শুক্রবার, ১৩ মার্চ, ২০১৫

তাসাউফের আসল রুপ

তাসাউফ কি ? আর কারা তাসাউফ এর পথের পথিক ?
আর কারা ভন্ড ? 


আলোচনা ;- দাঁতা গান্জ বখশ আলি হাজবেরী (রা)  । যার মাযারে খাজা মুইনুদ্দিন চিশতি (রহ) ৪০  চিল্লা করে ছিলেন এবং ওনার আশির্বাদ নিয়ে তিনি আজমীর এ আসেন। আর এই দাতা খেতাব টা খাজা মুইনুদদিন চিশতি (রহ) এর দেয়া । 

দাতা গান্জ বখশ আলী হাজবেরী (রহ) নিজের কিতাব কাশফুল মাহজুব এর ৫৪ নং পৃষ্টা তে লিখেছেন যে ;- হযরত মোহাম্মদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন ইবনে আলী ইবনে আবু তালেব (রা) বলেছেন ;- তাসাউফ সৎ স্বভাবের নাম। মানুষের স্বভাব যত উন্নত হবে তার তাসাউফ তত বৃদ্ধি পাবে । 

ডাঃ তাহেরুল কাদরী, বর্তমান জামানার সুন্নি দের চোখের মনি  । 
ওনার কিতাব (তাসাউফের আসল রুপ ) এ লিখেছেন ;- সুফী হল সেই বেক্তি যে দুনিয়া ও আখেরাতের প্রাপ্য প্রতিদানের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে মাহবুবে হাকীকি তথা আল্লাহর সাথে নিখুঁত ভালবাসার রুজ্জু কে মজবুত করে ধরে । এই ধরনের লোকদের সমস্ত কাজের প্রেরনার এক মাত্র আল্লাহর জন্য হয়ে থাকে । (তাসাউফের আসল রুপ) পাতা নং ৬৪


এই কথা অননুরুপ ভাবে ইমাম গাজালী স্বীয় মাকতুবাত এ লিখেছেন যে ;- ইমানের ৫ম স্তরের লোকেরা যা কিছু করেন তা সমস্তই আল্লাহর জন্য হয়ে থাকে । তারা খানা খেয়ে থাকেন তা ক্ষুদায় পেট ভরার দন্য নয়।  বরং খানা খেয়ে শক্তি পেয়ে আবার ও ইবাদাত করার জন্য । বিয়ে করেন এই জন্য নয় যে দেহের চাহিদা হালাল মত পুর্ন করা যাবে। বরং তারা করেন নবীর উম্মত বৃদ্ধির জন্য ও আল্লাহর ইবাদাত করার জন্য যেন বান্দার বৃদ্ধি হয়।  তারা তাদের বুড়া কালের চিন্তা করা এমন করে না। 

তারা পায়খানা করেন যাতে ভিতরের কষ্ট বের হয়ে গেলে ইবাদতে মন লাগানো সজহ হবে তাই। এই রকম তারা প্রতাটা কাজ আল্লাহর রাজী খুশির জন্য করে থাকেন । 

গিয়াসুল লুগাত কিতাব এর ১১৩ নং পৃষটা তে শায়খ আয়াযুদ্দিন (রহ) লিখেছেন যে ;- যেহেতু সাহাবাদের সর্ণ যুগে বিণয়, সাধণা ও পরমানুগত্যের দরুন সত্যপন্থি রা পশমের পোশাক পরিধান করতেন। তাই তাদের কাজ কর্ম কে তাসাউফ নামে নাম করন করা হয়েছে (গিয়াসুল লুগাত) পৃষ্ঠা নং ১১৪

শায়েখ গিয়াসুদ্দিন বলেন ;- হতে পারে  তাসাউফ সুফ  শব্দ নির্গত।  যার অর্থ এক মুখি হওয়া । অন্য সব কিছু থেকে মনোযোগ হটিয়ে নেওয়া । যেহেতু আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত বেক্তি অন্য সব কিছু থেকে নিজের মনোযোগ সরিয়ে শুধু আল্লাহর দিকেই মনোযোগ নিবদ্ধ করে । তাই তাদের এই সম্পর্ক স্থাপন করা কে তাসাউফ বলে ( গিয়াসুল লুগাত ১১৩ নং পৃষ্ঠা ) 


উপরের বরননা গুলো থেকে এটা প্রতিয়মান যে তাসাউফ পথের পাথিক যারা , তারা কিন্তু দুনিয়ার বুকে থেকে ও দুনিয়া কে বিলিন মনে করেন । আর নিজেকে একাগ্রতার সাথে রাখা পছন্দ করেন। 
তারা দুনিয়া নামের  এই নর্তকির রুপ দেখে তার জন্য সময় বেয়  করেন না । 

আজ আমাদের দেশে কত যে দল ও মত আছে তা কিন্তু দেখার মত। 

প্রকাশ্য পেটের বান্দা ও কম। 

(আল্লাহ পাক বলেন আপনি কি দেখেন নাই ? যারা নিজের নফস কে নিজের মাওলা তে পরিনত করে নিয়েছে) 

প্রকৃত পক্ষে তারা ও তাদের ণফসই মাবুদ। কারন তারা নিজের নফসের জন্যই এই সব কিছু করে থাকে । 
তারা যদি প্রকৃত মালিক আল্লাহ কে মনে করত তা হলে তারা আল্লাহর ইবাদাত করত।  অন্য কারো কারো প্রতি সামান্য অনুগত হত না । 

এ তো গেল পেট পুজারী রাজনীতি ও দলের কথা। 

আমাদের দেশে কোরান ও হাদীস আর বুযুরগ দের আকিদা কে ও বিসর্জন দিয়ে তাদের কিছু কথা কিছু বানী কে মুল অস্ত্র বানিয়ে দিব্বি ঘুড়ে বেড়াচছে  কিছু ইসলামিক দল ।

তারা তো বলে আমরা তাসাউফ পন্থি , কিন্তু তা শুধুই এক রকম ধোকা বলে টলে , কারন তাসাউফ এর নাম দুনিয়া না। বরং আল্লাহর দিকে পুরো পুরি রোখ করা। 

আজ আপনারা মিটিং করেন মিছিল করেন। কথায় কথায় সমাবেশ করেন,এত সুন্দর সুন্দর বই প্রকাশ করেন, কত মিঠা মিঠা নাত শরিফ পাঠ করেন, কত কোরানের বেক্ষা করেন। কত হাদীস কে দলিল দেন,কত আলোম কে মাথার তাজ মনে করেন, কত পীর কে সেজদা করেন কত মাজারে চাদর চড়ান , বছরে কত ওরশ করেন , প্রতি বছর কত মিলাদ করেন , বছরে কত জলসা করেন হাজারো বাহানা করে ।  তবু কেন আজ সুন্নি বা তাসাউফের চর্চা নাই জীবনে ? কেন আজ আপনারা লানছিত ? কেন আজ আপনাদের উপর হামলা হয় ? 

একটা শায়ের মনে পড়ছে আমার। 

ইশক মে জো ভী মুবতালা হোগা 
উস্কা আন্দাজ জুদা হোগা 
ওর ভাও কিউ কম হো গ্যায়া সোনে কা ? 
কিউ কি উছমে পিতল বেহেক লিয়া হোগা 

যে প্রেমের পাগল হবে তার চাল চলনই ভিন্ন হবে 
আর সোণার দাম কেন কমে গেছে ? 
মনে হয় তাতে  পিতল জড়িয়ে গেছে 

আজ আপনারা সেই প্রেমে মুবতালা নন। আজ আপনারা পীর তন্ত্রের নামে শুরু করেছেন বেবসা , বাপ পীর ছিল এখন তার ছেলে পীর । 
চলতে থাকবে যত দিন চালানো ্যায় 
নিজের মাঝে সামান্য মোজাহাদা নাই , অন্যদের কে মুরিদ করেন। 

রাজনীতি করেন। ইলেকশন করেন। এমপি সাজেন। 
 দল গঠান করেন। 
আপনারা ডুবেই আছেন এই নোংরা দুনিয়ার প্রেমে । আর পীর তন্ত্র তো আপনাদের একটা ঢাল। 
তাই আজকের দিনে আপনাদের এত কিছু কষ্ট করা কোন কাজেই আসছে না। কারন আপনি যদি কাউকে হেদায়াত করতে চান তা হলে আপনাকে আগে শুদ্ধ হতে হবে। দুনিয়া থেকে হাত গুটিয়ে মৃত মানুষের মত হতে হবে। যেন দুনিয়ার সাথে আপনার আর কোন সম্পর্ক নাই।  

আর তখন যদি আপনি কাউকে হেদায়াতের দাওয়াত করেন তখন আপনার  এই কথা গুলোই তার বুক চিড়ে যে ময়লা আছে  সে গুলো সাফ ও পরিষ্কার করে দিবে । 

আগের যুগে আলেম ওলামা ও হক্কানী আলেম সমাজ একটা কথা যদি বলত রাজা বাদশাহ দের তো তারা মাথা নত করে চুপ হয়ে তা মান্য করত।  আর তখন সুফী দের ক্ষমতার লোভ ছিল না। কিন্তু ক্ষমতা ছিল অগাধ। 

আর আজ আপনাদের মাঝে ক্ষমতার জন্য কি চাহাত , কিন্তু ক্ষমতা তো দূরের কথা কেউ আপনাদের কথা শুনতে ও রাজী না। 
আপনি তো দুরের কথা বাংলাদেশের এমন ওবস্থা যে পুরা দেশের মানুষের দাবি মানতে ও রাজী না সরকার। 

কারন কি ? 
কারন আপনাদের কে দেখে মানুষের আল্লাহর ভয় আসে না।  চেহরার মাঝে দেখা যায় না যে আপনারা আল্লাহ ওয়ালা।  আপনাদের কে দেখে মনে হয় আপনারা দুনিয়া ওয়ালা। 
তো কি ভাবে হবে ? কি লাভ হবে ? 

এত আন্দোলন এত কিছু।  কোন কি লাভ হচ্ছে ? 
আপনারা নিজ রাজনৈতিক সুবিধার জন্য সুফীবাদ এর মুল নীতি ছেড়ে দিয়েছেন। ধরেছেন রাজনীতি ,
যে জাতি তার আল্লাহ ও রাসুলের পথ থেকে বিচ্যুত , তাদের আকাবের থেকে বিচ্যুত ওলি আওলিয়া দের নীতী থেকে বিচ্যুত ! তাদের প্রতি কি আল্লাহ মেহেরবান হবেন ? 

কোন দিন না (চলবে) 

সোহেল রানা 








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন