রবিবার, ২৮ জুন, ২০১৫

মোনাফেক এ ভরপুর ফেসবুক

হযরত আবু ইয়াহিয়া (রহ) বলেন যে হযরত আবু হোযায়ফা (রা) কে জিগ্গেস করা হল মোনাফেক কারা ? তখন তিনি বললেন যে ;- যে ব্যাক্তি ইসলামের প্রশংসা করে কিন্তু পালন (ইবাদত ) করে না (মুসান্নাফ এ আবু শায়বা) জিল্দ১৫ পৃ ১১৫ ।

আজ আমাদের ফেসবুক জগতে হাজারো মোনাফেক আমি দেখতে পাই । আর একটা কথা এখানে বলে রাখি যে হযরত হোযায়ফা (রা) একবার এক মোনাফেকের জানাযা নামাযে শরিক হননি । হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা) হোযায়ফা (রা) কে বললেন যে আপনি যে জানাযা তে গেলেন না , লোকটা কি মোনাফেক ছিল । হোযায়ফা (রা) বলেন জী হা । তখন হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা) বললেন যে ;- আল্লাহর কসম দিয়ে বলি আপনাকে , আমি ও কি মোনাফেক । হোযায়ফা (রা) বললেন না । এরপর বললেন যে , আমি এধরনের কথা আর কাউকে কোন দিল বলব না ( ইবনে আবু শায়বা) ৪৮১/৭

হযরত হোযায়ফা (রা) ছিলেন মুসলিমদের ইন্টেলিজেন্ট , বা গোয়েন্দী । তিনি সেই সময়ের মোনাফেকের কে হাড়ে হাড়ে চিনত। রাসুলে আরাবি  সাল্লেল্লাহু আলাইহে ওয়া সালাম ওনাকে সকল মোনাফেকের বিষয় অবহিত করে দিয়েছিলেন। আর হযরত ওমর (রা) যেহেতু আল্লাহভীরু লোক ছিলেন তাই তিনি জিগ্গেস করেছিলেন । 

যে খানে হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (রা) নিজের ইমান নিয়ে শংকিত ছিলেন সব সময় , আল্লাহর ভয় যার বুকের মধ্য সব সময় হাতুড়ী পিটা করত সেই আজীম ও জলিল ক্বদর সাহাবী ও এ চিন্তা করতেন যে (- আমি মোনাফেক দের কাতারে চলে গেলাম নাকি  ! 

আর আজ আমরা লম্বা লম্বা পোষ্ট লিখি হাদিস কোরানের আয়াত ও বুযুর্গদের কথা কথায় কথায় পাখির বুলির মত বলতে থাকি । আমরা আমল করি না। সকালে আমাদের ঘুম ভাংগানা , কাছে আমাদের ফেসবুকে চ্যাট করতে করতে রাত পার হয় না । আমরা কি তবু ও মোনাফেক নই ? আর আমাদের যায়গা কি জাহান্নামের সর্ব নিম্ন স্তর নয় ? তবু আমরা মুমিন  , তবু আমরা জান্নাতের আশা করি , মনে হয় এ যেন কলার মত , ছিলকা তুলে খেয়ে ফেলার মত । আল্লাহ তুমি হেদায়াত দান কর । 

আর হা। এর পর ও আপনাকে যে পীর সাহেব কে বা যে আলেম নামের জালেম কে , বা কথিত ফেসবুকে সুন্নিয়াতের ধজাধারী কে  বা নিজেকে মোনাফেক মনে হয় না তাদের কি বলব যে আপনারা ইমাম বসরী (রহ) এর উক্তি থেকে শিক্ষা গ্রহন করুন ।


;- একবার একজন লোক হযরত হাসান বসরী (রহ) কে জিগ্গেস করল , মোনাফেক কি আছ ও বিদ্যমান ? তিনি বললেন যে ;- যদি বসরার অলিগলি থেকে সমস্ত মোনাফেক বের করে দেওয়া হয় তা হলে বসরা বিরানভুমিতে পরিনত হবে । (দাজ্জালের ফেতনা) 


ইমাম হাসান বসরী (রহ) সেই সকল তাবেয়ীদের মধ্য অন্তরভুক্ত যাদের নাম হযরত ওয়ায়েস ক্বারনী (রহ) এর পরেই আসে । কারন হযরত ওয়ায়েস ক্বারনী (রহ) সমস্ত তাবা তাবেয়ীন দের ইমাম ও মাথার তাঁজ । 

কি বলেছেন ইমাম হাসান বসরী ? যে যদি সকল মোনাফেক দের কে বের করে দেওয়া হয় বসরী থেকে তাহলে বসরা শহর বিরানভুমিতে পরিনত হবে । 

সেই যুগ ছিল সাহাবা (রা) গনের পরের যুগ । 

সেই যুগের অবস্থা যদি এই হয় তবে আজকের যুগে আপনি কি ভাবে নিজেকে মোনাফেকের খাতা থেকে দূরে রাখতে চান ? 

উত্তর আশা করছি ।

আমি একচা কিতাব পড়েছিলাম। নাম মনে আসছে না । 

তাতে ছুফিয়ান সাওরি (রহ) বলেছিলেন যে ;-  আমরা সাহাবা (রা)দের দেখে পাগল মনে করতাম । কারন তারা সারা রাত ইবাদত করত ও দিনে পাগলের মত চলাচল করত । 
আর তারা আমাদের কে বলত , দুনিয়ার পাগল (পুজারী) 


সাহাবাগন ছিলেন পাগলের মত , তারা আল্লাহর ভয়ে কম্পিত হয়ে পাগলের মত চলত । 
আর তাবেয়ীদের কে দেখে বলত এরা দুনিয়ার পাগল । 

আজ আপনারা শরির থেকে এলকোহল মিশ্রিত পারফিউমের খুশবুতে রাস্তার মশা মাছির ও কষ্ট হচ্ছে , আর আপনি কতই সুন্দর মুড নিয়ে চলছেন । শর্ট শার্ট চিপা জিন্স প্যান্ট আপনার শরিরে শোভা পাচ্ছে । ফোম সেব করেন জিলেট বা আরো ভালো ব্লেড দিয়ে । তবু আপনি ইমানদার ? হায় আবসোস ।

আরো একটু যোগ করছি , আর তা হচ্ছে -
আপনারা হয়ত নিজেকে মোনাফেকি থেকে পুত-পবিত্র মনে করছেন , যে এই সোহেল সকলকেই মোনাফেকের কাতারে কেন লাইনে দাড় করাল । 
;- মুয়াল্লা বিন যায়েদ বর্নানা করেন যে ;- আমি হযরত হাসান বসরী (রা) কে মসজিদে আল্লাহর নামে শপথ করে বলতে শুনেছি যে ;-কোন মুমিন এমন অতিবাহিত হয়নি , যে নিজেকে নেফাকির ভয় করেনি  । আর এমন কোন মোনাফেক অতিবাহিত হয়নি যে নিজেকে নেফাক থেকে পবিত্র মনে করেনি । তিনি আরো বলেন যে , যে নিজের ব্যাপারে নেফাকির ভয় করে না সে প্রকৃত মোনাফেক (সহিফায় মোনাফেক , জাফর বিন মুহাম্মদ ফারাবী লিখিত ) 

তো বলুন আপনি নিজে , এবার কোন খাতায় আছেন ? শুধরায় নিন । 

আরে যদি কঠিন করে বলি তবে ;- শুনুন। আজ আপনাদের ইমান মনে হয় ইস্পাত দিয়ে তৈরি হয়েছে । আজ আপনারা এক একজন জান্নাতের ঠিকাদারি নিয়ে নিয়েছেন , আর অপর পক্ষকে কাফের বলেন এটা সেটা হাজারটা । 

আল্লাহ যদি আপনাদের কে ক্ষমতা দিতেন , তা হলে আমার মনে হয় আপনারা গুটিকতক বাদে জান্নাতে কারোই প্রবেশ করার অধিকার দিতেন না , আর জাহান্নামের এক বিন্দু যায়গা আপনারা বাকি রাখতেন না নিজেদের প্রতিপক্ষদেক দিয়ে ভরিয়ে দিতেন সব । 

হযরত আয়ুইব (রহ) বলেন  যে হাসান বসরী (রহ) বলেছেন এমন কোন মুমিন  ব্যাক্তি  এই পেরেসানী ব্যাতীত সকাল সন্ধা অতিবাহিত করেন না ,  যে কখন নেফাকি আমার ভিতরে প্রবেশ করবে ও আমি গোমরাহ হয়ে যাব । 

কথিত পীরদের মুরিদ হয়েছেন আপনি , আপনার পীর সাহেব যে কি শিক্ষা দিল তা আল্লাহ ভালো জানে । আর হা। যদি পীর সাহেব তার মুরিদদের কে শিক্ষা দিয়ে শিক্ষিত করে তুলতে না পারে তবে এমন মুরিদের কারনে পীর সাহেব মজি যে জাহান্নাম এ যাবে তা কিন্তু বলার অপেক্ষা রাখে না । 

খোলা তলোয়ার। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন