বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৫

হায়্যাতুন নবী বিষয় আপত্তির জবাব

আমি প্রথমত বাচ্চাদের সাথে কথা বলে ওহেতুক মনে করি আর দ্বীতিয়ত তাদের সাথে যারা মুর্খদের মত আচরন করে , তৃতীয়ত যারা হিংসামুলক প্রশ্ন করে ৪র্থত যারা কোন ফায়সালা নিতে পারে না নিজের বিবেক দিক দিয়ে । আর যারা কিছু জানতে চায় ও বুঝতে চেষ্টা করে ও বোঝার পর কোন বিষয় একটা চুরান্ত ফায়সালা নিতে পারে তাদের সাথে কথা বলা উত্ত্ম মনে করি।  আর বাকি যারা আছে তাদের কে বলব এমন কারো হাতে আমার এই লেখা যদি যায় সে যেন না পড়ে । 

আপনার প্রথম কালাম পাকের আয়াত ;- 
قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا (110
বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।


এখন আমার কয়েকটা প্রশ্ন আছে এই আয়াত কে নিয়ে আশা করছি তার জবাব দিবেন ;
قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ

এই খানে (বাশার) শব্দের অর্থ কি  ? 
বলবেন মানুষ । 
মিছলুকুম শব্দের অর্থ কি ? 
বলবেন মত । 

উত্তর কি দাড়াল মানুষের মত । 

মানুষের মত হওয়া আর মানুষ হওয়া কি এক ? 
যদি তাই হয় যে মানুষের মত হওয়া ও মানুষ হওয়া একই কথা তে হলে হযরত জীব্রাইল (আ) দাহিয়া কালবীর রুপ  নিয়ে আসতেন নবী পাকের কাছে তখন কি তিনি মানুষ হয়ে যান ? না কি ফেরেস্থা থেকে যান ? জবাব দিবেন ।  
এটা আমার প্রশ্ন থাকল ।

আর উপরের আয়াতে  মিছলুকুমের অর্থ মানুষের মতই বলা হয়েছে।  কারন সেই সময়ের কাফেরগন মনে করত যে , যে আল্লাহর নবী হবে সে আমাদের মত দেখতে হবে না।  সে দেখতে হবে অন্য প্রকারের এক প্রানি , তাই এখানে বলা হয়েছে যে আমি তোমাদের মতই মানুষ , আমি অন্য কোন চেহারা বিশিষ্ট নই , দেখতে আমি তোমাদের মতই । 
এই আয়াতে শুধু দেখার রখা বলা হয়েছে . 

আর আল্লাহ যদি নবী পাক কে মানুষ হিসেবে তৈরি করত তা হলে কোরানের আয়াত হবে এই রকম :
-  قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ انسانقم       
কিন্তু মজার কথা হচ্ছে কোরান পাকের কোন একটা আয়াতে ও নবী পীর কে ইনসান বলা হত নাই । 




আর/-  সুরা মরিয়ম দেখুন একবার ;- 
 فَاتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا 
অতঃপর তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে সে পর্দা করলো। অতঃপর আমি তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম, সে তার নিকট পুর্ণ মানবাকৃতিতে আত্নপ্রকাশ করল।
আয়াত নং ১৭ 

এই খানে কোন রুহ এর কথা বলে হয়েছে  فَتَمَثَّلَ لَهَا।     
আর এই কথার অর্থ কি ? বলবেন কি ? মিছলুকুম বা শব্দের অর্থ হচ্ছে মত বা আকৃতি। আমি প্রথমে এই কথা বলেছি । আর (
فَتَمَثَّلَ لَهَا) একই অর্থে বেবহৃত 
হয়েছে  যে আকৃতি গত দিক দিয়ে মানুষের মতই।  

আর ওনেক হাদীস আছে তাতে নবী পাক বলেছেন যে তোমাদের মাঝে আমার মত কে আছ ? আমি তোমাদের মত নই । আমি হাদীসের দিকে যেতে চাচ্ছি না আজ। কারন আমাকে বলা হয়েছে আপনি হাদীস কে ও মান্য করেন না । তাই ফায়সালা কোরান থেকে হোক । 

 قَالَتْ إِنِّي أَعُوذُ بِالرَّحْمَن مِنكَ إِن كُنتَ تَقِيًّا (18
মারইয়াম বললঃ আমি তোমা থেকে দয়াময়ের আশ্রয় প্রার্থনা করি যদি তুমি আল্লাহভীরু হও। 
." 
 
 قَالَ إِنَّمَا أَنَا رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَامًا زَكِيًّا (19
সে বললঃ আমি তো শুধু তোমার পালনকর্তা প্রেরিত, যাতে তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করে যাব। 
এই খানে হযরত জীব্রাইল মানুষের রুপ নিয়ে এসেছিলেন। আর তাই মা মরিয়ম ভয় পেয়ে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করেছেন । 

এই খানে জীব্রাইল (আ) যদি মানুষের রুপ নিয়ে আসতে পারেন  নূর হয়ে তা হলে জিনি আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি  ও সৃষ্ঠির  শুরু থেকে তিনি নবীই ছিলেন তিনি কি  পারেন না ? নূর হয়ে মানুষের মত আসতে ? জবাব দিন 

২য় :- উক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলতে বলেছেন যে আপনি বলে দিন যে আমি মানুষের মতই ।     
এই খানে তোমাদের মতই কথা টা কোথায় থেকে আসলো ? 

আর এই কথা টা আল্লাহ তায়ালা নবী পাক  কে বলতে বলেছেন যে আপনি বলে দিন , আমি আল্লাহ বলছি না , আপনি বলেদিন যে আপনি মানুষের মতই। আমি আল্লাহ বলবোনা  যে আপনি মানুষ । 

আর আল্লাহ কি তোমাদের কে বলতে বলেছেন এই আয়াতে যে (হে মানুষ সকল , তোমরা বল যে হে নবী আপনি আমাদের মতই মানুষ ) 

যদি আল্লাহ সাধারন মানুষ বা কাউকেই বলতে বলে নাই যে হে বান্দা রা তোমরা বল হে নবী আপনি আমাদের মতই মানুআপনার দেয়া দলিল ;-

 وَمَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِّن قَبْلِكَ الْخُلْدَ أَفَإِن مِّتَّ فَهُمُ الْخَالِدُونَ (34
আপনার পূর্বেও কোন মানুষকে আমি অনন্ত জীবন দান করিনি। সুতরাং আপনার মৃত্যু হলে তারা কি চিরঞ্জীব হবে?

বাচ্চা হলেই এমন আয়াত ব্যবহার করা যায়  রাসুলুল্লাহ (সা) কে মৃত প্রমান করার জন্য 

আচ্ছা আল্লাহ তায়ালা নিজে কোরান পাক এ শহিদ দের কে মৃত বলতে মানা করেছেন দেখুন;- 
 وَلاَ تَقُولُواْ لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبيلِ اللّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاء وَلَكِن لاَّ تَشْعُرُونَ 4
আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।

(বাকারা) ১৫৪ 

সাধারন মিত্তু ও শহীদি মিত্তুর   মধ্য পার্থক্য কি ? একটু বলবেন কি ? শহিদ রা কি মিত্তুর স্বাদ গ্রহন করেন নাই ? আর যদি মিত্তুর স্বাদ গ্রহন করে থাকেন   তা হলে আল্লাহ তায়ালা কেন তাদের কে মৃত বলতে মানা করেছেন ? জবাব দিন । 

যে খানে আল্লাহ তায়ালা শহীদ দের কে কোরান পাক এ মৃত বলতে মানা করলেন , কারন শহিদ দের ইজ্জত ওনেক ওনেক বেশি । আল্লাহর কাছে তারা মৃত নয় । যার জন্য মৃত বলতে মানা করেছেন। বরং জীবিত বলছে বলেছেন । আর এটা ও বলেছেন যে আমরা বুঝতে পারি না । সেই খানে সকল নবী ও ফেরেশতা কুলের সকলের  সরদার ও সব চেয়ে ইজ্জত ওয়ালা নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) কে মৃত বলা কি করে সম্ভব হয় ? 
নবীর ইজ্জতের চেয়ে কি শহিদ দের ইজ্জত ওনেক বেশি  হয়ে গেল ? 
জবাব দিন । 

আর যদি নবীর ইজ্জত শহিদের ইজ্জতের চেয়ে বেশি হয় তো কি ভাবে হল ? তার উত্তর দিন । 

আপনার দেয়া আর এক আয়াত দলিল হিসেবে ;- 
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ وَنَبْلُوكُم بِالشَّرِّ وَالْخَيْرِ فِتْنَةً وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ (35
প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।



উপরে লেখা উত্তর ও প্রশ্ন গুলো যথেষ্ট মনে করছি এই আয়াতের জন্য । 

এর পর তিনি যে আজ পর্যন্ত একজন জীবন্ত লোকের মত আমাদের পর্যবেক্ষনকারী হয়ে আছেন তার কিছু দলিল কোরান থেকে :- 
১)  يَاايُّهَاا لنَّبِىُّ اِنَّا اَرْسَلْنكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا وَّدَاعِيًا اِلَى اللهِ بِاِذْنِه وَسِرَاجًا مُّنِيْرَا
 
[আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে সম্বোধন করে এরশাদ করেছেন, ওহে অদৃশ্য বিষয়াদির সংবাদদাতা! নিশ্চয় আমি আপনাকে প্রেরন করেছি, হাযির-নাযির, সুসংবাদদাতা হিসাবে এবং ভয় প্রদর্শনকারী করেছি আল্লাহর নির্দেশানুশারে তার দিকে আহবানকারী এবং উজ্জল প্রদীপ হিসেবে]
আয়াতে উল্লেখিত- شاهد (শাহীদ) শব্দের অর্থে সাক্ষীও হতে পারে এবং হাযির-নাযির ও হতে পারে। সাক্ষী অর্থে সাহিদ শব্দটি এজন্য ব্যবহৃত হয়েছে সে ঘটনা স্থলেই উপস্থিত ছিল। হুযূর আলাইহিস সালামকে শাহিদ হয়তো এ জন্যই বলা হয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহ আলাইহে ওয়াসাল্লাম )দুনিয়াতে এসে অদৃশ্য জগতের সাক্ষ্য দিচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরুপে। প্রত্যক্ষদর্শী যদি না হন, তাহলে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহ আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে শাক্ষীরুপে প্রেরণের কোন অর্থই  হয়না। কেননা সমস্ত নবীগন (আলাইহিস সালাম) তো সাক্ষী ছিলেন। অথবা তাকে এ জন্যই শাহিদ বলা হয়েছে যে, কিয়ামতের দিন তিনি (সাল্লাল্লাহ আলাইহিস সালাম) সম্তত নবীগনের অনূকুলে প্রত্যক্ষদর্শীরুপে সাক্ষ্য প্রধান করবেন। এ সক্ষ্য না দেখে প্রদান করা যায় না।
 এর পর 
(২)  وَكَذَالِكَ جَعَلْنَاكُمْاُمَّةًوَّ وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهْدْاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدًا
 
[এবং কথা হলো এই যে আমি (আল্লাহর তা’আলা) তোমাদেরকে (উম্মতে মুহাম্মাদী ) সমস্ত উম্মত গনের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দান করেছি ,যাতে তোমরা  অন্যান্য লোকদের  ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করতে পার এবং এ রসুল (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম ) তোমাদের জন্য  পর্যবেক্ষনকারী ও সাক্ষীরুপে প্রতিভাত হন ।

তিনি যদি আমাদের বিষয় অবগত না হল তে হলে কাল কিয়ামতের দিনে কি ভাবে সাক্ষি হবেন আমাদের ? বরম তিনি জীবিত ও আমাদের কে দেখছেন উত্তম ভাবে। তাই তিনি সাক্ষী হবেন কিয়ামতের দিনে আমাদের বিষয় ।

(৩) فَكَيْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ اُمَّةٍ بِشَهِيْدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هؤُلَاءِ شَهِيْدًا
 
[তখন কি অবস্তা হবে ,যখন আমি  (আল্লাহ তা’আল্লা) প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন করে সাক্ষী  উপস্থিত করব ,এবং হে মাহবুব ! আপনাকে সে সমস্ত সাক্ষীদের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরুপে আনয়ন করব।

আমাদের নবী শুধু উম্ম্ত এ মোহাম্ম্দি এর সাক্ষী দিবেন না বরং সরল নবী ও রাসুল গনের উম্ম্ত দের ও সাক্ষী দিবেন।  তো তিনি যদি মরে কবরে পড়ে থাকেন তো কিয়ামতের দিনে কি ভাবে সাক্ষী দিবেন ? 

(৪)   لَقَدْجَاَءَ كُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ اَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ
[নিশ্চয় তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্য থেকে সে রসূলই এসেছেন, যাঁর কাছে তোমাদের কষ্টে নিপতিত হওয়ার ব্যাপারটি  বেদনাদায়ক ।
এ আয়াত থেকে তিন রকমে হুযর আলাইহিস সালাম এর হাযির -নাযির হওয়ার বিষয়টি প্রমানিত হয়। প্রথমত جَاءَكُمْ আয়াতাংশে কিয়ামত পর্যন্ত  সময়ের মুসলমানদেরকে সম্মোধন করা হয়েছে, তোমাদের সকলের কাছে হুযুর আলাইহিস সালাম তশরীফ এনেছেন। এতে বোঝা যায় যে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক মুসলমানদের কাছেই আছেন। মুসলমানতো পৃথিবীর সব জায়গায় আছে, তাই হুযুর আলাইহিস সালামও প্রত্যেক জায়গায় বিদ্যমান আছে। দ্বিতীয়ত: আয়াতে বলা হয়েছে- مِنْ اَنْفُسِكُمْ  (তোমাদের আত্মাসমূহের মধ্যে থেকে অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে তার (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম) আগমন যেন শরীরের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হওয়া বা শরীরের শিরা-উপশিরা, এমনকি প্রতিটি কেশাগ্রেও বিদ্যমান; যা প্রত্যেক কিছুর ব্যাপারে সজাগ ও সংবেদনশীল। তদ্রূপ হুযুর আলাইহিস সালাম প্রত্যেক মুসলমানের প্রতিটি কাজকর্ম সম্পর্কে অবগত।
চোখ সমূহের মধ্যে তিনি বিরাজমান, তবে দৃষ্ঠির মত অদৃশ্য। দিলের মধ্যে এমনভাবেই  বিদ্যমান আছেন। যেমনি ভাবে শরীরের মধ্যে প্রান বিচরন করে। তিনি অপূর্ব এক শানে বিকশিত। আমার মধ্যে রয়েছেন অথচ  আমার দৃষ্টির আড়ালে।

যদি আয়াতের অর্থ কেবল এটাই হতো-তিনি তোমাদের মধ্যেকার একজন মানুষ, তহলে مِنْكُمْ বলায় যতেষ্ট ছিল। مِنْ اَنْفُسِكُمْ কেন বলা হল?তৃতীয়তঃ আয়াতে আরও বলা হয়েছে عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ অর্থাৎ- যা তোমাদেরকে বিপন্ন করে, তা তাঁর কাছে পীড়াদায়ক। এতে বোঝা গেল  যে,আমাদের সুখ-দুঃখ সম্পকেও হুযুর পুরনুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) প্রতি নিয়ত অবগত। এজন্যই তো আমাদের দুঃখ-কষ্টের ফলশ্রূতিতে তাঁর পবিত্র হৃদয়ে কষ্ট অনুভব হয়। যদি আমাদের খবর ও না থাকে। তবে তার কষ্ট অনুভব হয় কিভাবে? শেষের এ আয়াতাংশটিও আসলে পূর্বোল্লিখিত مِنْ اَنْفُسِكُمْ এরই তাৎপর্য-বিশ্লেষন করে। শরীরে কোন  অঙ্গে ব্যথা বেদনা হলে ,তা আকা মওলা (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম )এর কাছে পিড়াদায়ক ঠেকে।

(৫)   ۳۹وَلَوْ اَنَّهُمْ اِذْظَّلَمُوْ اَنْفُسَهُمْ جَاَءُوْاكَ فَأسْتَغْفَرُوْا اللهَ وَاسْتَغْفَرَلَهُمُالرَّسُوْالُ لَوَجَدُوا اللهَ تَوَّابًا رَّحِيْمًا
[এবং যখন ওরা নিজেদের আত্মার প্রতি অবিচার করে, তখন তারা যদি আপনার সমীপে উপস্তিত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষামা প্রার্থনা করে আর আপনি ও তাদের জন্য সুপারিশ করেন, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহকে তওবা কবুলকারী, করুণাময় হিসেবে পাবে।]
এ আয়াত থেকে বোঝা গেল যে, পাপীদের মাগফিরাত বা ক্ষমাপ্রাপ্তির একমাত্র পথ হচ্ছে হুযুর আলাইহিস সালামের মহান দরবারে উপস্থিত হয়ে তাঁর শাফাআত প্রার্থনা করা এবং হুযুর মেহেরবানী করে তাদের জন্য শাফাআত করা। এর অর্থ এ নয় যে, আমাদেরকে মাগফিরাতের জন্য পবিত্র মদীনাতে উপস্থিত হতে হবে। কেননা তাহলে আমাদের মত দরিদ্র বিদেশী পাপীদের ক্ষমাপ্রাপ্তির কি উপায় হবে? ধনাঢ্য ব্যক্তিগনও তো জীবনে একবার কি দু বার সে মহান দরবারে যাবার সামর্থ রাখে। অথচ দিনরাত পাপ পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত রয়েছেন। তাই এতে মানুষের সাধ্যাতীত কষ্ঠ হবে। কাজেই আয়াতের মূল বক্তব্য হচ্ছে-তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) তোমাদের কাছেই বিদ্যমান আছেন। তোমরা বরং তার নিকট থেকে দুরে অবস্থান করছো। তোমরা হাযির হয়ে যাও, তিনি তোমাদের প্রতি সুপ্রসন্ন হবেন।
পরম বন্ধু আমার নিজের চেয়েও কাছে বিদ্যমান। এটাই বিস্ময়কর যে আমি তার নিকট থেকে দুরে রয়েছি।
এতে বোঝা যায় যে, হুযুর আলাইহিস সালাম সর্বত্র বিদ্যমান।

এই আয়াত মোতাবেক একজন মরা মানুষ কি ভাবে সুপারিশ করবে ? কারন যারা কবর বানী তারা তো তোমাদের কথা মোতাবেক আমাদের দিকে চেয়ে থাকে দোয়ার জন্য। তাদের তো কোন কিছুই করার ক্ষমতা থাকে না।  তাই না কি ? তা হলে সুপারিশ করবে কে ? 

(৬)  وَمَا اَرْسَلْنكَ اِلَّارَ حْمَةً لِّلْعَا لَمِيْنَ
 
[আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি। অন্যত্র বলা হয়েছে-
وَرَحْمَتِىْ وَسِعَتْ كُلَّشَيْئٍ
অর্থাৎ  আমার রহমত প্রত্যেক কিছুকেই পরিবেষ্টন করে আছে। বোঝা গেল যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম) বিশ্ব চরাচরের জন্য রহমত স্বরূপ এবং রহমত সমগ্র বিশ্বকে পরিবেষ্টন করে আছে। সুতরাং সমগ্র বিশ্বকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন হুযুর আলাইহিস সালাম। স্বরন রাখা দরকার যে, মহা প্রভু আল্লাহর শান হচ্ছে তিনি’ রাব্বুল আলামিন’ (বিশ্বব্রহহ্মন্ডের প্রতিপালক) আর প্রিয় হাবীবের শান হচ্ছে তিনি’ রাহমাতুল্লিল আলামিন’ (বিশ্বব্রক্ষান্ডের প্রতি রহমত স্বরূপ)। স্পষ্টই প্রতীয়মান হল যে, আল্লাহ যার প্রতিপালক, হুযুর আলাইহিস সালাম হচ্ছেন তার প্রতি রহমত স্বরূপ।

(৭) مَاكَانَ اللهُ لِيُعَذِّ بَهُمْ وَاَنْتَ فِيْهِمْ
[হে মাহবুব! এটা   আল্লাহর অভিপ্রেত নয়  যে আপনি তাদের মধ্যে থাকাকালে  আল্লাহ তাদের কে শাস্তি প্রদান করবেন।]
অথাৎ খোদার মর্মন্তুদ  শাস্তি তারা পাচ্ছে না- এজন্য যে আপনি তাদের  মধ্যে রয়েছেন আর সাধারন ও সর্বব্যাপী আযাব তো কিয়ামত র্পযন্ত কোন জায়গায় হবে না। এ থেকে জানা যায় যে হুযুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম  কিয়ামত পর্যন্ত প্রত্যেক জায়গায় বিদ্যমান থাকবেন। এ সম্পর্কে সুপ্রসিদ্ধ ‘তাফসীরে রূহুল বয়ানে বলা হয়েছে, হুযুর আলাইহিস সালাম প্রত্যেক পুণ্যত্মা ও প্রত্যেক পাপীর সাথে বিদ্যামান আছেন। এর বিশদ বিবরণ এ অধ্যায়ের তৃতীয় পরিচ্ছেদে দেয়া হবে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন-
وَاعْلَمُوْا اَنَّ فِيْكُمْ رَسُوْلُ اللهِ
[তোমরা জেনে রেখ, তোমাদের মধ্যে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিরাজমান)। এখানে সমস্ত সাহাবায়ে কিরামকে সম্বোধন করা হয়েছে অথচ তারা বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বসবাস করতেন সুতরাং স্পষ্টই বোঝা যায় যে হুজুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সব জায়গায় ও তাদের কাছে আছেন।

এই সকল কিছুই অতি সুক্ষ্ন বিষয়। বার বার পড়ার অনুরোধ করতেছি ও বোঝার চেষ্টা করুন। 

আশা করি হেদায়াত প্রাপ্ত হবেন। 

সোহেল রানা। 

ষ তা হলে কেন বলেন আপনারা ? 
জবাব দিন ।  

কোরানের কোন আয়াতে নবী পাক কে মানুষ বলতে বলা হয়েছে ? 
আর আল্লাহ তায়ালা কোন আয়াতে বলেছে যে হে নবী আপনি আর ১০ জনের মত মানুষ ? 
বা কোরানের যে কোন এক খানে যদি সম্বোধন করে থাকে আল্লাহ নবী পাক কে মানুষ বলেছেন তো আমার সামনে পেষ করুন । 
বরং নবী পাক কে ডাকত আল্লাহ ( ইয়া বশিরু, ইয়া মুবাশ্বেরু  বলে । মানুষ বলে কোথায় ডেকেছে ? 
হা এটা সত্য যে আবু জাহেলের  চোখে নবী পাক কে মানুষ দেখাত, আবু লাহাব নবী পাক কে মানুষ দেখত । 

কিন্তু আবু বক্কর , ওমর উসমান আলী (রা) প্রমুখ সাহাবীগনের চোখে নবী পাক কে নবীই দেখাত। কখন ও তাহারা নবী পাক কে মানুষ ও মনে করেন নাই কখন ও মাটি ও মনে করেন নাই । 

আরো একটা কথা । এই একটা আয়াত কে নিয়ে আপনারা লুংগি উপরে করে নাচতে থাকেন নবী পাক কে মানুষ বানানোর অপচেষ্টায়। 
হযরত আদম (আ) দোয়া করেছিলেন যে ( রাব্বানা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কূনান্না মিনাল খাসেরীন। 
অর্থঃ “হে আমার প্রভু! আমরা আমাদের নফসের উপর যুলুম করেছি, তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না কর, আমাদের প্রতি করুণা না কর তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।” 
(সূরা আ‘রাফ- ২৩)

আশা করি জানা আছে আপনার । 

এই দোয়ার মাঝে তিনি নিজে বলেছেন হে আমার প্রতিপালক আমি জুলুম করেছি আমার নফসের উপর । একবার বল তো দেখি যে আদম (আ) গোনাহগার ছিল , তিনি নিজের উপর জুলুম ও করেছেন , আর সাক্ষী তার কোরান পাক । 
এর পর দেখি আমি তোমার ইমান এর কত জোর । 
জানি বলতে পারবেন না।  

যদি হযরত আদম(আ) কে বলতে না পারেন এই কথা যে তিনি নিজে  শিকার করার পর ও , তা হলে আমাদের নবী পাক কে কেন মানুষ বলা হয় ? যখন আল্লাহ বলতে বলেছেন তখন তিনি বলেছেন যে আমি মানুষের মতই , তিনি বলেন নাই আমি ও মানুষ।  

এমন কোন আয়াত থাকলে দেখান আমারে । 
না কি শুধু দুষমনি ? 


এই আয়াতে শরীক বা শেরেক বা পালনকর্তার কথা বলা হয়েছে । রব শব্দের অর্থ কিন্তু পালন কর্তা । 

আর যদি একটু চোখ তুলে দেখেন তো শিরক এ শিরক ভরে গেছে দেখতে পাবেন এমন কি আল্লাহর কোরানের মাঝে ও শিরক পেয়ে যাবেন আপনি। কারন আল্লাহ তায়ালা কোরানে পিতা ও মাতা দের কে ও রব বরেলেছেন। যদি বিস্বাস না হয় তো (রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বাইয়ানিস সগিরা) এই আয়াতের তাফসীর দেখে নিবেন।  এমনে পোষ্ট ওনেক লম্বা হবে। তাই সংক্ষিপ্ত করলাম। 

আপনি আয়াত দিয়েছেন যে :- 
كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ (26
ভূপৃষ্টের সবকিছুই ধ্বংসশীল।


 وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ (27
একমাত্র আপনার মহিমায় ও মহানুভব পালনকর্তার সত্তা ছাড়া।
। 
এক বাক্য কবুল করলাম 
তবে আপনি নিজে তৈরি থাকুন  এই আয়াত কে কবুল করার জন্য । 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন