বুধবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৫

বেদাত নিয়ে কাজী সাইফুজজামান এর জবাব

কাজী সাইফুজ্জান আসলে তার সাথে খেলা করে , যারা খেলতে জানে না , 
আমি পোষ্টের শুরুতেই তারে চ্যালেন্জ তরে বলতেছি যে , কত দম আছে আমি সোহেল রানা কে এড কর। কত জবাব লাগে আর কত জবাব দিতে পারো তুমি দেখব তখন । 

তার প্রথম কথা ;- মনোযোগ দিয়া ষ্টাডি করুন,
এখন দেখা যাবে কে পালায়?
বিদআত কাকে বলে?

আমি ;- আমি বলব আল্লাহর ওয়াস্তে মনোযোগ দিয়ে নিরপেক্ষ্ থেকে বিচার করুন , এর পরে যে ভুল তার মুখে জুতা মারুন আল্লাহর ওয়াস্তে । 

তার পর লিখেছে ;-এই বিদআত শব্দটাকে সবাই হাতিয়ার বানিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল
করতে চায় অথচ এর হাকীকত অনেকেরই
জানা নেই।
তাই আসুন আমরা নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বুঝার চেষ্টা করি।

জবাব ;- কথায় কথায় বেদাত বেদাত বলে ফতোয়া কারা মারে ? 
কথায় কথায়  মাযার পুজারীর ফতোয়া কারা মারে ? 
কথায় কথায় মুশরিক বলে ফতোয়া কারা মানে ? 
এটা এমন হয়ে গেল যে ;- চোর উল্টা কোতোয়াল কো ডাটে : অর্থ ;- চোর উল্টা থানার ওসি কে ধমকি দেয় । 

বরং আমরা নই , বরং তোমরা কর এই কাজ , কথায় কথায় ফতোয়া মারে বেদাতের।  আগে আসতেছে । ঠেলা সামলানোর জন্য তৈরি হও । 

এরপরে  লিখেছে যে ;-আর শরীয়তের পরিভাষায়-
مَا أُحْدِثَ فِى دِيْنِ اللهِ وَلَيْسَ لَهُ أَصْلٌ عَامٌ وَلاَخَاصٌّ يَدُلُّ عَلَيْهِ
অর্থাৎ আল্লাহ্র দ্বীনের মধ্যে নতুন করে যার প্রচলন করা হয়েছে এবং এর পক্ষে শরীয়তের কোন ব্যাপক ও সাধারণ কিংবা খাস ও সুনির্দিষ্ট দলীল নেই।
এ সংজ্ঞাটিতে তিনটি বিষয় লক্ষণীয় :
নতুনভাবে প্রচলন অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম ও সাহাবায়ে কিরামের যুগে এর কোন প্রচলন ছিল না এবং এর কোন নমুনাও ছিল না।

মাশাআল্লাহ , সুন্দর কথা বলেছেন । 
এমন ওনেক হাদিস দিয়েছে সে , 

এর পরে লিখেছেন যে বেদাত ২ প্রকার , 
(১)বেদাত ফি-দ্বীন;- দিনের মধ্য বেদাত , 

যেমন কি ;- যেমন মিলাদ ওরশ ইত্যাদি । 
(২) বিদাত লিদ্বীন 
দ্বীন কে পালন করার জন্য কোন কোন মাধ্যম গ্রহন করা , যেমন মাদ্রাসা স্থাপন করা টিভি তে অনুষ্টান দেখা ফেসবুকে লেখা লেখি করা তাবলিগ মেহনত করা । 


প্রথমে কথা হল যে ;- বেদাত ।

আমরা জানি বেদাত ২ প্রকার । বেদাতে হাসানা , বেদাতে সাইয়া ।( আশইয়াতিল উলুমাত  ১ম খন্ড , ইতিছাম অধ্যায় দেখুন ) 

যারা বেদাত নিয়ে পুর্ন বিশ্লেষন বা পুর্ন অধ্যায়ন করে নাই তারা কথা বলে বেদাত নিয়ে । বরং আপনার বেদাতের বিষয় পুর্ন জ্ঞান নাই।  তাই বেদাত ফি-দ্বীন ও বেদাত লি-দ্বীন বলে বেদাতের সংগা পেশ করেছেন । 
আপনি যে বেদাতের সংগা দিয়েছেন বেদাত ফি-দ্বীন ও বেদাত লিদ্দিন । এর রেফারেন্স পেশ করুন । 


এর পরে লিখেছে সে ;- মিলাদ পাঠ করা দিনের  অংশ মনে করে , সওয়াবের আশায় , তা বেদাত ফি-দ্বীন । যা করা যাবে না বা হারাম।  তার কথা মতে এসব করলে জাহান্নামি হতে হবে।  কারন প্রত্যেক বেদাতি জাহান্নামি । 

আমার কথা হল যে ;- মিলাদে আমরা করি টা কি ? দশজন মিলে চাঁদা তুলি কোন তবারক ব্যাবস্থা করি , দরুদ ও সালাম পেশ করি মদীনায় এর পরে আল্লাহর দরবারে দোয়া করি ক্ষমা প্রার্থনা করি । 

মুল কথা হল যে চাঁদা করা কি হারাম ? 
দরুদ পড়া কি হারাম ? 
 চাঁদার টাকায় তবারক বিতরন করা কি হারাম ? 
সালাম পেশ করা কি হারাম ? 

আর বলেছে সওয়াবের আশায় । বরং প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহর ওয়াস্তে ও সওয়াবের আশায় করতে হবে । এমন কি একটা কুত্তা কে পানি পান করানো ও ইবাদত । বরং তার জন্য ও সওয়াব আশা করতে হবে আল্লাহর জন্য । সৃষ্টির সেবা করি কি হারাম ? সৃষ্টির সেবা করলে কি আল্লাহ খুশি হয় না ? 
আল্লাহর খুশি মানেই কি রহমত নয় ? 

আমার উপরের প্রশ্ন গুলোর জবাব দেবেন । 

এর পরে মিলাদ । তাদের আলেমগন মিলাদ নিয়ে কি বলে দেখা যাক ;- দেওবন্দী দের মোজাদ্দেদ আশরাফ আলী থানবীর কিতাব (ইচ্লাহুর রূসুম ) কিতাবের তৃতীয় অধ্যায় এর প্রথম পরিচ্ছেদ ১০১ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে ;- মিলাদ ৩ প্রকারে ভাগ করে প্রথম প্রকার মিলাদ এর বিষয় বলেছেন যে ;- এই প্রকার মিলাদ মেহফিলে কোনো প্রকার সর্তাবলী অনুসরণ করা হয় না। মুলুত কিছু লোক একত্রিত হয়ে নবী কুল শিরোমনি আহমাদ মুস্তফা মোহাম্মদ মুস্তফা সল্লেল্লাহু আলাহিস সালাম এর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ ও ওনার জন্ম,জীবন,চাল,চলন,সান,শওকাত ,
মুজেজা সমন্ধে বিশুদ্ধ বর্ণনা করা ও কোনো কিতাব পাঠ করা। আলোচনার সাপেক্ষে সৎ কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের না করার উপদেশ্দানে কুন্ঠিত বোধ না করা অথবা শরীয়াতের বিধিবিধান হুকুম আহকাম শিক্ষাদানের নিমিত্তে আয়োজিত মেহফিলে নবী পাক অলায়হিস সালাম এর জীবনী বর্ণনা করা। এই প্রকার মিলাদ মেহফিল নির্ভেজাল,জায়েজ ও মুস্তাহাব ও সুন্নাত।এই ভাবেই রাসুল সল্লেল্লাহু আলাইহিস সালাম স্বীয় জীবন ও মর্যাদার আলোচনা করে গেছেন। সাহাবীদের থেকে ও এই ভাবে মিলাদ এর বর্ণনা পাওয়া যায়। মুহাদ্দিসীন কেরামগণ আজ পর্যন্ত যথারীতি চালু রেখেছেন আর  কিয়ামত পর্যন্ত এই বিশুদ্ধ নীতি চালু থাকবে। (ইচ্লাহুর রূসুম ) তৃতীয় অধ্যায় প্রথম পরিচ্ছেদ পৃষ্টা ১০১.

উপরে জনাব আশরাফ আলী থানভী তার কিতাবে লিখেছেন যে (- মিলাদ পালন করা নির্ভেজাল যায়েয মুস্তাহাব ও সুন্নাত । এমনি ভাবে মিলাদের বর্ননা ও পাওয়া যায় সাহাবাদের থেকে ও। আমি উক্ত কিতাবের মুল পাতা দিতে তৈরি থাকলাম । 

এখন কথা হল যে কাজী সাইফুজজামান বললো মিলাদ পালন করা বেদাত ও এমন বেদাতি জাহান্নামি । তো আপনার আশরাফ আলী থানভীর মতে তো তা যায়েয মুস্তাহাব ও সাহাবাদের সুন্নাত প্রমানিত হল । এখন কি উল্টা ফতোয়া প্রদানের কারনে আপনি নিজে বেদাতি ও জাহান্নামি প্রমানিত হন না ? 

আরো একটা তাদের কিতাব থেকে মিলাদের প্রমান ;- 
তাদের বিখ্যাত আলেম মাওলানা খলিল আহমেদ সাহারানপুরী এর লিখত ফতোয়া  মুলক কিতাব (আল মুফান্নাদ আলাল মুহান্নাদ ) 

আল হাবীব প্রকাশনি থেকে প্রকাশিত কিতাবের ৬৪ নং পাতায় প্রশ্ন আকারে বলা হয়েছে যে ;- 

একবিংশ জিগ্গাসা ;-  রাসুলে করীম (সা) শুভ জন্ম আলোচনা বা মীলাদ শরীফ পাঠ কে আপনারা বেদাতে সাইয়্যাহ মুহাররামা (মন্দ বেদাত যা হারাম) বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন কি না ? 

উত্তর ;- রসুলে করীম (সা) এর মুবারক বেলাদাতের আলোচনা বা বা মীলাদ শরীফ পাঠ বা এমন কি তার পাদুকা সংশ্লিষ্ট ধুলি অথবা তার বাহন গাধাটীর পেস্রাব বা পায়খানা মুবারকের আলোচনা  আমরা কেন ? সাধারন কোন মুসলমান একে বেদাতে সাইয়্যাহ মুহাররামা বা হারাম বলতে পারে না । 

ঐ সব অবস্থা যা রসুলে করীম (সা) এর সাথে বিন্দু মাত্র সম্পর্ক যুক্ত আছে তার আলোচনা আমাদের কাছে উন্নতমানের মুস্তাহাব ও অধীকতর পছন্দনিয় । হোক না তার পেসাব , পায়খানা, দাড়ানো বা বৈঠক , স্বপ্ন অথবা জাগরন যা কিছুই হোক তার সব কিছুই আমাদের কাছে অত্যন্ত উন্নতমানের মুস্তাহাব কাজ বলে পরিগনিত । 
এসবের বিস্তারিত বর্ননা আমাদের রচিত (বারাহীনে কাতেয়া ) গ্রন্থে সর্বত্রেই আলোচিত হয়েছে । যেমন আমাদের পুর্বসুরী ও তাদের ফতোয়া যেমন মাওলানা সাহারানপুরী পুরী , যিনি শাহ মোহাম্ম্দ ইশহাক দেহলভীর শিষ্য  এবং হাজী মক্কি (রহ) এর শিষ্য আহমেদ আলী সাহারানপুরী পুরীর ফতোয়া আমরা অনুবাদ করে প্রকাশ করেছি ।যা আমাদের সকল লেখনীর মডেল হিসেবে মনে করি । 

মাওলানা সাহেব কে কেউ না কি জিগ্গেস করেছিল যে , মীলাদ শরিফের মেহফিল কোন রুপ রেখায় যায়েয ? তদুত্তরে তিনি লিখেন যে ;- রসুলে করিম (সা) এর মিলাদ মেহফিল যদি ফরজ ও ওয়াজীব ইবাদতের সময় ব্যাতিরেকে বিশুদ্ধ রেবায়েত সমুহের মাধ্যমে সাহাবায়ে কিরামসহ কুরুনে সালাসা বা উত্তম তিন যুগের বিপরীতমুখি বা পরিপন্থি না হয় (যে যুগ উত্তম যুগ হিসেবে অভিহিত ) 

যে যুগগুলো কুরুনে সালাসা বলে অভিহিত ও শিরকের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন ভ্রান্ত আকিদা নাই , সাহাবায় কেরামদের আদব বা শিষ্টাচারের পরিপন্থি না হয় , তবে মুস্তাহাব হওয়া বাত্যিত অন্যতা হওয়ার কোন অবকাশ নাই । কারন তরাই তো মাপকাটী বা মেছদাক ।
কেননা রসুলে করিম (সা) বলেছেন যে তাই সঠিক যার উপর আমি ও আমার সাহাবাকেরামগন রয়েছে । 

আবারো পরিষ্কার ভাষার আমরা বলব যে  , বিশুদ্ধ নিয়্যাত , আকিদা ও শরিয়াত নিষিদ্ধ কার্যাবলী ব্যাতীত যে মাহফিলে মীলাদ পাঠ সহ রসুলে কারীম (সা) এক যে কোন অবস্থ ও কার্যাবলির যে কোন আলোচনা যদি শর্ত মুক্ত সময়ে আলোচিত হয় তা হলে এমন কাজের বিরুধিতা আমরা করি না । বরং যদি শরিয়াত বিরোধি এমন কাজ কোন মেহফিলে করা হয় তা হলে আমরা শুধু শরিয়াত বিরুধি কার্যাবলিরই বিরুধিতা করে থাকি ।যেমন আমরা দেখেছি হিন্দুস্থানের মীলাদ মাহফিল সমুহে উদ্ভট ও মওজু বর্ননা করা হয় । নারী পুরুষের সমবিহার থাকে । আলোকসজ্জা করা হয় ও ওনেক অপচয় ও করা হয় । এমন মাহফিল ওয়াজীব মনে করা হয় ।তারই সাথে এমন মাহফিলে যারা উপস্তিত হয় না তাদের কে গালাগালি ও কাফের আখ্যা  দেয়া  হয় । এ ছারা আরো ওনেক উদ্ভট বিষয়বস্তুর অবতারনা করা হয় ।

মীলাদ শরিফে যদি এমন এমন কার্য়াবলি ছারা পালিত হয় তা হলে কেন আমরা না যায়েজ বলব ? এমন মন্দ কথা তো কোন মুসলমানের পক্ষে বলা সম্ভব নয় । এটা আমাদের প্রতি বিদ্বেষিদের মিথ্যা অপবাদ । আল্লাহ তাদেরকে জ্বলে স্থলে বরবাদ করুন ( আমিন ) 
সুত্র (দেওবন্দি আহলে সুন্নাতের আকিদা ) ৬৪-৬৫-৬৬ নং পাতা । 
উপরে মাওলানা সাহারানপুরীর লিখিত কিতাবের পাতা যার দরকার বলবেন আমি কিতাবের পেঁচা পেশ করতে বাধ্য রইলাম । 

তিনি শেষের দিকে লিখেছেন যে ;-মীলাদ শরিফে যদি এমন এমন কার্য়াবলি ছারা পালিত হয় তা হলে কেন আমরা না যায়েজ বলব ? এমন মন্দ কথা তো কোন মুসলমানের পক্ষে বলা সম্ভব নয় ।

আমি কাজী সাইফুজ্জান কে জিগ্গেস করতে চাইতেছি যে ;- এমন কথা বলা তো কোন মুসলমানের পক্ষে সম্ভব নয় যে মিলাদ মাহফিল কে হারাম বেদাত বলতে পারে , তা আমি নই বরং আপনাদের আলেম বলেছেন । 

অবশ্যই আপনি মুসলিম কবে ছিলেন ? আপনি তো জন্মগতভাবেই ক্বাদিয়ানি । 

আমি মিলাদ নিয়ে ৪ দিন পোষ্ট করলে দলিল শেষ হবে না । মিলাদ  মাহফিল যে বেদাত নয় বরং একটা যায়েয মুস্তাহাব ও সুন্নাত কাজ তাই সঠিক। বরং আমি তো বলব আশরাফ আলী থানভীর যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে তাই সঠিক। কিন্তু আবসোস যে তারা আজ আসরাফ আলী থানভী সাহেব কে ত্যাগ করতেছে। আজ ওনাকে মান্য করতে কষ্ট হচ্ছে তাদের ।


এবার বিষয় বিদাত লিদ্বীন ;- বা দ্বীন কে পালন করার জন্য কোন মাধ্যম গ্রহন করা ) 

আমাদের দ্বীন পুর্নাংগ , অপুর্নাংগ নয় যে , দ্বীন পালন করতে অন্য কোন মাধ্যম গ্রহন করব । 

সে লিখেছে যে ;- মিলাদ দ্বীনের অংশ বা সওয়াবের আশা করে করা হারাম বা বেদাতে সাইয়াহ মোহার্রামা । 


অথচ দ্বীন কে পালন করার জন্য যা কিছু যেমন মাদ্রাসা বা মসজীদ বা তাদের কথিক তাবলীগ এগুলো তার মতে দ্বীনের মধ্য নয় বরং দ্বীন পালনের জন্য তৈরি নতুন বেদাত ।

এটা কি একটা হাস্যকর বিষয় নয় ? 

মাদ্রাসা কি আমাদের দ্বীনের মধ্য নয় ? 
মসজীদ কি আমাদের দ্বীনের মধ্য নয় ?

তাবলীগ বা ধর্ম প্রচার কি আমাদের দ্বীনের মধ্য নয় ? 

আসলে আল্লাহ যাদের দিলে মোহর লাগিয়ে দেন তারা আসলে দেখে ও দেখে না । 

যদি এই  গুলি দ্বীনের মধ্য না হয়ে থাকে তবে এগুলো ছুরে ফেলে দেওয়াই উত্তম ।  

আসলে সে বিদাত কি জানে না । এবার বেদাতে একটা বিস্তারিত তুলে ধরতাছি - 
১) বিদাতে হাসানা( উত্তম
বা সুন্দর
বিদাত)
২) বিদাতে সাইয়্যাহ ( মন্দ বিদাত)
# বিদাতে হাসানা: আশইয়াতিল
উলুমাত ১ম
খন্ডে ইতিছাম অধ্যায়ে উল্লেখ
আছে "
যে বিদাত উসুল, কানুন ওসুন্নতের
সমার্থিত
এবং সুন্নত থেকে কিয়াসের
( গবেষণা)
মাধ্যমে করা হয়েছে তা বিদাতে হাসানা।
আর
যা নতুন কিন্তু সুন্নতের
পরিপন্থী ও
বিপরীত
তা হল বিদাতে সাইয়্যাহ।

বিদাতে হাসানা ৩ প্রকার।
১) বিদাতে ওয়াজেবা: এমন বিদাত
যা শরিয়তে নিষিদ্ধ
তো নয়ই
বরং এটা ছেড়ে দিলে ধর্মীয়ভাবে বিরাট
অসুবিধার সুচনা হয়। যেমন
কোরানে পাকে আয়াত
সমুহে যবর, যের, পেশ
ইত্যাদি দেওয়া।
তফছির
এর সুবিধার জন্য ইলমে ছরফ,নাহু,
উসুলে তফসির,
উসুলে হাদিস বিষয়গুলোর
প্রচলন।
মাসালা-মাসায়েল
জানার জন্য ইলমে ফিকাহর
প্রচলন।
২) বিদাতে মুস্তাহাব্বাহ: এমন
কিছু কাজ
বা বিষয়
যা নতুন কিন্ত শরিয়তে নিষেধ নয়
তবে ওয়াজিবও
নয়। মুসলমানরা ভাল কাজ
মনে করে সাওয়াবের
উদ্দেশ্যে আদায় করে থাকে।
যেমন মিলাদ
শরিফ পড়া,
মাযারে গিয়ে আল্লাহতালার
দরবারে দোয়া করা, মরহুম
আত্বীয়দের জন্য
দোয়া
ও মেজবানের আয়োজন করা,
আউলিয়া কেরামের
ইসালে সওয়াবের জন্য জিকির-
আযকার,
ওয়াজ নসিহত
ও তাবাররুক বিতরনের
মাধ্যমে উরশ শরিফ
পালন
করা।
৩) বিদাতে মুবাহ : এমন কাজ
যা শরিয়ত
বিরোধী নয়। যেমন মসজিদ দুই
তলা তিন
তলা করা,
ফজর ও আসর নামাজের পর
মুসল্লিরা মুসাফা করা।

# বিদাতে সাইয়্যাহ :
বিদাতে সাইয়্যাহ
দুই প্রকার।
১)বিদাতে হারাম : এমন সব নতুন
উদ্ভাবিত
ভ্রান্ত
আকিদাহ, ধ্যান ধারনা ও কর্ম
কান্ড
যা দেখতে সুন্দর কিন্তু ধর্মের
মুল
বিষয়গুলোর
বিরোধী তা বিদাতে হারাম।
যেমন-
* নতুন নতুন মতবাদের জন্ম
যা নবীজির
সময়ে ছিল না।যথা- ওহাবী,
রাফেজী,
মুতাজিলা,
আহলে হাদিসের মত নতুন ভ্রান্ত
দলগুলো,
যারা নবিজি (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ),
সাহাবী দের সময়
থেকে কয়েক শত বছর পর
উদ্ভাবিত হয়েছে।
* তাবলীগ এর
নামে মসজিদে নিয়মিত
রাত্রি যাপন
এবং এটাকে নিয়মে পরিনত করা।
* ইসলামিক চ্যানেল খুলে আবার
ইনকামের
জন্য
অশ্লীল, বেহায়াপনা যুক্ত
বিজ্ঞাপন
প্রচার করা,
* জিহাদের নামে জংগীবাদের
উত্থান
ঘটানো।
* নতুন নতুন দল গঠন করে ধর্মের
প্রচলিত
পদ্ধতি গুলোর বিরুদ্ধাচরণ
করা এবং মানুষকে ধর্ম
বিমুখ করা।
* এই সব ভ্রান্ত আকিদাহ প্রচার
করার
জন্য মাদ্রাসা,
মক্তব, ইস্কুল প্রতিষ্ঠা করা।
এই সব কিছু ই বিদাতে হারাম।
# বিদাতে মাকরুহ : এমন নব
প্রচলনকরা পদ্ধতি যার
কারনে কোন সুন্নতের অবসান
হয়। যেমন-
* এক শ্রেণীর ইসলামী ব্যক্তিত্ব
কোট,প্যান্ট, টাই,শার্ট
ইত্যাদি পরা কে জায়েজ
বলে সুন্নতি পাঞ্জাবি, পায়জামা,
লুংগি,পাগড়ির মত
সহি সুন্নতের প্রচলন
কে উঠিয়ে দিচ্ছে,যা বিদাতে মাকরুহ।
* জুমাহ ও দুই ইদের খুতবাহ
আরবিতে না দিয়ে অন্য ভাষায়
প্রদান
করা যা বিদাতে মাকরুহ।
সুতরাং আমাদের উচিত, হঠাৎ 
করে কারো কথায়
মজে না গিয়ে বিদাতে হাসানাহ
কে ছেড়ে না দিয়ে বরং তা পালনের
মাধ্যমে অশেষ সওয়াব ও
নেকি হাসিল করা । 


সে লিখেছে যে ফেসবুকে লেখালেখি করা ;- 
আমি বলে রাখি যে ফেসবুক এ লেখালেখি করা ৩ টা শরিয়তি আইনের উপরে নির্ভর । 

ফেসবুক ই লেখালেখি ইসলাম নিয়ে এটা স্পষ্ট বেদাত । 

(১) যদি আপন্ ইসলামিক বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন আর তা কোরান ও সহীহ হাদিস সুন্নাহ হয়ে থাকে তা হলে এটা হবে বেদাতে হাসানা বা উত্তম বেদাত । যার জন্য আপনি সওয়াব পাবেন 

(২) যদি আপনি ভাল কিছু লেখালেখি করেন ফেসবুকে( সমাজ রাষ্ট ব্যাবস্থা ও সচেতনতা মুলক )  তা হলে এটা হবে বেদাতে মুবাহা , বা শরিয়তের চোখে যা যায়েয , হতে পারে আপনি সওয়ার ও পেতে পারেন নাও পেতে পারেন ।

(৩) যদি আপনি ফেসবুকে বসে অশ্লিল ও বাজে কিছু লেখালেখি করেন তা হলে এটা হবে বেদাতে সাইয়াহ । যাকে জন্য আপনারে গোনাহগার হতে হবে । 

এর পরে সে সুন্দর করে তাদের কথিত তাবলীগ জামাত কে বেদাত লিদ্দিন বলে এটা কে যায়েয বলে দিয়েছে । 


অথচ সে লিখেছে এটা দ্বীন পালনের জন্য , এটা দ্বীনের অংশ নয় । 
অথচ তারা যে কাজ করে ও তাদের যা দাবি , তারা সেই দল যারা কোরানের এই আয়াত দিয়ে থাকে ;-  (আল্লাহ তাআ’লা ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরাই সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি; মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের নির্বাচন করা হয়েছে , তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে, আর তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত-১১০)

তারা কোরানের এই আয়াত কে দলিল পেশ করে থাকে যে আমরা সেই দল ,  কোরানে এই আয়াতে যে দলের কথা বলেছে । 


এখন আমি বলতে চাই যে , আল্লাহ যে দলের কথা কোরানে বলেছেন সেই দল কি করে বেদাত হতে পারে ? তা হোক না কেন তার মতে বেদাত ফিদ্বীন  ও বেদাত লিদ্দিন । 

আল্লাহ তাদের কে ধংস করুন যারা এমন কথা বলে । 

আল্লাহ তায়ালা কোরানে আরো বলেছেন যে ;- 
‘আমি চাই তোমাদের মধ্যে এমন একদল লোক হোক যারা মানুষকে সত্যের পথে আহ্বান করবে, ভালো কাজের আহ্বান করবে, আর মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখবে। ওই দলটাই হলো সাফল্য লাভকারী।’ (সূরা আলে ইমরান, আয়াত-১০৪)

এই তাবলিগি রা এই আয়াত কে ও দলিল দিয়ে থাকে । এখন কেউ কি বলবেন কোরানে আয়াত দলিল দেয়ার পরে ও কি করে এমন একটা দল বেদাত লিদ্দিন হতে পারে ? 

এমন কি (মাওলানা ইলিয়াছ ও দ্বীনি দাওয়াত ) কিতাবের ৫০ নং মালফুজাত এ ৩৩ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে (- এই তাবলীগের তরিকা উদঘাটন স্বপ্নে আমার কাশফ হয়েছিল 
‘হে মুমিনগণ, তোমাদিগকে কি এমন একটি ব্যবসার সন্ধান দান করব যা তোমাদেরকে কঠোর আজাব থেকে রক্ষা করবে? তা হলো- তোমরা আল্লাহর ওপর ও আল্লাহর রাসূলের ওপর ঈমান আনবে, মেহনত করবে আল্লাহর রাস্তায় মাল ও জান দিয়ে।’ (সূরা আস-সাফ, আয়াত-১০)।

 এই আয়াতের  তাফসীর ও খাবে এই রুপ এল্ক হইয়াছিল যে ;- তোমরা নবীদের মত মানুষের উপকারের জন্য প্রেরিত হইয়াছ ) মালফুজাত ক্ষম ৫০ পৃষ্টা নং ৩৩ ( মাওলানা ইলিয়াছ ও দ্বীনি দাওয়াত ) 
তাদের নবী আবার তাদের বড় ভাইয়ের মত , তাই মাওলানা ইলিয়াচ তাবলিগিদের কে নবীদের মতই বলেছেন । 

যাক , এখন কথা হল যে এমন একটা কাজ যারা কোরানের আয়াত কে দলিল দিয়ে সেই দল দাবি করে যে দলের কথা কোরানে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন , সেই দল কি করে বেদাত হতে পারে ? 

বরং এটা একটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত কথা । আবসোস যে তারা নিজেরাই কোরান কে দলিল দেয় আবার তাদেরই একজন বলে এটা বেদাত । দ্বীনের জন্য বেদাত । 
আল্লাহ আমাদের কে ক্ষমা করুন এমন দল কে বেদাত বলা  থেকে যার 

কোরানে যে এই দুই আয়াত বলা হয়েছে , তা কোল তাবলীগ জামাত নয় , বরং এটা হল , আলেম ওলামা  পীর ফকির দরবেশ দের দল । যারা ১৪০০ বছর থেকে কাফেরদের মধ্য গিয়ে দ্বীন এ ইসলামের প্রচার  ও প্রসার করেছেন । এবং এই দল কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে । এটা কোন নির্দিষ্ট দলের নাম নয় বরং হক আলেম সমাজের কথা বলা হয়েছে । 
তাবলিগ জামাত কে নিয়ে কিছু আপত্তির জবাব আমি আজ ও পাই না। নিচে লিংক গুলো দিলাম।  পারলে আমাকে লিংক গুলোর লিখিত জবাব দিও 


(১)http://sohelrana1234.blogspot.com/2015/01/blog-post_19.html

(২)http://sohelrana1234.blogspot.com/2014/08/blog-post_94.html

(৩)http://sohelrana1234.blogspot.com/2014/08/iliyach-er-family-detail.html

(৪)http://sohelrana1234.blogspot.com/2014/08/tabligis-profet-is-not-muhammad-sa.html

(৫)http://sohelrana1234.blogspot.com/2015/01/blog-post.html

(৬)https://m.facebook.com/photo.php?fbid=419462881535683&id=100004159237389&set=a.104096569738984.9011.100004159237389&source=43

(৭)https://m.facebook.com/photo.php?fbid=418503821631589&id=100004159237389&set=a.104096569738984.9011.100004159237389&source=43


লিখিত ও  লিংক সহ পোষ্ট হল ৮ টা । আট দিন সময় থাকল পোষ্চশগুলোর জবাব দেয়ার জন্য । আর আমি বাধ্য থাকলাম তোমার পোষ্টের লিখিত পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য । এটা আমার ওয়াদা 


তোমাদের মুখে কালি মাখিয়ে দিন আল্লাহ যারা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিলিয়ে দেয় ও কথার বদল করে । নিজে বাঁচতে কত মিথ্যাচার করবে আরো ? 
বরং তোমাদের এই তাবলিগ না শরিয়াত সমর্থন করে , না ইজমা না কিয়াস । বরং গায়ের জোরেই চালানো হচ্ছে এঅ প্রথা । মুর্খ লোকজন করতে তাবলিগের কাজ । যেমন কানার হাতে লাঠি , কোথায় পড়ে কারে মারে তোর কোন ঠিক নাই । এমন কি তোমরা মাওলানা ইলিয়াছের তৈরি তাবলিগের যে মুল নীতি ছিল তার মধ্য ও নাই । 

বরং সম্পুর্ন এক আলাদা বেদাত । 
এমন বেদাত থেকে আল্লাহ আমাদের কে রক্ষা করুন।  আমীন । 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন