শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০১৫

ইমানের চুড়ান্ত স্তর ১-৬


বিঃদ্র ;- ইমান ওয়ালাদের  দেখলে আমার শরম করে তাই সকলে নিরদিধায় শেয়ার করুন ও দেখিয়ে দেন যে সুফীদের ইমান নামায পড়ে কপালে দাগ ফেলার নাম নয় । (আহলে মুহাব্বত) কাকে বলে দেখে নাও । 


ইমাম গাজালী (রহ) যদিও তিনি সুফী তবুই ওনার গ্রহনযোগ্যতা সকল মাসলাকের মধ্যই আছে । আর দেওবন্দিদের মধ্যে তো আছেই আছে এমন কি জামাতের লেখকদের মধ্যেও পাওয়া যায় গাজালী (রহ) এর প্রশংসা ও ওনার কথা দিয়ে কোন কিছু বর্ননা করা । 


আমি এই কথা গুলো এই কারনে বললাম যে আজ আপনাদের মায়ে একটা গুরুত্ব পুর্ন পোষ্ট তুলে ধরলাম।  যাতে কোন বিদ্বেষ নেই । নেই কোন অভিযোগ । নেই কারো জবাব। 

তবে হা যারা ইমানের জোর বেশি দেখায় তাদের দাঁত ঠিকই ভাংগা হল । 




ইমান হচ্ছে সেই আখরোট ফলের মত।  যার উপরে শক্ত একটা খোল।  সেটা  ভেদ করে ভিতরে গেলে থাকে সেই মগজ।  সেই মগজে যদি মেহনত করা যায় তা হলে সেখান থেকে তেল বের করা সম্ভব   অন্যথায় নয়   .

ঈমানের প্রকার ;- 

(১) অন্তরের মধ্যে কোন প্রকার প্রত্যয় সৃষ্টি করা বেতীত মুখে (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা ) আজকের এই দিনে এরূপে উচ্চারণ করা মুসলিম কিন্তু কম নয়।  আর এরূপে উচ্চারণ করার মাঝে মোনাফেকরা বা বেদীন রা ও সামিল আছে।  হয়ত আপনি ও দেখেছেন কথার মাঝে কোন বেধর্মী ও কালেমা পরেছে।  আর যদি না দেখে থাকেন তো মনে করে দেখুন অনেক বেধর্মী আছে যারা যুদ্ধ ক্ষেত্রে মুসলিম মুজাহিদ বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মুখে কালেমা উচ্চারণ করে থাকে।  আর তখন সেই সকল বেধর্মী কে ও মুসলিম বাহিনী হেফাজাত করতে বাধ্য হয়ে যায় কালেমা উচ্চারণ করার কারণে।  

কিন্তু তাদের সেই বিপদে পরে কালেমা পাঠ করে মুসলিম বাহিনী থেকে ও নিরাপত্তা তো পায় , কিন্তু আল্লাহ পাকের কাছে কি তাদের সেই মোনাফেকাত গোপন থাকে ? নিশ্চয় থাকে না. /


তারা সেই দিন এই মোনাফেকাতের শাস্তি অবশ্যই পাবে।  

ঠিক এমনি অনেক মুসলিম ও আছেন যারা মুসলিম ঘরে জন্ম নিয়েছেন , মসজিদে যান নামাজ ও পড়েন রোজা ও রাখেন নিজেকে মুসলিম হিসেবে প্রকাশ  করার জন্য।  আর সেই কারণে তারা মুসলিম সমাজে মুসলিম হিসেবেই গণ্য হয়ে থাকে , আর মুসলিম হিসেবে সকল সুযোগ সুবিধা ও ভোগ করে থাকেন। 

কিন্তু তাদের বিশ্বাস দৃর থাকে না. শুদু নিজের ফায়দার কারণে এমন করে থাকেন। এমন ইমান আপনার হুয়তো দুনিয়ায়র জীবনে অনেক ফায়্দামন্দ হতে পারে।  কিন্তু আল্লাহর কাছে তা কোন কাজে আসবে না. 




ইমানের দ্বিতীয় স্তর ;- আল্লাহর প্রকৃত পরিচয় লাভ করার চেষ্টা না করিয়াই অন্যদের অনুকরন করিয়া কালেমা উচ্চারণ করা ও কালেমার অর্থের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এই পরযায় সাধারন সকল মুসলমানগন অন্তরভুক্ত । এই বিশ্বাস দৃঢ় হইয়ো গেলে উভয় জাহানে এর ফল লাভ হইবে। অবশ্য নবীগনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন ও তাহাদের শিক্ষার অনুবরতি হওয়া ও এই বিশ্বাসের অন্তরভুক্ত। এই পর্যায়ের ব্যক্তিগন মারেফত পন্থিদের সমপর্যায়ের না হলেও আখেরাতে মুক্তি প্রাপ্ত দের মধ্য গন্য হবে বলে আশা করা যায়। 


তৃতীয় স্তর ;- এই কালেমার অর্থ যুক্তি প্রমান সহ অন্তরের মাঝে এমন  দৃঢ়মুল  হবে যে :- কালেমার অনুসারী কালেমার মর্মার্থের উপর সদা দৃঢ় থাকিতে সমর্থ হইবে । তিন তেরো উনচললিশ হয় এমন অভ্রান্ত সত্য । তাহার মাঝে ঠিক তেমনি যুক্তির কষ্টিপাথরে আল্লাহর একাত্ববাদের বিশ্বাস তাহার অন্তরে দৃঢ়মুল হইয়ো যাইবে । 
সে ওই ব্যক্তির মত হইবে না যে নিজে অংক জানে না কিন্তু তিন তেরো উনচল্লিশ হয় অন্যের কাছে শুনে বিশ্বাস করেছে আর এটা ও বিশ্বাস করেছে যে কম বেশি হয় না। 

গতকালের বর্নণা ও আজকের দ্বিতীয় বর্নণা থেকে ও তৃতীয় বর্ননা থেকে এটা বোঝা যায় যে ;- প্রথম লোক শুধু মুখেই বিশ্বাসী দ্বিতীয় প্রকার লোক শুনে ও শুনা মত করে বিশ্বাসী আর তৃতীয় প্রকার লোক মারেফত পন্থী । 

তবে এদের মধ্য মারেফত পন্থীই সবার উর্ধে। তবু ও এদের মধ্য কেউই কামেল না। 
কামেলের না এত সস্তা আর খুব কাছে এর রাস্তা।  

আজ কাল তো আলীম , ফাজিল এর পর কামীল এর সার্টিফিকেট দেয়া হয়। আর প্রতি বছর হাজার হাজার কথিত কামীল ছাত্র মাদ্রাসা পাশ করে বেড়িয়ে আসে। 
কিন্তু দেখা যায় তাদের মধ্য ইসলাম যেন একটা কথা মাত্র। 

আজকাল হাজার হাজার দরবারের খাদেম ও পীরদের নামের সাথে লেখা থাকে পীরে কামেল। 

কিন্তু কামেলের (ক) বুঝা যে ওনেক দুরের কথা তা যেন এদের কাছে খেলা হয়ে গেছে। 

এখন যদি কেউ হযরত ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর আগে লিখে যে :-  হযরত খাজা , মুজাদদেদ, ইমাম আহলে সুন্নাত , ইমাম এ রব্বানী, এমন সহস্রাধিক লকব লাগায় তো আমার মনে হয় ওনার সামান্য ইজ্জত ও বৃদ্ধি পাবে না। বরং ওনার নামের সাথে এসব লকব লাগানো হলে লোকজন বিব্রত বোধ করবে। 

বরং ওনার নাম যদি শুধু ইমাম হানিফা (রহ) ও বলা হয় তা হলেই যথেস্ট ওনার ইজ্জত প্রকাশের জন্য। 

তাই আমি বলব যে যাকে তাকে কামেল বা এটা সেটা বলে আর লকবের হার গলায় চড়িয়ে দিবেন না। 


ইমানের ৪থা  স্তর :- আল্লাহর মারেফত লাভ হওয়ার পর তার সমস্ত সত্তা তাহার আল্লাহ তায়ালার অনুগত হয়ে যায়। এক মাবুদ বেতিত অন্য কাহারো প্রতি তার সামান্যতম অনুগত্য ও প্রকাশ পায় না । 
কোন কিছুর প্রতি তাহার আর কোন আকষর্ন থাকে না। 

যে সব লোক প্রবৃত্তির তাড়নার সামনে অসহায় . প্রবৃত্তিই প্রকৃত পক্ষে তার মাবুদ মাওলাতে পরিনত হয় । এ বিষয়ে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত সরাসরি বলেছেন ;- ঐ লোকদের কে কি তুমি দেখ নাই ? যারা তাদের প্রবৃত্তি কে নিজের মাবুদ  হিসেবে গ্রহন করেছে। 

মাবুদ তাকেই বলা হয় যার ইবাদত করা হয়। কর্ম জীবনে যার গোলামী  করা হয়। এক মাত্র তারই ধ্যানে  মত্ত থাকা হয় । 

মানুষ সকল সময় যার ধ্যান বা যার গোলামী করে ও যার ধ্যানে সর্বদা  মত্ত থাকে তারই গোলাম বা বান্দা তে পরিনত হয়। 

এই কথা যদি বুঝতে কষ্ট হয় তা হলে বলব মনে করুন আপনি ও হয়ত কাহারো পেটনীতি দেখে বলেছিলেন যে এ সালা হচ্ছে পেটের পুজারী। আর কিছু বুঝে না। 
সতি্য যদি কেই শুধু তার পেটের পুজা করে তা হলে সে কার পেটের গোলাম বা বান্দায় পরিনত হবে।  আল্লাহর কাছে তাহার জন্য আর কিছু থাকে না। 

আর যাদের ইমান এই চতুর্থ স্থানে এসে উপনিত হয় তাহারা আল্লাহ ছারা আর কোন কিছু এক পলকের জন্য  ও মনে করে না। 

এ থেকে বোঝা যায় যে ;- এ থেকে বোঝা যায় যে , যে সব লোকের প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রন থাকে ও আল্লাহর সম্পুর্ণ অনুগত্য হয়ে যায় এক মাত্র তাদের কালেমা উচ্চারন করা যথেষ্ট ও যথার্থ হইয়া থাকে। 


আর নিজের প্রবৃত্তি নিজের নিয়ন্ত্রনে না এনে ও আল্লাহর সম্পুর্ণ বাধ্য না হয়ে এমন কালেমা পাঠ করলে কালেমার যথার্থ হক ও আদায় হয় না আর উচ্চারন কারি ও মিথ্যাবাদি প্রমানিত হইবে। 

কারন কালেমার হকিকত এর সাথে তার কর্মের কোন সামঞ্জস্য নাই। 

কসুলে আকরাম সাল্লেল্লাহু আলাইহিস সালাম বলেছেন ;- কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ সীকৃতি বানদা কে আল্লাহর আযাব থেকে ক্রোমাগত দুরে নিয়ে যাবে , যতক্ষন না সে দীনের উপর সে দুনিয়া কে প্রাধান্য দিবে। 

যদি কেউ কালেমা পাঠ করার পর ও সে দীনের উপর দুনিয়া কে প্রাধান্য দেয় তা হলে আল্লাহ তায়ালা বলবেন :- তুমি মিথ্যা বলছ। তোমার এই সীকৃতি অন্তঃসার শুন্য। এ মিথ্যা বেতীত কিছুই নয় । 


তাই এমন কালেমা পঠ কিয়ামতে কোন কাজে আসবে না যেমন আমরা অন্তরে প্রতিক্রয়া  ছারাই কালেমা পাঠ করে থাকি। 


কালেমা পাঠ করা সেই সকল লোকদের বেলায় শুধুই যথার্থ হয়ে যাহাদের আল্লাহর মারেফত লাভ হওয়ার পর আল্লাহর হুকুম আহকামের সামান্যতম খেলাপ করা চিন্তা ও করেন না। কাহারো প্রতি সামান্য অনুগত্য ও প্রকাশ করেন না । শুধু তাহাজের বেলায় কালেমা পাঠ করা যথার্থ হয়ে থাকে। 


তাই আমাদের উচিত প্রবৃত্তির গোলাম না হয়ে আল্লাহর গোলামী তে সম্পুর্ণ নিমজ্জিত হওয়া। 


ইমানের ৫ম স্তর:- কালেমার যোলাব দিয়ে অন্তর কে পবিত্র করা নয় , সকল প্রকার খায়েসাতের মুখে লাগাম দেয়া ও নয়। আল্লাহর সন্তুষ্টির বেতিত  অন্তরে যাহা কিছু আছে  তা নিস্ত ও নাবুদ করে দিয়ে এমন এক জীবন গড়ে তোলা যা কোন  প্রকার খায়েসাত ও গায়রুললাহ কে অনুসরনের সামান্যতম প্রবলতা ও অবশিষ্ট থাকে না। তার প্রতিটি চাল চলন যেন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের  উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। তার জীবন , কর্মপ্রচেষ্টা এমন কি অভিবেক্তি ও যেন আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় নিবেদিত হয়ে থাকে। 
সে যখন কথা বলে তখন এমন ভাবে বলে যা আল্লাহর সন্তুষ্টির কারন হয়ে থাকে । 
খাদ্য দ্রব্য আহার করিলে তার স্বাদ দেখার জন্য বা কাম প্রবৃত্তির জন্য খায় না , বরং সেই খানা খেয়ে যাতে আল্লাহর শুকরিয়া আদা ও ইবাদত করার শক্তি অর্জনের জন্য আহার করিয়া থাকে। 

মলমুত্র ত্যাগ করে এই জন্য যে এর দ্বারা মনমস্তিস্ক স্নীগ্ধ করে ইবাদাত বন্দেগী তে একাগ্রতা বৃদ্ধি করতে পারে। 

ঘুমায় ওই জন্য যে এর দ্বারা শক্তি সন্চয় করিয়া ইবাদাত বন্দেগী তে নতুন মাত্রা যোগ করিতে পারে। নিদ্রার বিলাস তাকে স্পর্শ ও করতে পারে না। 

সে বিয়ে করে নিজের কাম প্রবৃত্তির জন্য নয়। বরং সে বিয়ে করে নবী পাক সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামে'র পবিত্র সুন্নাত পালনর্াথে  ও উম্মতে মোহাম্মাদির বংশ বৃদ্ধি পায় । 
প্রবৃত্তির তাড়নার অনুসরন বা নারী সংস্পর্শের স্বাদ অনুভব করার জন্য কখন ও নয়। 

এক কথায় উক্ত বেক্তির প্রত্যেকটি কাজ একান্ত ভাবে আল্লাহর ইচ্ছা সন্তুষ্টির জন্য নিবেদিত  হয়ে থাকে। 

বিগত দিনের চতুর্থ স্তরের বেক্তি গনের মধ্য ও ৫ম স্তরের লোকদের মাঝে বিশাল পার্থক্য আছে। 
 চতুর্থ স্তরের ইমানদার বেক্তি গন খায়েসাতের হামলা থেকে সম্পুর্ণ নিরাপদ হইয়ো পারেন না । কিন্তু তারা শুধু শরিয়াত বিরোধি খায়েসাতে থেকে মুক্ত। 

কিন্তু ৫ স্তরের ইমানদার বেক্তিগন সকল প্রকার খায়েসাতে থেকে সম্পুর্ণ মুক্ত এমন কি দুনিয়াবি চিন্তা থেকে ও ।

ইমানের ষষ্ট স্তর ;- তাওহিদের নূর শুধু মাত্র  তাহারে দুনিয়ার খায়েশাত থেকে দূরে রাখে না বরং আখেরাতের সুখঃ দুঃখ আশা ভয় থেকেও ভাল মন্দ থেকে ও  একেবারে বে খবর ও মোহমুক্ত করিয়া এক মাত্র আল্লাহর দিকে আকৃষ্ট  করিয়া দেয় ।

দুনিয়াতে বসবাস করা সত্তেও এই দুনিয়ার বিষয় তার মধ্য সামান্যতম অনুভুতিও অবশিষ্ট থাকে না । সকল কিছুর উর্ধে একমাত্র আল্লাহর দিকে আকৃষ্ট হইয়া সে তারই অনুগত্যের মধ্য নিজেকে বিলিন করিয়া দেয় ।
দুনিয়া ও আখেরাতে যা কিছু আছে তার সকল বিষয় থেকে দুরে সরিয়া এক মাত্র আল্লাহ তার চিন্তা ধারার ধ্যান ও সাধনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয় ।
আল্লাহ তায়ালার জাত ছারা অন্য কোন কিছুর অস্বতিত্ব ও উপস্থিতি সে ভুলিয়া যায় ।
সব কিছু থেকে আড়াল করিয়া একমাত্র আল্লাহর জাতের মধ্য নিজেকে বিলীন করিয়া দেয় , তেমনি তার নজর হইতে অন্য সব কিছু বিলীন হইয়া যায় । একমাত্র আল্লাহ ও আল্লাহর অস্বতিত্ব সে সব কিছুতে অনুভব করে ।
হাদীস শরিফের মর্মানুযায়ী ;- বল একমাত্র আল্লাহ আছেন , অন্য যা কিছু আছে তা সব ছার । এই কথার মধ্য নিজেকে ডুবাইয়া সব কিছু থেকে দূরে  চলে যান ।
এই অবস্থায় তার হল হয় এমন যে (-একমাত্র সেই সত্ত্বা ব্যাতীত অন্য সব কিছুই বিলীয়মান ।

এই বাণীর বাস্তব রুপ ( ফানা-ফিত-তাওহিদ) এর মধ্য বিলীন হইয়া যাওয়া বলে ।
এই হাল বা অবস্থায় বান্দা পৌঁছানোর পর পরম সত্তা ব্যাতীত অন্য সব কিছু এমনকি নিজের অস্বতিত্ব পরয্নত সে সব কিছু ভুলে যায় । 

যারা এই অবস্থায় পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে না তারা বলে যে এই অবস্থায় মানবিয় শক্তি নিয়ে কখনই পৌঁছানো বা মানব কখনও পৌঁছতেই পারবে না ও মোটেও সম্ভব পর নয় ।


তাওহিদের পরিপূর্নতা সম্পর্কে হাদিসে কুদসীতে পরিষ্কার ভাবে বলা আছে যে ;-নফল ইবাদতের মাধ্যমে বান্দা আমার নিকটবর্তি হতে থাকে ।শেষ পর্যন্ত এমন এক অবস্থা আসে যে তখন আমি তাকে ভালোবাসতে শুরু করি ।
আর যখন কোন বান্দা কে ভালবাসি তখন আমি তার কানে পরিনত হই , যা দিয়ে সে শুনে থাকে ।আমিই তার চক্ষুতে পরিনত হই যা দিয়ে সে দেখে থাকে , ও আমিই তার জ্বীহবায় পরিনত হই যা দিয়ে সে কথা বলে ।
(আমি সোহেল বলছি ;- যদি এমন হয় যে বান্দা আল্লাহর চোখ দিয়ে দেখে তবে তার কাছে কোন কিছুই গোপন থাকে না , আর যা পলে তাই হবে , কারন আল্লাহর জ্বীহবা দিয়েই তখন কথা বলা হয় , তাই আল্লাহ ওয়ালাদের কারামত হাজার হাজার শুনতে পাওয়া যায় )


৫ম স্তরের ইমান ওয়ালারা নিজেরা দেখেন শোনেন বলেন ও নিজেদের সম্পর্কে সচেতন থাকেন , কিন্তু তাহারা যা কিছু করেন তার সকল কিছুই আল্লাহ তায়ালা কে উদ্দেশ্য করেই করে থাকেন।  নিজের ইচ্ছা ও খুশি অনুযায়ি নয় ।

কিন্ত ৬ষষ্ট স্তরের ইমান ওয়ালাগল নিজের অস্বতিত্ব সম্পর্কে যেমন বে-খেয়াল থাকেন ঠিক তেমনি তাহাদের দেখা শোনা বলা সব কিছুই নিজেদের ইখতিয়ার (কর্তৃত্ব) বহির্ভুত হইয়া আল্লাহর পক্ষে হইতে সম্পন্ন হইতে থাকে ।
এবং সর্বত্র ও সব কিছুতে তাহারা আল্লাহ ও তারই উপস্থিতি বিরাজমান দেখিয়ে পান ।

এইখানে আর একটা বিষয় খোলা করে দেওয়া উচিত বলে মনে করছি যে ;- প্রথমত ও সকল লোক বলে থাকে এক আল্লাহ ছারা আর কোন মাবুদ নাই , আর ৪ ও ৫ নং ইমান ওয়ালা আরো একটু এগিয়ে এসে বলে যে আল্লাহ ছারা আর কারোই অস্বতিত্ব নেই । কিন্ত্ ৬ স্তরের যারা আছেল তারা বলেন যে ;- যেখানে যা কিছু দেখি তার সবগুলোর মধ্য শুধু আল্লাহ কেই ,আল্লাহ ছারা আর কোন কিছুই আর চোখে পড়ে না ।

প্রথম সারীর যারা আছেন তারা বলে যে আল্লাহ ছারা আর কোন মাবুদ নাই কিন্ত্ শেষ স্তরের যারা আছে তারা বলেন যে আল্লাহ ছারা আঁর কোন কিছুই মওজুদ নাই ।

শেষোক্ত বেক্তি যেহেতু প্রথমের সকল ধাপ পর্যায়ক্রমে পেড়িয়ে এসেছেন শেষের স্তরে তাই ওনার কাছে প্রথমক্ত সকল ইমান ওয়ালারা অনাড়ী হিসেবেই বিবেচিত , যেমন ১০০ টাকার সামনে ১০ টাকা অনাড়ীর মুল্যই পেয়ে থাকে সব সময় ।

ষষ্ট স্তরে যারা পৌছান তারা কার্যত বায্য ও জ্ঞান শুন্য হইয়া পতিত হইয়া যান ,এই অবস্থায় সাধারণত দুই ধরনের ভুল করিয়া থাকেন ।
কেউ কেউ মনে করেন যে তাহার আত্বা পরমসত্তার আত্বার স্বীয় পরিপূর্ন ভাবে একাভুত হইয়া  গিয়াছে , এমন কি নিজেরাই সেই সত্তায় পরিনত হইয়া গেছেন ।আল্লাহ ও বান্দার সকল পার্থক্য ঘুচিয়া গিয়েছে ।

আর দ্বীতিয়ত মনে করেন যে পরম সত্তার সহিত একাভুত হওয়া তো সম্ভব নয় , হয়ত পরমসত্তা তাহার মধ্য প্রবেশ লাভ করিয়াছেন ।
এই অবস্থায় বে-ইখতিয়ারিতেই বার হয় , আমিই পরম সত্তা (আনাল্ব হক্ব)

কিন্তু বে-ইখতিয়ারি অবস্থা হইতে যদি পার হইয়া ফিরিয়ে আসিতে পারেন তবে তিনি বুঝতে পারবেন যে আমি যা বলেছি আসলে তা যথার্ত নয় । কেননা আল্লাহ তায়ালা কোন রক্ত মাংসের দেহে প্রবেশ করবেন তা যেমন সম্ভব না ঠিক তেমনি দুনিয়ার জড় ও পদার্থের মধ্য তিনি একীভুত হবেন তাও কল্পনীয় নয় ।

এই ধরনের কথা বা অনুভূতি তাওহিদের চরম স্তরে অগ্রসরমান সাধক গনের সাময়িক একটা অনুভুতি মাত্র ।
যে অনুভুতি স্বাধক অন্তরে স্থায়ী হয় না । আর একটু অগ্রসর হলেই বিলীন হইয়া যায়।


মোট কথা হল , যাহারা এক আল্লাহ ব্যাতীত অন্য কোন মাবুদ কে স্বীকার করেন না , ও যাহারা এক পরম সত্তা ব্যাতীত আন্য কোন কিছুরই অস্বতিত্ব অনুভব করেন না তাহাদের দেয়া প্রথমত দের থেকে ওনেক ওনেক উপরে । এটাই চরম পাওয়া , এটা তাওহিদের সর্বোত্তম স্তর । ( মাকতুবাত ও গাজালী ) ৪০-৪৮ 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন