শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৪

দেওবন্দী দের কে আমি সেমা এর বিষয় কিছু দলিল দিয়ে

দেওবন্দী দের কে আমি সেমা এর বিষয় কিছু দলিল দিয়েছিলাম হোজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালি (রহ) সাহেবের কিতাব থেকে।  যদিও দেওবন্দী গণ সুদ্ধ তাসাউফ মান্যকারী বলে দাবি করে (সুত্র ;- দেওবন্দ আন্দোলন ) কিন্তু তাসাউফ এর প্রাণ পুরুষ ইমাম গাজ্জালি এর কথা ও মান্য করতে রাজি না বর্তমান দেওবন্দী বলে দাবিদার গণ।  অথচ এমাম গাজ্জালি সাহেবের ইজ্জাত বর্ণনা করতে গিয়ে মাওলানা জাকারিয়া তার কিতাব (শরীয়াত ও তরিকত কা তালাজুম ) এর ২০-২১ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে ;- মাদ্রাসায় ২ কলম পড়ুয়া রা বলে ইমাম গাজ্জালি সাহেবের হাদিস ভুল , অথচ তাদের জানা নাই যে ইমাম গাজ্জালি এর ইলম থেকে আমাদের ইলম এর পার্থক্য করার ইলম ও আমাদের মাঝে নাই ( শরীয়াত ও তরিকত কা তালাজুম ) পৃষ্টা ২০-২১


মাওলানা জাকারিয়া এর এই ২ কলম মাদ্রাসা পড়ুয়া দের লক্ষ্য করে যে উক্তিটি করেছেন তা ১০০ তে ১০০ ভাগ প্রযোজ্য বর্তমান কুলাঙ্গার দেওবন্দী দের বেলায়।   

 আমার আগেই জানা ছিল যে তারা গাজ্জালি সাহেবের কিতাব কে অস্বিকার করবে , তাই আমি তাদের কিতাব গুলো তে খুজা সুরু করি (সামার ) দলিল।


  এখন দেখুন :- মাওলানা আশরাফ আলী থানবী দেওবন্দী দের হেকিমুল উম্মত ও মোজাদ্দেদ এর কিতাব ( রুহে তাসাউফ ) এর ৫৫ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে ;- আবু সুলায়মান দারানি (রহ) এর নিকট সামার বিষয় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন যে :- যে অন্তর সুন্দর কন্ঠের উত্সুক হবে , সে ক্ষীন অন্তর ও দুর্বল চিত্তের লোক :- আর সামা তার ঔষদ সরূপ।  উদাহরণ তার কচি শিশু , সে শুইতে চায়  , তখন মধুর কন্ঠ ইত্যাদি দ্বারা তার নিদ্রার বেবস্থা করা হয়।  আবু সুলায়মান (রহ) আরো বলেন মধুর কন্ঠ বা সুরোলিত সুর অন্তরে বিলোপ কিছুর সৃষ্টি করে না , যা তার অন্তরে আছে তা নাড়া দিয়ে জাগ্রত করে দেয় ( রুহে তাসাউফ) আশরাফ আলী থান্বির লেখা কিতাব পৃষ্টা ৫৫ 


আশা করছি দেওবন্দী ভাইদের চোখে পরেছে কথা গুলো , আর এটাই বলা হয়েছে কত গুলো অন্তর ক্ষীনও ও কঠিন , ফলে সুলোলিত সুর ও মধুর কন্ঠে গাওয়া কোনো  আবেগ করা ইস্ক এর সামা সুনে সেই অন্তরে থাকা নিস্প্রান ইমান কে নাড়া দেয় , ফলে তা জেগে উঠে নতুন উদ্যমে।  


এর পর আবার দেখুন ;- উক্ত কিতাবের ৫৬ নং পৃষ্টায়  থানবী সাহেব আবার লিখেছেন যে :- আমি উস্তাদ আবু আলী দাক্কাকি এর কাছ থেকে সুনেছি যে ;- এক মজলিশে আবু অমর ইবনে জায়েদ ও হজরত নাচরাবাদি ও কতিপয় লোক উপস্থিত ছিলেন।  তখন নাচ্ছরাবাদী (রহ) বলেন যে ;- আমার কথা হচ্ছে যে কতগুলো লোক যখন এক খানে জমায়েত হয় তখন একজন কে কিছু বলা উচিত , এই খানে টিকা দিয়ে লিখেছেন যে ( এতে প্রতিয়মান হয় যে তার মতে সমা মোবাহ  বা জায়েজ) অবশিষ্ট লোক চুপ থাকবে।  এটি কমপক্ষে কারো গিবত করা থেকে উত্তম।  আবু অমর ইবনে জায়েদ তখন বললেন যে ;- যদি ৩০ বছর গীবতে লিপ্ত থাক ,তার চেয়ে সামা এর অবস্তায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কিছু প্রকাশ ঘটানো থেকে উত্তম হবে।  (রুহে তাসাউফ ) পৃষ্টা ৫৬ 


এই খানে আশরাফ আলী থানবী যে ২ জন বুজুর্গের কথা উল্লেখ করেছেন তাতে বলা হয়েছে যে :- কয়েকজন লোক যদি একত্রিত হয় তা হলে  একজন কিছু আবেগ ভরা সুর নিয়ে কিছু সুন্দর আবৃতি করবে যা ইসলামের সত্যিকার এর দিকে ধেয়ে নিয়ে যেতে পারে , আর সবাই চুপ করে সুন্ভে , এতে একজন আর একজনের গিবত করা থেকে উত্তম।  এবং অমর ইবনে যায়েদ ও তাই বলেছেন।  


উক্ত কিতাবের ৫৭ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে ;- মাওলানা ও মুফতি আহমাদ সফি বলেন যে :- যে কথা টা আমি উল্লেখ করা সমীচীন মনে করি যা আমি থানবী সাহেবের বরকত ময় জবান থেকে একাধিক বার সোনার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলাম তা হচ্ছে ;- চার সিলসিলার মধে তরিকতের পন্থী শায়েখ গণ কাউকে সামা করণীয় হিসেবে নির্দেশ দেন নাই , তবে পরবর্তিতে পির মাশায়েখ দের অদিষ্ট মামূল ছিল যে অভিজ্ঞতার নিমিত্তে উপকারী সাব্যস্ত হওয়ার ভিত্তিতে সংযোজন করা হয়েছে ।রুহে তাসাউফ পৃষ্টা ৫৭ 


এই খানে দেওবিন্দী দের মুফ্তিয়ে আজোম সফি সাহেব বললেন যে তরিকত পন্থী শায়েখ গণ সামা করণীয় হিসেবে নির্দেশ দেন নাই। এই কথার অর্থ হচ্ছে যে পীর সাহেব রা যেমন অজিফা দেয় ও তা পালন করতে বলে তেমন সামা এর বিষয় নির্দেশ দেন না ,

এবং তরিকত পন্থী পীর মাশায়েখ গণ সামা উপকারী সাব্যস্থ বিধায় সংযোজন করেছেন। আর ইটা যেহেতু উপকারী সেহেতু মোবাহ বা জায়েজ 


আবার দেখুন (মাওয়ায়েজ এ আশরাফিয়া) কিতাবের ৪ থা খন্ডের ৬৭ নং পৃষ্টায় আশরাফ আলী থানবী সাহেব লিখেছেন যে ;- আমি একদিন হজরত নিজামুদ্দিন কুদ্দেসা সিরুহুল সাহেবের মাজারে গিয়ে কবর জিয়ারত শেষ করে আসতে ছিলাম , আসার পথে দেখলাম যে কাওয়ালী এর আয়োজন করা হচ্ছে। আমাকে বাধা দিয়ে দিয়ে কাওয়ালী এর আয়োজক রা বলল যে আপনি অপেক্ষা করুন ,কাওয়ালী সুনে এর পর যাবেন।  আমি বললাম যে আমি যদি কাওয়ালী সুনি তবে সুল্তান্জি (খাজা গরিবে নেওয়াজ) নারাজ হবেন। তখন তারা বলল যে ;- কেন চিস্তিয়া বুজুর্গ রা তো সবাই কাওয়ালী শোনেন ,সুল্তান্জি (গরিবে নেওয়াজ) নিজেও কাওয়ালী সুনেচিলেন। তখন আমি বললাম যে হা তিনি কাওয়ালী সুনেচিলেন, আর ওনার কিতাব (ফাওয়ায়েদুল ফুয়াদ) কিতাবে কাওয়ালী বা সঙ্গীতের জন্য ৪ তা সর্ত দিয়েছেন :- (১) শ্রোতা (২) গায়ক (৩) স্রবনীয় বিষয় বস্তু (৪)স্রবনীয় যন্ত্রপাতি 

১) শ্রোতার সম্মন্ধে তিনি লিখেছেন স্রোতা কামভাব সম্পন্ন হতে পারবে না 

২) গায়ক মেয়ে লোক ও বালক হতে পারবে না 

৩)স্রবিনীয় বিষয় বস্তু বিষয় লিখেছেন যে , হাসি ,কৌতুক , প্রকৃতির হতে পারবে না 

৪) স্রবনীয় যন্ত্র পাতি সম্মন্ধ্র তিনি লিখেছেন যে , বাহেলা , সারেঙ্গী , হারমোনিয়াম থাকা চলবে না 


আমি দেখিতেছি এই খানে সেই সকল সর্ত সমূহের পালন করা হয় নাই ,তাই আমি এই খানে থেকে সুলতান জি (গরিবে নেওয়াজ)  কে নারাজ (অসুম্তুস্ট) করতে চাই না।  (মাওয়ায়েজ-এ-আশরাফিয়া ) পৃষ্টা ৬৭ 


এই খানে আশরাফ আলী থানবী সাহেব এর কথা গুলো লক্ষ্য করুন ;-যে যদি গরিবে নওয়াজ খাজা মউনুদ্দিন চিস্তি আজমেরী (রহ) এর দেয়া সর্ত পালন করা হত তা হলে মাওলানা আশরাফ আলী থানবী সাহেব ও কাওয়ালী সুন্তেন। কিন্তু সর্ত সমূহের পালন ছিল না বলে তিনি কাওয়ালী আয়োজকদের কে এই সকল কিছু বলে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে আগে এই সর্ত গুলো পালন করুন তা হলে আমিও কাওয়ালী সুনব। 

এই খানে মাওলানা আশরাফ আলী থানবী সাহেব কাওয়ালী কে হারাম বলেন নাই বরং কাওয়ালী তে যে অতিরঞ্জন ও বেহায়া পনা আছে তা দূর করতে বলেছেন।  আমি মুজাদ্দেদিয়া তরিকার মুরিদ ও আমার শায়েখ মুজাদ্দেদ আল ফেসানি শায়েখ আহমাদ ফারুকী শেরেহিন্দী (রহ) আমার তরিকায় গান,গজল,কাওয়ালী,সামা  সব কিছু আমার জন্য মানা আর আল্হাম্দুল্লিল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমি গান,সামা ,কাওয়ালী, গজল সুনি না,আমার অজিফা জিকির ও দরুদ। তাই বলে আমি সামা কে হারাম বলতে পারি না। কিন্তু এটা অবশ্যই বলব অতিরঞ্জন ও বেহায়াপনা অবশ্যয় হারাম হারাম হারাম। 

আর বর্তমান দেওবন্দী দের দিলের মাঝে সামান্য তম ইজ্জাত ও নাই খাজা গরিবে নওয়াজ এর প্রতি ,কিন্তু ওদের মুজাদ্দেদ আশরাফ আলী থানবী ওনার নাম না নিয়ে সুলতান্জি বলে সম্মোধন করেছেন। আর উনি যাতে আশরাফ আলী থান্বির উপর নারাজ না হন তার জন্য এমন বেহায়াপনা কাওয়ালী শুনতেও রাজি হন নাই। কত ইজ্জাত করতেন আশরাফ আলী থানবী খাজা গরিবে নেওয়াজ (রহ) কে ,আর সকল দেওবন্দী চিস্তিয়া বুজুর্গ নাম পরিচিত কারণ তারা সবাই চিস্তিয়া তরিকায় তালিম তর্বিয়াত দিয়ে থাকতেন ও মাওলানা জাকারিয়া এই নিয়ে একটা কিতাব ও লিখেছেন (মাশায়েখ-এ-চিস্ত) নামের। দেখে নিতে পারেন দেওবন্দী গণ। 


আরো একটু লক্ষ্য করুন যে ;- মাওলানা আশরাফ আলী থানবী তার কিতাব (রুহে তাসাউফ ) এর ৫৬ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে কথিত আছে যে ;- জৈনিক এক বুজুর্গ সপ্নে নবী পাকের জিয়ারত লাভে ধন্য হন ও নবী পাক এরশাদ ফরমান যে ;- সামা তে ভ্রান্তি বেশি হয়। (রুহে তাসাউফ ) পৃষ্টা ৫৬ 


এই খানে লক্ষ্য করুন যে ;- আশরাফ আলী থানবী সাহেব লিখেছেন যে ;- জৈনিক বুজুর্গ কে নবী পাক (স) এরশাদ ফরমান যে সামা তে  ভ্রান্তি বেশি হয় , কিন্তু থান্বির কিতাব  থেকে প্রমাণিত হলো যে নবী পাক সামা কে হারাম  বলেন নাই বরং অতিরঞ্জন এর  কারণে ভ্রান্তি বেশি বলেছেন। তাই আমাদের উচিত সামা কে হারাম না বলে অতিরঞ্জন ও বেহায়া পনা কে হারাম বলা। 

কৌমী মাদ্রাসায় যে হারে সমকামিতা হয় সে হারে সমকামিতা হারাম বিধায় আমরা এটা বলতে পারিনা যে কৌমী মাদ্রাসা গুলো হারাম , বরং সমকামিতাকে হারাম বলতে হবে , ও সমকামিতা কিভাবে দূর করা যায় সে ব্যবস্থা করতে  হবে , ঠিক সেই রকম কাওয়ালী কে হারাম না বলে অতিরঞ্জন কে হারাম বলা লাগবে , যাতে সেই অতিরঞ্জন কিভাবে দূর করা যায় তা বের করা লাগবে। 


দেওবন্দিদের আরো একটা কিতাব (তাসাউফ তত্ত্ব ) লিখেছেন মুফতি মাহমুদ আশরাফ উসমানী (উস্তাদ দারুল উলুম করাচি) উক্ত কিতাবের ২৩৪ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে - মোবাহ (জায়েজ ) সামা এর কিছু সর্ত আছে 

তা হচ্ছে ;- ১) শ্রোতা প্রবৃত্তি পুজারী হউয়া যাবে না 

২)মেহফিলে কোনো মহিলা বা দাড়ি গোফ বিহীন সুশ্রী বালক থাকা যাবে না (দেওবন্দী সমকামিতার একটা বেপার আছে ) 

৩) সামা দ্বারা আমোদ প্রমোদ ছাড়াও আল্লাহর জিকিরের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা 

৪)সামা পাঠক কোনো মহিলা বা সুশ্রী বালক না হওয়া 

৫)সামার বিষয় বস্তু অস্শীল ও নাজায়েজ না হওয়া 

৬)সামার সাথে কোনো বাদ্যযন্ত্র না থাকা 

৭)লৌকিকতা বা লোক দেখানোর জন্য ওয়াজদ বা খোদা প্রদত্ত বিশেষ অবস্থার অভিনয় না করা। 


এই খানে মুফতি মাহমুদ আশরাফ উসমানী (মুফতি-এ-আজম সফি এর ছেলে ও তকী উসমানী এর ভাই) সাহেব অতিরঞ্জন কে না বলেছেন সমা কে না। হারাম বলেছেন অতিরঞ্জন ও বেহায়াপনা কে কিন্তু সামা কে হারাম বলেন নাই 


আপনারা দেওবন্দী গণ আপনাদের , আপনাদের আলেমদের কথাও কি আপনারা মানবেন না ? নাকি তারা ও বেদাতি ছিল ? নাকি আপনারা বেশি পেকে গেছেন ? কোনটা সত্য ? 


আমরা বা আমি সোহেল রানা কখনই সামার মধ্যেকার অতিরঞ্জন কে সাপোর্ট করি না। অতিরঞ্জন কে হারাম বলি কিন্তু সামা কে না  , কারণ সামার কি উপকার তা আপনাদের মুজাদ্দেদ এর কিতাব থেকে  আমি প্রমান করেছি। 

এখন আপনাদের যা মন চায় আমাকে গালি দেন ,দোয়া  , আপনাদের ইচ্ছা 


মা-আসসালাম 


সোহেল রানা 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন