শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

হাজীর নাযির আপত্তির জবাব -২

আপত্তি নং (৬) 

খৃষ্টানদের আক্বিদা হল হযরত ঈসা আঃ সর্বত্র বিরাজমান, 

তথা হাজির নাজির। 

যেমনটি লিখেছেন খৃষ্টান পাদ্রী ইমাদুদ্দীন তার রচিত “তাফতীশুল আওলীয়ায়। তিনি লিখেন- 

ঈসা আঃ প্রত্যেক স্থানে হাজির ও নাজির।

{তাফতীশুল আওলিয়া-১০৮}

খৃষ্টানদের আক্বিদা হল যে মজলিস ঈসা আঃ এর নামে করা হয়, সেখানে ঈসা আঃ উপস্থিত হন।

ঈসা আঃ বলেন-“কেননা যেখানে দুই অথবা তিনজন আমার নামে একত্র হয়, সেখানে আমি তাদের মাঝে উপস্থিত হই”। {ইঞ্জিল, মথি, অধ্যায় ১৮, পরিচ্ছেদ-২০}



জবাব ;- আমি আসলে ইসলাম এ শিক্ষা শেষ করতে পারি নাই , তবে খৃষ্টীনদের নিয়ে কি গবেষনা করব বলুন ? 

আমার জানা নাই হযরত ইসা (আ) সর্বত্র হাজীর ও নাযির কি না , 

আর আমার এটা ও জানা নাই যে ওনার নামে কোন মাহফিলে ওনি আদৌউ আসে কি না । 

তবে এটা জানি , যখন কোন দেওবন্দি বিপদে পড়েন , তখন দেওবন্দি আলেমগন কবর থেকে উঠে এসে তাদের কে সাহায্য করেন , ঝগরা লাগলে মিটিয়ে দেন , বাহাস এ তর্ক করেন , দিলের মধ্য জ্ঞানের সাগর বইয়ে দেন ।এমন ওনেক কিছু।  এ ক্ষেত্রে কিন্তু খৃষ্টীনদের দাবি মতে হযরত ইসা (আ) এর মতই ক্ষমতাবান দেওবন্দি আলেমগন। গত কালকের পোষ্ট দেখুন। বিস্তারিত  প্রমান দেয়া আছে । 



তার একটা মিথ্যাচার ;------দেখুন ।



হাজীর হওয়া আল্লাহ তাআলার সিফাত নয়। কারণ হাজির অর্থ হল যিনি আগে ছিলেন না, এখন এসেছেন, আর এমন বিশ্বাস আল্লাহ তাআলা ক্ষেত্রে বলা কিছুতেই জায়েজ নয়, 

আর নাজির হল দ্রষ্টা। আল্লাহ তাআলারতো কোন চোখই নাই, তাই তিনি আমাদের মত দেখবেন কিভাবে? 

তাছাড়া হাজির নাজির যদি আল্লাহর সিফাতই হইতো, তাহলে আল্লাহর নিরান্নবই নামের মাঝে এ সিফাতের কথা থাকতো। অথচ তা নেই। সুতরাং বুঝা গেল যে, এটা আল্লাহ তাআলার সিফাত নয়। বরং এটি মাখলুকের সিফাত। তাই এ সিফাতের অধিকারী হলেন রাসূল সাঃ ও বুজুর্গানে দ্বীন। {দ্রষ্টব্য-জাআল হক্ব ওয়া জাহাক্বাল বাতিল-১৫৩}


উপরের কথা গুলে তার মুখে ছুড়ে মারলাম।  

কারন আমার কাছে যা আল হক কিতাবের ৩ খন্ডই আছে । আমি তোমার চেয়ে শতবার ভাল করে পাঠ করেছি।  তুমি কিতাবের পাতা দাও যদি সত্যবাদী হয়ে থাক ।

আর আহমেদ ইয়ার খান নঈমি (রহ) ওনার কিতাব যা আল হক এর ২৫৭ নং পেজ ১ম খন্ডে লিখেছেন যে ;-আল্লাহ কে প্রত্যেক যায়গায় স্বীকার করা ধর্নহীনতা । প্র্ত্যক যায়গায় বিদ্যমান হওয়া খোদার রাসুলের বৈশিষ্ট ।আর প্রত্যেক যায়গায় খোদা কে হাজির নাযির স্বীকার করা হলেও খোদার রাসুলের বেলায় তা অস্বীকার করা যায় না । ( যা আল হক  খন্ড ১ পেজ নং ২৫৭ ) 

উপরের কথার সাথে এই কথা মিলিয়ে দেখুন তো কোন মিল আছে কি ? 
একেই বলে রংধনুর মিথ্যাচার । 


আর আমি পোষ্ট এর শুরুতেই বলেছি যে ;- তোমার রেফারেন্স ভুল । 
এবার এঅ ইবারত পুরাটাই ভুল। এর  আগে ও কিছু কিছু কথা এদিক সেদিক করা হয়েছে । 
আমি সেটা ধরিনাই। কিন্ত্ এত বেশি মিথ্যাচার শয্য করা অন্যায় হবে।  তুমি কিতাবের পাতা  পেশ কর । যা আপত্তি তুলেছ । 

আর যা আল হক কিতাবের আহমেদ ইয়ার খান নঈমি (রহ) যে বলেছেন আল্লাহ তায়ালা কে প্রত্যেক যায়গায় স্বীকার করা ধর্মহীনতা, তা তাদের কিতাবে ও বিদ্যমান আছে । 
প্রমান দেখুন :-(ইসলামি আকিদা ও ভ্রান্ত আকিদা ) নামক বই এ থানভী লাইব্রেরি থেকে প্রকাশিত মাওলানা হেদায়েত উদ্দিন রচিত কিতাবের ১ম খন্ডের পৃষ্টা নং ৪৯ এ লিখেছেন যে ;-হিন্দুদের বিস্বাস মতে ইশ্বর মানুষ , প্রানী , বৃক্ষ ,পাথর সবকিছুতেই প্রবেশ করেন ।এসব বিস্বাস পোষনকারী গনকে হুলুলিয়া বলা হয় ।এমন বিস্বাসী কুফরী ।

আর মাহমুদুল হাসান সাহেব আল্লাহ কে সর্বত্র প্রমান করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা কে বাথরুমে ডুকিয়ে দিয়েছে (নাউযুবিল্লাহ ) 


কিছু অপব্যাখ্যা দেখুন ;------চোখ খুলে মেশকাত শরীফের ১ নং খন্ডের ১৯৯ নং পৃষ্ঠায় দেখুন ইবারতের নিচে শহীদ অর্থ লিখা হয়েছে হাজির। আর প্রসিদ্ধ ডিকশনারী “সাররাহ”এ লিখা হয়েছে যে, শহীদ মানে হাজির ও স্বাক্ষ্য।

মিশকাত শরিফের ১৯৯ নং পেজ টা পেশ করুন যেখানে শহিদ মানে হাজির বলা হয়েছে । 

হাজীর কাকে বলে তা আপনার জানা নাই।  আগে হাজির এর অর্থ ভাল করে জেনে রাখবেন।  
শাহিদ মানে হাজীর এই কথা টা আরো একবার খতিয়ে দেখে নিন।  ও শাহিদ নামের অর্থ ব্যাখা জেনে নিন।  কারন  এই শাহিদ আপনার উপরে ওনেক ভারি পড়বে একটু নিচে গেলেই । 




আর এক অপব্যাখ্যা (-----
এমনিভাবে “বাসীর”এর অর্থ লিখা হয়েছে যে, দ্রষ্টা,তথা নাজির। দেখুন-“সাররাহ”-১৬০।

মাশা আল্লাহ।  সত্যি স্বীকার করেন আপনারা আর এক সত্যি কে অস্বীকার করার জন্য শুধু । 
তা হলে এ আয়াত ও স্বীকার করুন (

 يَاايُّهَاا لنَّبِىُّ اِنَّا اَرْسَلْنكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا وَّدَاعِيًا اِلَى اللهِ بِاِذْنِه وَسِرَاجًا مُّنِيْرَا
। 
নাযির কথা টা কি দেখা যায় ? 

তা হলে কবুল করলেন নাযীর মানে দ্রষ্টা । এ আমাদের নবী আমাদের কে দেখেন । 


আর আল্লাহর নাম কত আছে তা নিয়ে তর্ক নেই আমাদের।  

কিন্ত্ আপনাকে যে কিতাবের  পাতা পেশ করতে বলেছি তে পেশ করুন।  কারন আপনি সীমাহীন মিথ্যাচার করেছেন । 


আর আল্লাহর চোখ প্রমান করতে চান নাকি আপনি ? 
আমরা কোরানে পেয়েছি আল্লাহ তায়ালা দেখেন।  কিন্ত্ আল্লাহ তায়ালার চোখ আছে এমন কোন বর্ননা যদি পেয়ে থাকেন আপনারা তবে পেশ করুন।  নির্ভরযোগ্য হলে মেনে নিতে আপত্তি নাই আমাদের ।

আল্লাহ দেখেন এটা মান্য করি। কিন্ত্ আল্লাহ কি ভাবে দেখেন তার চোখ কত টা আছে কেমন তা আমাদের জানা নাই।  যদি আপনার দানা থাকে কবে বর্ননা করুন।  
ইমাম আবু হানিফা (রহ) বলেন .

আল্লাহ তা‘আলার ছিফাতের সাথে মানুষের অর্থাৎ সৃষ্টির গুণের সাদৃশ্য হবে না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা জানেন। কিন্তু সৃষ্টির জানা তাঁর মত নয়। তাঁর ক্ষমতা-শক্তি সৃষ্টির ক্ষমতার মত নয়। তাঁর দেখা-শুনা, কথা বলা, মানুষের বা সৃষ্টির দেখা-শুনা বা কথা বলার মত নয়।

আল-ফিক্বহুল আকবার, পৃঃ ৩০২।



তার আর এক ত্যানা পেচানো দেখুন ;---

সৈয়দ কাজেমি সাহেবের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন ;--
আল্লাহ তাআলার আসমায়ে হুসনার মাঝে হাজির নাজির কোন নাম নেই। আর কুরআন ও হাদীসে কোথাও হাজির নাজির শব্দ আল্লাহ তাআলার জন্য ব্যবহৃত হয়নি। সালাফে সালেহীনের কেউ আল্লাহর শানে এ শব্দ বলেন নি। কোন ব্যক্তি কিয়ামত পর্যন্ত একথা প্রমাণ করতে পারবে না যে, সাহাবায়ে কেরাম রাঃ অথবা তাবেয়ীগণ অথবা আইয়িম্মায়ে মুজতাহিদীনগণ আল্লাহর শানে হাজির নাজির শব্দ ব্যবহার করেছেন। {তাসকীনুল খাওয়াতীর-৩}

জবাবে সে লিখেছে ;-কাজেমী সাহেব স্বীয় দিলের উপর হাত রেখে (যদি দিল বলে কিছু থাকে) বলুন- উপরে বর্ণিত শুয়াবুল ঈমানে ১০৩০১ নং হাদীসে আল্লাহর শানে বলা ”নাজির”শব্দটি কি আপনার গোচরিভূত হয়নি? কি এটা হাদীস নয়।

এখন আমি বলছি তেতুল মাহমুদুল @ তুমি সীয় দিলের মধ্য হাত রেখে বল তো , আসমাউল হোসনার মধ্য যে ৯৯ টা নাম আছে , তাতে কি হাজীর ও নাযির বলতে আল্লাহর কোন নাম আছে ? 

এখন জবাব আসবে তোমার নাই।  তুমি মিয়া তেতুল আসমাউল হোসনার থেকে বর্ননা না দিয়ে শুয়াবুল ইমান কিতাবের রেফারেন্স কেন দিচ্ছ ? 
তিনি তো আসমাউল হোসনার কথা বলেছেন । 

   আর আল্লাহর শানে এমন কোন কথা কোন সুন্নি আলেম জীবনে ও বলতে পারেন না । আল্লাহ হাজীর ও নাযির । এটাই আমাদের আকিদা।  আপনি অপপ্রচার না করে সৈয়দ কাজেমি সাহেবের কিতাবের বাংলা বা উর্দু বা হিন্দি  যে কোন ভাষায় কিতাবের  পাতা পেশ করুন। 

এর আগে আমরা এ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে বাধ্য নই ।


আর যে হাদিস ও কোরানের আয়াত দেয়া হয়েছে তাতে আমাদের কোন মত বিরোধ নেই।  বরং আল্লাহ দেখেন। তিনিই উপস্থিত আছেন। তিনি মনের কথা ও শোনেন। জোরে তাকে ডাকার ও দরকার নেই।  




আহমেদ ইয়ার খান নঈমি (রহ) তার কিতাব যা আল হক এ নিখেছেন যে ;- 
মালাকুল মওত সামনে পুরা দুনিয়া কে থালার মত করে দেয়া হয়েছে । তো যেখানে আল্লাহর একজন ফেরেস্তার সামনে পুরা দুনিয়া একটা থালার মত , সেখানে আল্লাহ ছারা আর কেউ হাযির নাযির নয় এই যুক্তি তোমাদের কোথায় থাকে ? 
আর আল্লাহর রহমতে আমাদের নবী ও হাযির ও নাযির ) 
এই কথা গুলোর খন্ডন করতে গিয়ে দেখেন কি কি লিখেছে ;- 

(১)

হযরত আজরাঈল আঃ কি একা একা জান কবচ করেন? না তার সাথে আরো ফেরেস্তা থাকেন? নিশ্চয় আরো অনেক ফেরেস্তা থাকেন। তাহলে একা রাসূল সাঃ সর্বত্র হাজির হওয়ার উদাহরণ দিতে গিয়ে হাজার হাজার সাথি বেষ্টিত আজরাঈল আঃ এর উদাহরণ দেয়াটা কি যৌক্তিক হয়েছে?


জবাবা ;- তো তোমার কথা আল্লাহ তায়ালা স্বশরিরে সর্বত্র বিরাজমান । আল্লাহ সব কিছু দেখেন সব কিছু শোনান। তাকে জোরে চিৎকার করে ডাকার দরকার নেই ।

যদি তাই হয়ে থাকে , তবে ,,, কিয়ামতের দিনে ফেরেস্তাগন কে সাক্ষি দাড় করানো হবে কেন ? সব সময় মানুষের সাথে ২ জন ফেরেস্তা কেন ? আমাদের অঙ্গ প্রত্যাঙ্গ সাক্ষি দিবে কেন ? আল্লাহ সব কিছুই দেখেন সব কিছুই শোনেন । 

তা হলে কিয়ামতের দিনে এই বৃথা সময় নষ্ট কেন ? নাকি আল্লাহ হাজীর নাযির নন ? 

জবাব দিবেন।  


একজন বাদশাহ যেমন ছোট থেকে ছোট কাজ নিজের হাতে করেন না , যদিও নিজ হাতে করতে সক্ষম , ঠিক তেমন আল্লাহ তায়ালা ও কোন কাজ নিজে করেন না । কারন এটা ওনার সম্মানের খেলাপ । এটা সারা জাহানের মালিকের জন্য শোভা পায় না । 

আর এটা ও জানি আমি আজকের পোষ্ট এর জবাব দেয়ার জন্য আগামী আরো ১৫ দিনের দরকার হবে আপনার ।


তার আপত্তি নং (২) 

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যাকে যে কাজ করার দায়িত্ব দেন তাকে সেই কাজ করার ক্ষমতাও দিয়ে দেন। আজরাঈল আঃ কে আল্লাহ তাআলা সকল মানুষের জান কবচের দায়িত্ব দিয়েছেন, তাই কিভাবে করতে হবে, একসাথে অনেকের জান কবচের ক্ষমতাও আল্লাহ পাক তাকে দিয়েছেন। আর রাসূল সাঃ কে যেহেতু আল্লাহ তাআলা সারা পৃথিবীতে ঘুরে ঘুরে উম্মতীদের অবস্থা দেখার দায়িত্ব দেন নাই। তাই তাকে এ ক্ষমতাও দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই।


জবাব ;-একেই বলে চোরের মায়ের বড় গলা । আল্লাহ তায়ালা  নবী (সা) কে দায়িত্ব দেন নাই তার উম্ম্তের খোঁজ খবর রাখতে ।

কিন্ত্ দেওবন্দি আলেমদের কে সেই ক্ষমতা ঠিকই দেয়া হয়েছে যাতে তারা মিত্তুর পর দেওবন্দিদের সমস্যা দুর করার জন্য তারা সাহায্য করতে পারেন।  কবার থেকে এসে বউয়ের জন্য মিষ্টি আনতে পারে , কবর থেকে একজনের দিলের মধ্য জ্ঞানের সমুদ্র বইয়ে দিতে পারে , ক্ষত মাতা নিয়ে সাইয়েদ আহমেদ শাহ ইসমাইল কেদার বখতের বাবা সাথে দেখা করতে পারে , কবরে থেকে এসে দেওবন্দিদের ঝগরা মিটিয়ে দিতে পারে , মোনাযেরা করতে পারে । 

উপরে যে ১৪ টা আপত্তি পেশ করা হয়েছে তা দেখুন । তাতে বিস্তারিত দেয়া আছে । 


আর সে উপরে লিখেছে ;- 

চোখ খুলে মেশকাত শরীফের ১ নং খন্ডের ১৯৯ নং পৃষ্ঠায় দেখুন ইবারতের নিচে শহীদ অর্থ লিখা হয়েছে হাজির। আর প্রসিদ্ধ ডিকশনারী “সাররাহ”এ লিখা হয়েছে যে, শহীদ মানে হাজির ও স্বাক্ষ্য।

একেই বলে তেতুল খোর দেওবন্দি।  যা তাদের মত সমর্থন করে তখন মেনে নিবে শাহিদ মানে হাজির । এর পর আর বাকি গুলো মান্য করবে না ।

এবার দেখুন এর ১২ টা কি করে বাজে ;---
১) يَاايُّهَاا لنَّبِىُّ اِنَّا اَرْسَلْنكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا وَّدَاعِيًا اِلَى اللهِ بِاِذْنِه وَسِرَاجًا مُّنِيْرَا

[আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে সম্বোধন করে এরশাদ করেছেন, ওহে অদৃশ্য বিষয়াদির সংবাদদাতা! নিশ্চয় আমি আপনাকে প্রেরন করেছি, হাযির-নাযির, সুসংবাদদাতা হিসাবে এবং ভয় প্রদর্শনকারী করেছি আল্লাহর নির্দেশানুশারে তার দিকে আহবানকারী এবং উজ্জল প্রদীপ হিসেবে]

শাহিদাও মানে হাজির । আর তুমি স্বীকার করেছ । 
তো উক্ত আয়াত বলে আমার নবী কি হাজির ও নাযির নয় ? 
আর যদি না হয় তবে কেন নয় ?  এখানে তো আল্লাহ তায়ালা শাহীদ (হাজীর ) বলেছে । 
এখানে শাহিদাও শব্দ কি ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা হয়েছে জবাব দাও ।

(২) وَكَذَالِكَ جَعَلْنَاكُمْاُمَّةًوَّ وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهْدْاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدًا

[এবং কথা হলো এই যে আমি (আল্লাহর তা’আলা) তোমাদেরকে (উম্মতে মুহাম্মাদী ) সমস্ত উম্মত গনের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দান করেছি ,যাতে তোমরা অন্যান্য লোকদের ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করতে পার এবং এ রসুল (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম ) তোমাদের জন্য পর্যবেক্ষনকারী ও সাক্ষীরুপে প্রতিভাত হন ।
এখানে শাহিদ শব্দ ব্যাবহার করা হয়েছে । বল কেন আমার নবী হাজীর নয় ? 


৩) فَكَيْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ اُمَّةٍ بِشَهِيْدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هؤُلَاءِ شَهِيْدًا

[তখন কি অবস্তা হবে ,যখন আমি (আল্লাহ তা’আল্লা) প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন করে সাক্ষী উপস্থিত করব ,এবং হে মাহবুব ! আপনাকে সে সমস্ত সাক্ষীদের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরুপে আনয়ন করব।

এখানে ও শাহিদ ব্যাবহার করা হয়েছে । তবে বল আমার নবী কেন হাজির নয় ? 

উপরে যে তুমি লিখেছ আল্লাহ আমার নবী কে দায়িত্ব দেন নাই তার উম্ম্তের খবর রাখার , ও কোন প্রয়োজন নেই ।
তবে এখানে হাজির কি করে হল তখন ? 
কিয়ামতের দিনে সাক্ষি হবেন কি করে যদি তিনি না দেখেন এসব । 

আর আমাদের নবী (সা) কে তো এই ক্ষমতা দেয়াই  হয়নি তোমাদের মতে , কিন্ত তোমাদের আলেম কে তো সেই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে , আর আমি তুলে ও ধরেছি উপরে , আমি জানি তা ভাল করে । 

আপত্তি (৩) 
সে লিখেছে মালাকুল মওত (আ) একই সময় ওনেক যায়গায় জান কবচ করেন ।এতে যদি বলা তিনি ও হাজীর নাযির  , তবে নবী (সা? হাজির নাযির হওয়ায় কি বৈশিষ্ট থাকল ? 

জবাবে আমি বলব যে ;- আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও আমাদের নবী রাহমাতুল্লিল আলামিন । 

আমাদের নবী ও আলামিন আল্লাহ ও আলামিন । 
তো এখানে আলামিন শব্দ নবীর শানে ব্যাবহার করার কারনে আল্লাহর শানে যে আলামিন বলা হয়েছে তাতে কি কোনই বৈশিষ্ট নেই ? 

যদি বলেন আছে তবে আজরাইল (আ) এর সাথে হাজির শব্দ ব্যাবহার করার পরে ও আমাদের নবীর শানে হাজীর শব্দের বৈশিষ্ট্য কেন থাকবে না ? তার জবাব দেন ।


আর তার দুই মুখি ভাব দেখুন , সে লিখেছে ;- 
যদি বলা হয় যে, না আজরাঈল আঃ হাজির নাজির নয়, তাহলে আজরাঈল আঃ এর উদাহরণ দিয়ে রাসূল সাঃ এর হাজির নাজির প্রমাণিত হয় কি করে?

আপনি যে কোন এক নৌকা তে পা দেন। হয় আজরাইল (আ) কে হাজির স্বীকার করুন নয় তো অস্বীকার করুন।  বাকি টা আমরা দেখব ।

এর পর সে হাদিস পেশ করেছে (- নবী (সা) এর কবরের পাশে থেকে দরুদ পড়লে তিনি নিজে শোনেন ও দুরে থেকে দরুদ পড়লে ফেরেস্তা গন পৌছায় দেন।  রেফারেন্স ও দিয়েছে ।

জবাব ;- 
নবী কারীম (সা) কে জিগ্গেস করা হয়েছিল যে আপনার থেকে দুরে অবস্থানকারীদের দরুদের অবস্থা কি ? 
জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা) বলেন যে , আমি আমার প্রতি মোহাব্বত কারীদের  দরুদ নিজে শুনি এবং তাদের কে জানি ( দালাইলুল খায়রাত পৃ ৮১) 

দেখুন:-
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ ، ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﻋَﺎﺩَﻯ ﻟِﻲ ﻭَﻟِﻴًّﺎ ﻓَﻘَﺪْ ﺁﺫَﻧْﺘُﻪُ ﺑِﺎﻟْﺤَﺮْﺏِ ﻭَﻣَﺎ ﺗَﻘَﺮَّﺏَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ ﺃَﺣَﺐَّ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻤَّﺎﺍﻓْﺘَﺮَﺿْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻣَﺎ ﻳَﺰَﺍﻝُ ﻋَﺒْﺪِﻱ ﻳَﺘَﻘَﺮَّﺏُ ﺇِﻟَﻲَّ ﺑِﺎﻟﻨَّﻮَﺍﻓِﻞِ ﺣَﺘَّﻰ ﺃُﺣِﺒَّﻪُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃَﺣْﺒَﺒْﺘُﻪُ ﻛُﻨْﺖُ ﺳَﻤْﻌَﻪُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳَﺴْﻤَﻊُ ﺑِﻪِ ﻭَﺑَﺼَﺮَﻩُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺒْﺼِﺮُ ﺑِﻪِ ﻭَﻳَﺪَﻩُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﺒْﻄِﺶُ ﺑِﻬَﺎ ﻭَﺭِﺟْﻠَﻪُ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﻳَﻤْﺸِﻲ ﺑِﻬَﺎ  ﻭَﺇِﻥْ سَآَلنِى لَآُطَينَهُ وَلَئِن إِستَعَاذَنِى لَأُعِيذِنِهِ- 
 
 অর্থাৎ আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার অলীর সাথে শত্রুতা করে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করছি। আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে।আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমেও আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে। অবশেষে আমি তাকে ভালবেসে ফেলি। যখন আমি তাকে ভালবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে আমার কাছে কিছু চাইলে,আমি তাকে তা দেই। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি যা করার ইচ্ছা করি,সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগি না কেবল মু’মিনের আত্মার ব্যাপার ছাড়া। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার মন্দকে অপছন্দ করি।
(বুখারী শরিফ হাদীছ নং-৬৫০২, মেশকাত শরীফ হাদীছ নং-২২৬৬)।

শত শত প্রমান আছে যে , আল্লাহর কাছে ফেরেস্তাগন বান্দাদের আল্লামা পেশ করে থাকেন।  এমন কি ফেরেস্তা গন লিখতেই আছেন । 
কিন্তু উপরে যে হাদিসে কুদসী দেয়া হয়েছে , তাতে স্পষ্ট একটা বিষয় মুহাব্বাত ।
আল্লাহ বলেন আমি বালেদার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে ,  তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে । 

এটা মুহাব্বাতের মধ্যেখানে ফেরেস্তাদের কোন স্থান নেই । আল্লাহর কিছু ওলি থেকে থাকেন যাদের বিষয় শুধু আল্লাহ অবহত থাকেন , কোন ফেরেস্তা ও থাকেন না।  এঅ সু মুহাব্বাতের বিষয় ।

ঠিক তেমনি আপনি মুহাব্বাতের সহিত নবীর প্রতি দরুদ পেশ করলে মাঝখানে কিছুই প্রতিবন্ধকতা থাকতে পারে না । তিনি নিজ কানেই শুনবেন । 

যেমন আপনাদের কায়েম নানুতভী সাহেব সুরা আহযাব ৩৩/৬ এর ব্যাখা দিতে গিয়ে তাহযিরুন নাস এর ১০ নং পেজে লিখেছেন যে , বিস্বাসীদের প্রানের চেয়ে ও নিচে তার নবী । 

আপ যদি এত নিতে হয়ে থাকেন নবী তবে সালাম কেন শুনবেন না ? 



অন্যখানে আরো বলা হয়েছে যে , সালামের আওয়াজ আমার কানে  পৌছে তা যেখানে পাঠ করা হোক না কেন ( হুজ্জাতুল্লাহিল আলা আলামিন ) পৃষ্টা নং ৭১৩ ।
উক্ত হাদিস ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতি (রহ) বর্ননা করেছেন (আলাউল আফহাম )কিতাবের ৬১ নং পেজে ।

তো এখানে ও সালামের আওয়াজ কানে পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছে । 

আমার নবী আরো বলেছেন পুর্বে ও পশ্চিমে যে কেউ সালাম পেশ করবে , আমি ও আল্লাহর ফেরেস্তাগন সালামের উত্তর দেই ( আল আওজী, জালাউল আফহাম পৃষ্টা নং ১৯ । সামছুদ্দিন সাখাবী , আল কওলুল বদী পৃষ্টী নং ১৫৬ ।

তো আমার নবী ও সালামের জবাব দেয় আর ফেরেস্তাগন ও সালামের জবাব দেয়।  এর অর্থ এই যে , আমার নবী (সা) কে মুহাব্বাতের সহিত সালাম পেশ করলে আমার নবীই জবাব দিবেন , আর যদি কাম সাড়া নামে সালাম দেন তবে ফেরেস্তাগন জবাব দিবে । 


আর  বলব যে তোমাদের আলেম মাওলানা যাকারিয়া এর কিতাব (ফাযায়েলে দরুদ ) অধ্যায় ভাল করে পাঠ করতে । তা হলে এই দরুদ শোনা নিয়ে কোন আপত্তি থাকবে না । 


ফাজায়েলে আমল কিতাবের ফাযায়েলে দরুদ অধ্যায় তে বলা হয়েছে যে (- মানাবেজুল হাসানাত) গ্রন্থে ইবনে ফাকেহানীর কিতাব ফজরে মুনিহা কিতাব থেকে বলেছেন যে :-এক বুযুরগ বলিয়াছেন এক সময় এক জাহাজ ডুবিয়ে যাইতেছিল , আমি সেই জাহাজে ছিলাম । হঠাৎ আমার তন্দ্রা এসে যায় । আমি স্বপ্নে রাসুলুল্লাহ (সা) কে দেখি । তিনি বলেন যে এই দরুদ লোকজনদের কে হাজার বার পাঠ করতে বল ।
উক্তি দরুদ তিনশত বার পড়তে পড়তে জাহাজ বিপদ থেকে রক্ষা পাইল ( ফাযায়েল এ দরুদ পেজ নং ৮২ কাহীনি নং ৪) 

আমার ভাই তাবলিগি । উপরে বলেছ তুমি যে , নবী কে এই কাজ দেয়া হয়নি যে তিনি ঘুরে ঘুরে উম্ম্তের খোঁজ নিয়ে বেড়াবেন । 
তো এখানে তোমাদের কিতাব থেকে তো এটা প্রমানিত যে , তিনি উম্ম্তের বিষয় সজাগ । এখন কি বলবেন ? 
আর দরুদ কাছে থেকে বললে শুনতে পায় দুরে থেরে পড়লে তিনি শোনেন না ! 

তো তোমার আলেম তাহযিরুন নাস কিতাবে তে বলেছেন বিস্বাসীদের কাছে নবী তার প্রানের চেয়ে ও কাছে ( তাহযিরুন নাস পেজ নং ১০ ) 

তো ভাই এটা কেমন কথা হল বলেন তো ? 

দুর কথা টা অর্থ  দুরত্ব করা হয়েছে আমাদের দেশে । আসলে এটা  দুরত্ব নয় । বরং   এটা মুহাব্বাতের দুরত্ব । 

কিছু কিছু মানুষের কথা আল্লাহ নিজে শোনেন । আবার কারো কারে কথা ওনার কাছে পৌঁছানো হয় । আবার কারো দোয়া পৌছেই না আল্লাহর দরবারে । তা শুধু জমা হয়ে থাকে । 
এই সব গুলো মুহাব্বাত এর বিষয়।  মুহাব্বাত সহ দরুদ পাঠ করলে আমার নবী নিজ কানেই শোনেন । যেমন ;- 
তাদের কিতাব কারামতে এমদাদীয়া তে লিখেছেন যে ;- আমি( মাওলানা মুহাম্মাদ হাসান , মৌলভী মনোয়ার আলী ও মোল্লা মহিবুদ্দিন হযরতের ( হাজী ইমদাদুল্লাহ)'র খেদমতে হাজীর হলাম একটা জরুরী কথা আরজ করার জন্য  ।হযরত নিয়ম মাফিক উপরে তলে গিয়েছিলেন , খবর দিয়ে ডাক দেয়ার মত কোন লোক ও ছিল না । ডাক দেয়া ও বেআদবি মনে হতে লাগল । তাই আমরা নিজেদের মধ্য পরামর্শ করলাম যে হযরতে কলবের প্রতি মনোনিবেশ করে বসে গেলে জবাব পাওয়া যাবে বা হযরত নিজে তাশরিফ আনবেন ।

কিছুক্ষন অতিবাহিত হতে না হতে হযরত উপর থেকে নিচে তাশরিফ নিয়ে এলেন ।
আমরা ক্ষমা চাইলাম যে ওই সময় হযরত সম্ভবত শুইয়েছিলেন , অনর্থক কষ্ট দিলাম ।
হযরত বললেন , কি করে শুইবো ? তোমরা তো আমাকে শুইতে দিলে না ( কারামত এ এমদাদীয়া , মাওলানা মোহাম্মাদ হাসান লিখিত . পৃষ্টা নং ;--১৩ )  

তো এখন কথা হচ্ছে যে , আমার নবীর কবরের পাশে গিয়ে যদি দরুদ পড়লে তিনি শোনেন ও দুরে ওনার প্রতি দরুদ পড়লে যদি উনি না শোনেন , তবে তোমাদের পীর সাহেব উপরের তলায় থেকে নিচে ওনার মুরিদের মনের কথা কু করে শুনতে পান ? 
মুরিদ নিচে থেকে নিজের জরুরাত কি করে উপরে পৌছে দিলেন ? মুখে উচ্চারন ও না করে । মোরাকাবা চুপ করে হয় , শব্দ করে নয় । 

এটা কি আমার নবীর ক্ষমতার চেয়ে তোমার পীরের পীর গীরি বেশি হয়ে গেল না ? 

ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতি (রহ) ওনার কিতাব (আনিসুল জলীল)  এর ২২৭ নং পেজে লিখেছেন যে , রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার আমার ওফাতের পর বেশি বেশি করে দরুদ পড়বে ।তোমাদের দরুদ আমি সরাসরি শুনি ) 

হাফেজ ইবনে কাইয়্যুম তার কিতাব (জিলাউল ইহফাম) গ্রন্থের ৭৩ পৃষ্টায় ১০৮ নং হাদিসে বলেছেন যে ;- রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন যে কোন স্থানে যে কোন বেক্তি দরুদ পাঠ করলে পাঠকের আওয়াজ আমার কানে পৌছে ।এই রীতি আমার ওফাতের পরেও বলবৎ থাকবে ( হাফেজ ইবনে কাইয়ু্যম রচিত কিতাব জিলাউল ইহফাম পেজ নং ৭৩ হাদিস নং ১০৮)

আমি চাইলে এমন পাল্টা হাদিস দিতে পারি । কিন্ত্ হাদিস দিলে সে তার জবাবে অন্য হাদিস পেশ করবে ব্যাক্ষা ছারা । 
তাই তাদের কিতাবের কথা তুলে ধরলাম।  এবার তারে ও মুশরিক বলুক । 

আরো বলতে ইচ্ছা হচ্ছে যে ;- তারা শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দিস এ দেহলভী (রহ) এর উত্তরসূরি মনে করে ও দাবি করে নিজেদের কে । শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দিস এ দেহলভী (রহ) এর অমর গ্রন্থ মাদারেজুন নবুয়াত এর ১ম খন্ডের ১৩৫ পৃষ্টা ৫ম অধ্যায় এ লিখেছেন যে ;- কোন কোন আরেফ বেক্তি বলেছেন যে ;- তাশাহুদ ও আসসালামুআলাইকা আইয়্যুহান নাবী এই কারনে বলার প্রচলন করা হয়েছে যে , হকিকতে মোহাম্মাদি সৃষ্ঠি কুলের অনু পরমানু এমন কি সম্ভবপর সবকিছুতেই বিদ্যমান আছে , 

একই বংশের বিখ্যাত সুফি ও বুযুর্গ শাহ ওলিউল্লাহ মুহাদ্দিস এ দেহলভী (রহ) লিখেছেন যে , আমি তার প্রতি যখনই সালাম পেশ করি , তিনি (নবী সাঃ) খুশি হন ও তা প্রকাশ করেন ।কেননা তিনি সারা বিশ্বের জন্য রহমত স্বরুপ
 ( ফুযুজুল হারামাইন পৃষ্টা নং ৮৪-৮৫)

শাহ আব্দুল আজীজ (রহ) আরো বলেন যে ;- নবী কারীম (সা) সকল পাপ কে জানেন , তোমাদের আমলের স্তর সম্পর্কে অবগত , তোমাদের ভাল আমল অন্তরের নিষ্টা কপটতা সম্পর্কে ও অবগত ( সুরা নাহলের ৮৯ নং আয়াতের তাফসির , তাফসীরে আজীজি পেজ নং ৫১৮) 


আর কি বলতাম আমি ? আমার তো আরো ভাল করে ভাষা জানা নাই এর চেয়ে। 


এর পর সে লিখেছে হিজরত ;--- 
হিজরত মানে ছেরে দেওয়া । মক্কা থেকে মদিনায় চলে যাওয়ার কারনে যদি নবী (সা) কে হাজির মান্য করা হয় , তবে হিজরত অস্বীকার করা হবে ।
কারন তিনি তো সব যায়গায় হাজির ।

মিয়া ভাই। আল্লাহ তো হাজির। এটা মান্য করতে তো কষ্ট নেই। 

এখন আমাকে জবাব দিন যে ;-  
আল্লাহ তায়ালা যে রাতের তৃতীয় অংশে ৭ম আসমানে নেমে আসেন , তখন কি আল্লাহর আরশ খালি পড়ে থাকে ? 
আপনি তো আল্লাহ কে সর্বত্র হাজির মান্য করেন । তো আমাকে এটার ব্যাখা দিন যে , ৭ম আসমানে যখন আল্লাহ নেমে আসেন তখন আল্লাহর আরশ কি খালি থাকে ?  
৭ম আসমানে নেমে আসার মানে কি আল্লাহর আরশ ছেরে চলে আসা নয় ? 

আপনি এটার জবাব দিন । আমি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের ব্যাখা পেশ করব। 


আর আমাদের ইমান হল ;--
ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-কে আল্লাহ তা‘আলার অবতরণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা যে রাত্রের তৃতীয় অংশে সপ্ত আকাশে নেমে আসেন, এ নেমে আসাটা কেমন, কিভাবে নামেন, এটা বলার ক্ষমতা কাউকে দেওয়া হয়নি। কেমন করে নামেন এটা আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন।আক্বীদাতুস সালাফ আছহাবুল হাদীছ, পৃঃ ৪২; শারহুল ফিক্বহুল আকবার, পৃঃ ৬০। 


আপনাকে যে প্রশ্ন করা হয়েছে , তার জবাব দিবেন।  কেমন। 

অনুরুপ আপনি মিরাজের কথা বলেছেন ;- যে নবী হাজীর নাযির হলে মিরাজে নিয়ে গেলেন কেন ? 

জবাব ;- আল্লাহ আপনার মতে সর্বত্র । তাই যদি হয় তবে মিরাজের রাতে নিয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ এর কেন দরকার ? 
আল্লাহ তো এখানেই দেখা করতে পারতেন ? 

আর আল্লাহর ইলম আমাদের কে পরিবেষ্টন করে আছে তা তো মান্য করতে কষ্ট বেশ আপনার।  তো জবাব দিন 
উপরের আপত্তি আল্লাহ ৭ম আসমানে নেমে আসেন তার জবাব দিবেন।  


তো মিরাজের রাতের বিষয় ও হিজরতের বিষয় খোলাসা হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ ।



সবার শেষে লিখেছে ;----

তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের খাস বৈশিষ্ট হাজির নাজির হওয়াটি রাসূল সাঃ এর জন্য সাব্যস্ত করাটা একটি শিরকী আক্বিদা ছাড়া কিছু নয়।

জবাব ;---- হাজীর নাযির হওয়ার মধ্য আল্লাহ হওয়ার কোন গুন নেই । 

যেমন আপনাদের আলেম থানভী লিখেছেন যে ;- অতি অল্প সময় পৃথীবি ভ্রমন করা নিয়ে আবু ইয়াজিদ কে জিগ্গেস করা হয়েছিল । তিনি বলেন যে , এটি কোন পুর্নতা জ্ঞাপক বৈশিষ্ট নয় ।দেখুন , ইবলিশ পৃথিবির পুর্ব থেকে পশ্চিম নিমিষেই অতিক্রম করে (হিফযুল ইমান  , পৃষ্টা নং ৭) 

তো নবী (সা) কে হাযির ও নাযির জ্ঞান করা তে এতে আল্লাহ হওয়ার কোন বৈশিষ্ট্য নেই । 
আপনি কয়েক যায়গায় আমার নাম নিয়ে বলেছেন যে (- সোহেল রানার মতে শয়তান ও হাজীর নাযির । এবার কিন্ত্ আমি তা আপনাদের কিতাবের রেফারেন্স দিয়ে দিলাম।  আশা করব এতে সোহেল রানার নাম আর আসবে না , কারন সোহেল রানা আপনার মত কানা হয়ে কথা বলে না প্রমান ছারা । 


আমাদের আকিদা হল ;--ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, আল্লাহ তা‘আলার ছিফাত-এর সাথে সৃষ্টজীবের ছিফাতকে যেন সাদৃশ্য করা না হয় এবং আল্লাহ তা‘আলার ছিফাতের মধ্যে দু’টি ছিফাত হচ্ছে- তাঁর রাগ ও সন্তুষ্টি। রাগ ও সন্তুষ্টি কেমন একথা যেন না বলা হয়। এটাই হচ্ছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের কথা। তাঁর রাগকে শাস্তি এবং সন্তুষ্টিকে যেন নেকী না বলা হয়। আমরা তাঁর ছিফাত সাব্যস্ত করব। যেমনভাবে তিনি নিজের জন্য সাব্যস্ত করেছেন। তিনি একক ও অদ্বিতীয়, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি কাউকে জন্ম দেননি ও তাঁকেও জন্ম দেওয়া হয়নি এবং কেউই তাঁর সমকক্ষ নয়। তিনি জীবিত, সবার উপর ক্ষমতাবান। তিনি শুনেন, দেখেন, সব বিষয় তাঁর জানা। আল্লাহর হাত তাদের সবার হাতের উপর। আল্লাহর হাত সৃষ্টির হাতের মত নয় এবং তাঁর মুখমন্ডল সৃষ্টির মুখমন্ডলের মত নয়

ফিক্বহুল আবসাত্ব, পৃঃ ৫৬।


এটা  আমাদের আকিদা । আল্লাহ হওয়ার জন্য হাজির হওয়া গায়েবের ইলম জানা কোন বৈশিষ্ট নয় । 


বরং আল্লাহর বৈশিষ্ট্য যে আল্লাহ কে কেউ পয়দা করেন নাই , আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষি নন , আল্লাহ কে কেউ জানান না । তার সৃষ্ঠি ও নেই ও তার সমাপ্তি ও নেই।  এটাই আল্লাহর সিফাত।  আমি উপরে ইমাম আবু হানিফা (রহ) এর বরাত দিয়ে তা প্রমান করেছি ।


ইমাম আবু হানিফা (রহ) আরো বলেন ;-

আল্লাহ তা‘আলার ছিফাতের সাথে মানুষের অর্থাৎ সৃষ্টির গুণের সাদৃশ্য হবে না। যেমন আল্লাহ তা‘আলা জানেন। কিন্তু সৃষ্টির জানা তাঁর মত নয়। তাঁর ক্ষমতা-শক্তি সৃষ্টির ক্ষমতার মত নয়। তাঁর দেখা-শুনা, কথা বলা, মানুষের বা সৃষ্টির দেখা-শুনা বা কথা বলার মত নয়।

আল-ফিক্বহুল আকবার, পৃঃ ৩০২।



কাজেই আমাদের নবীর হাজীর হওয়া আল্লাহর মত নয় , আজরাইল এর হাজির নাযির হওয়া আল্লাহর মত , আল্লাহর দেখা শোনা সৃষ্টির  মত নয় । 

তার কথা বলা সৃষ্টির  কথা বলার মত নয় ।


তাই সৃস্টির কোন কিছুই আল্লাহর মত নয় । 


তাই মানুষ কে কি করে আল্লাহর সাথে শরিক সাব্যস্ত করা সম্ভব ? 


এর পর লিখেছে আমার জবাব দিবে ।


আমার জবাব দিতে হলে তোমাদের তেঁতুলের গাছ কে আনতে হবে । শুধু তেতুল দিয়ে কাজ হবে না ।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন