শুক্রবার, ১৩ মার্চ, ২০১৫

হাদিয়া ওয়াজীব নয় তার দলিল

আজকাল ফেসবুক এ নতুন নতুন মুফতীর যেমন অভাব নাই ঠিক সেই রকম আমার মত বুড়া ঘোড়ার ও কোন কমতি কিন্তু নাই । আমরা মাঠের বাইরে বসে শুধু খেলা দেখি । 
কিন্তু মাঝে মাঝে আমাদের কে ও বাধ্য হতে হয় আবার ও মাঠে নামতে । 

Imran Khan vai এর পোস্ট টা একটু দেখুন । কপি করে দিলাম (
হে ঈমানদারসকল, তোমরা যদি আমার হাবীবের সাথে একা একা কথা বলতে চাও, তাহলে তাঁকে নজরানা পেশ করো ....
(সূরাঃ মোজাদেলা,, আয়াত নং ১১
এটা তার পোষ্ট । লিং ও স্ক্রীন শুট আছে তা কমেন্ট এ দিলাম । 

এই আয়াত টা আমি দেখে বললাম যে এই আয়াত মনসুখ হয়ে গেছে । বলে তার কাছে দলিল আছে মনসুখ হয় নাই। সে কালকে (আজ) পোষ্ট করবে । বললাম ঠিক আছে । ১০ বার চিন্তা করে নাও । কারন আমি ফাল্তু কথা বলি না । 

সে তার নিজ মুডে অটল বিধায় বললাম ঠিক আছে আমি জবাব তৈরি করছি ( আর শুরু করলাম :- এই আয়াত টা সুরা মুজদালাহ এর ১১ নং আয়াত নয় । বরং ১২ নং আয়াত এটা । 

আর এই আয়াত টা যে সে পোষ্ট করেছে তা প্রকৃত পক্ষে মুল আয়াতের বিকৃত রুপ । মুল আয়াত দেখুন ( 
 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نَاجَيْتُمُ الرَّسُولَ فَقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيْ نَجْوَاكُمْ صَدَقَةً ذَلِكَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَأَطْهَرُ فَإِن لَّمْ تَجِدُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
মুমিনগণ, তোমরা রসূলের কাছে কোনকথা বলতে চাইলে তৎপূর্বে সদকা প্রদান করবে। এটা তোমাদের জন্যে শ্রেয়ঃ ও পবিত্র হওয়ার ভাল উপায়। যদি তাতে সক্ষম না হও, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সুরা মুজাদেলা আয়াত নং ১২ 

মুলত সে মুল আয়াত কে কেটে ও ছেঁটে পেশ করেছে , আর এতে আয়াতের মুল ভাষ্য বোধ গম্য হওয়া আমার মত মুর্খদের জন্য সোজা নয় । আপনি যদি অতি শিক্ষিত হন তা হলে অন্য বিষয় । 

তো ভুল কতটা এখানে পেলেন ? 
(১) আয়াত এর রেফারেন্স ভুল 
(২) অর্ধেকের কম আয়াত কেটে পেশ করেছে নিজের সুবিধা মত ,এটা চরম ভুল।  বরং তওবা করে নেওয়া ওয়াজীব মনে করছে আমি । 

এখন কথা হচ্ছে যে এই আয়াত কি এখন পর্যন্ত বলবৎ আছে না কি রহিত গেয়ে গেছে ? মুল বিষয় এটা । 

আমি বলেছিলাম যে এই আয়াত মনসুখ(রহিত) হয়ে গেছে । 
সে বলেছে তার কাছে দলিল আছে । 
সে কিন্তু শিয়া । আর শিয়া দের কাজ হচ্ছে ৩০ পারা কোরান কে ও মিথ্যা বলা এমন কি নবী পাক কে ও নবী নামে মাত্র মান্য করে । এদের একটা মুল কথা হচ্ছে যে (আজ নেহি কাল ছাড্ডা আলী আলী কেহেন্দে) 
আজ নয় তো কাল সবাই আলী আলী বলবে । 
তার কাছে কোন কোরান আছে তা আল্লাহ ভাল জানে । 

তাফসীর ইবনে কাছীর হাফেজ ইবনে কাছীর দামেস্কি (রহ) এর লেখা তিনি সুরা মুজাদালাহ  নং ৫৮  /২৮ পারা এর ১২ নং আয়াতের তাফসীর এ লিখেছেন যে ;- 
আল্লাহ তায়ালা রাব্বুল আলামিন মুমিনদের কে নির্দেশ দিচ্ছেন যে ;-যখন তারা হযরত মুহাম্মদ সাল্লেল্লাহু আলাইহিস সালামের সাথে দেখা করতে চাইবে একান্ত ভাবে তখন যেন তারা দেখা বা কথা বলার পুর্বে কিছু পেশ করে সদকা (এই খানে সদকা শব্দের বেবহার বাংলা তে ঠিক হয়নি বলে মনে করছি আমি , কারন ওনেকে সদকা আর যাকাত কে একই মনে করে । আমার মতে সোজা বাংলা হাদিয়া বা তৌফা বেবহার করলে বোধগম্য হত আরো ভাল । একান্ত আমার মত এটা ) যাতে তাদের অন্তর পবিত্র হয় ও তোমরা যাতে নবী (সা) এর সাথে পারমর্শ করার যোগ্য হতে পার । 
তবে হা, যদি কেউ দরিদ্র হয় তা হলে তার প্রতি আল্লাহর দয়া ও ক্ষমা রয়েছে । অর্থাৎ এই আয়াত গরীবদের জন্য প্রযোজ্য সেই সময় ও ছিল না,  তা ছিল শুধু  ধনী দের জন্য । 

এর পর দেখুন ;- এর পর আল্লাহ বলেন ;- তোমরা কি চুপি চুপি কথা বলার পুর্বে সদকা (হাদিয়া) দেয়া কে কষ্টকর মনে কর ? এবং ভয় কর যে  এই নির্দেশ কত দিনের জন্য রয়েছে ? যাক , তোমরা যদি এই সদকা (হাদিয়া) প্রদান কে কষ্টকর মনে কর থাক তবে , তোমাদের কে এই জন্য কোন চিন্তা করতে হবে না । আল্লাহ তোমাদের প্রতি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও দয়ালু।তিনি তোমাদের কে ক্ষমা করে দিলেন । 
এখন আর তোমাদের কে সদকা (হাদিয়া) প্রদান করতে হবে না । এখন তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দিতে থাক  ও আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুগত্য কর ।

এখান থেকেই প্রমান হয়ে যায় উক্ত আয়াত ছিল মাত্র কয়েকদিনের জন্য শুধু । 
যখন আই আয়াত বলবৎ ছিল তখন যারা অর্থশালী ছিল তাদের জন্য বাধ্যতামূলক ছিল কিছু প্রদান করা একান্ত ভাবে দেখা করার সময় । আর যারা গরিব ছিল তাদের প্রতি এই আয়াত প্রথম থেকেই লঘু ছিল না । 

এর পর দেখে যাক ;- কথিত আছে রাসুলুল্লাহ (সা) এর সাথে গোপনে পরামর্শ কারার পুর্বে সদকা (হাদিয়া) দেয়ার গৌরব এক মাত্র হযরত আলী (রা) এর যে তিনি ১ দীনার সদকা করে নবী পাকের সাথে দেখা করেন ও ও ১০ টি মাসালা জিগ্গেস করেন । 
এই  বর্ননা ওনার থেকে ও পাওয়া যায় যে তিনি বলেন এই আয়াত এর উপর না কেউ আমার আগে আমল করতে পেরেছে না কেউ আমার পরে আমল করতে পেরেছে । তিনি আরো বলেন আমার কাছে একটি সর্ণ মুদ্রা (দীনার) ছিল। আমি তা ভাংগিয়ে ১০ রিয়াল পাই । তা এক মিসকিন কে আমি আল্লাহর নামে দান করি । ও নবী পাকের খেদমতে হাজীর হয়ে গোপনে কথা বলি । এর পর এই হুকুম উঠে যায় । সুতরাং আমার পুর্বে কেউ এই আয়াত এ আমল করতে পারে নাই ও পরে ও আমল করতে পারে নাই এই বলে তিনি এ আয়াত পাঠ করেন :-
 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نَاجَيْتُمُ الرَّسُولَ فَقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيْ نَجْوَاكُمْ صَدَقَةً ذَلِكَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَأَطْهَرُ فَإِن لَّمْ تَجِدُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
৫৮/১২ /২৮ পারা । ইবনে কাছীর 


হযরত আলী (রা) থেকে বর্নিত হয়েছে যে , তিনি বলেন নবী পাক (সা) ওনাকে জিগ্গেস করেন সদকা(হাদিয়া) পরিমান ১ দিনার হওয়া কি উচিত ? 
হযরত আলী কারামুল্লাহ ওয়াজুহুল কারীম বলেন এ তো ওনেক বেশি । 
নবী পাক বলেন অর্ধ দিনার ? 
হযরত আলী বলেন যে ;- প্রত্যেকের এর আদায় করার ক্ষমতা নাই / 
এর পর নবী পাক বলেন ;- তা হলে কত নির্ধারণ করবে তুমিই বলে দাও । 
তখন হযরত আলী বলেন ১ জব পরিমান সর্ণ নির্ধারণ করা হোক । 

আর এই কথা শুনে নবী পাক বললেন যে বাঃ বাঃ , তুমি তো একজন স্বাধক বেক্তি । 
হযরত আলী (রা) বলেন সুতরাং আমারি কারনে আল্লাহ এই উম্মাতের উপর কাজ সহজ ও হাল্কা করে দেন । 
নোট;- এই হাদীস ওনেক হাদীস বিশারদ গন বর্নিত করেছেন  যেমন :- ইমাম ইবনে জীরীর ইমাম তীরমিযি । 

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন যে :- মুসলমানরা বরবরাই রাসুলুল্লাহ (সা) চুপি চুপি কথা বলার পুর্বে সদকা(হাদিয়া) পেশ করত । কিন্তু যাকাত ফরজ হওয়ার পর  এ হুকুম উঠে যায় । 
ইবনে আব্বাস (রা) বলেন যে ;- সাহাবীরা নবী পাক কে খুব বেশি বেশি প্রশ্ন করতে শুরু করেন ।ফলে তা রাসুলুল্লাহ (সা)র  উপর কঠিন বোধ হয় ।
ফলে আল্লাহ তায়ালা পুনরায় তা জারী করেন । ফলে রাসুলুল্লাহ (সা) এর উপর তা হাল্কা হয়ে যায় ।এর পর জনগন প্রশ্ন করা ছেড়ে দেয় ।অতপর আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের উপর প্রশস্ততা অনয়ন করেন এবং এ হুকুম রহিত করে দেন । হযরত ইকরামা (রা) ও হযরত হাসান বাসরী (রহ) এর ও এই মত যে এ হুকুম রহিত হয়ে গেছে ।হযরত কাতাদাহ ও হযরত মুকাতিল(রহ) এর ও একই মত । 

হযরত কাতাদাহ (রহ) বলেন যে শুধু দিনের কয়েক ঘন্টা শুধু এই হুকুম জারী থাকে ।হযরত আলী (রা) ও তাই বলেছেন যে আমিই সাবার আগে ও সবার সেষ মানে তিনিই একমাত্র বেক্তি যিনি এই আয়াতের উপর আমল করেছেন । 


তো এখন এটা দুপুর বেলার সুর্যের মত পরিষ্কার যে এই আয়াত মনসুখ বা রহিত হয়ে গেছে । 
এই খানে আর কোন মায়া কান্না দেখানোর প্রয়োজন নাই হযরত আলী কে যারা মোনাফেক প্রমান করেন সেই সকল শিয়া দের । 

আর তারা হতে পারে এই আয়াতের উপর এত জোর দেন কারন এই যে , আয়াতের উপর একমাত্র হযরত আলী কারামুল্লাহ ওয়াজুহুল কারীম আমল করেছেন । 

আর শিয়া দের নীতী আলীই আল্লাহ আলী মুহাম্মদ (সা) আলী সকল কিছু (নাউযুবিললাহ ) 

এদের এই আয়াতের প্রতি মায়া কান্নার কারন মনে হয় আজ প্রকাশ হল । 

তাছারা হাদিয়া নেয়া বা দেয়া । 
আপনি যদি ইতিহাস দেখেন তো দেখেছেন যে নবী পাক সেই সময় এ ওনেক রাজা বাদশাহ কে তৌফার সাতে বা হাদিয়া দিয়ে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন , এমন কি ওনেক রাজা বাদশা এমন কি হাজার হাজার আম সাহাবীগন হাদীয়া দিত আমার নবী কে , আর তিনি গ্রহন করতেন সকলের হাদিয়া । 
পর্বতিতে মনে চাইলে তিনি অন্য কাউকে আবার ও দান করে দিতেন । 
কিন্ত তিনি হাদিয়া নিতেন ও দিতেন তা প্রমানিত আর এমন কি আজ পর্যন্ত তা সুন্ন্ত হয়ে আমাদের জন্য অনুসরনিয় ও অনুকরণীয় হয়ে আছে । 

আমি চাইলে এ নিয়ে শুধু ১০ টা পোষ্ট করতে পারি সেই পরিমান দলিল আছে আমার কাছে । 

তাই বলব কোন মনসুখ  আয়াত কে প্রাধান্য দিয়ে উম্ম্ত এ মোহাম্মদির উপর কোন বোঝ চাপানোর চেষ্টা করবেন না , যে বিষয় কে চাপ মনে করে আমার আল্লাহ আমাদের কে রুখসাত দিয়েছেন । তা আবার ও আমাদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করবেন না । 
ধন্যবাদ 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন