বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

হজ্জের নিয়ত কেমন হবে ? সুফীবাদ

হাজীগনের খেদমতে তওফা ;-শেয়ার করুন সকলে যাতে হাজীগনের নজরে পড়ে ।

হজ্জের মৌসুম এখন , আর কদিন বাকি আছে পবিত্র হজ্জের । সারা বিশ্বের হাজীগন একত্র হতে চলেছেন ।

তাদের প্রতি আমার ছোট এই খেদমত , আল্লাহ কবুল করুন। আমীন ।


আমরা যেহেতু তরীকত পন্থি , সেহেতু আমাদের বুযুর্গদের মধ্য উত্তম আদর্শ আছে, তা যদি আমরা অনুসরন করি , তবে মন্জিল বেশি দূর নয় । 

আল্লাহ তায়ালা বলেন ;--
আমাদের কে সকল পথ দেখাও (৬)
সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে  
 এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।
 
সুরা ফাতেহা আয়াত ৭ 

ঠিক তেমনি , আমরা তাদের কে অনুসরন করব , যাদের কে আল্লাহ তার পথে পরিচালিত করেছেন , 

তরিকতের ইমাম হযরত জুনায়েদ বাগদাদি (রহ) এর হজ্জ নিয়ে একটা সুন্দর কথোপকথন পাওয়া যায় ।
আমি তুলে ধরলাম ;-

এক বেক্তি হযরত জুনায়েদ বাগদাদী (রহ) কাছে খেদমতে এলে জুনায়েদ বাগদাদী (রহ) জিগ্গেস করেন যে , 
তুমি কোথা থেকে এসেছে ? 
লোকটা ;- আমি হজ্জ করে এসেছি ।
হযরত ;- তুমি হজ্জ করেছ ? 
লোকটা ;- জী হা আমি হজ্জ করেছি 
হযরত:-তুমি যখন হজ্জ করার নিয়তে ঘর থেকে বের হয়েছিলে , তখন কি তুমি তোমার পাপ পরিত্যাগ করার নিয়ত করেছিল কি ? 
লোকটা ;- না, আমি তো এই ব্যাপারে কোন           
              চিন্তা ও করিনি ।
হযরত ;-তবে তো তুমি হজ্জ করার নিয়তে বাড়ী 
             থেকে বের হওনি ।আচ্ছা তুমি যে
          হজ্জের সফরে যে সকল মন্জিল    
            অতিক্রম করেছ ,এবং যে সব সেখানে      
         রাত অতিবাহিত করেছ , তখন তুমি 
         আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মনযিল,এবং
        সেই পথের ঘাঁটি সমুহ অতিক্রম করার 
       নিয়ত করেছিলে কি ? 

লোকটা ;--না আমি করিনি ।
হযরত ;--- তা হলে তোমার হজ্জ কিভাবে শুদ্ধ 
           হল । আচ্ছা যখন তুমি ইহরাম বাধার 
            নিয়ত করেছ ও প্রাত্যাহিক কাপড় দেহ 
            থেকে ছেড়েছ ,তখন তার সাথে সাথে 
          তোমার খারাপ স্বভাব বর্জন করেছ কি?
লোকটা;- না , সেদিকে আমি খায়ালই করি নাই।

হযরত ;-তা হলে তোমার ইহরাম বাধাই ঠিক 
         হয়নি ।যখন তুমি আরাফার ময়দানে 
         দন্ডায়মান , তখন তোমার মনে হয়েছিল 
        কি তুমি আল্লাহর দরবারে দন্ডায়মান ও
        তুমি আল্লাহ কে দেখছ ।
লোকটা;-না , এ কথা আমার কল্পনা ও হয়নি ।

হযরত;- তা হলে তুমি যেন আরাফাতে যাওনি।
            তুমি মুযদালিফায় গিয়ে তোমার কাম 
            প্রবৃত্তি তাড়না পরিত্যাগ করেছ কি ? 
লোকটা ;- না ,
হযরত;- তা হলে তুমি মুযদালিফায় যাওনি ।
         তুমি তাওয়াফ করার সময় আল্লাহর
          অনুগ্রহ অনুভব করেছ কি ? 
লোকটা ;-না , আমি অনুভব করিনি ।

হযরত ;-তা হলে তুমি তাওয়াফই করনি ।সাফা              
           মারওয়ায় দৌড়ানোর সময় তুমি কি এর          
         কারন সম্পর্কে চিন্তা করেছ ? 
লোকটা ;- না করিনি ।
হযরত ;-   তা হলে তোমার সায়ী হয় নি ।
           কুরবানী করার সময় তোমার পাপ
           বিসর্জন দিয়েছ কি ? 
লোকটা ;-না করি নি , 
হযরত ;-তা হলে তোমার কুরবানী কি করে 
          হল ? আচ্ছা কংকর নিক্ষেপের সময় 
         তুমি তোমার অসৎ সঙ্গিদের পরিত্যাগ 
         করবে ও তাদের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করার
          নিয়ত করেছ কি ? 
লোকটা ;--না করি নি , 
হযরত ;-- তা হলে তোমার হজ্জ হয়নি , তুমি 
            আবার ফিরে যাও ও পুর্ন নিয়তে এই সব গুনাবলীর সাথে হজ্জ করে মাকাম এ ইব্রাহীম পরেযন্ত পৌছ , যে মাকাম সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেছেন ( ইব্রাহীম তার প্রভুর কৃতজ্ঞতার হক আদায় করেছে) সুরা আন নাজম , আয়াত ৩৭ ।


       
তো আশা করব আপনারা হজ্জ ঠিক এমনি ভাবে পালন করবেন যেমন ভাবে করলে মাকাম এ ইব্রাহীম পৌছতে পারবেন । 

আমাদের সকলের জন্য দোয়া করবেন । 

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়াহারাকাত ।

সোহেল রানা । 

         

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন