শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

সামা নিয়ে আপত্তির জবাব বিরুদ্ধবাদীদের কিতাব থেকে

দেখুন :- মাওলানা আশরাফ আলী থানবী দেওবন্দী দের হেকিমুল উম্মত ও মোজাদ্দেদ এর কিতাব ( রুহে তাসাউফ ) এর ৫৫ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে ;- আবু সুলায়মান দারানি (রহ) এর নিকট সামার বিষয় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন যে :- যে অন্তর সুন্দর কন্ঠের উত্সুক হবে , সে ক্ষীন অন্তর ও দুর্বল চিত্তের লোক :- আর সামা তার ঔষদ সরূপ। উদাহরণ তার কচি শিশু , সে শুইতে চায় , তখন মধুর কন্ঠ ইত্যাদি দ্বারা তার নিদ্রার বেবস্থা করা হয়। আবু সুলায়মান (রহ) আরো বলেন মধুর কন্ঠ বা সুরোলিত সুর অন্তরে বিলোপ কিছুর সৃষ্টি করে না , যা তার অন্তরে আছে তা নাড়া দিয়ে জাগ্রত করে দেয় ( রুহে তাসাউফ) আশরাফ আলী থান্বির লেখা কিতাব পৃষ্টা ৫৫ 

আশা করছি দেওবন্দী ভাইদের চোখে পরেছে কথা গুলো , আর এটাই বলা হয়েছে কত গুলো অন্তর ক্ষীনও ও কঠিন , ফলে সুলোলিত সুর ও মধুর কন্ঠে গাওয়া কোনো আবেগ করা ইস্ক এর সামা সুনে সেই অন্তরে থাকা নিস্প্রান ইমান কে নাড়া দেয় , ফলে তা জেগে উঠে নতুন উদ্যমে।  

এর পর আবার দেখুন ;- উক্ত কিতাবের ৫৬ নং পৃষ্টায় থানবী সাহেব আবার লিখেছেন যে :- আমি উস্তাদ আবু আলী দাক্কাকি এর কাছ থেকে সুনেছি যে ;- এক মজলিশে আবু অমর ইবনে জায়েদ ও হজরত নাচরাবাদি ও কতিপয় লোক উপস্থিত ছিলেন। তখন নাচ্ছরাবাদী (রহ) বলেন যে ;- আমার কথা হচ্ছে যে কতগুলো লোক যখন এক খানে জমায়েত হয় তখন একজন কে কিছু বলা উচিত , এই খানে টিকা দিয়ে লিখেছেন যে ( এতে প্রতিয়মান হয় যে তার মতে সমা মোবাহ বা জায়েজ) অবশিষ্ট লোক চুপ থাকবে। এটি কমপক্ষে কারো গিবত করা থেকে উত্তম। আবু অমর ইবনে জায়েদ তখন বললেন যে ;- যদি ৩০ বছর গীবতে লিপ্ত থাক ,তার চেয়ে সামা এর অবস্তায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কিছু প্রকাশ ঘটানো থেকে উত্তম হবে। (রুহে তাসাউফ ) পৃষ্টা ৫৬ 

এই খানে আশরাফ আলী থানবী যে ২ জন বুজুর্গের কথা উল্লেখ করেছেন তাতে বলা হয়েছে যে :- কয়েকজন লোক যদি একত্রিত হয় তা হলে একজন কিছু আবেগ ভরা সুর নিয়ে কিছু সুন্দর আবৃতি করবে যা ইসলামের সত্যিকার এর দিকে ধেয়ে নিয়ে যেতে পারে , আর সবাই চুপ করে সুন্ভে , এতে একজন আর একজনের গিবত করা থেকে উত্তম। এবং অমর ইবনে যায়েদ ও তাই বলেছেন।  

উক্ত কিতাবের ৫৭ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে ;- মাওলানা ও মুফতি আহমাদ সফি বলেন যে :- যে কথা টা আমি উল্লেখ করা সমীচীন মনে করি যা আমি থানবী সাহেবের বরকত ময় জবান থেকে একাধিক বার সোনার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলাম তা হচ্ছে ;- চার সিলসিলার মধে তরিকতের পন্থী শায়েখ গণ কাউকে সামা করণীয় হিসেবে নির্দেশ দেন নাই , তবে পরবর্তিতে পির মাশায়েখ দের অদিষ্ট মামূল ছিল যে অভিজ্ঞতার নিমিত্তে উপকারী সাব্যস্ত হওয়ার ভিত্তিতে সংযোজন করা হয়েছে ।রুহে তাসাউফ পৃষ্টা ৫৭ 

এই খানে দেওবিন্দী দের মুফ্তিয়ে আজোম সফি সাহেব বললেন যে তরিকত পন্থী শায়েখ গণ সামা করণীয় হিসেবে নির্দেশ দেন নাই। এই কথার অর্থ হচ্ছে যে পীর সাহেব রা যেমন অজিফা দেয় ও তা পালন করতে বলে তেমন সামা এর বিষয় নির্দেশ দেন না ,
এবং তরিকত পন্থী পীর মাশায়েখ গণ সামা উপকারী সাব্যস্থ বিধায় সংযোজন করেছেন। আর ইটা যেহেতু উপকারী সেহেতু মোবাহ বা জায়েজ 

আবার দেখুন (মাওয়ায়েজ এ আশরাফিয়া) কিতাবের ৪ থা খন্ডের ৬৭ নং পৃষ্টায় আশরাফ আলী থানবী সাহেব লিখেছেন যে ;- আমি একদিন হজরত নিজামুদ্দিন কুদ্দেসা সিরুহুল সাহেবের মাজারে গিয়ে কবর জিয়ারত শেষ করে আসতে ছিলাম , আসার পথে দেখলাম যে কাওয়ালী এর আয়োজন করা হচ্ছে। আমাকে বাধা দিয়ে দিয়ে কাওয়ালী এর আয়োজক রা বলল যে আপনি অপেক্ষা করুন ,কাওয়ালী সুনে এর পর যাবেন। আমি বললাম যে আমি যদি কাওয়ালী সুনি তবে সুল্তান্জি (খাজা গরিবে নেওয়াজ) নারাজ হবেন। তখন তারা বলল যে ;- কেন চিস্তিয়া বুজুর্গ রা তো সবাই কাওয়ালী শোনেন ,সুল্তান্জি (গরিবে নেওয়াজ) নিজেও কাওয়ালী সুনেচিলেন। তখন আমি বললাম যে হা তিনি কাওয়ালী সুনেচিলেন, আর ওনার কিতাব (ফাওয়ায়েদুল ফুয়াদ) কিতাবে কাওয়ালী বা সঙ্গীতের জন্য ৪ তা সর্ত দিয়েছেন :- (১) শ্রোতা (২) গায়ক (৩) স্রবনীয় বিষয় বস্তু (৪)স্রবনীয় যন্ত্রপাতি 
১) শ্রোতার সম্মন্ধে তিনি লিখেছেন স্রোতা কামভাব সম্পন্ন হতে পারবে না 
২) গায়ক মেয়ে লোক ও বালক হতে পারবে না 
৩)স্রবিনীয় বিষয় বস্তু বিষয় লিখেছেন যে , হাসি ,কৌতুক , প্রকৃতির হতে পারবে না 
৪) স্রবনীয় যন্ত্র পাতি সম্মন্ধ্র তিনি লিখেছেন যে , বাহেলা , সারেঙ্গী , হারমোনিয়াম থাকা চলবে না 

দেওবন্দিদের আরো একটা কিতাব (তাসাউফ তত্ত্ব ) লিখেছেন মুফতি মাহমুদ আশরাফ উসমানী (উস্তাদ দারুল উলুম করাচি) উক্ত কিতাবের ২৩৪ নং পৃষ্টায় লিখেছেন যে - মোবাহ (জায়েজ ) সামা এর কিছু সর্ত আছে 
তা হচ্ছে ;- ১) শ্রোতা প্রবৃত্তি পুজারী হউয়া যাবে না 
২)মেহফিলে কোনো মহিলা বা দাড়ি গোফ বিহীন সুশ্রী বালক থাকা যাবে না (দেওবন্দী সমকামিতার একটা বেপার আছে ) 
৩) সামা দ্বারা আমোদ প্রমোদ ছাড়াও আল্লাহর জিকিরের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা 
৪)সামা পাঠক কোনো মহিলা বা সুশ্রী বালক না হওয়া 
৫)সামার বিষয় বস্তু অস্শীল ও নাজায়েজ না হওয়া 
৬)সামার সাথে কোনো বাদ্যযন্ত্র না থাকা 
৭)লৌকিকতা বা লোক দেখানোর জন্য ওয়াজদ বা খোদা প্রদত্ত বিশেষ অবস্থার অভিনয় না করা। 

এই খানে মুফতি মাহমুদ আশরাফ উসমানী (মুফতি-এ-আজম সফি এর ছেলে ও তকী উসমানী এর ভাই) সাহেব অতিরঞ্জন কে না বলেছেন সমা কে না। হারাম বলেছেন অতিরঞ্জন ও বেহায়াপনা কে কিন্তু সামা কে হারাম বলেন নাই 

আপনারা দেওবন্দী গণ আপনাদের , আপনাদের আলেমদের কথাও কি আপনারা মানবেন না ? নাকি তারা ও বেদাতি ছিল ? নাকি আপনারা বেশি পেকে গেছেন ? কোনটা সত্য ? 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন