রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৫

জ্আলেমদের মজলিসে বসা ও তাদের কথা শ্রবণ করা

নবী পাক সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে , আলেমদের মজলিসে বস , ও পুরনে আদবের সহিত জ্ঞানীদের কথা শ্রবন কর । কেননা আল্লাহ তায়ালা হেকমত তথা জ্ঞানের আলো দ্বারা মৃত অন্তরগুলো কে এভাবে জীবিত করেন, যেমন জীবিত করেন বৃষ্টি দ্বারা মৃত জমীন কে (শরবে বুখারী , হাদীস নং ২) 

যে আলেমের ইলম এর ইলমের বাহার দেখতাম হাজারো কিলোমিটার দুরে থেকে , 
যে আলেমের নবী প্রেম দেখে চোখের পানি ঝড়ত ।


সেই আলেমের্ মজলিসে স্বপ্নে দেখি আমি বসে । 
আর আমার উপর ভিষন রাগ । 
ওনেক রাগে ভৎসনা করলেন আমাকে ।


আমি কিছু ভুলের মধ্য আছি বর্তমানে । 
সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী , নিজেকে যেন আগের মত শুদ্ধ করে নিতে পারি আবার ও । 


সোহেল রানা । 

শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৫

সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৫

শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৫

রুকু থেকে হাত তোলা বা রাফে দাইন

হানাফীদের মতে রুকুতে যাওয়ার সময় এবং রুকু হতে উঠার সময় উভয় হাত তোলা সুন্নাতের পরিপন্থী ও নিষেধ। কিন্তু মাযহাব অমান্যকারী ওয়াহাবীরা এ দু’সময়ে উভয় হাত তোলে এবং এর উপর খুবই  জোর দেয়।

প্রথম পরিচ্ছেদ

নামাযে রুকূতে যেতে এবং রুকূ হতে উঠতে উভয় হাত তোলা মাকরূহ এবং সুন্নাতের পরিপন্থী। এ প্রসঙ্গে অসংখ্য হাদীস এবং মুজতাহিদ গণের ক্বিয়াস বর্ণিত আছে। আমরা ঐ সব বর্ণনা থেকে কিছু উপস্থাপন করছি।
হাদীস নং- ১-৪: ইমাম তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনে আবি শায়বাহ হযরত আলক্বামা (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা করেন:
‘তিনি বলেন, একবার হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাদ্বি:) আমাদেরকে বললেন, আমি কি তোমাদের সামনে রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর (পদ্ধতিতে) নামায আদায় করবো না?  অতঃপর তিনি (হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাদ্বি:) নামায পড়লেন এবং তিনি তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া আর কখনো উভয় হাত তোলেননি। ইমাম তিরমিযী বলেন, ইবনে মাসঊদ (রাদ্বি.) এর হাদীসটি হাসান। এবং হাত না তোলার ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীনের ওলামায়ে কেরামের আমল রয়েছে।
স্মর্তব্য যে, এ হাদীসটি কয়েকটি কারণে খুবই শক্তিশালী।
প্রথমতঃ  এর রাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাদ্বি:) যিনি সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে বড় ফক্বীহ আলিম ।
দ্বিতীয়ঃ তিনি একদল সাহাবীর সামনে হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামায পেশ করেছেন, আর কোন সাহাবী তা অস্বীকার করেননি । বুঝা গেলো, সকলেই তাঁকে সমর্থন করেছেন। যদি হাত উত্তোলন সুন্নাত হতো, তাহলে  সাহাবায়ে কেরাম এর উপর অবশ্যই আপত্তি করতেন। কেননা তাঁরা সকলেই হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলা ইহি ওয়াসাল্লাম)এর নামায দেখেছিলেন ।
তৃতীয়তঃ ইমাম তিরমিযী এ হাদীসকে ‘যঈফ’ তথা দুর্বল  বলেননি। বরং হাসান বলেছেন ।
চতুর্থতঃ ইমাম তিরমীযি বলেন, অনেক ওলামায়ে সাহাবা ও তাবেয়ীন উভয় হাত তুলতেন না। তাদের আমলের দ্বারা এ হাদিছের সর্মথন হলো ।
পঞ্চমতঃ ইমাম  আবু হানিফা (রাদিঃ) যিনি যুগের জলীলুল কদর এবং আযীমুশশান মুজতাহিদ ছিলেন- তিনি এ হাদিসকে কবুল করেছেন এবং এর উপর আমল করেছেন।
ষষ্ঠতঃ সমস্ত  উম্মতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এ হাদিসের উপর  আমল রয়েছে।
সপ্তমত: এ হাদীসটি ক্বিয়াস ও বিবেকের সাথে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ, যা আমরা সামনে আরজ করবো ইনশাআল্লাহ। এ সব কারণে ‘যঈফ’ তথা দুর্বল হাদীসও শক্তিশালী হয়ে যায়। এ হাদীসতো নিজেই হাসান।
হাদীস নং- ৫: হযরত ইবনে আবী শায়বাহ হযরত বারা বিন আযিব (রাদ্বি) থেকে বর্ণনা করেন-

قَالَ كَانَ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا اِقْتَتَحَ الصَّلوةَ رَفَعَ يَدَيْهِ ثُمَّ لَايَرْفَعَهَا حَتَّى يَفْرَغَ

অর্থাৎ,‘হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামায আরম্ভ করতেন, তখন স্বীয় উভয় হাত উত্তোলন করতেন। অতঃপর নামায থেকে অবসর হওয়ার পূর্বে হাত তুলতেন না।
স্মর্তব্য যে, বারা ইবনে আযিব (রাদ্বি.) এর হাদিছটি ইমাম তিরমিযী এভাবে বর্ণনা করেছেন- فِى الْبَابِ عَنِ البَرَاءِ
হাদীস নং ৬-:  ইমাম আবু দাউদ হযরত বারা ইবনে আযিব(রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা বরেনঃ

قَالَ رَأيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَفَعَ يَدَيْهِ حِيْنَ اِفْتَتَحَ الصَّلَوةَ ثُمَّ لَمْ يَرْفَعُهُمَا حَتَّى اِنْصَرَفَ

অর্থাৎ,‘তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দেখেছি যখন তিনি নামায আরম্ভ করেছেন, তখন উভয় হাত উত্তোলন করেছেন। পুনরায় নামায থেকে অবসর হওয়ার পূর্বে হাত তোলেননি।
হাদীস নং- ৭ তাহাবী সাইয়িদুনা আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা করেছেন:

عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّهُ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِىْ أَوَّلِ تَكْبِيْرَةٍ ثُمَّ لَايَعُوْد

অর্থাৎ, ‘হুযূর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে রেওয়ায়াত করেন যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথম তাকবীরে উভয় হাত তুলতেন অতঃপর তা আর কখনো করতেন না।
হদীস নং ৮-১৪: হাকিম ও বায়হাক্বী হযরত আবদুল্লাহ  ইবনে  আব্বাস ও আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বণর্না করেন-
হুযুর  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, সাত জায়গায় হাত উঠাতে হবে- নামায শুরু করার সময়, কা’বার দিকে মুখ করার সময়, সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে, দুইমাওকিফ তথা মিনা ও মুযদালিফায় এবং দু’জুমরা’র সামনে।
এ হাদীসটি বাযার হযরত ইবনে ওমর (রাদিঃ) থেকে, ইবনে আবি শায়বাহ হযরত ইবনে আব্বাস (রাদ্বি) থেকে, বায়হাকী হযরত ইবনে আব্বাস (রাদ্বি.) থেকে, তাবরানী এবং বুখারী কিতাবুল মুফরাদে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাদিঃ) থেকে কিছুটা পার্থক্যের সাথে উল্লেখ করেছেন।
কোন কোন রেওয়ায়াতে” দু’ঈদের নামাযেরও উল্লেখ রয়েছে ।
হাদিছ নং-১৫: ইমাম তাহাবী হযরত মুগিরাহ (রাদিঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আমি  ইবরাহীম নাখঈ (রাদ্বি) এর কাছে  আরজ করলাম যে, হযরত ওয়াইল (রাদি) হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে দেখেছেন যে, তিনি নামাযের প্রারম্ভে রুকুর সময় এবং রুকূ থেকে উঠার সময় হাত উত্তোলন করতেন। তখন  তিনি (ইবরাহীম নাখঈ ) উত্তর দিলেন-

اِنْ كَانَ وَائِلَّ رَاهُ مَرَّةً يَفْعَلُ ذلِكَ فَقَدْ رَاهُ عَبْدُ اللهِ خَمْسِيْنَ مَرَّةً لَا يَفْعَلُ ذلِكَ

অর্থাৎ ‘যদি হযরত ওয়াইল (রা:) হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে একবার হাত উত্তোলন করতে দেখেন, তো হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাদ্বি.) হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে পঞ্চাশ বার হাত উত্তোলন না করতে দেখেছেন।
এর দ্বারা বুঝা গেল যে, সাইয়িদুনা আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদি.) এর হাদিস অনেক শক্তিশালী। কেননা তিনি সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে ফকীহ (ইসলামী আইন শাস্ত্রে বিশেষজ্ঞ) এবং আলিম। তিনি হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাহচর্য বেশী লাভ করেছেন। নামাযে হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছেই দন্ডায়মানকারী। কেননা হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে তিনিই দাঁড়াতেন, যিনি আলিম ও প্রাজ্ঞ ব্যাক্তি ছিলেন। যা বিভিন্ন রেওয়াতে বর্ণিত।
হাদিছ নং- ১৬-১৭: তাহারীও ইবনে আবি শায়বাহ হযরত মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন-

قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ اِبْنِ عُمَرَ فَلَمْ يَكُنْ يَرْفَعُ يَدَيْهِ اِلَّافِى التَّكْبِيْرَةِ الْاُوْلَى مِنَ اصَّلوةِ

অর্থাৎ,‘তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাদ্বি.) এর পিছে নামায পড়েছি। তিনি নামাযে প্রথম তাকবীর ছাড়া কখনো উভয় হাত উত্তোলন করতেন না।
হাদিস নং১৮: বোখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার বদরুদ্দীন আইনী (রাদ্বি.) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা করেন-
তিনি এক ব্যাক্তিকে রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকু থেকে মাথা তোলার সময় উভয় হাত তুলতে দেখলেন। অতঃপর তাকে বললেন এরূপ করো না, কেননা  এমন  কাজ যা হুযুর  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রথমে করেছিলেন এরপর ছেড়ে দিয়েছেন ।
এ হাদিছ  থেকে বুঝা গেল যে,  রুকুর আগে ও পরে উভয় হাত উত্তোলন করা ‘মানসুখ’ তথা রহিত। যে সব সাহাবী থেকে কিংবা হুযুর  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে উভয় হাত উত্তোলন প্রমানিত, ওটা প্রথম আমল  পরবর্তীতে রহিত হয়েছে।
হাদিস নং ১৯-২০: ইমাম বায়হাকী ও তাহাবী হযরত আলী (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা করেন -

أَنَّهُ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِى التَّكْبِيْرَةِ الْاُوْلى مِنَ الصَّلوةِ ثُمَّ لَايَرْفَعُ فِى شَىْئٍ مِنْهَا

তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামাযের প্রথম তাকবীরে তার উভয় হাত উত্তোলন করতেন। এরপর আর কোন অবস্থায়ই হাত উঠাতেন না।
হাদিস নং ২১: ইমাম তাহাবী হযরত আসওয়াদ (রাদি.) থেকে বর্ণনা করেন -

قَالَ رَايْتُ عُمَرَ اِبْنَ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ رَفَعَ يَدَيْهِ فِىْ اَوَّلِ تَكْبِيْرَةٍ ثُمَّ لَا يَعُوْدُ وَقَالَ حَدِيْثٌ صَحِيْحٌ

অর্থাৎ, তিনি বলেন, আমি হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাদিঃ) কে দেখেছি, তিনি প্রথম তাকবীরে উভয় হাত উত্তোলন করতেন। এরপর আর উঠাতেন না। ইমাম তাহাবী বলেছেন এ হাদিসটি সহীহ।
হাদিস নং ২২: আবূ দাঊদ হযরত সুফয়ান থেকে বর্ণনা করেছেন -

حَدَّثَنَا سُفْيَانُ اِسْنَادُهُ بِهَذَا قَالَ رَفَعَ يَدَيْهِ فِىْ اَوَّلِ مَرَّةٍ وَقَالَ بَعْضُهُمْ مَرَّةً وَاحِدَة

অর্থাৎ হযরত সুফয়ান এ সনদে বলেন যে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদ্বি.) প্রথমবার হাত তুলেছেন। কোন কোন রাবী বলেন একবারই হাত তুলেছেন।
হাদিস নং: ২৩: দারে কুত্বনী হযরত বারা ইবনে আযিব (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা  করেছেন-
অর্থাৎ, ‘তিনি নবী করীম  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে দেখেছেন, যখন হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামায শুরু করেন উভয় হাত এ পরিমাণ তুললেন যে, তা কানদ্বয়ের সমান্তরাল হয়ে গেলে। অতঃপর নামায থেকে অবসর হওয়ার পূর্বে আর কোন ক্ষেত্রেই হাত উত্তোলন করেননি ।
হাদীস নং-২৪: ইমাম মুহাম্মদ ‘কিতাবুল আছারে’ ইমাম আবু হানিফা (রাদি.) হাম্মাদ থেকে তিনি ইবরাহীম নাখঈ থেকে এ ভাবে বর্ণনা করেন-

اِنَّهُ قَالَ لَاتَرْفَعُ الْاَيْدِىْ فِيْ شَىْئٍ مِنْ صَلوتِكَ بَعْدَ الْمَرَّةِ الْاُوْلى

অর্থাৎ, তিনি বলেন, নামাযের মধ্যে প্রথমবার ছাড়া হাত  উত্তোলন করো না।
হাদিস নং ২৫- আবু দাউদ হযরত বারা ইবনে আযিব (রাদিঃ) থেকে বর্ণনা করেন।

اَنَّرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ اِذَا اِفْتَتَحَ الصَّلوةَ رَفَعَ يَدَيْهِ اِلى قَرِيْبِ مِنْ اُذْنَيْهِ ثُمَّ لَايَعُوْدُ

অর্থাৎ ‘নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন নামায আরম্ভ করতেন, তখন উভয় হাত দু’কানের কাছে তুলতেন। এরপর আর পুনরাবৃত্তি করতেন না। উভয় হাত তোলার নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে আরো অনেক হাদীস রয়েছে। আমরা এখানে সংক্ষিপ্তভাবে শুধুমাত্র পঁচিশটি রেওয়ায়াত উপস্থাপন করেছি। আরও অধিক জানতে ইচ্ছা হলে, মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মদ, তাহাবী শরীফ, সহীহ বোখারী পাঠ করতে পারেন।
পরিশেষে আমরা ইমামে আযম আবু হানীফার )রাদ্বি.( ঐ বিতর্ক উপস্থাপন করেছি, যা উভয় হাত উত্তোলন এর ব্যাপারে মক্কা মুয়াযযামায় ইমাম আওযাঈ (রাদ্বি.( এর সাথে হয়েছিল। দর্শকগণ দেখেছেন যে, ইমামে আযম কোন স্তরের মুহাদ্দিস এবং কতো শক্তিশালী সহীহ সনদের হাদীস উপস্থাপন করেন।
ইমাম আবু মুহাম্মদ বোখারী মুহাদ্দিস )রাহ.( হযরত সুফয়ান ইবনে উয়াইনা (রাদ্বি.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, একবার হযরত ইমামে আযম (রাদ্বি.) এবং ইমাম আওযাঈ (রাদ্বি) এর সাক্ষাত হলো মক্কা মুয়াযযামার ‘দারুল হানাতীন’ নামক স্থানে। এ দ’জন বুর্যুগের মধ্যে কিছু কথাবার্তা হলো। এ বিতর্ক ফতহুল ক্বাদীর এবং মিরক্বাত শরহে মিশকাত’ ইত্যাদিতে উল্লেখিত রয়েছে। বির্তকটি হুবহু নিম্নে উদ্ধৃত করা হলো।
ইমাম আওযাঈঃ আপনি রুকুতে যাওয়ার সময় এবং রুকু হতে উঠার সময় উভয় হাত উত্তোলন করেন না কেন?
ইমাম আবু হানিফা : এ জন্যই যে, এ সব জায়গায় উভয় হাত উত্তোলন হুযুর  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দ্বারা প্রমাণিত নয়।
ইমাম আওযাঈ : আপনি এটা কিভাবে বললেন? আমি আপনাকে উভয় হাত তোলার ব্যাপারে সহীহ হাদিস শুনাচ্ছি-
‘আমাকে যুহরী হাদিস বর্ণনা করেছেন, তিনি সালিম থেকে, সালিম নিজ পিতা থেকে, তিনি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু   আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উভয় হাত তুলতেন, যখন নামায শুরু করতেন এবং রুকুর সময় আর রুকু থেকে উঠার সময়।
ইমামে আযম : আমার কাছে এর  চেয়ে বেশী শক্তিশালী হাদিস এর বিপরীতে বিদ্যমান।
ইমাম আওযাঈ : আচ্ছা! জলদি পেশ করুন।
ইমামে আযম : নিন। শুনুন ।
* আমার কাছে হযরত হাম্মাদ হাদীস বণর্না করেছেন, তিনি ইব্রাহিম নাখঈ থেকে, তিনি হযরত আলক্বামা এবং আসওয়াদ থেকে, তাঁরা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাদি:) থেকে বর্ণনা করেন- নিশ্চিয়ই নবী করীম  (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শুধু মাত্র নামাযের শুরুতে উভয় হাত উত্তোলন করতেন। এরপর আর কখনো পুনরাবৃত্তি করতেন না।
ইমাম আওযাঈ: আমার পেশ কৃত হাদীসের উপর আপনার উপস্থাপিত হাদীসের শ্রেষ্ঠত্ব কি? যার কারণে এটা গ্রহন করলেন, আর আমার পেশকৃত হাদিস ছেড়ে দিলেন।
ইমামে আযম : এ, জন্যই যে, ‘হাম্মদ’ ‘যুহরী’র চেয়ে বড় আলিম ও ফক্বীহ। আর ইব্রাহিম নাখঈ সালিম এর চেয়ে বড় আলিম ও ফক্বীহ। আলক্বামা ‘সালিমে’র পিতা অর্থাৎ, ‘আব্দুল্লাহ ইবনে ওমরের’ চেয়ে ইলমের ক্ষেত্রে কম নন।
‘আসওয়াদ’ অনেক বড় খোদা ভিরু ফক্বীহ এবং উত্তম। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদি.) হলেন ফক্বীহ। কিরাআতের ক্ষেত্রে এবং হুযুর পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  এর সাহচর্যের ক্ষেত্রে হযরত ইবনে ওমর (রাদি.) থেকে অনেক বড় ছিলেন। শৈশব থেকে হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে থাকতেন। সুতরাং আমার হাদিসখানার রাবী আপনার হাদীসের রাবীদের চেয়ে ইলম ও মর্যাদার দিক থেকে শ্রেষ্ঠ। এ জন্যই আমার পেশকৃত হাদীস বেশী শক্তিশালী এবং গ্রহনযোগ্য। ইমাম আওযাঈ নিশ্চুপ হয়ে গেলেন।
গায়রে মুকাল্লিদ লা-মাজহাব ইমামে আযম সাহেবের এ সনদ দেখুন এবং এতে কোন ত্রুটি বের করুন। ইমাম আওযাঈর নীরবতার কোন হেতু খুঁজে পাবেন না। এটাই ইমাম আযমের হাদীসজ্ঞান এবং এটাই তাঁর হাদিসের সনদ তথা বর্ণনা সূত্র। আল্লাহ তায়ালা হক্বকে কবূল করার তাওফীক দান করুন। জেদের কোন প্রতিষেধক নেই। এসব লম্বা লম্বা সনদগুলো এবং তাঁদের মধ্যে দুর্বল রাবীদের অন্তর্ভুক্তী হযরত ইমামে আযম (রাদি:) এর পরে উদ্ভব হয়েছে। ইমামে আযম (রাদি:)  যে হাদীসই গ্রহন করেছেন তা, সম্পূর্ন সহীহ ছিল।
বিবেকের চাহিদাও এটা যে, রুকূতে উভয় হাত উত্তোলন না হওয়া। কেননা সবার ঐকমত্য এটার উপর যে তাকবীরে তাহরীমায় উভয় হাত উত্তোলন হবে। আর সবার ঐকমত্য এটার উপর যে সিজদা এবং বসার তাকবীরগুলোতে উভয় হাত উত্তোলন না হওয়া। রুকুর তাকবীরে মতানৈক্য রয়েছে।
দেখতে হবে রুকুর তাকবীর, তাকবীরে তাহরীমার মতো,  না সিজদা ও আত্তাহিয়াত এর তাকবীরের মতো।  চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, রুকুর তাকবীর, তাকবীরে তাহরীমার মতো নয়। বরং সিজদা ও আত্তাহিয়্যাতের তাকবীরগুলোর মতো।
কেননা, তাকবীরে তাহরীমা হলো ফরজ, যা ছাড়া নামায হয় না এবং রুকু ও সিজদার তাকবীরগুলো সুন্নাত, ওগুলো ছাড়াও নামায হয়ে যায়। তাকবীরে তাহরীমা নামাযে একবার হয়। রুকু ও সিজদার তাকবীরগুলো বার বার হয়। তাকবীরে তাহরীমা দ্বারা মুল নামায আরম্ভ হয়। রুকু সিজদার তাকবীরগুলো দ্বারা নামাযের রুকন শুরু হয়, মূল নামায নয়।
তাকবীরে তাহরীমা নামাযীর উপর পার্থিব কাজ খাওয়া পান করা ইত্যাদি হারাম করে দেয়। কিন্ত রুকু সিজদার তাকবীরে এ অবস্থা নেই। এ গুলোর আগেই নিষেধাজ্ঞা এসে গিয়েছে।
যখন রুকুর তাকবীর সিজদার তাকবীরের মত, তাকবীরে তাহরীমার মত নয়, তাহলে উচিত হবে রুকুর তাকবীরেরও ঐ অবস্থাই হবে, যা সিজদার তাকবীরে অবস্থা। অর্থাৎ হাত না তোলা। এজন্য সত্য এটাই যে, রুকুতে কখনো উভয় হাত তুলবে না। (তাহাবী শরীফ)
সারকথা এটাই যে, রুকুর সময় উভয় হাত তোলা  হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাত ও হযরাতে সাহাবা বিশেষতঃ খোলাফায়ে রাশেদীন এর আমলের পরিপন্থী এবং  শরয়ী জ্ঞানের ও বিরোধী। যে সব রেওয়ায়াতে উভয় হাত তোলার কথা এসেছে, সব গুলোই মানসূখ তথা রহিত। যেমন হাদিস নং- (১৮) এ বর্নিত আছে। অথবা ঐ সব হাদীস ‘মারজুহ’ (দু’টি হাদীসের দ্বন্দ্বের সময় যেটি গ্রহনযোগ্য হয় না) এবং আমল যোগ্য নয়। নইলে হাদিস গুলোর মধ্যে কঠির দ্বন্দ্ব এসে যাবে।
এটাও স্মর্তব্য যে, নামাযে নীরবতা ও প্রশান্তী প্রয়োজন। কোন কারন ছাড়া নড়া-চড়া ও অঙ্গ-ভঙ্গি করা দোষণীয় এবং সুন্নাতের পরিপন্থী। এজন্যই নামাযে অপ্রয়োজনে  পা দোলানো ও অঙ্গুলি নড়া-চড়া করা নিষিদ্ধ। উভয় হাত উত্তোলন অপ্রয়োজনীয় নড়া-চড়া। সুতরাং উভয় হাত উত্তোলনের হাদীসগুলো নামাযের প্রশান্তির বিরোধী এবং হাত না তোলার ব্যাপারে হাদীসগুলো নামাযের প্রশান্তির সমর্থনকারী। তাই বিবেকেরও চাহিদা হলো হাত উত্তোলন না করার হাদিসগুলোর উপর আমল হওয়া। -সুত্রঃ জা’আল হক ৩য় খন্ড-

আমীন আস্তে বলা



সূরা ফাতিহার পর আমীন বলা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। হাদীস শরীফে এর অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। নামাযে যেমন ইমাম ও মুনফারিদ (একা নামায আদায়কারী)-এর জন্য আমীন বলা সুন্নত তেমনি মুকতাদির জন্যও ইমামের 

غير المغضوب عليهم ولا الضالين

শোনার পর আমীন বলা সুন্নত। 

ফকীহ ও ইমামগণের ইজমা আছে যে, আমীন মুখে উচ্চারণ করতে হবে। অর্থাৎ তা মনে মনে পড়ার (কল্পনা করার) বিষয় নয়; বরং নামাযের অন্যান্য তাসবীহের মতো আমীনও সহীহ-শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে হবে। তবে তাঁদের মাঝে এ বিষয়ে সামান্য মতপার্থক্য হয়েছে যে, আমীন শব্দটি কি আস্তে উচ্চারণ করা হবে, না জোরে। এটা মূলত তানাওউয়ে সুন্নাহ বা সুন্নাহর বিভিন্নতা, যাকে ইখতিলাফে মুবাহও বলা হয় অর্থাৎ এখানে দুটি নিয়মই মোবাহ ও বৈধ এবং যে নিয়মই অনুসরণ করা হোক সুন্নত আদায় হবে। কিন্তু আফসোসের বিষয় এই যে, অন্য অনেক কিছুর মতো একেও মানুষ জায়েয-নাজায়েয ও সুন্নত-বিদআতের পর্যায়ে নিয়ে গেছে, এমনকি একে কেন্দ্র করে বিবাদ-    বিসংবাদেও লিপ্ত হয়েছে। এখনও অনেক জায়গায় দেখা যায়, কিছু মানুষ এত উঁচুস্বরে আমীন বলেন, যেন নামাযের মাঝেই অন্য মুসল্লীদের কটাক্ষ করেন যে, তোমরা সবাই সুন্নাহ তরককারী!

এ সংখ্যায় আমীন বিষয়ে মাওলানা মুহাম্মাদ ইউসুফ লুধিয়ানভী রাহ.-এর একটি প্রবন্ধের সারসংক্ষেপ পেশ করা হল, মনোযোগের সাথে পড়া হলে ইনশাআল্লাহ ফায়েদা হবে এবং সঠিক পথের সন্ধান পাওয়া যাবে।-তত্ত্বাবধায়ক

জামাতের নামাযে জোরে আমীন-আস্তে আমীন সম্পর্কে কয়েকটি কথা মনে রাখা কর্তব্য : 

এক. এ বিষয়ে মুজতাহিদ ইমামগণের মাঝে ইখতিলাফ রয়েছে, আর তা জায়েয-না-জায়েযের ইখতিলাফ নয়; বরং উত্তম-অনুত্তম নির্ণয়ের ইখতিলাফ। ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. বলেন, এটা ইখতিলাফে মুবাহর অন্তর্ভুক্ত, যেখানে কোনো পক্ষেরই নিন্দা করা  যায় না। যে কাজটি করছে তারও না, যে করছে না তারও না। এটা নামাযে রাফয়ে ইয়াদাইন করা ও না-করার মতোই বিষয়।

وهذا من الاختلاف المباح الذي لا يعنف فيه من فعله ولا من تركه وهذا كرفع اليدين في الصلاة وتركه

 (যাদুল মাআদ ১/৭০, মিসর ১৩৬৯ হি., কুনূত প্রসঙ্গ)

ইবনুল কাইয়্যিম রাহ.-এর বক্তব্য থেকে দু টো বিষয় জানা যায় : ১. এ বিষয়ে সবাই একমত যে, আমীন আস্তে ও জোরে দু ভাবেই বলা যায়। তবে এক  পক্ষের নিকট আস্তে বলা উত্তম, অন্য পক্ষের নিকট জোরে বলা। 

২.যদি দলীলের ভিত্তিতে একপক্ষের কাছে একটি বিষয় অগ্রগণ্য মনে হয়, অন্য পক্ষের কাছে অন্যটি তাহলে কারোরই আপত্তি করার অবকাশ থাকে না। তাছাড়া আপত্তি তো সুন্নতে মুয়াক্কাদা তরক করলে হতে পারে, মুস্তাহাব তরক করলে আপত্তি করা যায় না। 

দুই. 

আমীন একটি দুআ। আতা ইবনে রাবাহ বলেন, আমীন হচ্ছে দুআ।  

آمين دعاء

              (সহীহ বুখারী ১/১০৭)

লুগাতুল হাদীসের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ মাজমাউল বিহারে (১/২০৫) আছে, আমীন অর্থ, ইয়া আল্লাহ আমার দুআ কবুল করুন, বা এমনই হোক।

ومعناه استجب لي أو كذلك فليكن

অতএব প্রথমেই দেখা উচিত, দুআ কি জোরে করা উত্তম, না আস্তে। যদিও জোরে দুআ করাও জায়েয এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোরেও দুআ করেছেন, তবে দুআর মূল তরীকা হল আস্তে করা। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে- 

ادعوا ربكم تضرعا وخفية

তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ডাক কাতরভাবে ও গোপনে। তিনি সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না। (সূরা আরাফ : ৫৫)

হযরত যাকারিয়া আ. সম্পর্কে বলা হয়েছে-

اذ نادى ربه نداء خفيا

যখন তিনি তার প্রতিপালককে ডাকলেন অনুচ্চস্বরে।-সূরা মারইয়াম : ৩

 আমীন যেহেতু দুআ তাই কুরআন মজীদের উপরোক্ত নীতি অনুযায়ী তা আস্তে ও অনুচ্চস্বরে বলাই উত্তম। 

তিন. 

যারা মনে করেন, জাহরি নামাযে অর্থাৎ ফজর, মাগরিব ও ইশায় ইমাম-মুকতাদি সবার জোরে আমীন বলা      মুস্তাহাব এবং নামাযের সাধারণ নিয়মের অন্তর্ভুক্ত, তাদের প্রমাণ করতে হবে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐসব নামাযে সর্বদা বা অধিকাংশ সময় জোরে আমীন বলেছেন। অথবা জোরে আমীন বলার আদেশ করেছেন। অথচ কোনো সহীহ হাদীসে তা আছে বলে আমাদের জানা নেই। 

সহীহ বুখারীতে জাহরুল ইমামি বিততামীন (ইমামের উচ্চস্বরে আমীন পাঠ) এবং জাহরুল মামূমি বিততামীন (মুকতাদির উচ্চস্বরে আমীন পাঠ) শিরেনামে দুটি পরিচ্ছেদ আছে। ইমাম বুখারী রাহ. হযরত আবু হুরাইরা রা.-এর সূত্রে বর্ণিত একই হাদীসের দুই রেওয়ায়েত দুই পরিচ্ছেদে উল্লেখ করেছেন। প্রথম পরিচ্ছেদে উল্লেখিত রেওয়ায়েতে আছে, ‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ইমাম যখন আমীন বলে তখন তোমরাও আমীন বল। কারণ যার আমীন ফেরেশতাদের আমীনের সাথে মিলবে তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। ‘‘ইবনে শিহাব বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমীন বলতেন’’

إذا أمن الإمام فأمنوا، فإنه من وافق تأمينه تأمين الملائكة غفر له ما تقدم من ذنبه، 

قال ابن شهاب : وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : آمين

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে আছে, ‘‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন ইমাম বলে

غير المغضوب عليهم ولا الضالين

তখন তোমরা বল আমীন। কারণ যার কথা ফেরেশতাদের কথার সাথে মিলবে তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে’’

إذا قال الإمام غير المغضوب عليهم ولا الضالين فقولوا آمين، فإنه من وافق قوله قول الملائكة غفر له ما تقدم من ذنبه

(সহীহ বুখারী ১/১০৮)

এই হাদীসে আমীন বলার ফযীলত এবং ইমাম-মুকতাদি সকলের আমীন বলার কথা আছে, কিন্তু আমীন কি আস্তে বলা হবে, না জোরে সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। অথচ ইমাম বুখারী রাহ. শিরোনাম দিয়েছেন জোরে আমীন বলা! 

এ প্রসঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ্য করা উচিত, যা হাফেয ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. ফজরের নামাযে কুনূত পাঠ সম্পর্কে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘একথা বলাই বাহুল্য যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি প্রতিদিন ভোরে (ফজরের নামাযে) কুনূত পড়তেন এবং ঐ দুআ (আল্লাহুম্মাহদিনী ...) পাঠ করতেন আর সাহাবায়ে কেরাম আমীন  বলতেন তাহলে তা ঐভাবেই বর্ণিত হত যেভাবে নামাযের সময় ও সংখ্যা এবং নামাযে জোরে কুরআন পড়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। পক্ষান্তরে যদি ধরে নেওয়া হয় যে, কুনূতের বিষয়টি উম্মত সংরক্ষণ করেনি তাহলে তো নামাযের উপরোক্ত বিষয়গুলোর ক্ষেত্রেও একই সন্দেহ পোষণ করা যাবে! 

‘‘এই একই যুক্তিতে আমরা নিশ্চিতভাবে জানি যে, বিসমিল্লাহ জোরে পড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাধারণ নিয়ম ছিল না। অন্যথায় এটা কীভাবে হতে পারে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিন-রাতে পাঁচ (ছয়) বার জোরে বিসমিল্লাহ পাঠ করেছেন অথচ অধিকাংশ সাহাবীই তা জানতেন না? কিংবা জেনেশুনেও তা পরিত্যাগ করেছেন? এরচেয়ে অসম্ভব কথা আর কী হতে পারে? সুতরাং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি নিয়মিত উচ্চস্বরে বিসমিল্লাহ পাঠ করতেন তাহলে তা নামাযের সংখ্যা, রুকু-সিজদা ও রাকাতের সংখ্যা; (কুরআন) জোরে পড়া, আস্তে পড়া; এবং অন্যান্য রোকনের নিয়ম ও তারতীবের মতোই (অনেক সাহাবীর সূত্রে) বর্ণিত হত। 

‘‘ইনসাফের কথা, যা একজন ন্যায়নিষ্ঠ আলিম পছন্দ করবেন তা এই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো জোরে পড়েছেন, কখনো আস্তে। কখনো কুনূত পড়েছেন, কখনো পড়েননি। আর তার আস্তে পড়া ছিল জোরে পড়ার চেয়ে বেশি এবং কুনূত না-পড়া ছিল কুনূত পড়ার চেয়ে বেশি।’’

 

ومن المعلوم بالضرورة أن رسول الله صلى الله عليه وسلم لو كان يقنت كل غداة ويدعو بهذا الدعاء ويؤمن الصحابة لكان نقل الأمة لذلك كلهم كنقلهم بجهره بالقراءة فيها وعددها ووقتها وإن جاز عليهم تضييع أمر القنوت منها جاز عليهم تضييع ذلك ولا فرق، وبهذا الطريق علمنا أنه لم يكن هديه الجهر بالبسملة كل يوم وليلة خمس مرات دائما مستمرا ثم يضيع أكثر الأمة ذلك ويخفى عليها وهذا من أمحل المحال بل لو كان ذلك واقعا لكان نقله كنقل عدد الصلوات وعدد الركعات والجهر والإخفات وعدد السجدات ومواضع الأركان وترتيبها والله الموفق.

والإنصاف الذي يرتضيه العالم المنصف أنه صلى الله عليه وسلم جهر وأسر وقنت وترك وكان إسراره أكثر من جهره وتركه القنوت أكثر من فعله

 (যাদুল মাআদ পৃ. ৬৯)

ইবনুল কাইয়্যিম রাহ. যে কথা ফজরের কুনূত ও বিসমিল্লাহ জোরে পড়া সম্পর্কে বলেছেন তা হুবহু জোরে আমীনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম যদি সর্বদা বা অধিকাংশ সময় জোরে আমীন বলতেন তাহলে তা নামাযের রাকাত-সংখ্যার মতো (স্পষ্ট ভাষায় ও অনেক সনদে) বর্ণিত হত। সেক্ষেত্রে সাহাবা-তাবেয়ীন ও আইম্মায়ে মুজতাহিদীনের মাঝে মতভিন্নতাও থাকত না এবং ইমাম বুখারীকেও এমন একটি হাদীস উল্লেখ করতে হত না, যাতে জোরে আমীন বলার কথা উল্লেখিতই হয়নি। 

চার. 

উপরোক্ত হাদীসে জোরে আমীন পড়ার কথা উচ্চারিত না হলেও ইমাম বুখারী রাহ. তা আহরণের চেষ্টা করেছেন এবং হাদীসটিকে জোরে আমীনের দলীল মনে করেছেন। পক্ষান্তরে যারা আস্তে আমীনের নিয়ম অনুসরণ করেন তাঁদের মতে, এই হাদীস থেকে আস্তে আমীনের নিয়মই প্রমাণিত হয়। তাঁদের যুক্তি হচ্ছে : 

১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ইমাম যখন বলে

غير المغضوب عليهم ولا الضالين

তখন তোমরা বল আমীন। এ থেকে বোঝা যায়, ইমাম জোরে আমীন বলবে না। তাই ইমাম 

غير المغضوب عليهم ولا الضالين

 বলার পর মুকতাদিকে আমীন বলার আদেশ করা হয়েছে।

২. এই হাদীসের এক রেওয়ায়েতে সহীহ সনদে আছে, ইমাম যখন বলে -

غير المغضوب عليهم ولا الضالين

তখন তোমরা বল আমীন। কারণ ফেরেশতাগণ বলেন আমীন এবং ইমামও বলেন আমীন। যার আমীন বলা ফেরেশতাদের আমীন বলার সাথে মিলবে তার পিছনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। 

 

إذا قال الإمام غير المغضوب عليهم ولا الضالين فقولوا آمين، فإن الملائكة تقول آمين، وإن الإمام يقول آمين، فمن وافق تأمينه تأمين الملائكة غفر له ما تقدم من ذنبه

 (সুনানে নাসাঈ ১/১৪৭)

প্রশ্ন এই যে, ইমাম সূরা ফাতেহার পর আমীন পাঠ করে-এই কথা বলার প্রয়োজন কেন হল? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  যদি জোরে আমীন বলতেন তাহলে তো সাহাবায়ে কেরাম তা শুনেছেন। সুতরাং একথা তো বলার প্রয়োজন থাকে না যে, ঐ সময় ইমাম আমীন বলে থাকেন। 

পাঁচ.

যেসব মারফূ রেওয়ায়েতে স্পষ্ট ভাষায় জোরে আমীনের কথা আছে সেগুলোর সনদ আপত্তিমুক্ত নয়; তাছাড়া কখনো কখনো জোরে আমীন বলা শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যেও হতে পারে। 

এই তালীমের প্রয়োজন এই জন্য হয়েছে যে, আমীন যেহেতু অনুচ্চস্বরে পড়া হয় তাই কারো মনে হতে পারে যে, আমীন বলার নিয়ম নেই, বরং তা বিদআত। যেমন এক রেওয়ায়েত অনুযায়ী, ইমাম মালিক রাহ. ইমামের জন্য আমীন বলার নিয়ম নেই বলে মনে করেন। 

ছয়. 

আল্লামা ইবনুত তুরকুমানি ‘‘আলজাওহারুন নাকী’’ কিতাবে আমীন আস্তে বলা সম্পর্কে ইমাম ইবনে জারীর তবারী রাহ. (৩১০ হি.) থেকে বর্ণনা করেন যে, এই নিয়ম আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত। তেমনি ইবরাহীম নাখাঈ, শাবী, ইবরাহীম তাইমী রাহ. থেকেও বর্ণিত। আর আমীন আস্তে বলা ও জোরে বলার দুটো রেওয়ায়েতই সহীহ এবং উভয় নিয়ম অনুসারেই আলিমগণ আমল করেছেন। তবে অধিকাংশ    সাহাবা-তাবেয়ী যেহেতু অনুচ্চস্বরে আমীন বলতেন তাই আমি অনুচ্চস্বরে আমীন বলা পছন্দ করি।-আলজাওহারুন নকী ২/৫৮

 এ থেকে বোঝা যায়, এটিই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মূল সুন্নাহ। আর কখনো কখনো  জোরে আমীন বলা হলে তা ছিল নতুন আগন্তুকদের শেখানোর জন্য। 

আমীন আস্তে বলা সম্পর্কে কিছু আছার পেশ করছি। 

১. হযরত ওমর রা. বলেন, চারটি বিষয় ইমাম অনুচ্চস্বরে পাঠ করবে : আউযু বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন ও আল্লাহুম্মা রাববানা ওয়া লাকাল হামদ।

أربع يخفيهن الإمام : التعوذ وبسم الله الرحمن الرحيم وآمين واللهم ربنا ولك الحمد

(ইবনে জারীর, কানযুল উম্মাল ৮/২৭৪; বিনায়াহ ২/২১৯)

২. আবু ওয়াইল রাহ. বলেন, খলীফায়ে রাশেদ আলী রা. ও হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বিসমিল্লাহ উঁচু আওয়াজে পড়তেন না। তেমনি আউযুবিল্লাহ ও আমীনও।

كان علي وعبد الله لا يجهران ببسم الله الرحمن الرحيم ولا بالتعوذ، ولا بالتأمين، قال الهيثمي : رواه الطبراني في الكبير وفيه أبو سعد البقال، وهو ثقة مدلس.

(আলমুজামুল কাবীর, হাদীস : ৯৪০৪; মাজমাউয যাওয়াইদ ২/১০৮)

 ৩. আবু ওয়াইল থেকে বর্ণিত, হযরত ওমর রা. ও হযরত আলী রা. বিসমিল্লাহ উচ্চস্বরে পড়তেন না। 

لم يكن عمر وعلي يجهران بسم الله الرحمن الرحيم ولا بآمين.

(ইবনে জারীর তবারী ; আলজাওহারুন নকী ১/১৩০

৪. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, ইমাম তিনটি বিষয় অনুচ্চস্বরে পড়বে : আউযুবিল্লাহ ..., বিসমিল্লাহ ... ও আমীন।

يخفي الإمام ثلاثا : الاستعاذة وبسم الله الرحمن الرحيم وآمين.

 (আলমুহাল্লা ৩/১৮৪)

৫. ইমাম ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, চারটি বিষয় ইমাম অনুচ্চস্বরে পাঠ করবে : বিসমিল্লাহ, আউযুবিল্লাহ, আমীন ও সামিআল্লাহর পর রাববানা লাকাল হামদ।

أربع يخفيهن الإمام : بسم الله الرحمن الرحيم والاستعاذة وآمين، وإذا قال سمع الله لمن حمده قال ربنا لك الحمد.

অন্য বর্ণনায় আছে, পাঁচটি বিষয় অনুচ্চস্বরে পড়া হয় : সুবহানাকাল্লাহুম্মা, আউযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ, আমীন ও আল্লাহুম্মা রাববানা লাকাল হামদ।

خمس يخفيهن : سبحانك اللهم وبحمدك وتعوذ وبسم الله الرحمن الرحيم وآمين واللهم ربنا لك الحمد.

 (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ২/৮৭; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৮৬)

[পরিশিষ্ট

উপরোক্ত বিষয়ে এবং এ জাতীয় অন্যান্য বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি মনে রাখা উচিত, যা হযরত মাওলানা আবদুল মালেক ছাহেবের    সুন্নাহসম্মত নামায : কিছু মৌলিক কথা শীর্ষক প্রবন্ধে উল্লেখিত হয়েছে- 

যেসব ক্ষেত্রে একাধিক সুন্নাহ আছে, যেহেতু দুটোই শরীয়তে স্বীকৃত তাই যে অঞ্চলে যে সুন্নাহ প্রচলিত সেখানে সেটিই চলতে দেওয়া উচিত। প্রচলিত সুন্নাহকে প্রত্যাখ্যান করে তার স্থলে ভিন্ন সুন্নাহ জারি করার প্রচেষ্টা যেমন শরীয়তের নীতি ও মিযাজের পরিপন্থী তেমনি মুসলমানদের ঐক্য ও শৃঙ্খলার পক্ষেও ক্ষতিকর। প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ তো হয় বিদআতের ক্ষেত্রে, সুন্নাহর ক্ষেত্রে নয়। 

এ প্রসঙ্গে শাহ ইসমাঈল শহীদ রাহ.-এর একটি ঘটনা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি একবার রুকুতে যাওয়া, রুকু থেকে ওঠা ইত্যাদি স্থানে রাফয়ে ইয়াদাইন করতে আরম্ভ করেন। অথচ সে সময় গোটা ভারতবর্ষে (ফিকহে শাফেয়ীর অনুসারী সামান্য কিছু অঞ্চল বাদে) রাফয়ে ইয়াদাইনের এই সুন্নাহ প্রচলিত ছিল না। শাহ ছাহেব রাহ.-এর যুক্তি ছিল, মুর্দা সুন্নত যিন্দা করায় অনেক ছওয়াব ও ফযীলত। হাদীস শরীফে আছে, উম্মতের ফাসাদের সময় যে আমার সুন্নাহকে ধারণ করে সে একশ শহীদের ছওয়াব ও মর্যাদা পাবে।

তখন তাঁর চাচা হযরত মাওলানা আবদুল কাদের দেহলভী রাহ. (যিনি ছিলেন শাহ ওয়ালিউল্লাহ রাহ.-এর পুত্র এবং তাফসীরে মূযিহুল কুরআন-এর রচয়িতা) তাঁর এই ধারণা সংশোধন করেছিলেন। ইসমাইল শহীদ রাহ.-এর যুক্তির জবাবে তিনি বলেছিলেন, ঐ হাদীসে বলা হয়েছে উম্মতের ফাসাদের সময় যে ব্যক্তি সুন্নাহকে ধারণ করে তার জন্য উপরোক্ত ফযীলত। কিন্তু কোনো বিষয়ে যদি একাধিক সুন্নাহ থাকে, তাহলে কোনো একটিকে কি ফাসাদ বলা যায়? যায় না। সুন্নাহর বিপরীতে ফাসাদ হল শিরক ও বিদআত। দ্বিতীয় সুন্নাহ কষ্মিনকালেও ফাসাদ নয়; বরং দুটোই রহমত ও সুন্নাহ। তো রাফয়ে ইয়াদাইন না-করাও যখন সুন্নাহ তখন যে অঞ্চলে এই সুন্নাহ মোতাবেক আমল হচ্ছে সেখানে রাফয়ে ইয়াদাইনের সুন্নত যিন্দা করে ঐ ছওয়াব আশা করা ভুল। এটা হাদীসের ভুল প্রয়োগ এবং সুন্নাহকে ফাসাদ বলার নামান্তর।] 

 


হাদিসের কিতাবের নামের লিষ্ট

১) মুসনাদুল ইমাম আবু হানীফা।
বিলাদাত- ৮০ হিজরী, ওফাত- ১৫০ হিজরী।

(২) আল মুয়াত্তা লি ইমাম মালেক।
জন্ম- ৯৫ হিজরী, ওফাত- ১৭৯ হিজরী।

(৩) আল মুয়াত্তা লি ইমাম মুহম্মদ ।
জন্ম- ১৩৫ হিজরী, ওফাত- ১৮৯ হিজরী।

(৪) আল মুছান্নাফ লি আব্দুর রাজ্জাক।
জন্ম- ১২০/১২৬ হিজরী, ওফাত- ২১১ হিজরী।

(৫) মুসনদে আহমদ বিন হাম্বল।
জন্ম- ১৬৪ হিজরী, ওফাত- ২৪১ হিজরী।

(৬) মুসনাদুত তায়লাসী।
জন্ম-___, ওফাত- ২০৪ হিজরী।

(৭) কিতাবুল আছার লি ইমাম আবু ইউছুফ।
জন্ম- ১১৩ হিজরী, ওফাত- ১৮২ হিজরী।

(৮) মুসনাদুল হুমায়দী।
জন্ম-____ , ওফাত- ২১৯ হিজরী।

(৯) মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ।
জন্ম- ১৫৯ হিজরী, ওফাত- ২৩৫ হিজরী।

(১০) আল জামিউল মুসনাদুছ ছহীহুল মুখতাছারু মিন উমুরি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়া সুনানিহী ওয়া আইয়ামিহী ( বুখারী শরীফ)
জন্ম- ১৯৪ হিজরী, ওফাত- ২৫৬ হিজরী।

(১১) আছ ছহীহুল মুসলিম ।
জন্ম- ২০৪ হিজরী, ওফাত- ২৬১ হিজরী।

(১২) সুনানু আবু দাউদ।
জন্ম- ২০২ হিজরী, ওফাত- ২৭৫ হিজরী।

(১৩) আল জামিউ ওয়াস সুনানুত তিরমিযী।
জন্ম- ২১০ হিজরী, ওফাত ২৭৯ হিজরী।

(১৪) সুনানুন নাসায়ী।
জন্ম- ২১৫ হিজরী, ওফাত- ৩০৩ হিজরী।

(১৫) সুনানু ইবনে মাজাহ।
জন্ম- ২০৯ হিজরী, ওফাত- ২৭৩ হিজরী।

(১৬) সুনানুদ দারিমী।
জন্ম- ১৮১ হিজরী, ওফাত- ২৫৫ হিজরী।

(১৭) মুসনাদুল বাযযার।
জন্ম-_____ , ওফাত- ২৯২ হিজরী।

(১৮) শরহু মা’আনিল আছার (ত্বাহাবী শরীফ)
জন্ম- ২২৯ হিজরী, ওফাত- ৩২১ হিজরী।

(১৯) ছহীহ ইবনে হিব্বান।
জন্ম- ৩৫৪ হিজরী, ওফাত- ৪৬৫ হিজরী।

(২০) মাছাবিহুস সুন্নাহ ও মিশকাত।
জন্ম- ৪৩৬ হিজরী, ওফাত- ৫১৬ হিজরী।

(২১) আল মু’জামুছ ছগীর লিত তাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।

(২২) আল মু’জামুল আওসাত লিত ত্বাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।

(২৩) আল মু’জামুল কবীর লিত তাবরানী।
জন্ম- ২৬০ হিজরী, ওফাত- ৩৬০ হিজরী।

(২৪) আল মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাইন।
জন্ম- ৩২১ হিজরী, ওফাত- ৪৫০ হিজরী।

(২৫) ছহীহ ইবনু খুযাইমাহ।
জন্ম- ২২৩ হিজরী, ওফাত- ৩১১ হিজরী।

(২৬) আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।

(২৭) আস সুনানুছ ছগীর লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।

(২৮) শুয়াইবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৪৫৮ হিজরী।

(২৯) মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল আছার লিল বাইহাক্বী।
জন্ম- ৩৮৪ হিজরী, ওফাত- ৩৫৮ হিজরী।

(৩০) শরহুস সুন্নাহ লিল বাগবী।
জন্ম- ৪৩৬ হিজরী, ওফাত- ৫১৬ হিজরী।

(৩১) মা’রিফাতুছ ছাহাবা লি আবী নুয়াইম।
জন্ম- ৩৩৬ হিজরী, ৪৩০ হিজরী।

(৩২) জামিউল আহাদীস লিছ সূয়ুতি।
জন্ম- ৮৪৯ হিজরী, ওফাত- ৯১১ হিজরী।

(৩৩) গায়াতুল মাক্বছাদ ফী যাওয়ায়িদিল মুসনাদ।
জন্ম- ৭৩৫, ওফাত- ৮০৭ হিজরী।

(৩৪) কানযুল উম্মাল।
জন্ম-_____ , ওফাত- ৯৭৫ হিজরী।

(৩৫) আখবারু মক্কতা লি আযরাক্বী।

(৩৬) ছহীহ ইবনে ওয়ায়না।

(৩৭) সহীহ ইবনুস সাকান।

(৩৮) সহীহ মোন্তাকা।

(৩৯) মুখতাসা রেজিয়াহ।

(৪০) সহীহ যুরকানী।

(৪১) সহীহ ইসফেহানী।

(৪২) সহীহ ইসমাঈলী।

(৪৩) কিতাবুল খেরাজ।

(৪৪) কিতাবুল হেজাজ।

(৪৫) কিতাবুল আ’মলী।

(৪৬) মুসনাদে শাফেয়ী।

(৪৭) মুসনাদে আবু ইয়ালা।

(৪৮) মুসনাদে দারে কুতনী।

(৪৯) কিতাবুল ই’তিকাদ।

(৫০) কিতাবুদ দোয়া।

(৫১) মুসনাদে হারেস ইবনে উমামা।

(৫২) মুসনাদে বাজ্জার।

(৫৩) সুনানে সাঈদ ইবনে মনছুর।

(৫৪) সুনানে আবী মুসলিম।

(৫৫) শিফা শরীফ।

(৫৬) আল হুলইয়া।

(৫৭) তাহযীবুল আছার।

(৫৮) আল মুখতারা।

(রহমাতুল্লাহি আলাইহিম)