শুরু করব কি দিয়ে চিন্তা করছি শুধু।
পবিত্র মদিনা শরীফে আত্মঘাতী হামলা , কিন্তু করা এরা ? মুসলিম !!!!!!!!!
যারা কালো পতাকায় লেখা ""আল্লাহ "" রাসূল '''মুহাম্মাদ এর ব্যানার নিয়ে হাতে বন্দুক নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সেই সকল মুসলিম ?
তারা কি আসলেই মুসলিম ?
দেখা যাক তারা কেমন মুসলিম।
তার আগে মদিনা শহর যারা হামলা করল , মানুষ মারল সেই মদিনা সম্পর্কে কিছু জেনে নেয়া যাক বিষয় ---
আল্লাহ সুবহানু তায়ালা পবিত্র কোরান এ মদিনা শরীফের নাম ৪ বার নিয়েছেন যথা ::
(১) সূরা তাওবাহ: ১০১,
(২)সূরা তাওবা ১২০,
(৩)সূরা আল আহযাব: ৬০
(৪) সূরা আল-মুনাফেকুন: ৮
আর হাদীসে এ নামটি অসংখ্যবার এসেছে।
মদিনার আরেকটি নাম ‘ত্বাবাহ’। ইমাম মুসলিম জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى سَمَّى الْمَدِينَةَ طَابَة»
‘‘আল্লাহ তা’য়ালা এ মদিনাকে ‘ত্বাবাহ’ নামে নামকরণ করেছেন।’’ [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৩৪২৩]
এ শহরের অন্যতম আরেকটি নাম হল ‘ত্বাইবাহ’ বা ‘ত্বাইয়েবাহ’। ইমাম মুসলিমের আরেকটি বর্ণনা এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«هَذِهِ طَيْبَةُ هَذِهِ طَيْبَةُ هَذِهِ طَيْبَة»
‘‘এ নগরী হল ত্বাইবাহ, ত্বাইবাহ, ত্বাইবাহ’’। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৫৭৩]
ত্বাবাহ ও ত্বাইবাহ কিংবা ত্বাইয়েবাহ শব্দগুলোর অর্থ হল পবিত্র বা উত্তম।
আরো যে সব নামে মদিনাকে অভিহিত করা হয় তম্মধ্যে রয়েছে ‘আদ-দার’, ‘আল-হাবীবা’, ‘দারুল হিজরাহ’, ‘দারুল ফাতহ’ ইত্যাদি।
আর জাহেলী যুগে মদীনার নাম ছিল ‘ইয়াসরিব’। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ নামে এ শহরটিকে অভিহিত করতে অপছন্দ করেছেন। ইমাম বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«أُمِرْتُ بِقَرْيَةٍ تَأْكُلُ الْقُرَى يَقُولُونَ يَثْرِبُ وَهْيَ الْمَدِينَة»
‘‘আমাকে এমন এক জনপদে হিজরত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে যা অন্য সব জনপদকে গ্রাস করবে। লোকজন একে ইয়াসরিব বলে। অথচ এটি হল মদিনা’’। [সহীহ বুখারী - ১৮৭১ ও সহীহ মুসলিম-৩৪১৯]
তো এই হল মদিনার সামান্য বর্ননা।
আমাদের নবীর কারণে মদীনা মনোয়ারা হয়ে গেলো, যে পাপিষ্ট শহর ইয়াসবির পবিত্র হল , যে নবীর কারণে মদীনা মুসলমানের দ্বিতীয় হেরেম হল , সেই মদিনায় যারা হামলা করল তারাকবে মুসলমান ছিল ?
তা একটু দেখে নেয়া যাক ;
বুখারী শরীফে হাদীস নং ১৭৪৬
আবু নুমান রহ……….আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মদীনা এখান থেকে ওখান পর্যন্ত হারম (রূপে গণ্য)। সুতরাং তার গাছ কাটা যাবে না এবং কুরআন-সুন্নাহর খেলাফ কোন কাজ মদীনায় করা যাবে না। যদি কেউ কুরআন-সুন্নাহর খেলাফ কোন কাজ করে তাহলে তার প্রতি আল্লাহর লানত এবং ফেরেশতাদের ও সকল মানুষের।
বোম্ব মারা তাও আবার আত্মঘাতী হামলা এটা কোন কোরান ও সুন্নাহর আমল করল তারা একটু জানবেন কি ?
আরো দেখুন
বুখারী শরীফ হাদীস নং ১৭৪৯
মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ………আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের নিকট আল্লাহর কিতাব এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, এই সহীফা ছাড়া আর কিছুই নেই। তিনি আরো বলেন, আয়ির নামক স্থান থেকে অমুক স্থান পর্যন্ত মদীনা হল হারম। যদি কেউ এতে কুরআর-সুন্নাহর খেলাফ অসঙ্গত কোন কাজ করে অথবা কুরআর-সুন্নাহর খেলাফ আচরণকারী কে আশ্রয় দেয়, তাহলে তার উপর আল্লাহর লানত এবং সকল ফেরেশতা ও মানুষের। সে ব্যক্তির কোন নফল এবং ফরয ইবাদত কবুল করা হবে না। তিনি আরো বলেন, মুসলমান কর্তৃক নিরাপত্তা দানের অধিকার সকলের ক্ষেত্রে সমান। তাই যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দেওয়া নিরাপত্তাকে লংঘন করবে, তার প্রতি আল্লাহর লানত এবং সকল ফেরেশতা ও মানুষের। আর কবুল করা হবে না তার কোন নফল কিংবা ফরয ইবাদত। যে ব্যক্তি তার মাওলার (মিত্রের) অনুমতি ব্যতীত অন্য কওমের সাথে বন্ধুত্ব করবে, তার প্রতিও আল্লাহ লানত এবং সকল ফেরেশতা ও মানুষের। তার নফল কিংবা ফরয কোন ইবাদতই কবুল করা হবে না। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, ‘আদলুন’ অর্থ বিনিময়।
এখন কথা হল যারা মদিনা শহরে অন্যের নিরাপত্তা নষ্ট করে ও মানুষদের কে হত্যা করে তারা কেমন মুসলিম ?
নাকি ইহুদিদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বেস্তা তারা।
বুখারী শরীফের ১৭৫৪ নং হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ…….সুফিয়ান ইবনে আবু যুহায়র রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি : ইয়ামান বিজিত হবে, তখন একদল লোক নিজেদের সাওয়ারী হাঁকিয়ে এসে স্বীয় পরিবার-পরিজন এবং অনুগত লোকদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে। অথচ মদীনাই ছিল তাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তারা জানত। এরপর ইরাক বিজিত হবে তখন একদল লোক নিজেদের সাওয়ারী হাকিয়ে এসে স্বজন এবং অনুগতদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে, অথচ মদীনাই তাদের জন্য ছিল কল্যাণকর, যদি তারা জানত।
এই মদীনা কে আমাদের নবী কত গুরুত্ব দিত উপরের হাদিস থেকে বুঝা যায়।
এই মদীনায় মসজিদে নববীর পাশে যারা হামলা করে নিরীহ মানুষ মারে তারা কেমন মুসলমান ?
এটা কিয়ামতের আলামত নয় ?
নজদীদদের বিষয় হাদিসে পায় যায় আমার নবী (সা) বলেছেন তারা মুসলমান হয়ে মুসলমানদের কে হত্যা করবে ও কাফের দেড় সাথে বন্ধুত্ব করবে , তাদের কথায় কথায় কোরানের আয়াত ঝরবে কিন্তু কোরানের জ্ঞান তাদের কণ্টনালী অতিক্রম করবে না , তাদের মধ্যে থেকে ইলম এমন ভাবে বেরিয়ে যাবে যেমন তীরের সামনে থেকে শিকার বেরিয়ে যায় অন্য বর্ননায় এসেছে শিকার ভেদ করে তীর বের হয়ে যায়।
আজ যদি আমরা দেখি , তবে আই এস এই এস বা জট জঙ্গি আছে তারা মুসলমান হয়ে মুসলমানদের রক্তে হাত রণজিৎ করেছে আর কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ত করেছে গোপনে বা প্রকাশ্য।
তারা কথায় কথায় কোরান বলে আর করণের অপবেক্ষা করে।
এটা কিয়ামতের একটা আলামত যে আল্লাহ তায়ালা ইলম তুলে নেবেন।
বুখারি হাদিস নং ৮০
‘ইমরান ইব্ন মায়সারা (র) …….. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন যে, কিয়ামতের কিছু নিদর্শন হলঃ ইলম লোপ পাবে, অজ্ঞাতার বিস্তৃতি ঘটবে, মদপান ব্যাপক হবে এবং ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে।
আজ যদি আমরা তাদের ইলম ইসলামের মানদন্ডে দেখি তবে অবসোস হয় বলতে যে কোরানের সেই আয়াত (গাধা কিতাব বহন করছে ) অবস্থা দেখতে পাই। তারা শুধু কিতাব বহন করছে কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তাদের কে জ্ঞান কে বিমুখ ও মাহরূম রেখেচেন।
বুখারি হাদিস ০৮১
মুসাদ্দাদ (র) …….. আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি তোমাদের এমন একটি হাদীস বর্ণনা করব যা আমার পর তোমাদের কাছে আর কেউ বর্ণনা করবেন না। আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের কিছু নিদর্শন হলঃ ইলম কমে যাবে, অজ্ঞতার প্রসার ঘটবে, ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে, স্ত্রীলোকের সংখ্যা বেড়ে যাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে, এমনকি প্রতি পঞ্চাশজন স্ত্রীলোকের জন্য মাত্র একজন পুরুষ হবে তত্ত্বাবধায়ক।
আজ আসলে ইলম কমে শুন্যের কোটায় চলে এসেছে আর অজ্ঞতায় দুনিয়া ভরে।
পথে ঘটে এখন মুফতি আর মুফাস্সির দেখা মেলে , টেলিভিশনের পর্দায় আজ পি এইস ডি অর্জন করা যায়।
অবাক করার মত হাদিস হল
বুখারির ৮৫ নং হাদিস খানা
মাক্বী ইব্ন ইবরাহীম (র) …….. আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেনঃ (শেষ যামানায়) ‘ইলম তুলে নেওয়া হবে, অজ্ঞতা ও ফিতনার প্রসার ঘটবে এবং ‘হারাজ’ বেড়ে যাবে। জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! ‘হারাজ’ কি? তিনি হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ ‘এ রকম।’ যেন তিনি এর দ্বারা ‘হত্যা’ বুঝিয়েছিলেন।
আজ যদি দেখি তবে আমাদের অজ্ঞতার কারণে হত্যার আর হিসেবে করতেও পারছিনা ,
আমাদের অজ্ঞতার পরিমান এতো বেশি হয়ে গেছে।
যারা আজ দুনিয়ার বুকে হত্যা বোম্বারি করছে ফেতনা সৃষ্টি করছে , যারা পবিত্র মদীনায় বোমা হামলা করে হেরেমের পবিত্রতা নষ্ট করছে , তারা আর যায় হোক মুসলমান না।
আমাদের বাংলাদেশে আই এস আই এস এর সমর্থক দেখা যায় ফেসবুক এ ,তাদের তাওবা করা উচিত , তাদের ফিরে আসা উচিত সঠিক পথে , সারা দুনিয়ার জতো জঙ্গি আছে তাদের এমন বর্বরতা ছেড়ে তবে করা উচিত।
কিন্তু না তারা ফিরে আসবে না , এটাই সত্যি ,
কারন সাইয়েদ আলাভী (রহ) বর্নানা করেন যে , যখন আমি ইমামুল মুফাচ্ছেরিন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) এক যিয়ারতের জন্য বের হলাম ও তায়েফ পৌঁছলাম , তখন আল্লামা তাহের সম্বুল হানাফি ইবনে আল্লামা শায়েখ মোহাম্ম্দ সম্বুল শাফেঈ (রহ) সাথে সাক্ষাত ঘটে । তখন তিনি বলেন আমি দলটির খন্ডনে একটা কিতাব রচনা করেছি ও নাম দিয়েছি (ইন্তাসারুল আওলিয়া-ইল আবরার)
আশা করছি যে , যে লোকের ভিতর নজদি বিদয়াত ঢুকেছে , তার সফলতার আশা করা যায় না , কারন বুখারী শরিফে বলা হয়েছে যে তারা দ্বীন থেকে এমন ভাবে বের হয়ে যাবে যে তারা ফিরে আসবে না (আদ-দুরুসুস স্যানিয়া ) পৃ ৯০
তো আমাদের বুযুর্গানে দ্বীন যারা ছিলেন তারা বলে গেছেন তারা ফিরে আসবে না তাদের মতামত থেকে , সো তাদের ফিরে আসার আশা করা নিরর্থক বৈকি ককিছুই নয়।
শুধু আশা ঈমান নিয়ে কবরে যেতে পারলেই হয়।
সোহেল রানা