রবিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৫

আহলে বায়ত (রা:) ও আসহাব (রা:)-এর প্রতি ভক্তিতে মুক্তি - (২৩)

আহলে বায়ত (রা:) ও আসহাব (রা:)-এর প্রতি ভক্তিতে মুক্তি - (২৩)

[Bengali translation of Allama Husayn Hilmi's book 'O my brother! If you wish to die in Iman, you must love the Ahl-i Bayt and the Ashaab' (compiled in the Online book 'Documents of the Right Word'); translator: Kazi Saifuddin Hossain; part 23]

মূল: আল্লামা হুসাইন হিলমী ইশিক (তুরস্ক)
অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন

হযরত উসমান (রা:) ‘বায়তুল মাল হতে হযরত যায়দ বিন সাবেত (রা:)-কে এক হাজার দিরহাম দান করেন’ মর্মে অভিযোগটি হলো মন্দ দৃষ্টিকোণ থেকে সব বিষয়কে বিবেচনা করার আরেকটি বাজে নজির। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে একদিন খলীফা দান পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের জন্যে বায়তুল মাল (রাষ্ট্রীয় কোষাগার) হতে সম্পদ বণ্টনের আদেশ দেন। তাঁর ফরমান যথারীতি বাস্তবায়ন করা হয়। অতঃপর যখন দেখা গেল যে এক সহস্র দিরহাম উদ্বৃত্ত আছে, তখন তিনি সেগুলোকে জনসেবায় ব্যয় করার জন্যে নির্দেশ দেন। হযরত যায়দ (রা:) ওই অর্থ মসজিদে নববীর মেরামত কাজে ব্যবহার করেন।

শাফেঈ আলেম হাফেয আহমদ বিন মোহাম্মদ আবূ তাহের সিলাফী যিনি ৫৭৬ খৃষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেন, তাঁর রচিত ‘মাশিহাত’ গ্রন্থে বর্ণিত এবং এর পাশাপাশি ইবনে আসাকির কর্তৃক উদ্ধৃত একখানি হাদীস শরীফে মহানবী (দ:) ঘোষণা করেন, “আবূ বকরকে ভালোবাসা এবং তাঁকে শোকরিয়া জানানো আমার উম্মতের জন্যে ওয়াজিব।” ইমাম মানাবী (রহ:)-ও ইমাম দায়লামী (রহ:) হতে এই হাদীসটি উদ্ধৃত করেন। হাফেয উমর বিন মোহাম্মদ আরবিলী কৃত ‘ওয়াসীলা’ পুস্তকে লিপিবদ্ধ অপর একটি হাদীসে তিনি এরশাদ করেন, “আল্লাহতা’লা যেমন তোমাদের জন্যে নামায, রোযা ও যাকাত ফরয করেছেন, ঠিক তেমনি তিনি তোমাদের জন্যে আবূ বকর, উমর, উসমান ও আলীকে ভালোবাসা ফরয করেছেন।” আবদুল্লাহ ইবনে আদী বর্ণিত এবং আল-মানাবী কর্তৃক উদ্ধৃত আরেকটি হাদীসে বিবৃত হয়েছে, “আবূ বকর ও উমরের প্রতি মহব্বত রাখা ঈমান হতে নিঃসৃত। আর তাদের প্রতি শত্রুতা হলো মোনাফেকী।” ইমাম তিরমিযী (রহ:)-এর বর্ণনানুযায়ী একবার কোনো এক মৃত ব্যক্তির জানাযা পড়ার জন্যে মহানবী (দ:)-এর কাছে আনা হয়। তিনি তা পড়তে অস্বীকৃতি জানান এবং বলেন, “এই লোক উসমানের প্রতি বৈরী ভাবাপন্ন ছিল। অতএব, আল্লাহতা’লাও এর প্রতি বৈরী ভাব পোষণ করছেন।” সূরা তওবার ১০০ নং আয়াতে ঘোষিত হয়েছে, “এবং সবার মধ্যে অগ্রগামী প্রথম মুহাজির ও আনসার আর যারা সৎকর্মে তাদের অনুসারী হয়েছে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট; আর তাদের জন্যে (তিনি) প্রস্তুত রেখেছেন বাগানসমূহ (জান্নাত), যেগুলোর নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান।” প্রথম তিন খলীফা প্রাথমিক মো’মেন মুসলমানদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আর সর্ব-হযরত আমীরে মোয়াবিয়া (রা:) ও আমর ইবনে আস্ (রা:) সে সকল মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত যাঁরা তাঁদেরকে অনুসরণ করেছিলেন। ইসলামের ইতিহাসে নেতৃস্থানীয় এই পুণ্যাত্মাবৃন্দের কুৎসা রটনা যে সব লোক করছে, তারা বাস্তবে ওপরোক্ত আল-কুরআনের আয়াতে কারীমা ও হাদীস শরীফেরই বিরোধিতা করছে। আর যে ব্যক্তি কুরআনের আয়াত ও হাদীস শরীফের বিরোধিতা করে, সে এরই ফলশ্রুতিতে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে অবিশ্বাসীতে পরিণত হয়। তার মুসলমান হওয়ার দাবি এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে পারবে না যে সে একজন মোনাফেক বা যিনদিক।

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন