআলার উপর এক্যমত ও আমাল করছিল সাধারন মানুষ তারা তা প্রত্যাখ্যান করতে অবিচল ।ওহাবিদের গোড়ার কথা বলে দেওয়া আমাদের জন্য ওয়াজীব হয়ে গেছে ।নব সৃষ্ট মতবাদের প্রতি আহব্বানকারী বিষয়গুলো স্পষ্ট করা আমাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে গেছে । আমরা আল্লাহ তায়ালার তাওফিক্রমে তাদের খন্ডনে ও তাদের ভীতগুলো নড়বড়ে করে দেওয়াদর জন্য কিতাব লিখতে শুরু করেছি  ও সেটার নাম রেখেছি দ্বালালাতুল ওয়াহাবীয়্যিন ওয়া জ্বীহালাতুল মুতাওয়াহীবীন 
সুত্র ;- রিসালাতুস সুন্নিয়ীন পৃ ৩ ও নুরুল ইয়াক্বিন  পৃ ৩ 

সাইয়েদ আব্দুল হাদ্দাদ আলাভী আলাইহের রাহমা স্বীয় কিতাব (যালাউয যালাম ফী রদ্দে আলান নজদীয়ীল লাজী আদ্বালাল আওয়াম) 

যা ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর খন্ডনে বিরাটকার কিতাব । ওনেক হাদীস বর্নানা করেছেন তিনি । তিনি আরো বলেন এ অহংকারী ধোঁকার শিকার মোহাম্ম্দ ইবনে আব্দুল ওহাব তামীম গোত্রের লোক । 

সুতরাং এটা ও সম্ভব যে ঐ যুলখোয়ায় সারাহ তামীমির বংশধর  , যার সমন্ধ বুখারী শরিফে হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্নিত চিনি বলেন যে - নবী কারীম (সা) বলেছেন যে , তার গোত্রে এমন কিছু লোক জন্ম গ্রহন করবে , যারা কোরআন শরিফ পড়বে কিন্ত তা (কোরআনের জ্ঞান) কন্ঠ নালীর নিচে যাবে না , তারা তেমনি ভাবে ধর্ম থেকে বের হয়ে যায় যেমন কিনা তীর শিকর ভেদ করে বের হয়ে যায় । 

তারা মুসলমানদের কে হত্যা করবে ও প্রতিমা পুজারীদের কে ছেরে দিবে , আমি যদি তাদের কে পাই , তাহলে তাদের কে আদ জাতির মত হত্যা করতাম । 

বিঃদ্র ;- 
আপনি যদি সামান্য একটু চোখ ফিরিয়ে বর্তমান সময়ের যে কোন নজদি দেশ বা নজদিদের দেখেন তা হলে দেখবেন তারা আমেরিকা কে নিজের আব্বাজান ইউরোপ কে নিজের জন্মদাতা মা রাস্তা কে বড় ভাই ও চায়না কে দোস্ত করে নিয়েছে । এরাই মুসলমানদের উপর যুলম ও কাফেরদের প্রতি দরুদ পেশ করে থাকে । 

সাইয়েদ আলাভী (রহ) বর্নানা করেন যে , যখন আমি ইমামুল মুফাচ্ছেরিন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এক যিয়ারতের জন্য বের হলাম ও তায়েফ পৌঁছলাম , তখন আল্লামা তাহের সম্বুল হানাফি ইবনে আল্লামা শায়েখ মোহাম্ম্দ সম্বুল শাফেঈ (রহ) সাথে সাক্ষাত ঘটে । তখন তিনি বলেন আমি দলটির খন্ডনে একটা কিতাব রচনা করেছি ও নাম দিয়েছি (ইন্তাসারুল আওলিয়া-ইল আবরার) 

আশা করছি যে , যে লোকের ভিতর নজদি বিদয়াত ঢুকেছে , তার সফলতার আশা করা যায় না , কারন  বুখারী শরিফে বলা হয়েছে যে তারা দ্বীন থেকে এমন ভাবে বের হয়ে যাবে যে তারা ফিরে আসবে না (আদ-দুরুসুস স্যানিয়া ) পৃ ৯০ 


আল্মা ইবনে যায়নী (রহ) যিনি মক্কা শরিফের মুফতি ছিলেন , তিনি প্লেন যে চার মাযহাবের ওনেক আলেম তার খন্ডনে ওনেক কিতাব লিখেছেন (আদ-দুরুসুস স্যানিয়া) পৃ ৪০ 


ওহাবিদের  প্রতি সাজা (- 
আবুল কালাম আজাদ তার কিতাব (আজাদ কি কাহানী উনকি আপনি জাবানি) কিতাবে লিখেছেন যে ;- ওই যুগে সরকার যাকে সন্দেহ করত , দ্রুত এসে তাকে গ্রেফতার করত , মামলা দায়ের করত , ফাঁসীর আদেশ দিত  অন্যথায় কমছে কম কালাপানি তরিপার (নির্বাসন) বা যাবত জীবন দন্ড দিত । ওনেক ওহাবি ব্যবসায়িদের কে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিত। ফলে তাদের পুরা পরিবার ধংস হয়ে যেত । সুতরাং বাংলার ওহাবিদের ও যারা নেতা ছিল তাদের এমন অবস্থা হত এমনই , ও তারা অনেক বেশি ধনী ও ছিলেন( আযাদ কি কাহীনি ) পৃ ১০৩-১০৪

আশরাফ আলী থানবীর সাক্ষ্য ও দেয়া যেতে পারে যে তিনি তার এফাজাতুল ইয়োমিয়া কিতাবে ও এমনই করুন অবস্থা তুলে ধরেছিলেন সেই সময়ের ওহাবিদের ।

তাদের কে সাজা ;- ওহাবি মৌলভী মুহাম্ম্দ লতিফ মুহাম্ম্দ আনসারী এবং কাজী মুরাদ কে তাকল্বীদ , কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্য বের হওয়া , নবী ও ওলিগনের ওসিলা চাওয়া , ইত্যাদিকে বিদয়াত ও হারাম বলার কারনে মদিনার শাষক (শরিফ) তাদের কে ৩৯ টা করে বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দেন (আজাদ কি কাহানী) ১০৬ নং পৃ ।

ওহাবিদের মৌলভী নজীর হোসেন দেহলভি সমন্ধে আবুল কালাম আজাদ লিখেন যে ;- নজির হোসেন দেহলভি হজ্জে করার ইচ্ছা করলে তার মনে পড়ে যায় ওহাবি মৌলভিদের সাথে বিরুদ্ধবাদীদের আচরনের কথা ,। কারন তিনি অবগত ছিলেন যে ওহাবি আলেমদের সাথে কিরূপ আচরন করা  হয়েছিল । তাই সেখানে তাকিয়াবাজী ( নিজের আকিদা গোপন রেখে তালে তাল মিলিয়ে চলা) ছারা কোন ওহাবীই রেহাই পেত না ( আজাদ কি কাহানী ) পৃ ১১৯



উল্লেখ্য যে এই নজীর হোসেন দেহলভি তওবা করেছেন মক্কা হজ্জ করতে গিয়ে । কিন্তু কুত্তার লেজ কি আর সোজা হয়।  

দেওবন্দিদের মৌলভী ক্বারী খলিল আহমেদ তার কিতাব (সা-ইক্বাতুত তাকল্বীদ আলাল গাভ্যিয়ীল আনীদ) কিতাবে নজীর হোসেন দেহলভীর তওবা নামা তুলে ধরেছেন ।

উক্ত কিতাবের ২৮ নং পৃষ্টায় (নক্বলে ইশতেহারে মক্কা মুয়াজ্জামা ) শিরোনামে চুলে ধরেছেন যে -অতপর আমি সাইয়েদ নজীর হোসেন দেহলভি আহলে সুন্নাত ওয়া জামাতের অনুসারী । এর পরিপন্থি যত মতবাদ আছে যেমন শিয়া , রাফজী , খারেজী, ওহাবি এগুলো কে অপছন্দ করি ও আমি হানাফি ফেকাহ মোতাবেক ফতোয়া প্রদান করে থাকি  ও আমি নিজে ও হানাফি । ইতিমধ্যেই আমি যত পাপ করেছি তার সকল থেকে আমি তওবা করছি । 


এই বিজ্ঞপ্তি যখন মক্কা থেকে ভারতে আসল তখন তারা তা অস্বীকার করল ও বলে উঠল যে এই বিজ্ঞপ্তিতে কোন সীল  ও মোহর নাই।  যদি তারা সীল ও মোহর এনে দিতে পারে তো আমি ৫০ রুপি পাথেয় দিব । সুতরাং মৌলভী আব্দুর রেহমান দেহলভি মক্কা থেকে তওবা নামা মোহর অংকিত করে মুম্বাই এ প্রচার তরা হয় । 

প্রকৃত পক্ষে সেই সময় ওহাবিদের ও নজীর হোসেন দেহলবীর ওনেক বেজ্জত হয়েছিল সেই সময় ও তাদের তওবা করার তারিখ ছিল ২৬ জিলহজ্ব ১৩০০ হিজরী ।


ওহবিদের ইতিহাস-১

জানি। এত বড় পোষ্ট পড়ার সময় কারোই নাই। কিন্তু আমাদের লেখার সময় আছে । 
যদি মন চায় করি করে রেখে দিন। সময় হলে আল্লাহর ওয়াস্থে পড়বেন । 

বিঃদ্র আজকের বিষয় মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী বা ওহাবিয়াহত এর চুলছেড়া বিশ্লেষন । 
শেয়ার করুন সকলে । 

জন্ম ১১১১ হিজরি ১৭০৫ খৃ । তামীম গোত্রে তিনি জন্ম গ্রহন করেন । তিনি ওনেক আলেমের কাছে শিক্ষা গ্রহন করেন তার মধ্য শায়েখ মোহাম্ম্দ বিন সুলাইমান কারডি স্বাফেয়ী ও শায়েখ মোহাম্ম্দ হায়্যাৎ হানাফি অন্যতম । 
এ দুজন শিক্ষক তার ধর্মদ্রোহিতা ও বিভ্ন্ন্ আলামত লক্ষ করে প্রায় বলতেন যে ;- সে অনতিবিলম্বে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে । তার মাধ্যমে ওনেক হতভাগা দুর্ভাগা মানুষ গোমরাহ হয়ে যাবে । 
সুতরাং তাই হয়েছে পর্বর্তীতে । 

মোহাম্ম্দ বিন আব্দুল ওহাব নজদীর শ্রদ্ধেয় পিতা তার কাজ কর্ম লক্ষ করে তার থেকে সাধারন মানুষকে দূরে থাকতে উপদেশ দিতেন। এমন কি তার আপন ভাই শায়েখ সুলাইমান ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী ও তার নব আবিষ্কৃত ধর্মমত ও কর্মকান্ড ধর্ম মত ও পাতিল আকিদা গুলোর খন্ডন করতেন । শায়েখ সুলাইমান তার আপন ভাইয়ের খন্ডন করে কিতাব রচনা করেন (আস্সাওয়াইক্বল ইয়া হিলা ফি রদ্দে আল ওয়াহহাবিয়াহ) 
সুত্র ;- আদদুরাসুস স্যানিয়া পৃষ্টা ৪২ 

ওহাবি কাদের বলা হয় ;- প্রকৃত পক্ষে ওহাব আল্লাহ তায়ালার নাম । 
কিন্তু আল্লামা মোহাম্ম্দ আব্দুর রেহমান সিলহেটি (রহ)  নজদী সম্পর্কে বর্নানা করেন যে ;- দ্বিতীয় সুলতান মাহমুদ খানের আমলে মোহাম্ম্দ ইবনে আব্দুল ওহাব নামের এক ব্যাক্তির আত্নপ্রকাশ ঘটল । ইবনে তাইমিয়ার মিত্তুর পর সে তার ভ্রান্ত বিলুপ্ত প্রায় আকিদাগুলো আবারো পুনরায় প্রচার করা শুরু করল । 

সে নতুন সরিয়ত প্রকাশ করল । আহলে সুন্নাতের বিরোধি সে একটা দল গঠন করল । ফোরাত থেকে সিরিয়া ও বাগদাদ শরিফ ও বসরার মত যায়গাগুলো সে চষে বেড়াল । আর সেখান থেকে সে আরবে ফিরে আসলো ।বাদশাহ ইবনে সৌদের সহায়তা পাবার জন্য , সে উক্ত দলে যোগ দিয়েছিল । সে শহরের বড় বড় মানুষগুলোকে নিজের দলে টেনে নিলো । এ কারনে তাদের দলের দলনেতা মোহাম্ম্দ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর নামানুসারে তাদেরকে ওহাবি বলা হয় । ( সরফুল আসরার , আলাল মুসলিলুল ফুজ্জার) পৃ ১১

এই হচ্ছে ওহাবি কারা তাদের পরিচয় । 

সকল কে মুশরিক বলা ;- বলা হয়েছে যে ;- এসব লোক কিছু দিন হল বের হয়েছে ও দুই হেরেম শরিফের উপর তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্টা করেছে । তারা নিজেদের কে হাম্বলী মাযহারের দাবি করে , কিন্তু তারা নিজেদের কে ছারা অন্যদের কে যারা তাদের ফেলার আকিদা পোষন করে তাদের কে মুশরিক  এ কাফের মনে করে ও তাদের রক্তপাত যায়েয মনে করে । 
সুতরাং তারা আহলে সুন্নাহ এর আলেমদের কে হত্যা করতে দ্বিধা বেধ করেনি ।(শাহ ওলিউল্লাহ ওর উনকি সিয়াশী তেহরিক) পৃষ্টা নং ২৩০ ।

এই হচ্ছে ওহাবি।  আজকাল যাদের কে আমরা আহলে হাদীস বা লা মাযহারী বলে জানি এরাই এই কথিত ওহাবি । 

মাযার ধংস করা ;-- সর্দার মুহাম্মদ হাসানী বি এ তিনি তার কিতাব   (সাওয়ানিয়ে এ হায়্যাতে সুলতান ইবনে সৌদ)     লিখেছেন যে ;- শায়েখ তার নিকট এ মর্মে শপথ নিয়েছে যে , উক্ত মাযার সমুহ ও তৎসংলগ্ন স্থাপনা গুলো ধংস করতে মদদ যোগাবে । ইবনে মুয়াম্মার তা গ্রহন করলো । উভয় পরামর্শ করে তারা জালালীয় এ গিয়ে উপস্থিত হলো রাসুলুল্লাহ (সা) এর সাহাবা কতিপয় মাযার ধংস করলো উভয় মিলে । 
(সাওয়ানিয়ায় হায়াতে সুলতান ইবনে সৌদ) পৃ ৪১

তৎকালীন সময়ের পবিত্র হেরেম শরিফের মুফতি আল্লামা যায়নী (রহ) লিখেছেন যে :- একের পর এক আরবের গোত্র গুলো তার অনুগত্য করতে শুরু করল। আরবের জংলী লোকগুলোর তাকে ভয় করতে শুরু করল।  গ্রামবাসী রা ও তার অনুগত্য শুরু করল  ও তারা একে বারেই মুর্খ ছিল। দ্বীন সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান ছিল না ( আদদুরাসুস স্যানিয়া ) ৪৩ নং পৃষ্টা । 

আব্দুল ওহাব নজদীর মতবাদ;- 
মোহাম্ম্দ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর মতে যা তার প্রবৃত্তির মত হবে তাই সত্য , যদি তা প্রকাশ্য দলিলাদির বিরুদ্ধ ও হয়ে থাকে । 
আর বাতিল হল তাই যা কার প্রবৃত্তির বিরুধি । বোক না এমন বিষয় যে সকল উম্মাতের মাধ্যমে তা এক্যমত রয়েছে । সে বেশিরভাগ সময় নানা রকম বাক্য ব্যাবহার করে নবী পাকের মানহানী করত (নাউজুবিল্লাহ ) আর মানুষকে বোঝাত তার ইচ্ছা তাওহিদের হেফাজত করা। নবী পাক (সা) কে লক্ষ করে বলতেন যে তিনি ত্বরীস ছিলেন। ত্বারীশ বলা হয় সেই বেক্তিকে যারে এক গোত্র থেকে অন্য গোত্র পাঠানো হয়  সংবাদ বাহক হিসেবে । তার কাছে নবী পাকের ইজ্জত ছিল একজন পত্র বাহকের মত যে পত্র পৌঁছানোর পর আবার ও ফিরে আসত । 
তার কোন কোন অনুসারী বলত যে আমার লাঠি মোহাম্মাদের  ছেয়ে উত্তম । কারন আমার লাঠি দিয়ে আমি উপকৃত হই কিন্তু মোহাম্ম্দ  কে দিয়ে আমার কোন উপকার হয় না (নাউজুবিল্লাহ) 


কিছু কর্মকান্ড;- আল্লামা আফন্দি রাহিমুল্লাহ লিখেছেন যে আবুল ওহাবিয়াহ নজদীর নাপাক কর্মকান্ডের বর্নানা করেছেন এই ভাবে যে ;- মোহাম্মাদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর কর্মকান্ডের মধ্য এ ও আছে যে যখন ওই সব লোকদের কে নবী পাকের রওজা মোবারকের যিয়ারত করতে বাঁধা দেওয়া হল তখন ওই সব লোকের মধ্য কিছু লোক অহস্সা থেকে বের হলেন ও নবী পাকের রওজায় আকদাস যিয়ারত করলেন । এই খবর যখন তার কাছে পৌছলে  তখন দরইয়্যাহ নামক স্থান তারা পার করছিলেন । তখন মোহাম্ম্দ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী তাদের দাড়ি মুন্ডিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন । অতপর তাদের কে দরইয়্যাহ থেকে ইহসা পর্যন্ত তাদের কে বাহনের উপর উল্টে করে বসিয়ে পাঠিয়ে দিলেন ( আদদুরাসুস স্যানিয়া) পৃ ২০-২২।

এই ছিল আশেকে রাসুলদের অবস্থা নজদীর হাতে যে সে দাড়ি মুন্ডিয়ে দেয়ার হুকুম করতেন । 

আর আমার নবী দাড়ি রাখতে বলেছেন।  
আল্লাহ তার বিচার করুন এত বড় হীন কাজ করার হিম্মত করার জন্য । 

হেরেম শরিফের মুফতি আল্লামা সাইয়েদ আহমেদ ইবনে যায়নী রাহিমুল্লাহ বর্ননা করেছেন যে ;- মোহাম্ম্দ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী ওনেক কিতাব জালিয়ে দিয়েছে (১) মদিনার ওনেক আলেম ও বিশেষ বিশেষ মানুষকে হত্যা করেছে । তাদের সম্পদ কে হালাল জেনে লুন্ঠন করেছে । সে নবী কারীম (সা) ও ও অন্যান্য নবী  ও ওলিগনের মানহানী করেছে ও তাদের কবর গুলো উপরে ফেলেছে ( এই কথার দলিল নজদীর নিজের কিতাব থেকে ও দেওয়া যেতে পারে , সে লিখেছে ;- আমরা কোন কিতাব ধংসের অনুমতি দেই না , তবে যে কিতাব গুলোতে শিরকের মিশ্রত থাকে ও আকিদাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে যেমন ;- রওফুর রিয়াহীন , মানতিক্বের কিতাব সমুহ ও দালাইলুল খযরাতের কিতাব সমুহ  ধংস করে দেওয়া যায় ( আল হাদিয়াতুস স্যানিয়া ) পৃ ৪৫-৪৬

আরো ইবনে যায়নী (রহ) বলেছেন যেমন ওলিগনের কবরের উপর টয়লেট বানিয়েছিল।  দলায়লুল খযরাতের কিতাব সমুহ , ওজিফা পড়তে , নবী পাকের মিলাদ পালন করা কে , আজানের পর দরুদ শরিফ পাট করতে নিষেদ করে দিলো । নিষেদ করার পর যারা এই সকল কাজ পালন করেছেন তাদের কে শহিদ করে দিল , নামাযের পর দোয়া করতে নিষেদ করে দিল । নবী গনের ও ওলি গন কে যারা ওসিলা করত তাদের কে কাফের বলত ও যারা মাওলানা ও সাইয়েদুনো বলে সে কাফের । (আদ দুরুসুস স্যানিয়া ( পৃ ৫২-৫৩) 

আল্লামা সাইয়েদ হালাবী আল হাদ্দাদ রাহিমুল্লাহ বর্নানা করেছেন যে ;- নিস্বন্দেহ আমাদের মতে  মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী কথা এবং কাজ থেকে এ বিষয় পরিষ্কার যে ,  তার এসব আকিদা ইসলামের গন্ডি থেকে বের করে দিয়েছে ,  কেননা সে এমন সব বিষয় কে হালাল সাব্যস্ত করেছে যে , সে গুলো হারাম হওয়ার পক্ষে সমস্ত মুসলিম জাতি একমত , এবং সে এমন বিষয় হারাম প্রমান করেছে যে , সে গুলো যায়েজ হওয়ার পক্ষে পুরা মুসলিম জাতি একমত । তাছারা সে নবী ও ওলিগনের মানহানী করে ও নেক্ লোকদের মানহানী করে । আর ইচ্ছা কৃত কারো মানহানী করে চার ইমামদের মতে কুফর। এর উপর ইজমা রয়েছে ( আল ফজলুস স্বাদীক পৃ ১৯ 

আল্লামা আফন্দি (রহ) বর্নানা করেছেন যে ;- মোহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহাব নজদী তাদের দিলে এ খাত বদ্ধ মুল করে দিয়েছে যে ;- আশমান ও জমিনের উপর যত লোক আছে শুধু মাত্র তারা ছারা বাকি সবাই মুশরিক । আর যারা মুশরিকদের কে হত্যা করবে তাদের জন্য জান্নাত ওয়াজীব । মোহাম্মদ ইবনে আবদেল ওহাব নজদী তার অনুসারীরদের নিকট নবীর সমান ছিল কারন তার কোন কথাই তারা বর্জন করত না  ও তার হুকুম ছারা কোন কাজই করত না । তারা তাকে সীমাহীন সম্মান করত (আল ফজরুস স্বাদীক ) ১৯ নং পাতা ।

হেরেম শরিফের মুফতি সাহেব বর্নানা করেছেন যে (- নজদিরা যখন মানুষকে হত্যা করত তখন তার সমস্ত সম্পদ কেড়ে নিত ও তার পাঁচমাংসের এক অংশ দিত তাদের আমার ইবনে সৌদকে ও বাকি তারা ভাগ করে নিত (শাহ ওলিউল্লাহ ওর উনকি সিয়াশী তেহরিক ) ২২৯-২৩০ নং পৃষ্টা ।

হত্যাযজ্ঞ এদের মুলনীতি;- বাদশাহ আব্দুল আজীজের সময় ব্যাপক হারে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয় । তখন খলিফাদ্বয়ের প্রতিনীধি তাদের বিষয় রিপোর্ট করেন যে ;- নজদীর বিগত শতাব্দীর ইতিহাসে তাদের হাত গুলো কাফেরদের হাতে রন্জিৎ হয়নি । কিন্ত তারা যে পরিমান রক্তপাত করেছে , তা অতি সামান্য বিষয় নিয়ে , আর তা হল তারা সামান্য বিষয় নিয়ে হাজীদের কে মুশরিক বলত । ১৯৩২ সালে প্রকাশিত মাসয়ালা এ হেজাজ  রিপোর্ট কৃত ও প্রকাশিত (খেলাফত প্রতিনীধি ) পৃ ১০৫ 


মনগড়া কোরানের ব্যাখ্যা ;- 
আল্লামা আফন্দি (রহ) বর্নানা করেছেন যে ;- মোহাম্ম্দ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী ও তার অনুসারী ওহাবি রা নিজেদের ইচ্ছা মত কোরানের ব্যাখ্যা  করত , নবী পাক (সা) ও সম্মানিত সাহাবা (রা) গন তাবে তাবেয়ীন ও সম্মানীত ইমামে তাফসির কারক দের  তাফসীরে অনুসরন করতে না ( আল ফজরুস স্বাদীক ফি রদ্দে আলা। মুনকিরিত তাওয়াতদুলি ওয়াল কারামাত ওয়াস ফারিক ) পৃ ১৯ 


সে ছিল খারেজি ;- 

আল্লামা আফন্দি (রহ) ও যায়নী (রহ) বর্নানা করেছেন যে (- সাধারন মুসলমানদের কে কাফের বানাতে সে ওই সব আয়াত কে অনুসরন করেছে যেই আয়াত গুলো কে আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের বিষয় নাযিল করেছেন । এই সব আয়াত একত্বাবাদী মুসলমানদের বেলায় সে চালিয়েছ দিয়েছে 

ইমাম বুখারী (রহ) তারা প্রসিদ্ধ কিতাব বুখারী শরিফে বর্নানা করেছেন যে ;- হযরত ইবনে ওমর রাদ্বীআল্লাহ তায়ালা বর্নানা করেছেন যে ;- যে আয়াত গুলো আল্লাহ তায়ালা কাফেরদের জন্য নাযিল করেছেন সেই আয়াত গুলো মুসলমানদের বেলায় ব্যাবহার কথা খারেজীদের একচা কুপ্রথা 

শতবী বংশীয় আল্লামা সুলাইমান ইবনে আব্দুল ওহাব এবং ব্যস্ত নাবলুসী (রহ) বর্ননা করেছেন  আপন আপন কিতাবে যে নিস্বন্দেহে মোহাম্ম্দ বিন আব্দল ওহাব ও তার অনুসারীরা খারেজীদের অন্তরভুক্ত ।সুত্র আদ দুরুসুস সানিয়া ফি রদ্দে আলাল ওয়াহহাবিয়া )পৃ ৪৭ 
আত্তাওয়ারাসুন বিন নাবিয়্য  পৃ ১ কৃত  আল্লামা আবু হামীদ ইবনে মর্যুক্ব ।


নজদিদের বিরুদ্ধে কাফেরের ফতোয়া ও কারাদন্ড ;- তাদের আমার ইবনে সৌদ  ও তার চেলা চামুন্ডারা মক্কার আমীর  স্বাদ ইবনে যায়েদের নিকট হজ্জ করার অনুমতি প্রার্থনা করল , তাদের উদ্দেশ্য ছিল তারা তাদের আকিদা গুলো প্রচার করবে ও মক্কার অধিবাসিদের কে তাদের দিকে উদ্ভুদ্ধ করবে । 

তারা তার পুর্বেই নজদিদের ৩০ জন মৌলভী কে পাঠিয়ে দিয়েছিল তাদের আকাইদ প্রচার করার জন্য , এবং তাদের প্রতি যদি বার্ষিক কিছু অর্থ দাবি করা হয় তবুও । 

এদিকে হারামাইন শরিফে তাদের আত্বপ্রকাশ ও গ্রামগুলোতে তাদের ফোতনার কথা শুনতে পেরেছিল , কিনতে তাদের মিল অবস্থা কেউ জানতে পারেনি। নজদি ওলামারা সেখানে পৌঁছেছে জানতে পেরে শরিফ মাস-উদ হুকুম জারী করলেন যে হারামাইন শরিফাইনের ওলামারা যেন নজদিদের সাথে তর্কযুদ্ধ করেন । 

সুতরাং তারা তাদের সাথে তর্কযুদ্ধ করেন ও নজদি মৌলবাদের কে হাসির খোকার রুপে দেখতে পান , ও সেই সকল গাধার মত দেখতে পান যেমন কি না বাঘের ভয়ে যেমন অবস্থা হয়ে থাকে । এর পর মাসউদ হুকুম করলেন যে তাদের বিরুদ্ধে যেন স্পষ্ট কুফরির ফতোয়া জারী করা হয় ও তাদের বিষয় যেন সাধারন অবগত হয় । ও কাদের কে জেলে পুরিয়ে দিলেন । যখন মুসাঈদ ইবনে সাঈদ মক্কার পদে অধিষ্টিত হল তখন নজদিরা হজ্জ করার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি নামন্জুর করেন ও তাদের আশা আবারো মাটি হয়ে যায় (সুত্র আদ দুরুসুস সানিয়া ফি রদ্দে আলাল ওয়াহহাবিয়া ৪৩-৪৪)


আমাদের দেশে বা হিন্দুস্থানে তাদের আকিদা শাহ ইসমাইল ও সাইয়েদ আহমেদ বেরেলভির মাধ্যম প্রচার করা হয়েছে।  
আমি টানতে চাই না আজ সাহ ইসমাইল ও সাইয়েদ আহমেদ কে । 
আজ শুধু নজদীর কথা বর্ননা করা হবে । 
এই খানে একটা কথা শুধু বলছি যে কেউ যদি ওহাবি হয় তার জন্য কাফের হওয়া ওনেক সহজ। কারন ওহাবিদের মৌলভী ইব্্রাহিম মার শিয়ালকোটী ১৯৪৯ সালে এক কনফারেন্স এ বলেছিলেন যে ;- জামাতে আহলে হাদিসের ওনেক লোক কাদীয়ানি বয়ে গেছে (ইহতাকিফুল জমহুর) পৃ ৭৭ 


এমন কি মৌলভী সালা উল্লাহ অমৃতস্বরী তো এটা ও বলেছেন যে কাজীয়ানীদ্র পিছনে নামায পড়লে ও নামায হয়ে যাবে ( ওহাবিয়াহত ও মীর্যায়িত) 

পরে কোন একদিন দেওবন্দি ও হাতের মুকাল্লিদ দের প্রেম কাহিনি বর্নানা কর শাহ ইসমাইল ও সাইয়েদ আহমেদ কে নিয়ে। আজ আর না। 

কারন বিষয় আজ ওহাবি ।

শায়েখুল ওহাবিয়াহত এর পিতা ও তার বড় ভাই ও উস্তাদ দের ফতোয়া ;- আল্লামা যায়নী (র) তার কিতাব (ফিতনাতুল  ওহাবিয়াহত ) এ তার পিতার বর্নানা করতে গিয়ে লিখেছেন যে ;- 

তার পিতা ভাই ও শিক্ষকতা দূরগরশিতা দ্বারা বুঝে ফেলেছিলান যে , তার থেকে অতি সত্বর ভ্রান্তির ও বক্রতা প্রকাশ পাবে । তার কথা ও কাজ ও ওনেক মাসয়ালার বিষয় ঝগরা করার কারনে তারা এটা বুঝতে পেরেছিলেন । তাই তারা তাকে তিরস্কার করতেন ও জনসাধারণ কে তারা তার থেকে সাবধান করতেন ও দূরিয়া ইখত্য়ার করতে বলতেন । যা তারা তাদের দূরদর্শিতার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছিলেন আল্লাহ তায়ালা তা সতি্য প্রমান করে দিয়েছেন ও সে মুর্খদের কে গোমরাহ করতে সক্ষম হয়েছিল । সে ওনেক বিষয় দ্বীনের ইমামদের বিরুধিতা করেছে ও সাধারন মুসলমানদের কে কাফের ফতোয়া দিয়েছে ( ফিতনাতুল ওহাবিয়াহত ) ৬৬ নং পৃষ্টা ।

আর বাবা বা ভাই কোন সাধারন মুসলমান ছিল না বরং সেই সময়ের গুরুত্ব পুর্ন বেক্তি ছিলা যারা কঠোর বিরোধিতা করেছেন 
;-
তার পিতা ওয়ায়নিয়ার বিচারপতি ছিলেন ও সেই সময়কার বড় আলেমদের মধ্য পরিগনিত হতেন ও  তার আপন ভাই শায়েখ সুলাইমান ইবনে আব্দুল ওহাব হারীমালার বিচারপতি ছিলেন ও বড় মাপের আলেমের মধ্য পরিগনিত হতেন ।
) মাজমুআতুত তাওহিদ পৃ ১১ 
মোহাম্মাদ শরিফ আশরাফের লেখা ।


আল্লামা যায়নী (রহ) শায়েখুল ওহাবিয়াহত  এর শিক্ষকের ফতোয়া নিজ কিতাবে এই ভাবে বর্নানা করেছেন যে ;-আব্দুল ওহাবের শিক্ষক ছিল শায়ের সুলাইমান কুর্দি (র) । 

ও তিনি কঠোর ভাষার তার খন্ডন ও করেছিলেন । আর তিনিই হচ্ছেন ইবনে হা'জর এর রচয়িতা । 
সেই সম্মানিত বুযুর্গের কথা বর্ননা করেছেন যে ;- হে আব্দুল ওহাব। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে , তুমি তোমার রসনা কে মুসলমানদের সম্পর্কে তাদের উপর কুফরির ফতোয়া প্রদান থেকে বিরত রাখ । (ফিতনাতুল ওয়াহহাবিয়া )৬৯

ইবনে আব্দুল ওহাবের আপন ভাই শায়েখ সুলাইমানের বক্তব্য ;- 

ইবনে যায়নী দালান মক্কি (র) তার আপন বড় ভাইয়ের বক্তব্য এই ভাবে তুলে ধরেছেন যে :- 
তারা মুখামুখি তর্ক করার সময় আব্দুল ওহাবের আপন বড় ভাই শায়েখ সুলাইমান বলেন আব্দুল ওহাব ;- 

ইসলামের রুকন কতটা ? 
আব্দুল ওহাব ;- ৫ টা 

শায়েখ সুলাইমান ;- তুমি ইসলামের রুকন ৬ টা করে নিয়েছ । আর যেটা বেশি সেটা হল যে তোমার অনুসরন করবে না সে কাফের ।
সুত্র (ক) আদদুরাসুস স্যানিয়া ৪৯
(খ) রিসালাতুস সুন্নিয়ীন ফি রদ্দে ফি রদ্দে আলাল মুবতাদীন  পৃ ৪ 
(গ) নুরুল ইয়াক্বিন ফি মাবহাসিত তালকিন পৃ ৪

হাত ব্যাখ্যা করছে মোবাইলে টাইপ করতে। আগামী কাল আশা করছি শেষ করব । 

সোহেল রানা 



রবিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৫

লতিফ সিদ্দিকি মুরতাদ ও কিছু কথা


পড়ার মন চাইলে পড়ুন , না চাইলে লাইক আপনার রেখে দিন।  লাগবে না । 

৫ মে আর লতিফ সিদ্দিকী  ও আবাদুল গাফ্ফার চৌধুরী । 
আগে হাদিস ও বর্ননা টা পড়ুন এর পর আমি বলছি আমার কথা গুলো ;-
কাব বিন আশরাফ নামের একজন ইহুদি ও জালাময়ী কবি ছিলেন। বদরের যুদ্ধে যখন কোরায়েশ দের পরাজয়ের খবর শোনেন তখন সে বলেছিল দুনিয়ার বুকে থাকার চেয়ে মাটির নিচে থাকা আমাদের জন্য উত্তম। তখন সে কোরায়েশ দের জন্য সহমর্মিতা ও দুক্ষ প্রকাশ করলো ও নবী পাক ও মুসলিমদের কটাক্ষ করে কবিতা রচনা করে মক্কায় ছড়িয়ে দিল এমন কি সে মুসলিম মহিলাদের কে নিয়েও বাজে মন্তব্য করা শুরু করলো। এই খবর আহমাদ এ মোস্তফা মোহাম্মদ এ মোস্তফা আলাহিস সালাম শোনার পর সবাই কে উদ্দেশ্য করে বললেন যে ;- কে এমন আছ্ , কাব বিন আশরাফ এর বিরুদ্ধে বেবস্থা গ্রহণ করবে ,কেননা সে আল্লাহ ও তার রাসুল কে কষ্ট দিচ্ছে।  
এই আহব্বান সুনে আউশ গোত্রের একজন বিশিষ্ট আনসারী সাহাবী মোহাম্মদ বিন মাস্লামাহ দাড়িয়ে যান আর বলেন হাজির আছি ইয়া রাসুলুল্লাহ ,আদেশ করুন , আপনি কি চান যে আমি তাকে হত্যা করি ? 
নবী পাক বললেন যে :- হা।  
এই উত্তর পেয়ে তিনি নবী অলায়হিস সালামের কাছে অংঘিকার করেন যে কাব বিন আশরাফ কে হত্যা করবেন। 
মোহাম্মদ বান মাসলামা বাসায় ফিরে গিয়ে চিন্তা করতে লাগলেন কি ভাবে এই কাজ সম্পাদন করবেন ? কারণ কাব বিন আশরাফ থাকত তার সমর্থক দিয়ে ঘেরা একটা সক্তি সালি ইহুদি দুর্গে , চিন্তায় চিন্তায় কুল কিনারা পাচ্ছিল না কি ভাবে এই কাজ সম্পাদন করবেন। এই চিন্তায় নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিলেন সামান্য কিছু জীবন ধারণের জন্য সুধু সমান কিছু পানাহার করতে লাগলেন।  
এই সংবাদ রাসুলে পাক আলাইহিস সালাম সোনার পর মোহাম্মদ বিন মাসলামা কে ডেকে পাঠালেন আর জিগ্গেস করলেন এটা কি সত্যি যে তুমি পানাহার ছেড়ে দিয়েছ? 
মুহাম্মাদ বিন মাসলামা বলেন হা , আমি এই চিন্তায় পানাহার ছেড়ে দিয়েছি কি ভাবে কাব বিন আশরাফ কে হত্যা করব।  
নবী পাক তাকে বললেন যে ;- তোমার কাজ তো চেষ্টা করা , কাজ সম্পাদন করার মালিক তো আল্লাহ রাব্বুল আলামিন , তুমি সুধু চেষ্টা কর , 

কয়েকদিন পর রাতে এসে কাব বিন আশরাফ কে ডাক দেন ও বলেন বন্ধু তোমার অর্থ নিয়ে এসেছি , এগুলো রাখো আর আমাদের অস্ত্র গুলো ফেরত দাও। কাব বিন আশরাফ তার অর্থ ফেরত নিয়ে অস্ত্র ফেরত দেন। কাব বিন আশরাফ মোহাম্মদ বিন মাসলামা (রা) বলেন বন্ধু আজকের রাত অনেক জোসনা। কেননা আজকের রাত শায়ের আর শায়েরী কবিতা গেয়ে কাটিয়ে না দেই ? 
কাব বিন আশরাফ রাজি হয়ে যান আর বলেন ঠিক আছে।  
দুর্গের বাইরে নিয়ে আসেন আর বলেন যে বন্ধু তোমার চুল থেকে অনেক সুগন্ধি আসছে , আমি কি এটার গন্ধ নিতে পারি ? 
কাব বিন আশরাফ বলেন নাও।  
মোহাম্মদ বিন মাসলামা একবার গন্ধু সুকে বলেন ইটা তো অনেক সুন্দর। আমি কি আর একবার এটার গন্ধ শুকে দেখব ? 
কাব বিন আশরাফ বলেন ঠিক আছে নাও।  
এর পর মোহাম্মদ বিন মসলমা তার মাঠে ধরে মারতে থাকলেন। কিন্তু সামান্য মার তাকে মারার জন্য যতেস্ত ছিল না। সে চিত্কার করা সুরু করলে মোহাম্মদ বিন মাসলামা এর সাহাবী বন্ধু রা এগিয়ে আসেন। তার চিত্কার সেই দুর্গের সকল ঘরে আলো জেলে উঠে। মোহাম্মদ বিন মাসলামা বলেন তখন আমার মনে হল যে আমার কাছে একটা ছুরি লুকানো আছে। তখন তিনি সেই ছুরি কাব বিন আশরাফ এর তলপেটে ডুকিয়ে দেন আর তার মেরুদন্ড এর হারের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেন। আর এই ভাবে একজন আল্লাহ ও তার রাসুলের দুশমন কে বিদায় দেন মোহাম্মদ বিন মাসলামা ও আওউস গোত্রের যানবাজ সাহাবী রা।  
আরো কিছু বর্ণনা আছে যা তুলে ধরা প্রয়োজন মনে করছি না। 

বিগত দিনে ৫ মে হেফাজাত এ ইসলাম অনেক বড় এক আন্দোলন করেছিল দেশের নাস্তিক দের বিরুদ্ধে। নাস্তিক সেই দিন একটা ও মরে নাই বরং মরেছে অনেক আমার ঈমানী ভাই রা।আর সেই দিনের রনাঙ্গন থেকে জন্ম নিয়েছে আরো অনেক ভদ্র নাস্তিক। কারণ সেই রাতের বর্বরতা ইসলামে কোনো ভাবেই সমর্থিত না। কোনো ভিত্তি নাই সেই আন্দোলন এর। কত ক্ষতি হয়েছে যে ইসলামের তা এই ভদ্র নাস্তিক আব্দুল লতিফ কে দেখলেই বোঝা যায়। 
আর আজ নতুন করে তৈরি হয়েছে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরি । সেই দিনের ঘটনা থেকে নাস্তিক গণ সামান্য একটুও চিন্তিত হই নাই বরং সেই দিনের বর্বরতা দেখে নাস্তিক গণ বসে বসে হেসেছে। আর সেই দিন অনেক নাস্তিক এর পয়দা হয়ে গেছে। কারণ এই যদি হয় ইসলাম তো এমন ইসলাম এর প্রয়োজন আমার নাই। আমিও নাস্তিক। যে ইসলাম একজন নাস্তিক এর জন্য হাজার হাজার লোকের সমস্যা খাড়া করতে পারে সেই ইসলাম এর কোনো প্রয়োজন নাই।  

আর হা।  দেওবন্দি রা যে আন্দোলন মিছিল মিটিং করছে তা কিন্তু শরিয়াত শিদ্ধ নয় তো নয় বরং জনাবে ওয়ালা আশরাফ আলী থানবী কি বলেছে তা দেখুন এক নজরে ;- 

একটু দেখা যাক কি বলা আছে তাদের কিতাব গুলোতে :-
আন্দোলন :-  বর্তমান কালের আন্দোলন গুলোতে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি । আর নিয়ম হল,  ক্ষতির চেয়ে লাভ বেশি হলে ক্ষতি কেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে । আর যে কাজে মন্দ বেশি সে কাজ কি ভাবে যায়েজ হতে পারে ? ভালের সাথে মন্দ মিশ্রিত করলে মন্দই সৃষ্টি হয় (মালফুজাত এ হাকিমুল  উম্মত ) পৃষ্টা নং;- ১৫৯ 
ইসলাহুল মুসলেমিন পৃষটা ;- ৪থা অধ্যায় পৃষ্টা নং ৯৭ 

তো এটা থেকে প্রমান হয় যে এই সকল আন্দোলন কোন দিন বুযুর্গগন সমর্থন করেন নাই। আমি সুন্নি দের কথা বাদ দিলাম । তারা এখন ধর্মের নামে শুরু করেছে ধর্মের বেবসা রাজনীতি । এরা তো প্রতিদিন হারাম করে নতুন নতুন ইস্যু বানিয়ে সে যেই হোক না কেন । 
আর যে গুলো দল ধর্মের দোহাই দেন না তাদের কথা বলে তো আর মানুষ হাসানো উচিত হবে না । 
মিছিল মিটিং ;- 
শরিয়াত কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতির বিপরিত কোন পদ্ধতি অবলম্বন করাকে অবশ্যই নিষিদ্ধ বলতে হইবে । বিষেশত ওই পদ্ধতি যদি অহেতুক বেহুদা ও ক্ষতিকারক হয় তো তা হলে হারাম হওয়ার বিপক্ষে সন্দেহ কোথায় ? হরতাল , মিছিল, মিটিং মুলত এই জাতীয়। ইহাতে আছে সময় , শ্রম, অর্থের ব্যয়,।  নামাজ নষ্ঠ ও সাধারনদের জীবন মালের নিরাপত্তা নষ্ঠ করা তাদের কে চলাচল এ বাঁধা বিঘ্ন সৃষ্টি করা মুলত কষ্ট দেয়া । সুতরাং ইহা কি রুপে যায়েয হইতে  পারে ? ( ইসলাহুল মুসলেমিন ) পৃষটা নং ৯৭ 

এই সকল কাজ দিয়ে দ্বীনের কোন ফায়দা হয় না বরং , তা ছাড়া অবৈধ কাজ ভাল নিয়ত নিয়ে  করলে ও তা বৈধ হয়ে যায় না। মিছিল করা মিটিং করা গলায় মালা পড়ানো এগুলো তো নাম কুড়ানোর জন্য । এই সকল কাজ পাশ্চত্যের অনুকরন ছারা কিছুই নয় ।(মালফুজাত এ হাকিমুল উম্মত ) পৃষটা নং ১২৩. ইসলাহুল মুসলেমিন পৃষ্টা নং ৯৭ 

আপনারা সুন্নি দের কে কটাক্ষ করছেন যে তারা আজ পীরের মাযার ও সিন্নির জন্য বসে আছে । 

না। এটা মিথ্যা কথা । বরং তারা তাদের বউ এর আচঁল ধরে বসে আছে । কখন ও তাদের শাড়ির নিচে যাচ্ছে আর কখন ও বাইরে এসে আবার সেখানেই যাচ্ছে । 
এর চেয়ে লজ্জা কথা হতে পারে না মনে হয় । 

আর যদি তারা পীরের মাযার ও সিন্নি নিয়ে থাকত তবে সেই পীরের যে পীর আমার নবী , সেই নবীর শান ও মান ও পরম আল্লাহর শান ও মানের জন্য জীবন দিত । 
আসলে তারা পীরের মাযার ও সিন্নির নামে  বউয়ের আঁচলের নিচে আছে । 


যাই হোক , 
বর্তমান সময়ে এমন একজন ভদ্র ও নব উদিত নাস্তিক হচ্ছে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরি । আর দিন দিন এটা বেড়েই চলবে । কারন হচ্ছে যে কোথাকার কোন ফকিরনীর পুত আসিফ মহিউদ্দিন ৪ টা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে আজ জার্মানিতে বসে হাওয়া খাচ্ছে , এমন আশা নিয়ে কত শতজন যে এমন করে থাকে তা তোমাদের মাথায় ঢোকার মত না . ঢেকি তুমি আটা ছাঁট । 
ঠিক তেমনি গাফ্ফার চৌধুরি ।

এর এমন দিন যাবে তো বেড়েই চলবে । 


আমি সেই ইসলামে বিশ্বাসী যে কি না যে গুস্তাক সুধু তাকেই শাস্তি পেতে হবে। যেমন টা এই কাব বিন আশরাফ হয়তার ঘটনা। নবী পকের ইজাজাত নিয়ে নিজেকে একজন অমুসলিম হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন , নবীর শানে বাজে কথা ও বলেছেন একজন আনসারী সাহাবী হয়ে। আর অতি সুনিপন ভাবে তাকে হত্যা করেছেন আল্লাহর দুষমন কে । অথচ তারা তার বাড়িতে হামলা করে নাই। সুধু কাব বিন আশরাফ কে হত্যা করেছেন তার পরিবারের কারো গায়ে হাত দেন নাই। এটাই ইসলাম। ইসলাম সুধু অপরাধী কে সাজা দেয় , অপরাধীর ভাই বোন্ বা অন্য কাউকেই না।  

ঠিক এমন ভাবেই উপরে বর্ণিত হাদিস ও মোহাম্মদ বিন মাসলামা এর এই প্রসিদ্ধ ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে কি ভাবে কাব বিন আশরাফ এর মত গুস্তাক ও আল্লাহ ও তার রাসুলের দুশমন দের কে শেষ করা সম্ভব। তসলিমা নাসরিন কে সবাই গালি দেয়। কেন গালি দাও ? কি লাভ হয় তাতে ? সে তোমার গালি সুনে আরো বেশি করে বাজে মন্তব্য করে ইসলাম কে নিয়ে। আজকে নতুন ফেতনা (লতিফ সিদ্দিকী  গাফ্ফার চৌধুরী ) একেও গালি দিও না। কারণ সে আরো অনেক কিছু বলতে পারে ইসলাম কে নিয়ে তোমার গালি শোনার পর।  

বরং সকল কুলাঙ্গার ও ধর্ম দ্রোহী কে হত্যা করার সপথ কর , তাদের কে গোপনে হত্যা কর। আর তাকে তুমি হত্যা করতে পারো না পারো , তুমি সুধু তাকে মারতে গিয়ে যদি মারা ও যাও তো তুমি জান্নাতি , আর যদি তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় দিতে পারো তো তুমি মোহাম্মদ বিন মাসলামা রাযিয়াল্লাহ এর সঙ্গী। এর একজন সাধারন উম্মত হয়ে একজন সাহাবীর সঙ্গী হওয়া এর চেয়ে কি সুখের হতে পারে ? 
নিজে চিন্তা করে নাও ,,

আর কোনো ৫ মে দেখেতে চাই না আমি। আমি কাব বিন আশরাফের হত্যার মত কিছু দেখতে চাই। সেই দিন আমি শান্ত হব। আর আল্লাহ যেন তার মিত্তু আমার হাতে দেয়। আমি আর কিছু চাই না। আল্লাহ যেন আমাকে সেই সুযোগ দেয়।  

সোহেল রানা
 

শনিবার, ১১ জুলাই, ২০১৫

মাটির তৈরি আদম (আ)

হাম হে সুন্নি ডরতে নেহি 
শের হে হাম ঘাস চড়তে নেহি 
আগার হিম্মত হে তো টক্বরাও হামছে 
হাম জিন্দা হে ওলিও কি দমছে 
বাংলা হচ্ছে ;- 
আমরা সুন্নি ভয় করি না 
বাঘ আমরা , ঘাস খাই না 
যদি হিম্মত থাকে তো টক্কর নাও আমাদের সাথে 
আমরা বেঁচে আছি ওলি আল্লাহ দের দমে (সাহস বুকে নিয়ে ) 

আমার প্রতিপক্ষ (Zeronine Tamim) সাহেব গতকাল মেনে নিয়েছে নবী (সা) কে মানুষ বলা যাবে না । তবে এবার দৌড় মেরেছে নূর বিষয় নিয়ে ও নবী (সা) কে মাটির প্রমান করার জন্য । 

আমার দোস্ত , নূর নিয়ে তো ৩ টা লিংক দিয়েছিলাম । তার জবাব কই ? নাই । 
আর আজকে যে ২ টা কালামুল্লাহ শরিফের আয়াতের তাফসির চাইলাম সেগুলো কই ? 
উত্তর ;- খবর নাই । 

শোন , কারো পোষ্টের খন্ডন কি করে করতে হয় তা আগে শিক্ষা নাও । এর পর ফতোয়া প্রনয়ন্ করতে যেও । 

আজকের পোষ্টে সে পোষ্ট করে বলেছে যদি আমি তা মান্য না করি তবে আমি মুশরিক । 
মাশাআল্লাহ । 
ছাল নাই কুত্তার নাম তার বাঘা । 
দম নাই বুকে নাম তার দমদার।
শরম করে এমন ফতোয়া বাণ করতে আমার । 
শুধু চোখে তোমার আংগুল দিলাম , ফতোয়া কার কাঁধে যায় দেখে নাও । 

আমার প্রতিপক্ষ্ দোস্ত তার পোষ্ট এ দাবি করেছে সকল মানুষ মাটি থেকে তৈরি । কয়েকটা আয়াত দিয়েছে তা প্রমান করার জন্য । 
তা হল ;- 

অতএব আল্লাহর ভাষায় বাশার হলো : মানুষ আর সকল মানুষই মাটির তৈরি। (সূরা আর রহমান, ৫৫:১২, আল হিজর, ১৫:২৬, আল মু'মিনুন, ২৩:১২)। সকল নবী ছিলেন বাশার। সকল মানুষ আল্লাহর খলিফা। সূরা আল বাকারা ২:৩০, মুহাম্মাদসহ সকল নবীই হচ্ছেন আল্লাহর খলিফা। 

তুমি মনু এই কটা আয়াত পাইছ ? 
আর পাও নাই ! 
দোস্ত, তুমি ঘুঘু দেখেছ , ফাঁদ না , 

আমি দেখাই তোমাকে , দেখে নাও এবার । 

কালামুল্লাহ শরিফে মোঠ ১৪ টা আয়াতে মানুষ মাটির তৈরি বলে পাওয়া যায় । 

আমি যদি সেই আয়াত গুলের তাফসির সমুহ পেশ করি তা হলে এই পোষ্ট হবে একটা কিতাব / 
আমি তবু ও সংক্ষেপে করলাম ;- 

(১) নং আয়াত শরীফ :

ان خلقكم من تراب ثم اذا انتم بشر تنتشرون

অর্থ: তাঁর ( আল্লাহ পাক) উনার নিদর্শনাবলীর মধ্যে এক নিদর্শন এই যে, তিনি মাটি থেকে তোমাদের সৃষ্টি করেছেন। এখন তোমরা মানুষ পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছো।”

[ সূরা রুম ২০ নং আয়াত শরীফ]
এর তাফসীর কি দেখেছ ? 
না কি অন্ধ্র লাঠি ? 
আয় দেখ ;- 

 (ক)    ইমাম বাবা (রহ) এর কিতাবে 

(ان خلقكم) اي اباكم (من تراب ثم اذا انتم بشر) اي ادم وذريته (تنتشرون)

অর্থ: তিনি তোমাদেরকে অর্থাৎ তোমাদের পিতাকে (আদম আলাইহিস সালাম ) সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে। অতঃপর তোমরা অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও উনার সন্তান জমীনে ছড়িয়ে পড়েছে।”

দলীল-
√ তাফসীরে বাগবী ৩য় খন্ড ৪৩১ পৃষ্ঠা।

(খ) →বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা ইমাম কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

قوله تعالي (ومن اياته ان خلق كم من تراب) اي من علامته رب بيته و وحدا نيته ان من تراب اي خلق اباكم منه

অর্থ: (আল্লাহ পাক উনার নিদর্শন সমূহের মধ্যে একটি নিদর্শন এই যে, আল্লাহ পাক তোমাদেরকে মাটির থেকে সৃষ্টি করেছেন) অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার রুবুবিয়্যাত ও অহদানিয়্যাত এর নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের পিতা (হযরত আদম আলাইহিস সালাম ) উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে কুরতুবী

(গ)
→ইমামুল হুদা, আল্লামা কাজী ছানাউল্লাহ পানিপথী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ان خلقكم اي خلق اصلكم ادم من تراب

অর্থ: তিনি (আল্লাহ পাক) তোমাদেরকে অর্থাৎ তোমাদের আছল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।”

দলীল-
√ তাফসীরে মাজহারী ৭ম খন্ড ২২৯ পৃষ্ঠা।

(ঘ) 
→আল্লামা আবুল লাইছ সমরকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

(ان خلقكم من تراب) يعني خلق ادم من تراب وانتم ولده (ثم اذا انتم) ذريته من بعده (بشر تنتشرون) يعني تبسطون

অর্থ: ( তিনি মাটি থেকে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। আর তোমরা হলে উনার সন্তান উনার পরে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছো।”
দলীল-
√ তাফসীরে সামারকান্দী ৩য় খন্ড ৯ পৃষ্ঠা।


(ঙ)  →বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহিম বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ان خلقكم من تراب) اي خلق اصلكم وهو ادم من تراب -(ثم اذا انتم بشر تنتشرون) اي تبسطون في الارض

অর্থ: (তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন) অর্থাৎ তোমাদের আছল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃরর তোমরা যমীনে ছড়িয়ে পড়েছ মানুষ হিসেবে।”

দলীল-
√ তাফসীরে খাযেন ৩য় খন্ড ৪৩১ পৃষ্ঠা।

এই খানে এই আয়াতে হযরত আদাম (আ) কে বলা হয়েছে যে তিনি মাটি থেকে ও আমরা তাদের সন্তান । 

আমাদের কে মাটি থেকে সৃষ্টি এই কথা কোরআন এর কোন আয়াতে আছে ? 
বরং মানুষ মাটির তৈরি বলতে হয়রত (আ) তে বোঝানো হয়েছে ।

(২)নং আয়াত শরীফ :

মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন-

ولقد خلقنا الانسان من سلالة من طين

অর্থ: আমি মানুষ মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি।”

[ সূরা মু’মিনুন ১২ নং আয়াত শরীফ]

উক্ত আয়াত শরীফ এর তাফসীরে নির্ভরযোগ্য এবং সর্বজনমান্য মুফাসসিরানে কিরামগন কি বলেছেন দেখুন–>>

(ক) বিখ্যাত মুফাসসির, আল্লামা আবু আবদুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আহমদ আনছারী আল কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(ولقد خلقنا الانسان) الانسان هنا ادم عليه اصلاة والسلام قاله وغيره

অর্থ: (নিঃসন্দেহে আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি) এখানে “ইনসান” বা মানুষ দ্বারা হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে। হযরত ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং উন্যান্য মুফাসসিরগন এরূপই বলেছেন।”

দলীল-
তাফসীরে কুরতুবী ৬ষ্ঠ খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা।
আমি নিচে শুধু তাফসির কিতাব ও রেফারেন্স তুলে ধরলাম ;- 

(খ) - তাফসীরে মাযহারী ৬ষ্ঠ খন্ড ৩৬৭ পৃষ্ঠা।
(গ)- তাফসীরে সামারকান্দী ২য় খন্ড ৪০৯ পৃষ্ঠা।
(ঘ)-তাফসীরে খাযেন ৩য় খন্ড ৩০১ পৃষ্ঠা।
(ঙ)-তাফসীরে বাগবী ৩য় খন্ড ৩০১ পৃষ্ঠা।
(চ)-তাফসীরে মুদ্বিহুল কুরআন ৩৫১ পৃষ্ঠা।

সূতরাং “সূরা মু’মিনুন ১২ নং আয়াত শরীফ” এবং উক্ত আয়াত শরীফ এর ব্যাখ্যা এটাই প্রমান করে যে, সকল মানুষের পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনিই সরাসরি মাটি দ্বারা সৃষ্টি। অন্যকোন মানুষ নয়। যে কারনে মুফাসসিরিনে কিরামগন উক্ত আয়াত শরীফে “ইনসান” দ্বারা আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝিয়েছেন।

(৩) নং আয়াত ;- 
আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-

واذ قال ربك للملءكة اني خالق بشرا من طين

অর্থ: যখন আপনার পালনকর্তা ফেরেশতাগনকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করবো।'”

[সূরা ছোয়াদ ৭১ নং আয়াত শরীফ]

মূলত উক্ত আয়াত শরীফ এর তাফসীরে সকল তাফসীরের কিতাবেই এসেছে “মাটির মানুষ” হচ্ছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম।

→এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন, আল্লামা আবু লাইছ সমারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

(اني خالق بشرا من طين) يعني ادم عليه السلام

অর্থ: (নিশ্চয়ই আমি সৃষ্টি করবো মাটি থেকে বাশার) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে।”
(ক)-তাফসীরে সামারকান্দী ৩য় খন্ড ১৪১ পৃষ্ঠা।

(খ)-মুদ্বিহুল কুরআন ৪৮১ পৃষ্ঠা।
(গ)-তাফসীরে ক্বাদেরী ২য় খন্ড ৩২৩ পৃষ্ঠা।
এ ছাড়াও 
তাফসীরে বাগবী।

√ তাফসীরে মাযহারী।

√ তাফসীরে রুহুল বয়ান।

√ তাফসীরে রুহুল মায়ানী।

√ তাফসীরে কবীর।

√ তাফসীরে কুরতুবী।
প্রভতি তাফসীর গ্রন্থে হযরত আদম (আ) কেই বোঝানো হয়েছে ।

সূতরাং, পবিত্র কুরআন শরীফের “সূরা ছোয়াদ ৭১ নং আয়াত শরীফ” উনার তাফসীরে জগৎ বিখ্যাত সকল তাফসীরর কিতাব থেকেই আমরা জানতে পারলাম উক্ত আয়াত শরীফ দ্বয়ে “মানুষ মাটির সৃষ্টি” বলতে শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে, পৃথিবীর আর কোন মানুষকে বুঝানো হয় নাই।

৪) নং আয়াত 
মহান আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-

الذي احسن كل شءي خلقه وبدأ خلق الانسان من طين

অর্থ: যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।”

[ সূরায়ে সিজদাহ ৭ নং আয়াত শরীফ]

উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীরে মুফাসসিরিনে কিরামগনের অভিমত উল্লেখ করা হলো-

→ বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা আবুল লাইছ সামারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখেন-

(وبدأ خلق الانسان من طين) يعني خلق ادم عليه السلام من طين من ادم الارض

অর্থ: ( তিনি কাদামাটি থেকে মানুষ সৃষ্টির সূচনা) অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে জমিনের কাদামাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন।”


(ক) তাফসীরে সামারকান্দী ৩য় খন্ড ২৯ পৃষ্ঠা।
(খ)-তাফসীরে মাযহারী ৭ম খন্ড ২৬৯ পৃষ্ঠা।
(গ)-তাফসীরে খাযেন ৩য় খন্ড ৪৪৫ পৃষ্ঠা।
(ঘ) তাফসীরে কুরতুবী ৭ম খন্ড ৯০ পৃষ্ঠা।
(ঙ)-তাফসীরে রূহুল মায়ানী ১১ তম খন্ড ১২৩ পৃষ্ঠা।
(চ) তাফসীরে রূহুল বয়ান ৭ম খন্ড ১১১ পৃষ্ঠা।
(ছ)-তাফসীরে বাগবী ৩য় খন্ড ৪৪৫ পৃষ্ঠা।
(জ)-তাফসীরে কাদেরী ২য় খন্ড ২৩৬ পৃষ্ঠা।
(ঝ)

সুতরাং:-সূরাতুস সিজদাহ” এর উক্ত আয়াত শরীফ ও ব্যাখ্যা দ্বারা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট ভাবে প্রমানিত হলো, শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেই মহান আল্লাহ পাক সরাসরি মাটি থেকে সৃষ্ট ।

(৫) নং আয়াত ;- 
৫ নং আয়াত শরীফ :

পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন-

قال له صاحبه وهو يحاوره اكفرت بالذي خلقك من تراب ثم من نطفة ثم سواك رجلا

অর্থ: তাঁর সঙ্গী তাকে কথা প্রসঙ্গে বললো, তুমি তাকে অস্বীকার করছো যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে, অতঃপর বীর্য থেকে অতঃপর পূর্নাঙ্গ করেছেন তোমাকে মানবাকৃতিতে।”

[ সূরায়ে কাহাফ ৩৭ নং আয়াত শরীফ ]

উক্ত আয়াত শরীফে ‘খলাক্কা মিন তুরাব” বা সৃষ্টি করেছি মাটি থেকে, এখানে মাটি থেকে কাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সে প্রসঙ্গে মুফাসসিরিনে কিরাম গনের অভিমত উল্লেখ করা হচ্ছে—>

→ মুহিয়্যুস সুন্নাহ, আল্লামা আলাউদ্দীন আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহীম বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থে লিখেন-

(خلقك من تراب) اي خلق اصلك من تراب لان خلق اصله يبب في خلقه

অর্থ: (তোমাদের মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন) অর্থাৎ তোমার আছল ( হযরত আদম আলাইহিস সালাম ) উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। কেননা উনার আছলের সৃষ্টি উনার সৃষ্টির কারন।”

(ক)-তাফসীরে খাযেন ৩য় খন্ড ১৯৯ পৃষ্ঠা।
(খ)-তাফসীরে রূহুল মায়ানী ৮ম খন্ড ২৭৬ পৃষ্ঠা।
(গ)-তাফসীরে মাযহারী ৬ষ্ঠ খন্ড ৩৫ পৃষ্ঠা।
(ঘ)-তাফসীরে সামারকান্দী ২য় খন্ড ২৯৯ পৃষ্ঠা।
(ঙ)-তাফসীরে রূহুল বয়ান ৫ম খন্ড ২৪৭ পৃষ্ঠা।

সুতরাং :-সুরায়ে কাহাফের” এর উক্ত আয়াত শরীফ ও তফসীর দ্বারা প্রমানিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক শুধুমাত্র হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। তাই মুফাসসিরিনে কিরামগন আয়াত শরীফে বর্নিত خلقك “তোমাকে সৃষ্টি করেছেন” এ বাক্যের অর্থ করেছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, যেহেতু শুধুমাত্র আদম আলাইহিস সালাম মাটির সৃষ্টি ।